somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রম্য রচনা হতেও পারে।

২১ শে মে, ২০১৪ ভোর ৪:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

চলার পথে কত ঘটনাইতো ঘটলো, কতক ভুলে গেছি কতক মনে আছে,সেই মনে থাকা কিছু মজার ঘটনা ব্লগ বাড়িতে বাধিয়ে রাখলাম।

২০০৬ সাল।

জগন্নাথে পড়ি অস্থায়ী নিবাস কেরাণীগজ্ঞ।স্বল্প খরচে থাকার জন্য এর চেয়ে ভালো যায়গা ঢাকার আশে পাশে কমই আছে।প্

এক ভদ্র লোকের দুই ছেলেকে পড়াই, উভয়েই সপ্তম শ্রেণির ছাত্র।

পড়াশোনায় এদের চেয়ে অমনিযোগী ছাত্র আমার লাইফে আর দেখি নাই।

সুতরাং এদেরকে পড়াতে গেলে লাঠি একটা লাগবেই, হাতের কাছে লাঠি রেখে পড়ানোর কাজ এবং মাঝে মাঝে লাঠির সদব্যাবহার চলে ।

সেদিনও এভাবেই চলছিলো।

বাধসাধলো ভদ্রলোকের তিন বছর বয়সি আরেকটা পুত্র সন্তান (তাকে কখনো প্যান্ট পরা অবস্থায় দেখিনি) অগ্রজদের এরকম প্রহৃত হতে দেখে হয়তো অনুজের মনে মায়ার সন্চার হলো, পিছন থেকে চুপি চুপি এসে লাঠি টা নিয়ে দিলো ভৈ দৈাড়, তাকে আর পায় কে।

এদিকে আমার দু ছাত্র কে পড়াতে লাঠির বিকল্প নেই, অগত্যা আর একটা লাঠি জোগাড় করা হলো এবং ফলাফল যা হবার তাই হলো।

৩য় বারে সতর্ক হয়ে গেলাম, আবারো সে একই কাজ করতে চাইলো ফলাফল উন্মুক্ত পশ্চাৎদেশে হালকা লাঠির আঘাত।

কিছুক্ষন দরজার কাছে দাড়িয়ে কাদলো এর পর চলে গেলো।

আমি যথারিতি পড়ানোয় মনোনিবেশ করলাম, বলা প্রয়জন আমি চেয়ারে বসা ছিলাম ছাত্রদ্বয় ছিলো খাটে বসা বাইরে যাবার দরজা ছিলোা আমার ঠিক পিছনে।

হঠাৎ আমার একজন ছাত্র প্রচন্ড জোরে "স্যার স্যার" বলে চিৎকার দিয়ে উঠলো। তার দৃষ্টি বলছিলো আমার পিছন থেকে কিছু আসছে।
এবং সেটা ভয়ংকর।

লাফ দিয়ে চেয়ার থেকে উঠে পড়া মাত্র খট করে কিছু একটা চেয়ারে পড়লো।

মাই গড সেই পিচ্চিটা রান্না ঘর থেকে ইয়া বড় একটা বটি নিয়ে এসেছে।
সময় মত চেয়ার না ছাড়লে এতক্ষনে পিঠে মোটামুটি একটা ফ্যাকচার হয়ে যেত।

বড় ভায়েরা পড়িমড়ি করে যেয়ে তাকে ধরলো।

প্রচন্ড আক্রোশে তার বলা ঢাকাইয়া ভাষার কথা গুলো মনে হলে আজও হাসি পায়।

"শালার স্যার তরে আইজ মাইরাই ফালামু রে স্যার" ।



সবে মাত্র চাকরি পেয়েছি।

সিনিয়র কলীগরা তখন পরম পুজনীয়।
তাদের এক কথা একশো কথার সমান।

এমনই এক সিনিয়র কলিগের সাথে দুপুরের খাবার সেরে নিতাম হোটেলে।

অন্যান্য বেলায় যাই হোক দুপুরের খাবারটা যেমন তেমন খেতে পারিনা।

সিনিয়র কলীগটি (নাম বলতে চাচ্ছি না) প্রথম দিন হোটেলের চেয়ারে বসেইবলল "দেখুন দুপুরের খাবার এখন থকে যেহেতু একসাথে খাবো সুতরাং কিছু টাকা বাচানো যেতেই পারে"।

আগেই বলেছি একশো কথার সমান।

নত মস্তকে মেনে নিলাম।

অর্ডার দিলেন।

খাবার আসলো, ভাত তিন প্লেট, এক পিস মাছ এক বাটি ডাল।

একটা মাছ ভাগ করা হলো চামছ দিয়ে দেড় প্লেট করে ভাত একেক জনের জন্য। হোটেলের এক প্লেট ভাত যে কতটুকু তা অনেকেই জানেন।/:)

খাওয়া শেষে বলতে হলো কেমন হইলো।
আমার তখন শোকে কাতর অবস্থা, সামনের দিনের দুপুরগুলো নিয়ে যারপরনাই শংকিত।
স্মিথ হাসি দিলাম যার অর্থ হ্যা বা না উভয়ই হইতে পারে।

এক শনিবার দুপুরে খাবার টেবিলে তাকে চরম আনন্দিত মনে হলো।

"কি ভাই এত খুশি খুশি"?

