#০১
ও মেয়ে আয়,
আমার বুক বালিশে মাথা গুজবি আয়!
সেথায় লোমশ বনে মুখ লুকাবি লজ্জায়।
#০২
ও মেয়ে আয়, অমাবশ্যার রাতে
আকাশের তারা গুনাগুনি খেলি।
তুই গুনবি অগুনতি তারা
আর আমি গুনবো চাঁদ,
আকাশের তারাগুনা চাঁদ।
বারংবার গুনবো তাকে লুকিয়ে চুরিয়ে।
#০৩
ও মেয়ে আয়, সাম্যবাদী ভালবাসা করি।
তোর স্বৈরাচারী ভাবনা চিন্তায়
আমি হবো প্রলেতারিয়েত প্রেমিক
আর তুই হবি ধনীক শ্রেণীর প্রেমিকা!
তা হবে না, তা হবে না।
#০৪
ও মেয়ে আয়, ঘর ছেড়ে বাহিরে!
দেখ কী রূপে সেজেছে চাঁদ,
দেখ ডাকছে তোকে ভিজতে শারদ জোছনায়!
ও মেয়ে ঘর ছেড়ে বাহিরে আয়!
#০৫
ও মেয়ে আয়, ভাবতে বসি।
তুই আমার রোদ হবি
না কি বুকফাটা রোদন হবি!
#০৬
ও মেয়ে আয়,
তোর চোখের কাজল হবো,
ঠোঁটের কোণের হাসি হবো,
যখন তখন তোকে ভালবাসি কবো।
#০৭
ও মেয়ে আয়, জোছনা রাতে
দরজা জানলা খুলে দিয়ে
দুজনে জোছনা বিলাস করবো।
বিস্টি রাতে চালের ফুটোয়
জল চুইয়ে পড়লে না হয় আলসেমিতে
দুজন জড়াজড়ি করেই
শুয়ে রইলাম এক কোণে।
#০৮
ও মেয়ে আয়,
পাহাড়ের কাছেই কোথাও ঘর বানাবো
সন্ধ্যা রাতে জোনাক দিয়ে
প্রদীপ জ্বালবে তুমি,
পাহাড়ের চূড়ায় চরে
জোছনা কুড়াবো আমি।
#০৯
ও মেয়ে আয়, আমরা দুটি
জোনাক জোনাকী হই।
তুই র'বি ঘরের কোণে
আমি তেপান্তরের মাঠে!
তোর ডাকেতে আসবো ছুটে
আমি তুই জোনাকীর পানে।
#১০
ও মেয়ে আয়,
চড়ুইভাতি করে দিন কাটাবো
আর সংসার করবো টানা পোড়েনে।
মাটির ঘরে শীতল পাটি বিছিয়ে
অলস দুপুর পার করবো হাতপাখার বাতাসে।
#১১
ও মেয়ে আয়,
বাচ্চা-কাচ্চার রাজনীতি করি।
ছেলেটাকে নিবি তুই,
আর মেয়েটাকে নেবো আমি।
তারপর দেখি খুনশুটির কূট-কৌশলে
জিতে যায় কোন দলে!
পারবি তো বাপ মেয়ের সাথে!
#১২
ও মেয়ে আয়, মহুয়াপালা প্রেম করি!
আমার অতি প্রেমে তুমি বলবে, "জলে ডুবে মর গে"
আমি বলব "মনটা তোমার দিয়ো সখী, মনে বাঁধি তোমার চোখেতেই ডুবে মরি!"
#১৩
ও মেয়ে আয়, চোখের মনিকোঠায়
থাকবি সেথায় খুব যতনে।
দুঃখ পেলে তুই,
দুঃখ ঝরবে আমার
চোখের জলে ফোটায় ফোটায়।
#১৪
ও মেয়ে আয়, এমনিই ফিরে আয়।
ভালবাসার শান্তিদূত করবো
পাই না এমন কাউকে।
দূত ছাড়াই তুই শান্তি হয়ে
ছুটে আয় আমার বুকে।
#১৫
ও মেয়ে আয়, বৃষ্টিতে ভিজবি!
আমার এখানে বৃষ্টি হয় খুব,
এমন সুলভ, চাহিবা মাত্রই পাবি।
তুই ভিজবি বলেই আয়
তবেই থামবে আমার বুকের ধুকধুক।
#১৬
ও মেয়ে আয়, আমি মরতে চাই!
তোর চোখের গভীর মায়ায়
ডুবে মরতে চাই!
তোর হাসির কলকলানিতে
শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মরতে চাই।
অবশেষে তোর গলে ঝুলে গিয়ে
আত্মঘাতী মরণ মাথা পেতে নিতে চাই।
#১৭
ও মেয়ে আয়, জোড়া শালিক হয়ে থাকি।
কোন এক খুপড়ি ঘরে থাকবো
তুই আর আমি জনম জনম ধরে।
#১৮
ও মেয়ে আয়, আমি হবো মেঘকুমার
আর তুই হবি মেঘকুমারি।
আয় দুজন মিলে বৃষ্টি নামাই।
পৃথিবীটাকে সবুজে সাজাই,
আয় দুজনে শান্তি নামাই।
#১৯
ও মেয়ে আয়,
তোর সকালে সূর্য হবো,
রাতে হবো তারা।
আমি থাকতে হবি না তুই
ভালবাসা হারা।
#২০
ও মেয়ে আয়,
তোর চুলে আদরে বেণী করে দিই,
অথবা খোপায় গোঁজে দেই রক্তজবার ফুল।
তোর কানে গেঁথে দিই বুনোফুলের দুল।
গলে পড়াই বকুলের মালা
আর ঘাসফুলে করে দিই নাকফুল।
তোর হাতে পরিয়ে দিই গুল্মলতার চুড়ি
পায়ে দিই বাহারি পাতার নূপুর।
ও মেয়ে আয়,
তোকে সাজাতে সকাল করবো দুপুর।
#২১
ও মেয়ে আয়,
তোর জন্য বুকে ফুল বাগান করেছি
সেথায় তুই প্রজাপতি মন নিয়ে
ফুলে ফুলে ওড়ে বেড়াবি, আয়।
(স্বপ্নচারিনী-কে উৎসর্গ করে লিখা)