somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যে প্রশ্নের কোন উত্তর নেই

৩১ শে মার্চ, ২০১৫ সকাল ৮:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


নাস্তিক বা বিবর্তনবাদী বৈজ্ঞানিক, দার্শনিকদের কাছে নিম্ন লিখিত প্রশ্ন সমূহের কোন উত্তর নেই।

ক) আমাদের মধ্যে অনেকেই মানব শরীরের গঠন সম্পর্কে জানি। কিভাবে মায়ের জরায়ুর মধ্যে ধীরে ধীরে একটি মানব শিশুর শরীর বিকাশিত হয়। শুক্রানু ও ডিম্বানুর মিলনের পর, মায়ের পেটে যে, ভ্রূনের সৃষ্টি হয় তা মূলত এক খন্ড মাংশপিন্ড ছাড়া আর কিছু নয়। এ ভ্রূনই ধীরে ধীরে পূর্ণাঙ্গ মানব শিশুতে রূপান্তরিত হয়।
আমরা জানি শুক্রানু ও ডিম্বানুর মিলনের ফলে জাইগোটের (zygote) সৃষ্টি হয়। সে জাইগোটে প্রথমে থাকে মাত্র দুটি কোষ বা (cell) তার পর দুটি থেকে চারটি, চারটি থেকে আটটি, আটটি থেকে ষোলটি, এভাবে কোষের সংখ্যা জ্যামিতিক হারে বাড়তে থাকে। ক্রমবর্ধমান ওই কোষগুলো বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত হয়ে যায় এবং কিছু কোষ মিলিত হয়ে হাত সৃষ্টি করে, কিছু কোষ সৃষ্টি করে শরীরের অঙ্গ-প্রতঙ্গ। কিছু কোষ মিলিত হয়ে সৃষ্টি করে চোখ ইত্যাদি ইত্যাদি।
আরো আশ্চর্যের ব্যপার হচ্ছে প্রতিটি কোষ জানে যে, কোথায় তাকে যেতে হবে এবং কোন কোষগুলোর সঙ্গে মিলিত হয়ে কোন অঙ্গ সৃষ্টি করতে হবে। মায়ের পেটে ভ্রূনের বিকাশিত হবার অত্যাশ্চর্য প্রকৃয়া সম্পর্কে একটা স্বচ্ছ ধারণা পাওয়া যায় নিচের উদৃতি থেকে।

‘‘গবেষনাগারের উপযুক্ত পরিবেশে (ক্যালসিয়ামের পরিমাণ হ্রাস করে) যদি আমরা ভ্রূণের সকল কোষকে যে কোষগুলো বিভিন্ন অংগ সৃষ্টির জন্য নির্ধারিত আলাদা করে কেলি এবং পরে আবারো উপযুক্ত পরিবেশে সেগুলোকে এলোমেলো ভাবে মিলিয়ে দেই তবে দেখা যাবে যে, কোষগুলো ঠিকই পরস্পরকে চিন্তে পারছে এবং বিভিন্ন অংগের জন্য নির্ধারিত কোষগুলো ঠিকই মিলিত হয়ে ভিন্ন ভিন্ন গ্রূপ সৃষ্টি করছে।’’

অর্থাত কোন কোন কোষ মিলে কোন কোন অংগ গঠিত হবে তা পূর্ব নিধারিত। শুধু তাই নয় কোষগুলো নিজেদের কাজ সম্পর্কেও সম্যক ওয়াকিফ হাল। হাত সৃষ্টির জন্য নির্ধারিত কোষগুলোর একটিও কখনো চোখ সৃষ্টির জন্যে নির্ধারিত কোষগুলোর সঙ্গে মিলিত হবে না।

কারণ একটি নির্দিষ্ট অঙ্গের জন্য নির্ধারিত কোষগুলো পরস্পরকে ভালোভাবে চেনে। ভ্রূণের এই কোষগুলোর কোন ব্রেইন নেই, নেই কোন নার্ভাস সিষ্টেম, চোখ বা কান। তাহলে এরা কি প্রকারে একে অপরকে চিনতে পারে? কিছু পরমানুর সমন্বয়ে গঠিত এবং চেতনা ও জ্ঞান বুদ্ধিহীন এই কোষগুলি কি প্রকারে সমবৈশিষ্ট্য সম্পন্ন অন্য কোষকে ভিন্ন বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন বহু কোষের মধ্য থেকে আলাদা করতে পারে? কিভাবে এরা জানে যে, এরা মানব শিশুর জন্মের প্রক্রিয়ার এক পর্যায়ে পরস্পর মিলিত হয়ে একই অঙ্গ গঠন করবে? অচেতন পরমানুর সচেতন কার্যাবলীর পেছনে কোন শক্তি কাজ করছে?
খ) সকল বৈজ্ঞানিকদের ঐক্যমতানুযায়ী সর্বসম্মত মত এই যে, কোন জড় বস্ত্তকে বাইরের শক্তি দ্বারা নড়া-চড়া না করালে তা নড়েনা এবং ধাক্কা বা অন্য কোন ভাবে উহাতে গতি সৃষ্টি না করলে গতিশীল হয় না। এখন প্রশ্ন হল- মায়ের পেটে হৃদপিন্ডের স্পন্দন শুরুর পেছনে কারণ কি?

গ) শুক্র কীট ও ডিম্বকোষ মিলিত হয়ে জরায়ুর অনেকগুলি ছিদ্রপথের যে কোন একটি দিয়ে ঢুকে পড়লে বাকি সবগুলো ছিদ্রপথ আপনা-আপনি বন্ধ হয়ে যায় কেন?
ঙ) সায়োভিক এসিড দেহে বিদ্যমান থাকা সত্বেও মানুষের মৃত্যু হয় কেন?

