somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বড় বা সফল হবার কোন শর্টখাট রাস্তা নেই

০১ লা জুলাই, ২০২১ রাত ১১:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একদিন সকালবেলা মধুমিতা সিনেমা হলের সামনের রাস্তা ধরে খালি পায়ে খোড়ায় খোড়ায় হাঁটছি আমি। প্রচণ্ড ভিড়ে মানুষের চাপ আর ধাক্কা-ধাক্কিতে পায়ের জুতা জোড়া কোথায় হারিয়েছে আর খুঁজে পাই নি। জুতা গেছে যাক, পরে না হয় কেনা যাবে কিন্তু "পা" গেলে কোথায় পাবো? উম্মাদনা আর উত্তেজনায় ভরকরা অসংখ্য "পা" আমার পায়ের পাতা মাড়িয়ে পিষে গেছে।

হৃদয়জুড়ে হাহাকার। ভিড় ঠেলে ভিতরে ঢুকতে পারলাম না। পারলে হয়তো মতিঝিলের মতো জায়গায় কোন একদিন আমার একখণ্ড জমি হতো। শুধু আমার নয়, আমার কাছের আত্মীয় স্বজনদেরও হতো। একটি নতুর গাড়ি হতো। বাড়ি হতো। আরো কতো কি...।

আহা আফসোস! বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষে পড়ুয়া এক ছেলের বুক ভেঙ্গে ছারখার হয়ে যাচ্ছে।

ঘটনার কদিন আগে এক ওস্তাদ বলেছিলেন, "ভাই সকল, আপনাদের যদি রাজধানীর মতিঝিলে এক খণ্ড জমি দিয়ে বলা হয়, এটি আপনি কাউকে দিয়ে দেন, তবে আপনি কাকে দিবেন? নিশ্চয় ই আপনার আপনজন কে। নিশ্চয় ই একদম কাছের কাউকে।"

আমরা সমস্বরে বলে ছিলাম, "জি ওস্তাদ, তাই করবো। আমি আমার বাবা, মা, ভাই, বোন কে আগে দিবো।"
ওস্তাদ বললেন, "দিয়েও যদি কিছু অবশিষ্ট থাকে তারপর কাকে দিবেন?"

"তারপর, মামা, ফুফা, চাচা, ফুফু, খালা যারা আছেন তাদের কে দিবো।"

ওস্তাদ বললেন,"গুড ভেরি গুড। আমরাও চাই সুযোগ থাকলে আপনি সেটা আগে আপনার কাছের জনকে দেন।"

ওস্তাদ আবার বললেন, "আপনাকে যদি চান্দের দেশে পাঠানো হয় আর সাথে একজনকে সঙ্গী হিসেবে নিতে হয় তবে কাকে নিবেন?"
কেউ একজন আমতা আমতা করে বলল, "ওস্তাদ আমার গার্লফেন রে নিমু"

ওস্তাদ মহা খুশি। তিনি হেসে বললেন, "আমরাও তাই চাই, আপনি আপনার প্রিয় মানুষটা কে নিয়ে চান্দের দেশ ঘুরে আসুন"।"

খোঁড়াতে খোঁড়াতে নটরডেম কলেজের সামনের ফুটপাতে এসে বসে পড়লাম। ফাদার বেঞ্জামিন কে দেখলাম, ভিতর থেকে গেটের বাইরে আসছেন। ছুটির দিন হলেও কোন কাজে এসেছেন বোধহয়।

কাছে গিয়ে সালাম দিলাম। পরিচয় দিলাম, আমি সাবেক ছাত্র। ফাদার খালি পা সমেত আমাকে দেখে বিষয় জানতে চাইলেন। আমি বিষয় বললাম।

ফাদার সেদিন বলে ছিলেন,"বাবা রে বড় হবার জন্য কোনদিন শর্টখাট রাস্তা খোঁজবা না। বড় হবার কোন শর্টখাট রাস্তা নাই।"

কথাটা আজও আমার হৃদয়ে গেঁথে আছে। বড় বা সফল হবার কোন শর্টখাট রাস্তা নেই। কেউ যদি কাউ কে শর্টখাট রাস্তা দেখায়, তাহলে বুঝতে হবে তার ভিতরে ঘাপলা আছে শতভাগ।

খালি পায়ে আমি বাসায় ফিরে এলাম। ফাদারের কথা মাথায় ঘুরপাক খেতে লাগলো। জীবনে কখনো আর কোন ওস্তাদের শর্টখাট ফর্মূলা শুনতে যাই নি আমি।

সেদিন মধুমিতা সিনেমা হলের পাশের এক গলিতে ডেসটিনি'র ট্রেনিং ছিল। বিদেশ থেকে কোন এক ওস্তাদ শর্টখাটে বড় হবার আর বাড়িতে শুয়ে বসে আরামসে ফিউচার লাইফ কাটানোর ফর্মূলা দিতে এসে ছিলেন।

আজকে প্রতারক রফিকুল আমিন, যে কিনা জেলখানাতে বসেও জুম মিটিং করছে। একসময় ডেসটিনির কর্মীরা যাকে নবী-রাসূল এর মতো করে (নাউ যুবিল্লাহ) মানতো। সেই প্রতারকের কারনে গ্রাম বাংলার কতো বোনের সংসার ভেঙ্গেছে। কতো যুবক, কতো বাবা তাদের সহায় সম্বল হারিয়েছে। তার মিথ্যা প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়ে কতো শিক্ষার্থী তাদের শিক্ষা জীবন ছেড়ে দিয়ে ভবঘুরে হয়েছে- তার সঠিক হিসাব নেই।

তখনো কিছু কুলাঙ্গার প্রতারক রফিকুল আমিন কে সহযোগিতা করেছে। এখনো তেমন ই কিছু রাষ্ট্রীয় কুলাাঙ্গার তাকে সহযোগিতা করে চলেছে। জেলখানায় বসে ই সে বুনে চলেছে পরর্বতী কোন প্রতারণার ফাঁদ। এইসব কুলাাঙ্গার ও প্রতারকদের সহযোগীর অভাব হয় না কোন কালে...।

সর্বশেষ এডিট : ০১ লা জুলাই, ২০২১ রাত ১১:৫৭
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×