somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দু'পলকের দিল্লী দর্শন (মিশন কাশ্মীর এক্সটেন্ড টু দিল্লী-সিমলা-মানালিঃ ভারত ভ্রমণ ২০১৫)

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আগের পর্বঃ দাদাদের উঠোন পেড়িয়ে দিল্লী'র পথে (মিশন কাশ্মীর এক্সটেন্ড টু দিল্লী-সিমলা-মানালিঃ ভারত ভ্রমণ ২০১৫)

কানে হেড ফোন গুঁজে পছন্দের গান শুনছি আর ট্রেনের মৃদু দুলুনিতে দোল খাচ্ছি উপরের বাঙ্কে শুয়ে শুয়ে। ওপাশে মাঝের আর উপরের বাঙ্কে আমার অন্য চার ভ্রমণসঙ্গী একে একে ঘুমের কোলে হারিয়েছেন অনেকক্ষণ হল। একই বগীতে দুই কামরা পরে অন্য এক সিটে মনির ভাই আর ভিন্ন বগীতে মুক্তার ভাই এর আসন (প্রথম পর্বেই বলেছি টিকেট নিয়ে ভোগান্তির কথা; অনেক ঝুঁটঝামেলার পর ছড়ানো অবস্থায় টিকেট পাওয়া)। সবার ব্যাগ এন্ড ব্যাগেজ আমাদের কামরায় রাখা। যদিও উঠেছি রাজধানী এক্সপ্রেসে, সবচেয়ে নিরাপদ ট্রেন এই রুটে, তবুও এতগুলো লাগেজের নিরাপত্তা বলে কথা, থেকে থেকেই নীচের দিকে দৃষ্টি হেনে দেখে নিচ্ছিলাম। সারারাত ছিল রেলের কর্মচারী আর যাত্রীদের চলাচল, যদিও অনেক কমই ছিল, কিন্তু ‘সাবধানের মাইর নাই’ বলে কথা। যদিও এই কথা মিথ্যে হয়েছিল বোকা মানুষের বোকামিতে, সে কথা সময় মত জানতে পারবেন। এখন আসুন ফের ট্রেনের কামরায় ফিরে যাই।

ঠিক মাথার উপর এসি’র বাতাস পরিবহণের ছিদ্রগুলো বড্ড যন্ত্রণা দিচ্ছিল, পায়ের কাছ থেকে একটা কম্বল টেনে নিলাম। তার আগে বাসা থেকে সাথে করে নিয়ে যাওয়া চাদর দিয়ে সারা শরীর ঢেকে নিয়ে তার উপর কম্বল চাপিয়ে দিলাম। আহ, আরামে এবার গান শোনার পালা। কিন্তু বিধিবাম, গানের সাথে মানুষের কথোপকথনের শব্দ শুনতে পাচ্ছিলাম। ঘটনা বুঝতে পারছিলাম না, নীচে সবাই গভীর ঘুমে, তাহলে কথা বলে কে? কান হতে হেডফোন খুলে একটু খেয়াল করতেই বুঝতে পারলাম, পাশের কামরা হতে শব্দের উৎস। বেশকিছুক্ষণ গান শুনে একসময় কান হতে হেডফোন খুলে ফেললাম, গান না শুনে এদের গল্প শুনি, লেখালেখিতে কাজে দিবে। এক ভদ্রমহিলা এবং এক ভদ্রলোক, দুজন দুপাশের বাঙ্কে শুয়ে আছেন, কথাবার্তা শুনে বুঝতে পারলাম, ট্রেনেই পরিচয়। ভদ্রলোক কলকাতার, পেশায় ডাক্তার; অন্যদিকে ভদ্রমহিলা বাংলাদেশের, দক্ষিণবঙ্গের দিদিমণি, স্বামী ভারতে কর্মরত। এই মাঝরাতে তাদের গল্প যদি রেকর্ড করে আপনাদের শোনাতে পারতাম! ভদ্রমহিলা ডাক্তার সাহেবের এতো প্রশংশা করছিলেন, আমি নিজেই লজ্জা পাচ্ছিলাম। অনেকে আমায় ভুল বুঝতে পারেন, তাই আগেই দুঃখ প্রকাশ করে বলি, আমার মনে চাচ্ছিল বলেই ফেলি, ‘দিদি এবার প্রপোজ করেই ফেলুন না হয়।’। এমনই ছিল সেই আলাপচারিতা। একসময় সেটা টকশো’র গোলটেবিলে মুভ করল; রাজনীতি, সমাজনীতি, অর্থনীতি ঘুরে ঘুরে একসময় এসে থামল ধর্মতত্ত্বে। ঈশ্বরের অস্তিত্ব, আস্তিক-নাস্তিক, পুনর্জন্ম... চলতেই থাকল। মনে হল জোরে চিৎকার দিয়ে বলি, ‘এই হারামজাদারা চোপ, আর একটা কথা না।’। ঘড়ির দিকে চেয়ে দেখি রাত তখন দুটো। হেডফোনের ভলিউম ফুল করে দিয়েও কর্ণকুহরে উনাদের মধুর ধ্বনির অবাধ প্রবেশ রহিত করতে ব্যর্থ হলাম। নিরুপায় হয়ে এই মধ্যরাতের অত্যাচার মেনে নিয়ে গান শুনতে শুনতে মনকে ব্যস্ত রাখলাম আগত দিনগুলোতে চমৎকার এক ভ্রমণে প্রলুব্ধ করে।

