somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমাদের কথিত নারীস্বাধীনতাবোধ!

০১ লা মে, ২০১৫ সকাল ১০:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রাস্তা দিয়ে গাড়ি চলছে। চালক আপনি। খালি পেয়ে রাস্তার ঠিক মাঝ বরাবর ছুটছেন। এই অবাধ স্বাধীনতার লাগাম আপনাকে টেনে ধরতে হবে যদি আরেকটি গাড়ি বিপরীত দিক থেকে আসে। নইলে উভয়েরই ক্ষতিগ্রস্ত হবার সম্ভাবনা...

এখানে কয়েকটি বিষয়-
০১. অন্যের উপস্থিতি আপনার স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ন করতে পারে। অর্থাৎ স্বাধীনতার পরিধি কমিয়ে দিতে পারে। অন্যায়ভাবে নয়, ন্যায়সঙ্গতভাবেই। এখানে পূর্বের পরিধিটা বলবৎ রাখতে যাওয়াটাই হবে বরং অন্যায়।
০২. ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার জন্য সর্বত্র আপনার পক্ষ থেকে কোন অন্যায় বা কার্যকরণ পাওয়া জরুরী নয়। বরং সম্পূর্ণ নির্দোষ হওয়ার পরও আপনি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন অন্যের দোষে।
০৩. ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্য স্বাধীনতার পরিমাণ আংশিক কমে যেতে পারে। কারণ, স্বাধীনতা জান-প্রাণ, মান-সম্ভ্রব রক্ষার জন্যই। এটিকে ক্ষুণœ করার জন্য নয়।
০৪. গাড়িটি যদি ছোট হয় তাহলে একটি বড় গাড়ির যতটুকু রাস্তা পাওয়ার অধিকার ছোট গাড়ির জন্য ঠিক ততটুকু নয়। সুতরাং বুঝা গেল স্বাধীনতার অধিকার সাব্যস্ত হয় প্রয়োজন অনুপাতে।
০৫. সড়কবিহীন ক্ষেত-খামার, মানুষের ঘর-বাড়ির উপর দিয়ে একটি গাড়িকে চলার স্বাধীনতা দিলাম, লাভ নেই। এই স্বাধীনতা ভোগ করার সামর্থ মোটর গাড়ির নেই। সুতরাং কোন পর্যায়ে স্বাধীনতা পাওয়ার জন্য সেই স্বাধীনতাটুকু ভোগ করার সামর্থও থাকা লাগে।
০৬. স্বাধীনতার ভোগ করার সামর্থ আছে, রক্ষা করার সামর্থ নেই, তবুও লাভ নেই। অরক্ষিত স্বাধীনতা পরাধীনতারই নামান্তর। বরং ক্ষেত্রবিশেষ এরচেয়েও খারাপ।

এই পৃথিবীতে জন্ম নেওয়া প্রতিটি বনী আদমেরই এই অধিকার আছে এই পৃথবীর যে কোন জায়গায় যখন তখন চলতে পারা, থাকতে পারার অধিকার তার থাকা। একটি শর্তে, যদি এই পৃথিবীতে সেই লোকটি একা থাকে। যদি এই শর্তটি ক্ষুণ্ন হয় তাহলে তাঁর স্বাধীনতার বিষয়টিও ক্ষুণ্ন হবে উপর্যুক্ত বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজন অনুপাতে। তিন কিংবা চার বছরের একটি শিশুর অধিকার আছে দিনের ১টা হোক আর রাতের ১টা হোক অভিভাবকহীন পল্টন এলাকায় ঘুরে বেড়ানোর। আমার কিংবা আপনার কোনই অধিকার নেই তাঁর কোন ক্ষতি করার অথবা তাকে কিছু বলার। এরপরও এই স্বাধীনতাটুকু আমরা সেই শিশুটিকে দেই না তার নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে। এখানে আমরা ধরে নিতে পারি শিশুটি ভিক্টিম। তার নিরাপত্তা বিঘ্নিত কারীরাই মূলত অপরাধী। এরপরও আমরা শিশুর স্বাধীনতার উপরই হস্তক্ষেপ করছি! কারণ, স্বাধীনতার পরিমাণ সাব্যস্ত হয় তা ভোগ করতে পারার সামর্থকে বিবেচনায় নিয়ে। এখানে সামর্থ না থাকার কারণে স্বাধীনতার পরিধি কমিয়ে দিয়ে ভিক্টিমকে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে না বরং তাকে রক্ষা করা হচ্ছে।

