somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অপারেশন গানা - এই প্রথম বাংলাদেশের দুই সুপার হিরো 'অনন্ত জলিল এবং মাসুদ রানা একসাথে!

৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



***১***
গোপন মিশন নিয়ে মাসুদ রানা গেছে ঘানাতে। সাথে আছে আরেক দূর্ধর্ষ এজেন্ট অনন্ত দ্যা জলিল। তবে এই মূহুর্তে দুজন আছে দুই জায়গায়। রানা আছে হিলটন হোটেলের একটি বিলাসবহুল প্রাইভেট স্যুইটে। ফোনে কথা হচ্ছে দুজনের মধ্যে -
রানাঃ অনন্ত, ‘হোয়ার আর ইউ নাউ?’
অনন্তঃ মেজর রানা, আই এম পম গানা।
রানাঃ সেটাতো আমি জানি। এগজ্যাক্ট লোকেশনটা বল
অনন্তঃ একটু ধরেন স্যার। জি পি এস টা চেক করে নেই।
রানাঃ ওকে।
অনন্তঃ একটা ঝামেলা হোয়ে গেছে ছার।
রানাঃ কি ঝামেলা?
অনন্তঃ ভুলে টেলিটোকের সিম নিয়া চইলা আইছি। নেটওয়ার্ক নাই জিপিএস কাজ কোরতেছেনা।
রানাঃ তাহলে তুমি কথা বলছ কিসে?
অনন্তঃ টেলিপোন ভূত থেকে স্যার।
রানাঃ টেলিপোন ভূত!!!! ওহহ... ইউ মীন টেলিফোন বুথ!
অনন্তঃ ইয়েস ছার!
রানাঃ তুমি আশেপাশের কোন পান বিড়ির দোকান থাকলে ওদের কাছ থেকে লোকেশন জেনে নিয়ে আমাকে জানাও। আমি হোল্ড করছি।
রানা ফোন ধরে অপেক্ষা করতে থাকে। একটু পরেই ফোনে অনন্তর গলা শোনা যায় –
অনন্তঃ ছার, লোকেশন পাওয়া গেছে।
রানাঃ গুড। এখন বল তুমি কোথায় আছ?
অনন্তঃ গানা ইন্টারনেশনাল এয়ারপোটের ঠিক সামনে ছার!!!
রানা কিছুক্ষন কথা বলতে পারলনা। তারপর নিজেকে সামলে নিয়ে বলল -
রানাঃ ওকে। তুমি একটা ট্যাক্সি নিয়ে হোটেলে আক্রায় চলে যাও। সেখানে তোমার সাথে একজন দেখা করে একটা মেমরী কার্ড দেবে। তুমি ওটা কালেক্ট করে আমার পরবর্তী নির্দেশের জন্য অপেক্ষা করবে।
অনন্তঃ মেমোরী কাড নিয়ে কে আসবে ছার?............ কিশটিনা?
রানাঃ না, ক্রিস্টিনা এখন আমার রুমে.................. আই মীন আমার সাথেই আছে। তোমার সাথে দেখা করবেন জাতিসংঘের সাবেক একজন মহাসচিব। উনি অবশ্য ছদ্মবেশে থাকবেন। তোমাকে চিনে নিতে হবে।
অনন্তঃ ওকে, রানা। নো পোবলেম। ইউ ইনজয়!
রানাঃ আই অ্যাম নট এনজয়িং! ক্রিস্টিনার কাছ থেকে তথ্য আদায় করছি! ইট’স আ ডিফিকাল্ট জব!
অনন্তঃ সোরি স্যার। মাই এপোলজি।
রানাঃ ইটস ওকে।
‘গরু গাধা নিয়ে কাজ করতে এসে বিরাট বিপদে পড়লাম’... বিড়বিড় করে ফোনটা রেখে দিল রানা। তারপর ক্রিস্টিনার কোমর করিয়ে ধরলো। ক্রিস্টিনার চোখে আমন্ত্রন!