রাতে গান শুনতে শুনতে কখন ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম মনে নেই, ভোরবেলা ভ্রমণসাথীদের গলার আওয়াজে ঘুম ভাঙ্গলো। চোখ মেলে দেখি জানালা দিয়ে সূর্যালোক ট্রেনের কামরা আলোকিত করে মায়ার জাদু বিছিয়েছে। ভোরের কাঁচাসোনা রোদ বড় মিষ্টি লাগলো, এই ফাঁকে ট্রেনের সার্ভিস ম্যান চা নিয়ে হাজির। উপরে বসে বসে সেই চা পান করার ফাঁকে চলল নানান খুনসুটি। সেই যে গতকাল সন্ধ্যারাতে উপরে উঠেছি, আর নামা হয় নাই। চা পান শেষ করে নীচে নেমে এলাম, বুদ্ধি করে সম্মুখের টয়লেটে চলে গেলাম। আমাদের সিট ছিল প্রথম বগীতে, ফলে ওদিকটায় অনেকটা ফাঁকা ছিল। ফ্রেশ হয়ে এসে সবাইকে ব্যাগপত্র গুছিয়ে রাখতে বললাম। আমাদের কুপেতে আমরা ৫ জন ছাড়া দুজন বয়স্ক স্বামী-স্ত্রী ছিলেন ওপাশের নীচের দুই সিটে আর আমার সিটের নীচে এক মাদ্রাজি ভদ্রলোক। পঞ্চাশোর্ধ্ব ঐ দম্পতি ছিলেন ভেজ আহারী; আমাদের রাতের মেনু নন-ভেজ দেখে ভদ্রমহিলা সেই যে মুখ ঘুরিয়েছিলেন, সকালে উনাকে স্বাভাবিক হতে দেখা গেল। আমাদের দলের রমণীদ্বয়ের সাথে দেখলাম বেশ ভালোই গল্প জমেছে। নাস্তার পর্ব শেষ হলে আরেকদফা চা পান শেষ ভদ্রলোকের সাথে টুকটাক গল্প হচ্ছিল আমাদের, আর মাত্র ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যে দিল্লী পৌঁছে যাব। এক্সপ্রেস ট্রেনে এই এক সুবিধা, সময় প্রায় অর্ধেক লাগে। সাধারণ ট্রেনে যেখানে ৩৪-৪০ ঘণ্টা সময় লাগে কলকাতা টু দিল্লী, তেরশত কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে; সেখানে এক্সপ্রেস ট্রেনে ১৭-১৯ ঘণ্টায় গন্তব্যে পৌঁছে যাওয়া যায়।