কঠিন একটা জিনিষ আবিষ্কার করছি বুঝলা?

গতকাল বিকালে এক দাওয়াতে গেছিলাম , খাওয়ার পর্ব শেষে সিগেরেট নিতে দোকানে গিয়ে দেখলাম কলা ঝুলায় রাখছে, কি মনে করে একটা খেয়ে দেখি মজার বিষয় পেটে আর খালি যায়গা নাই।
"কলা একটা জটিল ফল বুঝছ"?

তা বিচি কলাকে একটু জটিলই মনে হয় বৈকি? মুখে কিছু বললাম না।

দুপুরে এক প্লেট ভাত খেয়ে কমে গেল বিনিময়ে ২ টাকা পিসের কলা জুটে গেল। ঢাকায় যে সব পাওয়া যায় এমন সুত্র মেনে ইন্চ তিনেক সাইজের কলা ২ টাকায় এমন দোকানের নিয়মিত কাষ্টমার হয়ে গেলাম।

কেন যে সিনিয়র সাহেব আফ্রিকায় জন্মায় নাই মাথার ভেতর এই চিন্তা ফুটবল খেলে বেড়াত।

দুঃসহ এই যন্ত্রনা থেকে আমাকে মুক্তি দিল অফিসের ম্যানেজমেন্ট সবার জন্য দুপুরের খাবারের মাধ্যমে।

আজও কলা দেখলে মনে পড়ে সেই বিখ্যাত উক্তি "কলা একটা জটিল ফল " ।



২০০২ সাল।
এইচ এস সি পরীক্ষা দিয়ে বেকার সময় কাটাচ্ছিলাম কয় আকাইম্যা বন্ধু।

সে সময়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে "ভাইস চেয়ারম্যান" নামে মহিলাদের জন্যে একটা পোষ্ট ক্রিয়েট করা হয়েছে, একজন করে মহিলা প্রতি ওয়ার্ড থেকে নির্বাচিত হয়ে আসবে।

ব্যাপক নির্বাচনি প্রচারনায় আমরা ক বন্ধ ঝাপিয়ে পড়লাম এক সুন্দরী ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থীনির (লুল সমঝায়েন না আবার :P)।

তো সে সময়ে নির্বাচনে চকলেট আর বিড়ি ব্যাপক বিলানো হতো।

মহিলার সাথে দেখা করতে গেলে ধরায়ে দিলো এক ব্যাগ চকলেট, দু দিনের মাথায় আবার দেখা করতে গেলে আরও এক ব্যাগ, পরদিন লোক মারফত আরো এক ব্যাগ পাঠালো ।

লোককে দেয়া দুরের কথা আমরা কয় বন্ধুতো ওভারটাইম করে চকলেট খাচ্ছি সে সময়ে।

তো সেই মহিলা আসছে আমাদের এলাকায়, বিভিন্ন কথার ফাকে হঠাৎ জানতে চাইলো "চকলেট দিচ্ছেন লোককে ঠিকমত"?

এক বন্ধু পাশে থেকে বলে উঠলো "কি বলেন ম্যাডাম আমরা তো সারা দিন চকলট নিয়েই থাকি, চকলেট ছাড়া আমরা এখন ভা্তই খাইনা" ।

মহিলা কি বুঝলো জানিনা তবে তিনি সাইডে সরে গেলে আমরা হাসতে হাসতে একে অন্যের গায়ে গড়িয়ে পড়লাম।


সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে মে, ২০১৪ রাত ২:০০
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস শুধু দেশের রাজধানী মুখস্ত করার পরীক্ষা নয়।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:১৪

"আমার বিসিএস এক্সামের সিট পরেছিলো ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এ, প্রিপারেশন তো ভালোনা, পড়াশুনাও করিনাই, ৭০০ টাকা খরচ করে এপ্লাই করেছি এই ভেবে এক্সাম দিতে যাওয়া। আমার সামনের সিটেই এক মেয়ে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×