******
হোটেল আক্রা। গানা।
মাসুদ রানার নির্দেশ অনুযায়ী দূর্ধর্ষ এজেন্ট AJ11 ওরফে অনন্ত জলিল অপেক্ষা করছে তাঁর কন্ট্যাক্টের জন্য। সে বসেছে হোটেলের রেস্টুরেন্টের বাইরের অংশে। তাঁর সতর্ক দৃষ্টি ধৈর্য্যের সাথে আশেপাশের মানুষজন পর্যবেক্ষন করছে। রানার কথা অনুযায়ী জাতিসংঘের লোকটার ছদ্মবেশে আসার কথা।
‘একজন ইস্পাই এর অবশ্যই ধৈর্য্য থাকতে হোবে’ বিড়বিড় করে নিজেকে মনে করিয়ে দিল। শুধু শুধু বসে না থেকে জাতিসংঘের সাবেক কর্মকর্তাদের নাম মনে করার চেস্টা করা যাক। হুম, মনে পড়ছে......
: এক্সকিউজ মি!
অনন্ত ধড়মড় করে জেগে উঠল। কি সর্বনাশ! জাতিসংঘের কর্মকর্তাদের নাম মনে করতে করতে কখন যেন ঘুমিয়ে পরেছিল। রানা ভাই জানতে পারলে তো মান ইজ্জতের ‘পেস্টিজ’ চলে যাবে!
: এক্সকিউজ মি
আবার বলল কণ্ঠটা। কে ক্ষমা চায় দেখার জন্য ডানে বামে তাকাল অনন্ত, চোখ থেকে ঘুম এখনও যায়নি। কেউ নেই! পেছনটাও চেক করে করে নিল। আশ্চর্য! সেখানেও কেউ নেই! তাহলে কে ক্ষমা চাইল! বুত পেত নাকি! সুরা ইয়াছিন পড়া শুরু করবে ঠিক তখনই মনে পরল, ‘ওহ! সামনে তো তাকানো হয়নি!!!’
হুম! ঠিক। টেবিলে বসে আছে একজন কৃষ্ণাঙ্গ ব্যাক্তি, হাতে একটা ছোট ব্যাগ।
ব্যাক্তিঃ এক্সকিউজ মি। আপনি কি ঘুমাচ্ছিলেন?
অনন্তঃ হোয়াট ডু ইউ থিঙ্ক আই এম ইসস্লিপিং! আমি গুমানোর ভান করে চারিদিকে লক্ষ্য রাখছিলাম। দিস ইস মাই ইস্টাইল! এখোন বলেন আপনের নাম কি?
ব্যাক্তিঃ কফি আনান।
অনন্তঃ এইটা ভাল বলছেন। গুমের পরে কফি উত্তম। আমি কফি আনাইতেছি, আপনে আপনের নাম বলেন।
ব্যাক্তিঃ কফি আনান।
অনন্তঃ মর জ্বালা! বিগ পোবলেম! কফি তো আনাইতেছি। আপনের নাম কন!
ব্যাক্তিঃ আমার নামই কফি আনান।


অনন্তঃ ভূল হয়া গেছে ছার। বিগ মিসটেক। মাই এপলজি!
কফি আনানঃ ইটস ওকে। মেমরি কার্ডটা রাখুন, রানার হাতে দেবেন। তবে খুব সাবধান! ধরা পরবেন না।
অনন্তঃ নো পোবলেম। জলিল কো পাকারনা মুশকিলই নেহি, না মুমকিন হে!
কফি আনানঃ কফি আনান।
অনন্তঃ নাম তো একবার বললেন ছার!
কফি আনানঃ এবার কফি আনাইতে বলতেছি!
অনন্তঃ সরি ছার, কফি আনাইতেছি। আপনার কষ্ট করে আসার জন্য থ্যাঙ্ক ইউ!
কফি আনানঃ মোস্ট ওয়েলকাম।
অনন্তঃ ছার!!! আপনে আমার সফল ছবি ‘মোস্ট ওয়েলকাম’ দেখছেন!!!
আমি কিতজ্ঞ হয়ে গেলাম! আই এম এবার গেটফুল!

হোটেল থেকে বেরিয়ে বিপদে পরে গেল অনন্ত। মাসুদ রানা পরবর্তী কোন নির্দেশ দেয়নি। রানার মোবাইলও বন্ধ। তথ্য আদায় এখনও মনে হয় শেষ হয় নাই রানার। কঠিন কাজ, সময় লাগারই কথা! কিন্তু এখন এই মেমরি কাডের কি বেবস্থা করা যায়। হাতে বা পকেটে রাখা মোটেই সেফ নয়। হঠাৎ বুদ্ধি এল মাথায়। অনন্ত তাঁর পকেট থেকে মোবাইলটা বের করে মেমরি কার্ডটা খুলে ফেলল। এবার কফি আনানের মেমরি কার্ডটা মোবাইলে ঢুকালেই কেল্লা ফতে, কেউ সন্দেহ করবেনা যে কাডটা তাঁর মোবাইলের ভেতর থাকতে পারে। কার্ডটা ঢুকাতে যাবে ঠিক তখনই পেছন থেকে মধুর কন্ঠে কে যেন ডাকল,
:এক্সকিউজ মি!
আবার কে ক্ষমা চায়। আজ দেখি ক্ষমা চাওয়ার বাজার বসে গেছে। বিরক্ত ভঙ্গিতে পেছনে তাকাতে তাকাতে মেমরি কার্ড দুটা প্যান্টের দুই পকেটে ঢুকিয়ে রাখল। কন্ঠস্বরের মালিকের দিকে তাকিয়েই অনন্তের বিরক্তি উবে গেল। মধুক্ষরা কন্ঠে ক্ষমা চাইছে এক অপূর্ব সুন্দরী যুবতি।
যুবতীঃ এক্সকিউজ মি, মিস্টার। আমি রেগানা!
অনন্তঃ রেগানা! আমার তো মনে হয় আপনি মিস গানা! এন্ড মাই নেম ইস নট মিস্টার, আই ইস্টাডি ইন ম্যানসিসটার!
রেগানাঃ যাহ! আপনি বাড়িয়ে বলছেন! আমি অত সুন্দরী নই। জানেন, আজকের সন্ধ্যাটায় আমি খুব লোনলি ফিল করছি। আপনার মত এরকম একজন হ্যান্ডসামের সঙ্গই হয়তো খুজছিলাম!
অনন্তের চোখ গোল আলু হয়ে গেল। বুক ফুলে উঠল পৌনে তিন ইঞ্চি! এযে মেঘ না চাইতেই বর্ষা!
অনন্তঃ আমিও সন্ধ্যাটা ফিরি আছি! কোথায় যাওয়া যায় তুমিই বল।
রেগানাঃ রাস্তার ওই পাশে চমৎকার একটা বার আছে।
অনন্তঃ চল তাহলে।