ঐ ভদ্রলোকের সাথে কথা বলার এক ফাঁকে হঠাৎ গতকাল রাতের সেই ভদ্রমহিলার কণ্ঠস্বর পাশের রুম হতে ভেসে আসতেই গতকাল রাতের যন্ত্রণার কথা মনে পরে গেল। একটু পরে ঐ ভদ্রমহিলা দরজার দিকে যাওয়ার সময় উনার মুখদর্শন করা গেল। দুষ্ট এই বোকামন সেই ডাক্তার সাহেবকে দেখার জন্য আঁকুপাঁকু করতে লাগলো। সিট ছেড়ে উঠে গিয়ে পাশের কামরায় চোখ বুলিয়ে মনের ইচ্ছে পূরণ করে এলাম। বছর পঞ্চাশের উপরে চশমা পরিহিত ডাক্তার সাহেব আর ত্রিশের ললনা আমাদের দিদিমণি। মন্দ নয়, ভালো একটা গল্প লেখা যাবে।

দিল্লী’র আগে জেলা গাজিয়াবাদ, বর্ধিত দিল্লীর চাপ সামলাতে পাশের জেলা এই গাজিয়াবাদে গড়ে উঠছে নতুন আবাসন, কলোনিগুলোর জন্য নির্মিত ভবনগুলোকে অনেক দূরের এই চলন্ত ট্রেন থেকে খেলনা মনে হচ্ছে। আমাদের সহযাত্রী ভদ্রলোকের মুখে আরও বেশ কিছু তথ্য জানা গেল। দশটার কিছুটা পরে আমাদের ট্রেন দিল্লী পৌঁছল। শিডিউল থেকে আধঘণ্টার কিছু কম সময় পিছিয়েছিল। যাই হোক, ট্রেন কম্পার্টমেণ্টে থামার পর আমরা ঠিকঠাক মত ব্যাগ-ব্যাগেজ নিয়ে নেমে এলাম দিল্লীর মাটিতে। দিল্লীতে দুটো রেল ষ্টেশন, একটি নতুন, অন্যটি পুরাতন। আমাদের প্ল্যানিং ছিল ষ্টেশনে ব্যাগ রাখার লকার রুমে ব্যাগ রেখে দিল্লী শহরের বিখ্যাত দুটি টুরিস্ট স্পট ঘুরে দেখা, লালকেল্লা আর কুতুব মিনার। এই দিল্লী ভ্রমণের দায়িত্ব ছিল মুক্তার ভাইয়ের, কিছুদিন আগে উনি একা একা দিল্লী-সিমলা-মানালি ঘুরে গেছেন। তো ব্যাগ রাখার পর আমরা জানতে পারলাম আমাদের জম্মুগামী ট্রেন ধরতে হবে পুরাতন ষ্টেশন থেকে, আমরা এখন আছি নতুন দিল্লী ষ্টেশনে। কি আর করা, ব্যাগ এখানে রেখেই আমরা রওনা হলাম দিল্লী দর্শনে।







ষ্টেশন হতে বের হয়ে হাতের বামদিকে কিছুদূর গেলেই মেট্রো ষ্টেশন। ষ্টেশনে সুন্দর করে দিল্লী মেট্রো রেলের ম্যাপ দেয়া আছে, সাথে কারো কাছে আপনার গন্তব্য জানিয়ে জিজ্ঞাসা করলেই আপনাকে ষ্টেশনের নাম বলে দেবে। নির্দিষ্ট ষ্টেশনের টিকেট করে কয়েন নিয়ে ঢুঁকে পড়ুন মুল ষ্টেশনে, একটু খোঁজ করে আপনার ট্রেনটি কোন লাইনে এসে থামবে জেনে নিন। তথ্যকেন্দ্র ছাড়াও ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ডে ট্রেন কোন ষ্টেশনে আছে এবং আপনার ষ্টেশনে আসতে কতক্ষণ লাগবে তা জানানো হচ্ছে। আমরা কুতুবমিনারের টিকেট করে (ষ্টেশনের নামই কুতুবমিনার, ফলে সহজেই খুঁজে পাবেন ম্যাপে) মিনিট পনেরর মধ্যে চলে এলাম কুতুব মিনার ষ্টেশনে। এখানে মেট্রো ষ্টেশন থেকে বের হয়ে অটোরিকশা করে চলে এলাম কুতুবমিনার, ভাড়া জনপ্রতি দশরুপী, তবে মাঝে এক বিশাল বিরতি আছে ;)













