ব্লগার জলিল সুমন এবং ব্লগার মেলবোর্নের মধ্যকার একটি ব্লগিয় কথন হুবহু তুলে ধরা হল। কারন এখানে আমি অনেক কিছু জানতে পেরেছি-


জলিল সুমন বলেছেন:

এই কথাগুলো যেন কেমন কেমন লাগেঃ

কোরানের সূরা আল বাক্বারাহর ২১৬ নং আয়াতে আছে “তোমাদের উপর যুদ্ধ ফরয করা হয়েছে, অথচ তা তোমাদের কাছে অপছন্দনীয়....”

সূরা আল বাক্বারাহর ১৯১ নং আয়াতে আছে “আর তাদেরকে হত্যাকর যেখানে পাও সেখানেই…...”

সূরা আল বাক্বারাহর ১৯৩ নং আয়াতে আছে “তোমরা তাদের সাথে লড়াই কর, যে পর্যন্ত না ফেতনার অবসান হয় এবং আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠিত হয়…”

সূরা আন নিসার ৮৪ নং আয়াতে আছে, “আল্লাহর রাহে যুদ্ধ করতে থাকুন, ....আর আপনি মুসলমানদেরকে উৎসাহিত করতে থাকুন...“

সূরা আল-আনফালের ১২ নং আয়াতে আছে, “...আমি কাফেরদের মনে ভীতির সঞ্চার করে দেব। কাজেই গর্দানের উপর আঘাত হান এবং তাদেরকে কাট জোড়ায় জোড়ায়।”

সূরা আল-আনফালের ৩৯ নং আয়াতে আছে, “আর তাদের সাথে যুদ্ধ করতে থাক যতক্ষণ না ভ্রান্তি শেষ হয়ে যায়; এবং আল্লাহর সমস্ত হুকুম প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়...”

সূরা আত তাওবাহের ৫ নং আয়াতে আছে “......মুশরিকদের হত্যা কর যেখানে তাদের পাও, তাদের বন্দী কর এবং অবরোধ কর। আর প্রত্যেক ঘাঁটিতে তাদের সন্ধানে ওঁৎ পেতে বসে থাক......”

এই সকল প্রশ্নের জবাবে

মেলবোর্ন বলেছেন:

জলিল সুমন আয়াতের মঝখান থেকে তুলে দিলে তো হবে না আয়াতটা কেন নাযিল হয়েছিল/ কোন অবস্থায় তা বুঝতে হবে যেমন ১নং টা সুরা বাকারার " ২১৬ নং আয়াতে আছে “তোমাদের উপর যুদ্ধ ফরয করা হয়েছে, অথচ তা তোমাদের কাছে অপছন্দনীয়....” এবং ২১৭ নং আয়াতেই বলা আছে "সম্মানিত মাস সম্পর্কে তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে যে, তাতে যুদ্ধ করা কেমন? বলে দাও এতে যুদ্ধ করা ভীষণ বড় পাপ। আর আল্লাহর পথে প্রতিবন্দ্বকতা সৃষ্টি করা এবং কুফরী করা, মসজিদে-হারামের পথে বাধা দেয়া এবং সেখানকার অধিবাসীদেরকে বহিস্কার করা, আল্লাহর নিকট তার চেয়েও বড় পাপ। আর ধর্মের ব্যাপারে ফেতনা সৃষ্টি করা নরহত্যা অপেক্ষাও মহা পাপ। বস্তুতঃ তারা তো সর্বদাই তোমাদের সাথে যুদ্ধ করতে থাকবে, যাতে করে তোমাদিগকে দ্বীন থেকে ফিরিয়ে দিতে পারে যদি সম্ভব হয়"

এই ২১৬ আয়াত টা সেই সময়ে কোরআইশদের জন্য যুদ্ধ করতে উদ্ভুদ্ধ করার জন্য আর বলা হয়েছে তখন হজ্জের মসে সম্মানিত মাস সম্পর্কে তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে যে, তাতে যুদ্ধ করা কেমন? বলে দাও এতে যুদ্ধ করা ভীষণ বড় পাপ।