তাঁরা কেউই লক্ষ করলোনা যে প্রায় দুইশ গজ দূর থেকে তাদের লক্ষ্য করছে একজন মানুষ। ঢ্যাঙ্গা টিংটিঙে শরীরে তাঁর চেয়ে ডাবল সাইজের একটা ওভারকোট চাপানো। সানগ্লাসে চোখ জোড়া ঢাকা না থাকলে দেখা যেত সেখানে শিশুর সরলতা।
‘অনেকক্ষণ তো ডেরিয়ে থাকলাম। হাত পা ব্যতা হয়ে গেচে। দেখি বাচাধনেরা কোতায় যাও!’ – বিড়বিড় করল গিলটি মিয়া। নির্দিস্ট দূরত্ব বজায় রেখে অনুসরন করতে লাগল। বস এমনই নির্দেশ দিয়েচেন। বসের কথা মনে হতেই গিলটি মিয়ার হাসি চলে আসলো। ফিক করে হেসেও ফেলল। গত ঈদে সে ছবি দেখতে গেছিল বলাকা হলে। ছবির নাম ‘বস নাম্বার ওয়ান’। সে ভেবেছিল বোধহয় তাঁর বস কে নিয়েই ছবি। রানার মত বস আর কে আছে। সেই তো বস নাম্বার ওয়ান। অর্ধেক ছবি দেখেই সে বেরিয়ে এসেছিল সে হাসতে হাসতে। এইটারে যদি ‘বস নাম্বার ওয়ান’ কয় তাইলে ‘আবাল নাম্বার ওয়ান’ কোনটা!

নিজের কর্মকান্ডে নিজেই মুগ্ধ হয়ে গেছে অনন্ত। সুন্দরীদের কিভাবে পটাতে হয় এ বিষয়ে মাসুদ রানা তাঁর কাছ থেকে শিখতে পারে। এবার ঢাকায় ফিরেই একটা কোচিং সেন্টার খুলে ফেলা দরকার। এসব ভাবতে ভাবতে রাস্তার পাশের একটা বারে ঢুকে পরল। সুইং ডোর খুলে ভেতরে ঢোকামাত্রই হিন্দি ছবির ভিলেন মোগাম্বোর মত দেখতে দারোয়ানটা খটাশ করে স্যালুট ঠুকে বলল,
: ওয়েলকাম স্যার।
অনন্তঃ ‘ওয়েলকাম স্যার’ না, ‘মোস্ট ওয়েলকাম’। যাই হোক তুমি আমার সফল ছবি ‘মোস্ট ওয়েলকাম’ দেখেছ বলে খুশি হয়েছি। এই নাও দশ টাকা বখশিশ’।
দারোয়ানঃ বখশিশ লাগবেনা স্যার।
অনন্তঃ তাহলে কি চাও বল। একটা কিছু চাইতে হবে।
দারোয়ানঃ তাহলে মেমরি কার্ডটা দিন স্যার।
বলেই অনন্তের বুক সোজা করে হাতের শটগানটা উচিয়ে ধরল!
(আগামী খন্ডে সমাপ্য)
* ফেসবুকে আংশিক লিখেছিলাম। পরিমার্জিত করে লেখা হল।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:৫০
১৭টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তোমাকে লিখলাম প্রিয়

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০২ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০১


ছবি : নেট

আবার ফিরে আসি তোমাতে
আমার প্রকৃতি তুমি,
যার ভাঁজে আমার বসবাস,
প্রতিটি খাঁজে আমার নিশ্বাস,
আমার কবিতা তুমি,
যাকে বারবার পড়ি,
বারবার লিখি,
বারবার সাজাই নতুন ছন্দে,
অমিল গদ্যে, হাজার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ মিসড কল

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

×