সরকারী কুটির শিল্প বিভাগের একটা শো-রুম আছে এই পথে, সেখানে সকল অটোরিকশা থামে, এর বিনিময়ে তারা পায় একলিটার তেলের টাকা। যাই হোক, অনিচ্ছা সত্ত্বেও সেখানে ঢুকতে হল, সবাইকে বলেছি কেউ কিছু কিনব না, জাস্ট পাঁচ মিনিট ঘুরে দেখে রওনা দিব কুতুবমিনার। সেখান থেকে লালকেল্লা দেখব, অতঃপর বিকেল ০৩:৩০ এর শালিমার এক্সপ্রেস করে রওনা হব জম্মু। ঢাকা থেকে যাওয়ার আগেই সবাইকে জানিয়ে দেয়া হয়েছিল, কোথা থেকে কি কি কেনা যেতে পারে। কিন্তু দোকানে ঢুঁকে সেলসম্যানের বাকপটু ক্যারিশ্মায় ধরা খেয়ে সবাই আধঘণ্টা সময় নষ্ট করে হাজার বারো রুপী’র শপিং করে ফেলল :( । যাই হোক সেখান থেকে মুক্ত হয়ে অবশেষে পৌঁছলাম কুতুবমিনার।











কুতুব মিনার (উর্দু: قطب منار ক্বুতুব্‌ মিনার্‌ বা ক্বুতাব্‌ মিনার্‌) ভারতের দিল্লীতে অবস্থিত একটি স্তম্ভ বা মিনার, যা বিশ্বের সর্বোচ্চ ইটনির্মিত মিনার। এটি কুতুব কমপ্লেক্সের মধ্যে অবস্থিত, প্রাচীন হিন্দু মন্দিরের ধ্বংসাবশেষের পাথর দিয়ে কুতুব কমপ্লেক্স এবং মিনারটি তৈরি করা হয়েছে। ভারতের প্রথম মুসলমান শাসক কুতুবুদ্দিন আইবেকের আদেশে এর নির্মাণকাজ শুরু হয় ১১৯৩ খ্রিস্টাব্দে তবে মিনারের উপরের তলাগুলোর কাজ শেষ করেন ফিরোজ শাহ তুঘলক ১৩৮৬ খ্রিস্টাব্দে। ভারতীয়-মুসলিম স্থাপত্যশৈলীর গুরুত্বপূর্ণ এবং অন্যতম প্রাচীন নিদর্শন বলে কুতুব মিনার বেশ উল্লেখযোগ্য।









এর আশে পাশে আরও বেশ কিছু প্রচীন এবং মধ্যযুগীয় স্থাপনা এবং ধ্বংসাবশেষ রয়েছে, যারা একত্রে কুতুব কমপ্লেক্স হিসেবে পরিচিত। এই কমপ্লেক্সটি ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে তালিকাবদ্ধ হয়েছে এবং এটি দিল্লীর অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য এবং এটি ২০০৬ সালে সর্বোচ্চ পরিদর্শিত সৌধ, এবং পর্যটকের সংখ্যা ছিল ৩৮.৯৫ লাখ যা তাজমহলের চেয়েও বেশি, যেখানে তাজমহলের পর্যটন সংখ্যা ছিল ২৫.৪ লাখ।













কুতুব মিনার বিভিন্ন নলাকার শ্যাফট দিয়ে গঠিত যা বারান্দা দ্বারা পৃথকীকৃত। মিনার লাল বেলেপাথর দিয়ে তৈরী যার আচ্ছাদন এর উপরে পবিত্র কোরআনের আয়াত খোদাই করা। ভূমিকম্প এবং বজ্রপাত এর দরুণ মিনার এর কিছু ক্ষতি হয় কিন্তু সেটি পুনরায় শাসকদের দ্বারা ঠিক করা হয়। ফিরোজ শাহ এর শাসনকালে, মিনার এর দুই শীর্ষ তলা বাজ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয় কিন্তু তা ফিরোজ শাহ দ্বারা সংশোধিত হয়েছিল। ১৫০৫ সালে, একটি ভূমিকম্প প্রহত এবং এটি সিকান্দার লোদী দ্বারা সংশোধিত হয়েছিল। কুতুব মিনার এর দক্ষিণ-পশ্চিম থেকে ২৫ ইঞ্চি একটি ঢাল আছে যা "নিরাপদ সীমার মধ্যে" বিবেচিত হয়।









