আমরা জন্মের পর হতেই পৃথিবীর অগণিত জীব জানোয়ার গাছপালা ফুল ফল এবং রকমারী বিভিন্ন উপাদানে গঠিত অনেক বস্ত্ত সামগ্রীই দেখে আসছি। কিন্তু এসবের উদ্দেশ্য ও সৃষ্টি রহস্য সৌর তাত্বিক বিষয়াদী গভীরভাবে উপলব্ধি ও অনুধাবনের চেষ্টা করি না।
কম্পিউটার, টিভি, রকেট ইত্যাদির আবিষ্কারকদের দিকে বিস্ময়ে ও পলকহীন নেত্রে তাকিয়ে থাকার কারণে নীচের দিদে তাকানো আমাদের সময় হয় না।
আমাদের খোলা চোখের খোলা পর্দায় সদা বিচিত্র ধরণের কত কিছুই না ভাসছে। সবগুলুই দেখি কিন্তু বুঝতে চেষ্টা করি না।
আমাদের ঘরে শত শত বার ডিম ফেটে বাচ্চা বের হতে দেখছি। কিন্তু কিভাবে ও কি করে কিছু বিজল ও কুসুম মাত্র ২১/২২ দিনে রক্ত, মাংস, হাড্ডি, দিল, গোর্দা,কলিজা, খাদ্যনালী, পাকস্থলী, অন্ননালী এবং ঠোঁট ও পাখায় রূপান্তরিত হয়ে এই মৃত ডিমটি যিন্দা বাচ্চার আকারে বের হয়।
মুরগির উপরে তার মনিবের কোন নীতি বিধান বা আদেশ নিষেধ ছাড়া কেনই বা মুরগির দানা পানি ও আরাম আয়েশ পরিত্যাগ করে ডিমে তাদের পাখা দ্বারা ঢেকে রাখা, ও চালাচালী করা, ২১ দিন পুর্ণ হবার পর বাচ্চার ঠোট সোজা ঠোকর দিয়ে ডিম ভেঙ্গে বাচ্চা বের হবার সুযোগ করে দেওয়া, বাচ্চা বের হবার পর শত্রু মিত্রের পরিচয় পাওয়া ও মায়ের আওয়াজের সংকেত বুঝা ও চলাফেরা করার শক্তি ও অনুভূতি ইত্যাদি কি আমাদেরকে কোন অদৃশ্য স্রষ্টার অস্তিত্ত্বের ইংগিত দেয় না?
মুরগি ছাড়াও অন্যান্য হাজারো ধরণের পশু-পাখি আমরা প্রতিদিন দেখি। এসবের আকার আকৃতি, জন্মের পর থেকেই এদের অনুভূতি শক্তি, প্রত্যেকটির সাথে খাপ খাওয়ানো বা সামঞ্জস্য পূর্ণ গঠন প্রণালী, এসবের খাদ্য ও বাসস্থানের খাপ খাওয়ানো উপযোগিতা, প্রত্যেকটির খাদ্য অনুপাতে হযম শক্তি ও এসবের সূণিপূণ ব্যবস্থাপনা কি কারণে হল? শিকার ধরার বা খাদ্য আহরণের কৌশল ও প্রক্রিয়া কোন ট্রেনিং সেন্টার হতে ওরা দিয়ে আসল। এসব ব্যাপারে চিন্তা ফিকিরের আমাদের সময় নেই।
আমরা যেভাবে ডিম থেকে বাচ্চা বের হতে দেখি সেই ভাবে গাছের ডালপালা, পাতা ও বীজ থেকে গাছ হতে দেখি, কিন্তু কেন মানব কর্তৃক নির্মিত বিভিন্ন যন্ত্রপাতি হতে আরেকটি যন্ত্র ও মেশিন বের হতে দেখি না?
সকল পশু পাখী কেন শিশু কাল থেকেই শক্তি সামর্থের অধিকারী হয় আর সৃষ্টির সেরাজীব শিশু অবস্থায় কেন দূর্বল অবুঝ ও অসহায় অবস্থায় থাকে দীর্ঘ দিন?
সৃষ্টি বিষয়ক অত্যাশ্চর্য ও মহা বিস্ময়কর বিষয় বস্ত্ত নদীর বিরামহীন স্রোতের মতই সদা আমাদের চোখের সামনে দিয়ে বয়ে যাচ্ছে কিন্তু এসব আমাদের চোখে স্বাভাবিক বিষয় বলেই অনুভূত হয়। এ কারণেই আমরা চিন্তা করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করি না।
একটি ক্ষুদ্র পিপীলিকার মাঝে ক্ষুধা পিপাসা ও খাদ্য সংগ্রহের চিন্তা ফিকির আছে। কিন্তু এত ক্ষুদ্র প্রাণীটির মধ্যে কোথায় খাদ্য নালী, কোথায় পাকস্থলী আর কোথায় বা চিন্তা ফিকিরের মগজ এ বিষয়ে চিন্তা করি না।
মোট কথা, সৃষ্টির এসব বিষয়ে চিন্তা ফিকির করলে অবশ্যই ন্যূনতম জ্ঞান-বুদ্ধি সম্পন্ন একজন মানুষও তার সৃষ্টিকর্তা মহা ক্ষমতাধর সেই আল্লাহকে বুঝতে সক্ষম।