চ) শিক্ষা দীক্ষা ব্যতীত মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব হওয়া সত্যেও কোন কোন কাজ করতে সক্ষম হয়না। কিন্তু মৌমাছি শিক্ষা দীক্ষা ট্রেনিং ছাড়াই কেমন করে ইঞ্জিনিয়ারের মত সঠিক মাপ জোকের দ্বারা আশ্চর্য জনক ঘর বানায়। কেমন করে ওরা মধু সংগ্রহ ও সংরক্ষণের প্রকৃয়া জানে? উপকারি ও ক্ষতিকর মধুর মধ্যে পার্থক্য করতে পারে?

ছ) লজ্জাবতী গাছ স্পর্সের দ্বারা কেন বুজে যায়?

জ) স্বাস্থ্যকর পরিবেশে যথা নিয়মে স্বাস্থনীতি পালন করা সত্যেও মানুষ কেন অসুস্থ হয়? আবার স্বাস্থ্যনীতি জ্ঞানহীন ব্যক্তি অস্বাস্থকর পরিবেশে বসবাস করেও সুস্থ থাকে কেন?

বস্ত্ত বাদীদের কাছে এসব প্রশ্নের সঠিক কোন উত্তর নেই। কিন্তু আকল বুদ্ধি ও যুক্তির নিরীখে উত্তর মাত্র একটিই হতে পারে। তা হচ্ছে ঠিক সেভাবেই তা সৃষ্টি হয়েছে।

কুরআন শরীফের বিভিন্ন স্থানে আল্লাহ তা’য়ালা বলেছেন যে, প্রত্যেক জিনিষ সৃষ্টির পর উহাকে একটা হেদায়েত দিয়েছেন। অর্থাত জীবন ধারণের প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা সৃষ্টিগতভাবেই প্রত্যেক জিনিষের মধ্যে দিয়েছেন।

কুরআনুল কারীমের ভাষ্য অনুযায়ী আল্লাহর দিক নি©র্দশনায় প্রাণী ও অন্যান্য জড় বস্ত্তসহ সব কিছুই শামিল। পৃথিবীতে জলে বা স্থলে ছোট বড় যত প্রকারের প্রাণী আছে; সকল প্রাণীই সৃষ্টিগত ভাবেই খোদা প্রদত্ত দিক নির্দেশনা প্রাপ্ত।
ডিম ফুটে মুরগীর বাচ্চা বের হওয়ার পর পরই কেন পানিতে ঝাপিয়ে পরে না আর হাসের বাচ্চা কেন পড়ে? তেমনিভাবে গরুর বাছুর, কুকুর ও বিড়াল ছানা এসবকে বলে দেওয়া ছাড়াই কেন নিজ নিজ পছন্দ মত নির্ধারিত কিছু খাদ্য খায়? এ প্রশ্নের কোন উত্তর নেই। আকল ও যুক্তির নিরীখে উত্তর শুধুমাত্র একটিই হতে পারে; তা হচ্ছে- আল্লাহই ওদেরে বাতলিয়ে দিয়েছেন।
কুরআন পাকের ভাষায়-
الَّذِي أَعْطَىٰ كُلَّ شَيْءٍ خَلْقَهُ ثُمَّ هَدَىٰ ﴿طه: ٥٠﴾
অর্থাৎ যিনি প্রত্যেক বস্তুকে তার যোগ্য আকৃতি দান করেছেন, অতঃপর (প্রত্যেক প্রাণীকে তার জীবন রক্ষার স্বার্থে) পথপ্রদর্শন করেছেন।
১০টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

প্রজাতির শেষ জীবিত প্রাণ !

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৩ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫১



বিবিসির একটা খবর চোখে এল সেদিন । উত্তরাঞ্চলীয় সাদা গন্ডার প্রজাতির শেষ পুরুষ গন্ডারটি মারা গেছে । তার নাম ছিল সুদান । মৃত্যুর সময় তার বয়স ৪৫। বিবিসির সংবাদটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ এবং পরিমার্জিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর মধ্যে সে একজন ।।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ১৩ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯



আপনারা কতজন Umma Kulsum Popi চেনেন, আমি ঠিক জানি না। আমার পর্যবেক্ষণ মতে, বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ এবং পরিমার্জিত কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের একজন হলেন উনি। যদি বলি দেশের সেরা পাঁচজন কনটেন্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিস অস্বীকার করে রাসূলের (সা.) আনুগত্য সম্ভব

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৩ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সূরাঃ ৪ নিসা, ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি তোমরা আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস কর তবে তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর, আর আনুগত্য কর রাসুলের, আর যারা তোমাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

=কবিতাগুলো যেনো এক একটি মধুমঞ্জুরী ফুল=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:২০



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনের মাধুরী মিশিয়ে যে কবিতা লিখি
কবিতাগুলো যেনো আমার এক একটি মঞ্জুরী লতা ফুল,
মনের ডালে ডালে রঙবাহারী রূপ নিয়ে
ঝুলে থাকে কবিতা দিবানিশি
যে কবিতার সাথে নিত্য বাস,
তাদের আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পোষ্টে যদি ক্রমাগতভাবে ০ কিংবা ২/১'টি মন্তব্য পেতে থাকে, বুঝবেন যে, সোনাগাজী সেমি-ব্যানে আছে!

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৭



আপনার পোষ্ট যদি ক্রমাগতভাবে ০ কিংবা ১'টি মন্তব্য পেতে থাকে, তখন খোঁজ নিলে দেখবেন যে, সোনাগাজী সেমি-ব্যানে আছে!

কোন বিষয়ের উপর অনেক মানসম্পন্ন পোষ্ট লিখলেও সামুতে আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×