কুতুবমিনারে ঘণ্টাখানেক সময় কাঁটিয়ে একই পথে ফিরে এলাম সেই দিল্লী নতুন রেল ষ্টেশনে। সময় স্বল্পতার কারনে লালকেল্লা দেখা আজকের মত স্থগিত। আরও দুবার এই দিল্লী ফেরত আসতে হবে আমাকে, একবার শ্রীনগর হতে, পরে মানালি হতে। তখন না হয় দেখা যাবে লালকেল্লা। নতুন ষ্টেশন থেকে ব্যাগ বুঝে নিয়ে ট্যাক্সি ভাড়া করে ছুটলাম পুরাতন দিল্লী ষ্টেশনের পানে। সেখানে পৌঁছে দেখি ট্রেন সবেমাত্র প্ল্যাটফর্মে ভিড়েছে, তখনো দরজা খোলে নাই। কিছুক্ষণ পর দরজা খুললে উঠে পড়লাম আমাদের বগীতে। আনিস ছাড়া বাকী সবাই একই বগীতে, পরে মুক্তারের উদ্যোগে একজনের সাথে সিট বদল করে আনিসকেও আমাদের বগীতে নিয়ে আসা হল।





দৌড়ঝাঁপের কারনে লাঞ্চ করা হয় নাই, ট্রেন থেকে নেমে ষ্টেশনে ভালো কোন খাবার খুঁজে পেলাম না, তাই গোটা কয়েক করে ভেজ বার্গার আর স্যান্ডউইচ নিয়ে এলাম। সারা ট্যুরে এই ভেজের দৌরাত্ম্যে আমার ভ্রমণসঙ্গীরা নিজেরা ভুগেছে, আমাকেও ভুগিয়েছে। সাথে কয়েক বোতল পানি আর সফট ড্রিঙ্ক নিয়ে উঠলাম। দিল্লী টু জম্মু পথে রাজধানী এক্সপ্রেসের (জম্মু-রাজধানী)টিকেট পাওয়া যায় নাই বলে শালিমার এক্সপ্রেসের টিকেট করতে হয়েছিল। তুলনামূলক নোংরা এই ট্রেনে টিকেটের সাথে কোন ফুড সংযুক্ত ছিল না; খাবারের পাঠ শুধু রাজধানী এক্সপ্রেসেই থাকে কি না :( । যাই হোক, নির্দিষ্ট সময়ে ট্রেন ছেড়ে দিলে আমরা আসন গেড়ে আড্ডায় মেতে উঠি। ৪৪ ঘণ্টার জার্নি শেষে (ঢাকা থেকে অদ্যাবধি) মোটামুটি সবাই প্রাথমিক জড়তা কাঁটিয়ে একটা দল হয়ে উঠেছিলাম ইতোমধ্যে। ঐদিকে ইয়াসমিন আপা আর জুবায়ের ভাই তখনো কলকাতা, বিমান পথে পৃথক পৃথক ভাবে উনারা পরের দিন শ্রীনগর পৌঁছবেন, সেখান থেকে ট্যুর অপারেটর এর গাড়ীতে পাহেলগাঁও এর ‘হোটেল আবসার’। আমাদের গন্তব্য জম্মু হয়ে সেই একই ঠিকানায়। পড়ন্ত বিকেলে আমাদের নিয়ে ‘শালিমার এক্সপ্রেস’ ছুটে চলেছে জম্মু কাশ্মীরের শীতকালীন রাজধানী জম্মুর পানে; আর আমরা আমাদের অতি কাঙ্ক্ষিত ভূস্বর্গ কাশ্মীরের পাণে, ‘মিশন কাশ্মীর’ এ। (চলবে)

পরের পর্ব: মুঘল রোড ধরে কাশ্মীরের পথে (মিশন কাশ্মীর এক্সটেন্ড টু দিল্লী-সিমলা-মানালিঃ ভারত ভ্রমণ ২০১৫)

সংযুক্তিঃ কুতুবমিনারে তোলা আরও কিছু ছবি-

































এই পর্বের ছবিসকলঃ বোকা মানুষ বলতে চায়
তথ্যসুত্রঃ উইকি বাংলা
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১:৫৮
২৪টি মন্তব্য ২৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

×