আমি খুব অবাক হই ভেবে যে স্বাধীনতার ৪৩ বছর পরেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শুধু ধর্মের কারনে একটা বিভেদ তৈরি করা হয়ে আসছে।
এখানে অধ্যয়নরত মুসলমান ছাড়া বাকি সব ধর্মের ছাত্রদের একটি হলে (জগন্নাথ হল) সিট বরাদ্দ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় জন্মের সময় রাজনৈতিক বা ঐতিহাসিক নানা কারনে জগন্নাথ হলকে আলাদাভাবে গড়ে তোলা হলেও স্বাধীন বাংলাদেশে এরকম বিভেদ মানায় না, এবং সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনীয়। বরং সব ছাত্রদের যদি ধর্ম বিবেচনা না করে অনির্দিষ্টভাবে (randomly) বিভিন্ন হলে সিট দেয়া হয় আমি মনে করি সেটাই বিভিন্ন ধর্মের ছেলেদের মাঝে পারস্পারিক বোঝাপড়া (mutual understanding) এবং বন্ধুত্ব (friendship) বৃদ্ধি করবে। যা পরিণতিতে অসাম্প্রদায়িক ও প্রগতিশীল দেশ গঠনকে ত্বরান্বিত করবে।
যদি কেও যুক্তি দেখান তাতে ধর্ম পালনে সমস্যা হবে, আমি তাদের বলব একটু পাশেই তাকাতে। মেয়েদের হলে এরকম কোন বিভেদ নেই, অধিকাংশ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েই এরকম ব্যবস্থা নেই। যেকোনো হলে যেকোনো ধর্মের কেও থাকতে পারে। সেখানেত সমস্যা হচ্ছেনা। আর আমি নিশ্চিত ঐসব হলে আমার বোনরা কিংবা অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাইরা অবশ্যই ধার্মিকতায় পিছিয়ে নেই ।
তাছাড়া আমি বিশ্বাস করি আমার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেরা এত নিচু মানের বা নিচু মনের নয় যে নিজের বা পাশের রুমে একজন ভিন্ন ধর্মের কেও থাকলে তাদের জাত চলে যাবে বলে এর প্রতিবাদ জানাবে। বরং ঢাবি’র ছাত্রদের এই বিভেদই এক ধরনের দূরত্ব ও colonialism mentality তৈরিতে ভূমিকা রাখছে। উদাহরণ দেয়া আর প্রয়োজন মনে করছি না।
আমি আরও অবাক হই ভেবে যে এত বড় একটা গুরুত্বহীন বিভাজন এতদিন ধরে চলে আসছে, অথচ আমাদের অসাম্প্রদায়িকতার বুলি আওড়ানো বুদ্ধিজীবী এবং সরকারগুলো এর সমাধান এখনো করেনি কেন ??!