somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এভাবে হয়তো হেরে যাব জীবনের কাছে

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

' হ্যালো '
' হ্যালো , কে বলছেন ? '
' হ্যা....আমি হাবলু বলছি , আপনি শাখাওয়াত বলছেন ? '
' ইয়েস, শাখাওয়াত স্পিকিং , হু আই এম টকিং টু ? '
' কি রে শখি , চিনতে পারছিস না ? আরে আমি তো হাবলু ? '
' হুইচ হাবলু ? '
' আরে বিলাইন্না হাবলু '
' আই এম সরি , আমি আপনাকে চিনতে পারছি না , আপনি মনে হয় রং নাম্বারে ফোন করেছেন , আপনি কাইন্ডলি আবার একটু চেষ্টা করেন '
' আরে......'

কথা টা শেষ হল না খুট করে কেটে গেল । যার সাথে কথা বলছিলাম সে হল মোঃ শাখাওয়াত হোসেন , ডাক নাম শাখাওয়াত । আমরা ডাকতাম শখি বলে। চার বছর একসাথে পড়েছি । একসাথে খাওয়া , আড্ডা , মুভি দেখা

, পি এল এ একসাথে রাত জেগে পড়া , দূর দুরান্তে হেটে যাওয়া শুধু চা খেতে যাওয়ার জন্য, জীবনের লক্ষ্য ঠিক করা , পরীক্ষা খুব বাজে ভাবে দিয়ে এসে একসাথে মুভি দেখতে বসা, সন্ধ্যার দিকে জীবন টাকে আবার ঢেলে সাজিয়ে নতুন উদ্দ্যমে পরের পরীক্ষার জন্য পড়া । এভাবেই চলছিল জীবন । মাঝে থেকে কিভাবে যেন চারটি বছর চলে গেল টের পাইনি ।


পাশ করার পর রেজাল্ট হাতে এল । বরাবর রেজাল্ট আমার খারাপ। টেনেটুনে আমার সিজিপিএ ২.৮ । মাথায় হাত । চাকরি করতে হবে । সংসার এর হাল ধরতে হবে । মাথায় খালি এই সব চিন্তা ঘুরপাক খেতে লাগল । একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছি । আমার পিছে যথেষ্ট টাকা খরচ হইছে । মফস্বলের মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য, ছেলেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো অনেক সাহসের কাজ । কিন্তু আমি আমার বাবা মা এর কষ্ট টা কে সফল করতে পারিনি ।


শখি কোন কথা বার্তা ছাড়াই আলাদা হয়ে গেল । প্রথম প্রথম ফোন করলে ফোন ধরত না । হয়ত মাঝে মাঝে ফোন ধরত । হুম হাম করে রেখে দিত । অনেক ব্যাস্ত থাকত । তারপর একদিন ফোন করে বুঝতে পারলাম ফোন

বন্ধ । বন্ধ হয়ে যাওয়া ফোন আর খোলে না । ফেইসবুক থেকে রিমুভড । তারপর ও ফ্রেন্ড রিকুএস্ট পাঠাইলাম। এক্সেপ্ট করে না। তো এক সময় আমিও ফোন দিতাম না ।

চাকরির জন্য অনেক যায়গায় এপ্লাই করলাম । ম্যাক্সিমাম জায়গা থেকে কোন রিপ্লাই পেলাম না । তবুও যে দু এক জায়গা থেকে পেলাম ভাইবাতেই আটকে দেয় । বলে রেজাল্ট এর অবস্থা করূন । আমাকে দিয়ে কোম্পানির লস হবে । উন্নতি হবে না । আবার কেউ কেউ অফার অ দেয় তবে বেতন ছয় হাজার টাকা আর কাজের সময় সকাল দশটা থেকে রাত আটটা । এর থেকে ক্লাস টু এর দুটো স্টুডেন্ট রে পড়াইলে কম সে কম দশ হাকার টাকা ইনকাম করতে পারব ।


এখানে ওখানে ছোটাছুটি করে ১ বছরে যখন শরীরে ওজন ২০ কেজি র মত কমেছে , তখন আমি শখি র নতুন নাম্বার পেলাম । শুধু তাই না শুনলাম সে নাকি খুবই ভালো একটা জব করতেছে । বেতন ৪৫+ হাজার । তাই অর
কাছে ফোন দিয়েছিলাম । যাই হোক , বুঝলাম তার এমেনশিয়া হইছে । সবাইকে চিনতে পারে না । ফেইসবুক ফলো করি বলে দেখি আজ এখানে পার্টি, কাল ওখানে পার্টি । বাবা, মা , বোনের জন্য কেনা কাটা । সব চলছে । বুঝলাম ভালোই আছে সে । শুধু ওই রোগ টা ছাড়া ।


আর আমি এখনও সংগ্রাম করে যাচ্ছি । ভালো একটা চাকরইর জন্য । একটা ছোট খাটো ফার্মে কাজ করি । বেতন ওই দশ এর আশে পাশে , জীবনের স্বপ্ন গুলাই হয়তো অধরাই রয়ে যাবে । কিছু করার নেই । এভাবেই জীবন চলে ।


[উপরের সব ঘটনাই সত্য , শুধু নাম ছাড়া । আর গল্প টা আমার ভার্সিটির বড় ভাইয়ের]
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১:৩৯
৪টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

×