নারীবাদীরাও স্বীকার করেন শারিরিক বিবেচনায় পুরুষের তুলনায় নারী দুর্বল। সুতরাং তাকে যত্রতত্র, যখন-তখন যে কোন জায়গায় চলার স্বাধীনতা দানের বেলায় আমরা কি এই দুর্বলতাটাকে কি বিবেচনায় নেব নাকি নেব না? যৌক্তিক জায়গা থেকে বের হয়ে গায়ের জোরে কোন মতবাদ সাব্যস্ত যদি করতে চাই, অথবা চাই নারীর এই দুর্বলতার সুযোগ পুরুষের জন্য অবারিত থাকুক তাহলে বলব- না, নারীর জন্য অধিকার সাব্যস্ত করার ক্ষেত্রে এই দুর্বলতাকে বিবেচনায় নেওয়ার কোন প্রয়োজন নেই। এতে প্রকারান্তরে ভিক্টিমের উপরই দায় চাপানো হয়।

আর যদি আমি যুক্তির পথে হাটি। হাটির স্বাধীনতা সাব্যস্ত হওয়ার স্বাভাবিক নিয়মের পথে তাহলে আমাকে এ কথা বলতেই হবে যে, নারীর চলাফেরার স্বাধীনতা সাব্যস্ত করার ক্ষেত্রে অবশ্যাই তার এই দুর্বলতা বিবেচনায় নেওয়া প্রয়োজন। প্রয়োজন স্বাধীনতার সাব্যস্ত হওয়ার অন্যান্য বিষয়গুলো নারীর ক্ষেত্রেও বিবেচিত হওয়া। দুর্বল লাঠিকে শক্তিশালী বলে শক্তির জায়গা লাঠিটি স্থাপন করা আর লাঠিটি সরাসরি ভেঙে ফেলা হুবহু একই কথা। নারীর এই দুর্বলতাকে আমি দুর্বলতা বললাম না। বললাম এসব নাথিং। তুমি বহুত শক্তিশালী। হাজারো পুরুষের সাধ্য কি তোমার সাথে লড়ার। এরপর টিএসসিতে ভালো মানুষের ভীড়ে কিছু খারাপ মানুষ দ্বারা এই নারীর বস্ত্রহরণ ঘটল। এই নারীর বস্ত্রহরণ প্রকারান্তরে কি আমিই করলাম???

আমি অবশ্যই স্বীকার করি একজন নারীর মানুষ হয়ে জন্মানোর কারণে যখন তখন যত্রতত্র যেমন তেমন পোষাকে চলার অধিকার তার আছে। তবে এটা সেই পৃথিবীতে যে পৃথিবীতে কোন পুরুষ থাকে না। অথবা থাকলেও যেই পৃথিবীতে নারীরা পুরুষের চেয়ে জন্ম থেকেই শক্তিশালী হয়ে জন্মায়, জন্মের পর নারীবাদীদের দ্বারা থিউরিটিক্যালি শক্তিশালী হয়ে উঠে না....
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা মে, ২০১৫ সকাল ১০:৪৩
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=আকাশে তাকিয়ে ডাকি আল্লাহকে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০১


জীবনে দুঃখ... আসলে নেমে
শান্তি গেলে থেমে;
আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে হই উর্ধ্বমুখী,
আল্লাহকে বলি সব খুলে, কমে যায় কষ্টের ঝুঁকি।

আমি আল্লাহকে বলি আকাশে চেয়ে,
জীবন নাজেহাল প্রভু দুনিয়ায় কিঞ্চিত কষ্ট পেয়ে;
দূর করে দাও সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

"ছাত্র-জনতার বেপ্লবের" ১৮ মাস পরে, আপনার ভাবনাচিন্তা ঠিক আগের মতোই আছে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৭



২০২৪ সালের পহেলা জুলাই "ছাত্র-জনতার বেপ্লব শুরু হয়, "৩৬শে জুলাই" উহা বাংলাদেশে "নতুন বাংলাদেশ" আনে; তখন আপনি ইহাকে ব্যাখ্যা করেছেন, ইহার উপর পোষ্ট লিখেছেন, কমেন্ট করেছেন; আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

×