স্ত্রী লিঙ্গ হওয়া সত্ত্বেও শুধু সন্তান উৎপাদন ও টিকিয়ে রাখায় সরাসরি এবং তুলনামুল বেশি অবদান রাখায় ওই সম্প্রদায়ের মালিক আমরা মানুষেরা মুরগীকে মোরগ না বলে মুরগী বলি। মোরগ বললেই বুঝি মুরগীর পুরুষলিঙ্গ বা পার্শ্বচরিত্র। অর্থাৎ, মুরগীর পরিচয়ে মোরগ পরিচিত। কিন্তু মানুষের মালিক পুরুষের নামে মানুষকে চিনেন। হা হা হা...। এখানে মানুষ বলতে বুঝায় পুরুষ, আর মহিলা বলতে বুঝায় মানুষের স্ত্রী লিঙ্গ বা পার্শ্বচরিত্র। বুঝি না কোন মালিক শ্রেয়তর। মুরগীর নাকি মানুষের!
আমাদের একটা গাভির টানা সাত বছর দামড়া বাছুর (ছেলে বাচ্চা) হওয়ায় গাভির মালিক আমার বাপ-মা গাভীটাকে মনের কষ্টে বিক্রি করে দেয়, কিন্তু আমার মায়ের প্রথম চার সন্তান মেয়ে হওয়ায় একটা ছেলের আশায় তাঁরা মানত করে ছেলে সন্তান লাভের চেষ্টা চালায়। আমার বাপ-মায়ের অধীনস্ত গরুদের সংসারে একটা দামড়ি বাছুরের (মেয়ে বাচ্চা) দাম চার-পাঁচটা দামড়া বাছুরের থেকে বেশি থাকলেও মানুষের মালিকের অধীনস্ত আমার বাপ-মায়ের সংসারে আমার চার বোনের তুলনায় আমাকে সবসময় বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে বা এখনও দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে
এখনও জানি না বা জানতে পারিওনি বোনদের তুলনায় একটু বেশি মেধাবী (অন্যদের ভাষায়) হওয়া ছাড়া আর কোন দিক থেকে আমি উপরে? আমার যোগ্যতা কোনদিকে বেশি? যদি এখানে শুধুই মেধার কথা বিবেচ্য হয়ে থাকে, তাহলে আমার পাশের ঘরে? তিন ছেলের তুলনায় মেয়ে বেশি মেধাবী বলে কি সে ভাইদের থেকে অনেক বেশি সুযোগ পেয়েছে?
মানুষের মালিক অন্য কেউ না থেকে যদি মানুষ-ই হতো, তাহলে হয়তো দৃশ্যপট আলাদা হতো। সম্মান আলাদা হতো। আশায় আছি একদিন সেই সমাজ আসবে যেখানে মানুষের মালিক মানুষ-ই হবে আসুক সেই দিন, সুন্দর হোক সমাজ, আকাশে উড়ুক মানবতার জয়পতাকা