প্রশ্ন
গত ১২/০৯/২০১১ ইং তারিখে আমি মোঃ মুফিজুল আলমের সাথে আমার স্ত্রীর এক অনাকাংখিত ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি নিম্ন রুপ। ঐ দিন রাত্রে আমার বাড়ীতে কয়েকজন মেহমান আসে। যারা আমার আত্মীয় ও সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ। তারা আমার বাসায় ইতিপুর্বে কখনো আসেনি। তাই তারা ছিল নতুন মেহমান। এ পর্যায়ে আমি আমার স্ত্রীকে রান্না করতে বললে সে বলে, যা-পারবনা। এবং আমার সাথে মেহমানদের সামনেই খুবই খারাপ আচরন করে। এতে আমি রাগান্বিত হয়ে পাশের রুমে গিয়ে একা বসে থাকি। কিছুক্ষণ পর আমার স্ত্রী সেই রুমে আসলে আমি তাকে রান্না না করার কারণ জিজ্ঞাস করি। এতে সে আমার সাথে ঝগড়া লেগে যায় এবং বাকবিতন্ডা করতে থাকে। আমার রাগ তখন চরমে পৌঁছে এবং আমি তাকে গালিগালাজ করি। একপর্যায়ে রাগ কন্ট্রোল করতে না পেরে তাকে কিছু মারধর করি। কিন্তু এতে সে নিবৃত্ত না হয়ে তার হাতের মোবাইল সেটটি প্রচন্ড জোড়ে আমার দিকে ছুড়ে মারে। যার ধাক্কায় আমি পরে যায় এবং মোবাইল সেটটি ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। তারপর সে আবার আমার গায়ে হাত তুলে। উল্লেখ্য যে, ঐ সময় আমার ভাবী সেখানে উপস্থিত ছিল। তিনি আমার স্ত্রীকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু ভাবীর সামনে সে আমার গায়ে হাত তুলায় এবং আমাকে অপদস্ত করায় আমার আরো প্রচন্ড রাগ উঠে যায়। প্রচন্ড রাগের কারণে আমি আমার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলি। তারপর আমি তাকে বলি, এক তালাক, দুই তালাক, তিন তালাক, তোকে দিয়ে দিলাম।
উক্ত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমি হযরত মুফতি সাহেব হুজুরের কাছে ইসলামী শরীয়তের সমাধান জানতে চাই। আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন। আমীন !
নিবেদক
মোঃ মোফাজ্জল আলম
বিবিরহাট, ফটিকছড়ি
#০১৮১৭৭৯৯১৭৯
তাং-০১/০৫/২০১২ ইং
শরয়ী সমাধান
حامدا و مصليا و مسلما، اما بعد
প্রশ্নের বর্ণনা দ্বারা একথা প্রমাণিত হয় যে, প্রচন্ড রাগের মাথায় নিয়ন্ত্রণহীন অবস্থায় মোফাজ্জল আলম তার স্ত্রীকে তিন তালাক প্রদান করে। তাই ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী তার এ তালাক গ্রহনযোগ্য নয়। অতএব তার স্ত্রীর উপর কোন তালাক পতিত হয়নি। পুর্বের ন্যায় তারা ঘর সংসার করতে পারবে।
প্রমাণাদি
(١) عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كُلُّ طَلَاقٍ جَائِزٌ إِلَّا طَلَاقَ الْمَعْتُوهِ الْمَغْلُوبِ عَلَى عَقْلِهِ ـ قَالَ أَبُو عِيسَى وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَغَيْرِهِمْ أَنَّ طَلَاقَ الْمَعْتُوهِ الْمَغْلُوبِ عَلَى عَقْلِهِ لَا يَجُوزُ إِلَّا أَنْ يَكُونَ مَعْتُوهًا يُفِيقُ الْأَحْيَانَ فَيُطَلِّقُ فِي حَالِ إِفَاقَتِهِ ـ(سنن ترمذى ، بَاب مَا جَاءَ فِي طَلَاقِ الْمَعْتُوهِ)
(٢) وَاَلَّذِي يَظْهَرُ لِي أَنَّ كُلًّا مِنْ الْمَدْهُوشِ وَالْغَضْبَانِ لَا يَلْزَمُ فِيهِ أَنْ يَكُونَ بِحَيْثُ لَا يَعْلَمُ مَا يَقُولُ بَلْ يُكْتَفَى فِيهِ بِغَلَبَةِ الْهَذَيَانِ وَاخْتِلَاطِ الْجَدِّ بِالْهَزْلِ كَمَا هُوَ الْمُفْتَى بِهِ فِي السَّكْرَانِ عَلَى مَا مَرَّ ، وَلَا يُنَافِيهِ تَعْرِيفُ الدَّهَشِ بِذَهَابِ الْعَقْلِ فَإِنَّ الْجُنُونَ فُنُونٌ.وَأَيْضًا فَإِنَّ بَعْضَ الْمَجَانِينِ يَعْرِفُ مَا يَقُولُ وَيُرِيدُهُ وَيَذْكُرُ مَا يَشْهَدُ الْجَاهِلُ بِهِ بِأَنَّهُ عَاقِلٌ ثُمَّ يَظْهَرُ مِنْهُ فِي مَجْلِسِهِ مَا يُنَافِيهِ ، فَإِذَا كَانَ الْمَجْنُونُ حَقِيقَةً قَدْ يَعْرِفُ مَا يَقُولُ وَيَقْصِدُهُ فَغَيْرُهُ بِالْأَوْلَى ، فَاَلَّذِي يَنْبَغِي التَّعْوِيلُ عَلَيْهِ فِي الْمَدْهُوشِ وَنَحْوِهِ إنَاطَةُ الْحُكْمِ بِغَلَبَةِ الْخَلَلِ فِي أَقْوَالِهِ وَأَفْعَالِهِ الْخَارِجَةِ عَنْ عَادَتِهِ ، فَمَا دَامَ فِي حَالِ غَلَبَةِ الْخَلَلِ فِي الْأَقْوَالِ وَالْأَفْعَالِ لَا تُعْتَبَرُ أَقْوَالُهُ ـ(رد المحتار،مَطْلَبٌ فِي طَلَاقِ الْمَدْهُوشِ)