আপনি সূরা আল বাক্বারাহর ১৯১ নং আয়াতে আছে “আর তাদেরকে হত্যাকর যেখানে পাও সেখানেই…...” বলে আবার সেই পুরো আয়াত না দিয়েই যেখানে ভুল বোঝা যায় সেটা দিয়েছেন ১৯০ নং আয়াতে দেখুন কি বলে "আর লড়াই কর আল্লাহর ওয়াস্তে তাদের সাথে, যারা লড়াই করে তোমাদের সাথে। অবশ্য কারো প্রতি বাড়াবাড়ি করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সীমালঙ্ঘনকারীদেরকে পছন্দ করেন না। "
১৯১ "আর তাদেরকে হত্যাকর যেখানে পাও সেখানেই এবং তাদেরকে বের করে দাও সেখান থেকে যেখান থেকে তারা বের করেছে তোমাদেরকে। বস্তুতঃ ফেতনা ফ্যাসাদ বা দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি করা হত্যার চেয়েও কঠিন অপরাধ। আর তাদের সাথে লড়াই করো না মসজিদুল হারামের নিকটে যতক্ষণ না তারা তোমাদের সাথে সেখানে লড়াই করে। অবশ্য যদি তারা নিজেরাই তোমাদের সাথে লড়াই করে। তাহলে তাদেরকে হত্যা কর। এই হল কাফেরদের শাস্তি। "
আবার দেখুন ১৯২ নং আয়াতে কি বলা আছে " আর তারা যদি বিরত থাকে, তাহলে আল্লাহ অত্যন্ত দয়ালু।"

এবং ১৯৩ নং আয়াত "আর তোমরা তাদের সাথে লড়াই কর, যে পর্যন্ত না ফেতনার অবসান হয় এবং আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠিত হয়। অতঃপর যদি তারা নিবৃত হয়ে যায় তাহলে কারো প্রতি কোন জবরদস্তি নেই, কিন্তু যারা যালেম (তাদের ব্যাপারে আলাদা)। "

সুরা বাকারার ১৯৪ নং আয়াত "সম্মানিত মাসই সম্মানিত মাসের বদলা। আর সম্মান রক্ষা করারও বদলা রয়েছে। বস্তুতঃ যারা তোমাদের উপর জবর দস্তি করেছে, তোমরা তাদের উপর জবরদস্তি কর, যেমন জবরদস্তি তারা করেছে তোমাদের উপর। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং জেনে রাখ, যারা পরহেযগার, আল্লাহ তাদের সাথে রয়েছেন।"

সুরা নিসা আয়াত ৮৪ :আল্লাহর রাহে যুদ্ধ করতে থাকুন, আপনি নিজের সত্তা ব্যতীত অন্য কোন বিষয়ের যিম্মাদার নন! আর আপনি মুসলমানদেরকে উৎসাহিত করতে থাকুন। শীঘ্রই আল্লাহ কাফেরদের শক্তি-সামর্থ খর্ব করে দেবেন। আর আল্লাহ শক্তি-সামর্থের দিক দিয়ে অত্যন্ত কঠোর এবং কঠিন শাস্তিদাতা।(O Messenger) fight in the way of God. You are responsible only for yourself. Inspire the believers (to conquer all fear). God may well curb the might of the unbelievers (who are bent upon destroying the System). For God is the Strongest in Might, and Strongest in the ability to deter."

আপনি আরো বলেছেনসূরা আল-আনফালের ১২ নং আয়াতে আছে, “...আমি কাফেরদের মনে ভীতির সঞ্চার করে দেব। কাজেই গর্দানের উপর আঘাত হান এবং তাদেরকে কাট জোড়ায় জোড়ায়।”

পুরা আয়াতটা এরকম :"যখন নির্দেশ দান করেন ফেরেশতাদিগকে তোমাদের পরওয়ারদেগার যে, আমি সাথে রয়েছি তোমাদের, সুতরাং তোমরা মুসলমানদের চিত্তসমূহকে ধীরস্থির করে রাখ। আমি কাফেরদের মনে ভীতির সঞ্চার করে দেব। কাজেই গর্দানের উপর আঘাত হান এবং তাদেরকে কাট জোড়ায় জোড়ায়।" আমার মনে হয় আপনার কাজেই গর্দানের উপর আঘাত হান এবং তাদেরকে কাট জোড়ায় জোড়ায় বলাতে সমস্যা লাগছে কেন বলা হয়েছে কারন দেখুন Fawq al-a’naaq and Kulla banan are exactly similar allegories as we find in 47:4.No commander, during active combat with swords and arrows, would order his soldiers to aim only for ‘above the necks’ and ‘at every one of their finger tips’. Would not that be a sure way to lose the battle? ৪৭) সূরা মুহাম্মদ 8 নং আয়াতে
অতঃপর যখন তোমরা কাফেরদের সাথে যুদ্ধে অবতীর্ণ হও, তখন তাদের গর্দার মার, অবশেষে যখন তাদেরকে পূর্ণরূপে পরাভূত কর তখন তাদেরকে শক্ত করে বেধে ফেল। অতঃপর হয় তাদের প্রতি অনুগ্রহ কর, না হয় তাদের নিকট হতে মুক্তিপণ লও। তোমরা যুদ্ধ চালিয়ে যাবে যে পর্যন্ত না শত্রুপক্ষ অস্ত্র সমর্পণ করবে! একথা শুনলে। আল্লাহ ইচ্ছা করলে তাদের কাছ থেকে প্রতিশোধ নিতে পারতেন। কিন্তু তিনি তোমাদের কতককে কতকের দ্বারা পরীক্ষা করতে চান। যারা আল্লাহর পথে শহীদ হয়, আল্লাহ কখনই তাদের কর্ম বিনষ্ট করবেন না।

