somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কানাডার জীবন-১

২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১২ বিকাল ৪:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কানাডা আসার আগে সবচেয়ে বেশি যে ভয়টা পেয়েছিলাম সেটা হচ্ছে এখানকার ওয়েদার। কানাডার শীত নিয়ে অনেকের কাছ থেকে অনেক কথা শুনেছি। এখানে আসার আগে আমার প্রিপারেশও ছিল সেরকম। মানসিকভাবে প্রস্তুত হয়েই ছিলাম যে ভয়াবহ শীতের মধ্যে পড়তে হবে। এসে দেখি ভয়াবহ গরম। ভ্যাংকুভার এয়ারপোর্ট থেকে বেরিয়েই অবাক হয়ে দেখি গা পুড়ে যাওয়ার মত রোদ চারদিকে। গায়ের জ্যাকেটটা খুলে রাখতে বাধ্য হই।

ট্যাক্সি করে বাস স্ট্যান্ডের দিকে যাওয়ার পথে কিছুটা অবাক হই আশেপাশে তেমন উচু দালান কোঠা দেখতে না পাওয়ায়। বুঝতে পারি এখানে জায়গার তেমন অভাব নেই, এই জন্যই হয়ত হাইরাইজ দালান কোঠা তেমন নাই। আরেকটা ব্যাপার হচ্ছে বাড়িঘরগুলা ইট-রডের না, কাঠের। কাঠের ঘরগুলা শীতকালে গরম থাকে, এই জন্যই এভাবে বানান। আরেকটা জিনিস খুব অবাক করেছিল, সেটা হচ্ছে এখানকার নীরবতা। ঢাকার পরিচিত কোলাহলের সাথে প্রতিনিয়ত মেলানোর চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু কোলাহলের দিক দিয়ে তার ধারে কাছেও না এই সিটি। তবে রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা অনেক। আমাদের ট্যাক্সি একটু পরপর সিগনাল এ পড়ছিল। বুঝতে পারছিলাম জ্যাম না থাকলেও সিগনালে পড়ে অনেক সময় নস্ট হয় এখানে। তবে এখানে এক জায়গায় যাওয়ার অনেক বিকল্প পথ থাকায় হেভি ট্রাফিক রোড সহজেই এড়ানো যায়। লোকজন গুগল ম্যাপ এ ট্রাফিক ইনফো দেখে তারপর পথ সিলেক্ট করে। বসবাসযোগ্য নগরীর দিকে দিয়ে বিশ্বের মধ্যে ২য় অবস্থানে ভ্যাংকুভার, এরকম কিছু প্ল্যান না থাকলে সেটা হওয়ার কথা না।

বাসে করে আমার গন্তব্যে যাওয়ার পথে আশে পাশের প্রকৃতি দেখে ভয়াবহ মুগ্ধ হয়ে গেলাম। যতদূর চোখ যায় খালি পাহাড় আর পাহাড়। পাহাড়ের ঢালেই মানুষের বসবাস। রাস্তাগুলাও সব পাহাড়ের উপর। আসলে পুরো এলাকাটার সব কিছুই পাহাড়ের উপরে। পাহাড়ি উপত্যকার ঢালে এভাবে এত অসাধারণ একটা নগরী গড়ে উঠতে পারে না দেখলে বুঝতে পারতাম না। রাস্তায় যেতে যেতে এই অবারিত সৌন্দর্য দেখে প্রথম বারের মত কিছুটা ভাল লাগার জন্ম নিল কানাডার প্রতি। বাসের জানালা দিয়ে দেখতে পাচ্ছিলাম দূরে অনেক উচু পাহাড়ি রাস্তায় গাড়ি চলছে। ভাবছিলাম এত উপরে কিভাবে গাড়িগুলো যাচ্ছে। কিছুক্ষন পর দেখি আমাদের বাসও ওই উচ্চতায় উঠে গেছে। নিচে চোখ যেতেই চমকে যাই। তবে আমি বেশিক্ষন চোখ খোলা রাখতে পারি নি। ভয়াবহ ক্লান্তিতে পাশে বসা অচেনা অজানা লোকটার কাঁধে মাথা রেখে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম টের পাইনি।ঘুম থেকে উঠে দেখি রাত ৮টা বাজে। আমি আমার গন্তব্যে পৌঁছাই রাত ৮-৩০ এর দিকে।

কানাডা আসার পর প্রথম যে সমস্যাটায় পড়ি সেটা হচ্ছে ঘুমের সমস্যা। বাংলাদেশে যখন দিন, এখানে তখন রাত, আবার বাংলাদেশে যখন রাত, এখানে তখন দিন। সময়ের চক্র পুরো উলটে গেছে, কিন্তু অদ্ভুতভাবে আমার ঘুমের অভ্যাসটা সেই বাংলাদেশ সময়েই রয়ে গেছে।রাতে আমার ঘুম হয় না, ঘুম আসে সকালের দিকে। তাও অল্প কিছুক্ষন ঘুম হয়। আসল ঘুম আসে বিকালের দিকে, মানে বাংলাদেশ সময় গভীর রাতের দিকে। ঘুম থেকে উঠি মধ্যরাতে। এই অদ্ভূত ঘুমের অভ্যাসটা ক্লাস শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত রয়ে যায়। (চলবে)
২০টি মন্তব্য ১৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত যেসব বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ পাওয়া গেছে…

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:০৭




মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত যেসব বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ পাওয়া গেছে…
১. প্রথমে বলেছেন মৃতদের পেটে কাটাছেড়ার ডাহা মিথ্যা। পরে স্বীকার করেছেন দাগ থাকে।
২. আশ্রমে বৃদ্ধদের চিকিৎসা দেয়া হয় না। কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) পক্ষ নিলে আল্লাহ হেদায়াত প্রদান করেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:৪২



সূরা: ৩৯ যুমার, ২৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৩। আল্লাহ নাযিল করেছেন উত্তম হাদিস, যা সুসমঞ্জস্য, পুন: পুন: আবৃত। এতে যারা তাদের রবকে ভয় করে তাদের শরির রোমাঞ্চিত হয়।অত:পর তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগটা তো ছ্যাড়াব্যাড়া হয়ে গেলো :(

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৫৭



আমি আমার ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমে। ব্লগটির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারণ প্রথম আলো ব্লগ আমায় লেখালেখিতে মনোযোগী হতে শিখিয়েছে । সে এক যুগ আগের কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×