somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সময় গুলো বড্ড এলোমেলো

০৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



জগতে যাহার বড় ভাই নেই তাহার চেয়ে বড় দুঃখী হয়তো আর কেউ নেই । সেদিক থেকে নিজেকে ভাগ‍্যবান বলা চলে । মাথার উপরে বড় কেউ থাকা মানে নিজেকে হালকা রাখা ।

    ছোটবেলায় প্রায় ভাইয়ার সাথে বের হলে কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরতে হতো । ওর বড় বড় পা ফেলে হাঁটার সাথে নিজেকে খাপ খাওয়ানো কঠিন ছিল । বারবার পড়ে গিয়ে পায়ের চামড়া ছিলে যেতো । তাও বের হতাম । অন্য রকম আনন্দ ছিল । ভাইয়া খেপিয়ে বরাবরই মজা পেতো । কখনো হঠাৎ করে এসে একটা মাইর দিয়ে চলে যেতো , আমি সারা বাড়ি ঘুরতাম শোধ তোলার জন্য । আমি ঘুরে ঘুরে ক্লান্ত হতাম ,সুযোগের অপেক্ষায় থাকতাম ,ভাইয়া নামাজ পড়তে দাঁড়ালে কিংবা পড়তে বসলে আমার কাজ সেরে আসতাম । তারপর আমার ভিলেন মার্কা হাসি ।

       ভাইয়া ছিল আমার রাত জাগার আর চা খাওয়ার সেরা পার্টনার । যখনই বলবো ভাইয়া চা খাবা ? সাথে সাথে রাজি ।

       একবার আমার এস এস সি পরীক্ষার সময় ,সবে রাতে পড়তে বসেছি, ভাইয়া এসে বলল তাড়াতাড়ি উঠ একটা বিষয়ে কিছুক্ষণ তোদের সাথে কথা বলবো । ভাইয়া কোন একটা বিষয়ে বেশ কিছুদিন ধরে বই পড়ে আর মুভি দেখে গবেষণা শেষ করলো ,সেই বিষয়ে কথা শেষ করতে রাত তিনটা বেজে গেল । সেই রাতে আর পড়াই হলো না ।
 
               বরাবরই আমরা ভাই বোনেরা আর কাজিনরা পাগলাটে স্বভাবের , একদিন ভাইয়া কে স্কাইপে কল দিলাম রাতের বেলা ,ভাইয়া জ্বিনের গল্প শুনবা ? ও বলল আমি এখোন একটা মিটিং এ আছি দাড়া এক ঘন্টা পর কল দিচ্ছি । সত্যি সত্যি কল দিলো ,হাফসা কি হইছেরে ,সাংঘাতিক কিছু? বল বল । আমি আর আপু শুনা মাত্রই হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছিলাম । 

             আমাদের ছিল জ্বিন ভূত নিয়ে খুব আগ্রহ । ভাইয়া একদিন গ্রামে বেড়াতে গেলে , সকাল বেলা ভাইয়া আর একজন কাজিন মিলে বাঁশ ঝাড়ে ডুকলো জ্বীন খুঁজার উদ্দেশ্যে । অনেকক্ষণ পর ফিরে এলো দুইজন হাপাতে হাপাতে । আমরা তো ভয়ে শেষ । ভাইয়া বলতে লাগলো , জ্বীন নাকি কাজিনকে ধরে আছাড় মেরেছে ,জ্বীনের ইয়া বড় দাড়ি আর অনেক লম্বা সে , সাদা জামা পড়া ছিল । আমরা আর সেই রাত ভয়ে ঘুমাতে পারিনি । বড় হয়ে জানলাম , সেই গল্প নাকি ভাইয়া আর কাজিন মিলে বানিয়েছিল ।
আর প্রায় বলতো ও নাকি স্বপ্নে জ্বিন দেখতো । সেই গল্পও অনেক মজা করে বলতো ।
  
  আম্মু মারা যাওয়ার পর পর পাশের বাসার আন্টি এসে আমাদের ভয় লাগিয়ে দিলো ,কি সব না কি অদ্ভুত কান্ড ঘটে । সত্যি সত্যি রাতের বেলা কর্পূরের গন্ধ পেতাম ,আব্বুর সাথে ঘুমাতাম তখন । বাসার সবাই মনে মনে ভয় পাচ্ছিল ।
      মাঝরাতে পাঁচ তলার উপর বিড়ালের ডাক শুনা যেতো । ভাইয়া কে বলা মাত্রই লাঠি নিয়ে খুঁজতে বের হতো ।

             ভাইয়া হচ্ছে বরাবরই মজার আর আড্ডায় পারদর্শী । ওর ছুটির দিন গুলো অনেক আনন্দে কেটে যেতো ।
        
   অনেক দিন ভাইয়ার সাথে আড্ডা দেওয়া হয় না । পুরানো পোষ্ট পড়তে গিয়ে হঠাৎ ওকে খুব মনে পড়ছে । আগে বাসায় সবসময় হইচই থাকতো , আমাদের দুই বোনের ঈদ কিংবা রোজার আইটেম নিয়ে ঝগড়া লেগে যেতো ।
 
 বড় হওয়া বড্ড ঝামেলার । ছোট থাকা কি আনন্দের ছিল !
   
আমাকে নিয়ে লেখা ভাইয়ার দুইটি পোষ্ট নিচে দেওয়া হলো :
 
    Click This Link


Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪৮
৪১টি মন্তব্য ৪১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৪০



'অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ'।
হাহাকার ভরা কথাটা আমার নয়, একজন পথচারীর। পথচারীর দুই হাত ভরতি বাজার। কিন্ত সে ফুটপাত দিয়ে হাটতে পারছে না। মানুষের... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×