সূরা আল-আনফালের ৩৯ নং আয়াতে আছে, “আর তাদের সাথে যুদ্ধ করতে থাক যতক্ষণ না ভ্রান্তি শেষ হয়ে যায়; এবং আল্লাহর সমস্ত হুকুম প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়...”


আর ৩৯ নং আয়াতের তফসির/ বর্ননা
১।And fight them until there is no more corruption and so that the religion all of it belongs to Allah. Then if they do stop, Allah is in full view of whatever they are up to.

Fitnah: trial, corruption or the danger of attack.
Fatanah/yaftinu – to attack

২। Fight and subdue those who persist in aggression until persecution is no more, and absolute freedom of religion is established. People must be able to adopt a religion only for God’s approval, and as free choice (See verse on 2:193 and 12:108). If they cease from aggression, God is the Seer of their actions, and therefore you shall leave them alone.

দেখুন সূরা আল-আনফালের ৩৮ নং আয়াতে আছে "তুমি বলে দাও, কাফেরদেরকে যে, তারা যদি বিরত হয়ে যায়, তবে যা কিছু ঘটে গেছে ক্ষমা হবে যাবে। পক্ষান্তরে আবারও যদি তাই করে, তবে পুর্ববর্তীদের পথ নির্ধারিত হয়ে গেছে।"
In other words, Allah (swt) is sending the Quraish a warning. They are aware of the previous nations that were destroyed for attacking their Messengers after they had been warned.

সূরা আত তাওবাহের ৫ নং আয়াতে আছে “......মুশরিকদের হত্যা কর যেখানে তাদের পাও, তাদের বন্দী কর এবং অবরোধ কর। আর প্রত্যেক ঘাঁটিতে তাদের সন্ধানে ওঁৎ পেতে বসে থাক......

আগের ও পরের আয়াত দেখুন পুরো বিষয়টা পরিস্কার হবে :

আয়াত ৪: তবে যে মুশরিকদের সাথে তোমরা চুক্তি বদ্ধ, অতপরঃ যারা তোমাদের ব্যাপারে কোন ত্রুটি করেনি এবং তোমাদের বিরুদ্ধে কাউকে সাহায্যও করেনি, তাদের সাথে কৃত চুক্তিকে তাদের দেয়া মেয়াদ পর্যন্ত পূরণ কর। অবশ্যই আল্লাহ সাবধানীদের পছন্দ করেন।

আয়াত৫ :অতঃপর নিষিদ্ধ মাস অতিবাহিত হলে মুশরিকদের হত্যা কর যেখানে তাদের পাও, তাদের বন্দী কর এবং অবরোধ কর। আর প্রত্যেক ঘাঁটিতে তাদের সন্ধানে ওঁৎ পেতে বসে থাক। কিন্তু যদি তারা তওবা করে, নামায কায়েম করে, যাকাত আদায় করে, তবে তাদের পথ ছেড়ে দাও। নিশ্চয় আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। When the four Sacred Months are over (and if the idolaters are still aggressing, neither becoming law-abiding citizens of the State, nor emigrating), subdue them whichever tribe they may belong to. Take them captive, and besiege them, and prepare for them ambush. But if they repent from aggression, and help in the
consolidation of the Divine System and in setting up the Economic Order of Za-kaat, then leave their way free. Surely, God is Forgiving Merciful (so shall yoube). [The four Sacred Months forbidden for any warfare: From the 12th month,
Zil-Hajjah up to the 3rd month, Rabi’ul Awwal2:193-195, 9:36]

আয়াত ৬:আর মুশরিকদের কেউ যদি তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে, তবে তাকে আশ্রয় দেবে, যাতে সে আল্লাহর কালাম শুনতে পায়, অতঃপর তাকে তার নিরাপদ স্থানে পৌছে দেবে। এটি এজন্যে যে এরা জ্ঞান রাখে না।

************************************************

অশেষ ধন্যবাদ ব্লগার মেলবোর্নকে। আর এটা একটা শিক্ষাও যে আজকে আমাদের ধর্মকে কি কি ভাবে বিকৃত করা হচ্ছে। ইসলাম শান্তির ধর্ম- ধর্ম ব্যবসায়ীদের ধর্ম ইসলাম নয়।