somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শিয়াদের পরিচয় ও আক্বিদা এবং সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শিয়াদের পরিচয় ও আক্বিদা এবং সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

১ম পর্বঃ-

(ক) শিয়া সম্পর্কে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদা কী?অনেকে বলে থাকেন, তাদের আক্বীদা কুফরির সাথে সাদ্যৃশ্যপূর্ণ। সুতরাং তারা কাফের। আবার অনেকে বলেন, তারা মুসলমান। তাদেরকে কাফের বলা অজ্ঞতার পরিচয় মাত্র। না জেনে কাওকে কাফের বলা অনুচিত। এভাবেও বলে থাকেন। (খ)ইরান কি ইসলামী রাষ্ট্রের আওতায় পড়ে? তাদের আক্বীদা কি কোরআন হাদীসের সাথে সাংঘর্ষিক?তারা কি ফিরক্বায় শিয়ার অন্তর্ভুক্ত? তাদের আক্বীদা ও আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদা কোরআন হাদীসের আলোকে আলোচনা করা হলোঃ-

ﺑﺴﻢ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ﺍﻟﺮﺣﻴﻢ
রাফেযী শিয়া সম্প্রদায়ের আভির্ভাবঃ-
আব্দুল্লাহ ইবনে সাবা ইহুদী বাহিক্যভাবে ইসলাম গ্রহণ করে, আহলে বায়আত তথা রাসূলের পরিবারের প্রতি মহব্বত ও আলী রা.-র প্রতি ভালবাসার ব্যাপারে সীমালঙ্ঘনে লিপ্ত হয় এবং আলী রা.-কে খেলাফতের প্রথম ওসি দাবি করে। এক পর্যায়ে ইলাহ্-এর স্থানে অধিষ্ঠিত করে। সেখান থেকেই রাফেযী সম্প্রদায়ের উৎপত্তি। এসব কথার সত্যতার প্রমাণ খোদ শিয়াদের কিতাবই। আল-কুম্মী তার “আল মাকালাত ওয়াল ফিরাক” গ্রন্থে বলেন, “আব্দুল্লাহ্ ইবনে সাবা আলী রা.-কে ইমামতের প্রথম হকদার দাবি করে, আবু বকর, ওমর ও উসমানসহ সকল সাহাবা সম্পর্কে মিথ্যাচার ও বিষোদগারে লিপ্ত হয়।”
অনুরূপ মন্তব্য করেছেন “ফিরাকুশ শিয়া” নওবাখতী ও “রিজালুল কিশ্শী” গ্রন্থে কিশ্শী।
আব্দুল্লাহ্ ইবনে সাবা সম্পর্কে একই মন্তব্য করেছেন বর্তমান যুগের শিয়া মুহাম্মাদ আলী আল-মু‘আলেম “আব্দুল্লাহ্ ইবনে সাবা আল হাক্বীক্বাতুল মাজহুলাহ্” গ্রন্থে। তারা সকলে রাফেযী মতের এক একজন বড় পণ্ডিত। আল-বাগদাদী বলেন, “সাবায়ীরা হচ্ছে আব্দুল্লাহ্ ইবনে সাবার অনুসারী। এ আব্দুল্লাহ্ ইবনে সাবা-ই আলী রা.-র ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করে তাকে নবী দাবি করেছে। পরবর্তীতে তাকে আল্লাহ পর্যন্ত দাবি করেছে।” বাগদাদী আরো বলেন, “ইবনে সাওদা অর্থাৎ ইবনে সাবা আসলে ইয়াহুদী ছিল, কুফাবাসীর নিকট নেতৃত্ব ও সমর্থন লাভের উদ্দেশ্যে নিজেকে সে মুসলিম হিসেবে প্রকাশ করে। তাওরাতের সূত্র ‘প্রত্যেক নবীর একজন ওসী থাকে’ হিসেবে আলী রা.-কে সে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওসী আখ্যা দেয় এবং কুফাবাসীর নিকট তা প্রকাশ করে।
সাহরাস্তানী ইবনে সাবা সম্পর্কে বলেন, সেই সর্ব প্রথম আলী রা.-র ইমামতের দাবী তুলে। সাবায়ী সম্প্রদায় সম্পর্কে বলেন, এরা প্রথম ‘গায়বাত’ ও ‘রাজাআত’ মতবাদ পেশ করে। পরবর্তীতে তাদের অনুসারী শিয়ারা এ মতবাদের উত্তরাধিকারী হয়। আলী রা.-র ইমামত ও খেলাফত এবং তার ওসী হওয়ার অভিমত ইবনে সাবারই মীরাস। এরপর তার অনুসারী অর্থাৎ শিয়া সম্প্রদায় অসংখ্য দলে বিভক্ত হয়। এভাবে আলী রা.-র ওসী ও ইমামত বরং ইলাহ হওয়ার দাবি নিয়ে ইহুদী ইবনে সাবার অনুসারী শিয়াদের উৎপত্তি হয়।

শিয়া থেকে রাফেযী নামকরণঃ-
শিয়া বিদ্যান শায়খ মাজলেসী “বেহারুল আনওয়ার” কিতাবে ‘রাফেযার ফযিলত ও নামকরণের সাধুবাদ’ অধ্যায়ে সুলাইমান আল-আ‘মাশ থেকে উল্লেখ করে তিনি বলেনঃ- আমি আবু আব্দুল্লাহ্ জা‘ফার ইবনে মুহাম্মাদের নিকট প্রবেশ করে বলি, আপনার জন্য আমাকে উৎসর্গ করেছি, মানুষেরা আমাদেরকে রাওয়াফেয (রাফেযী এর বহুবচন) বলে, রাওয়াফেয মানে কি? তিনি বলেন, আল্লাহর কসম! তারা এ নামকরণ করেনি, বরং আল্লাহ্ মুসা আ. ও ঈসা আ.-র ভাষায় তাওরাত ও ইনজিলে তোমাদের এ নামকরণ করেছেন।
আরো বলা হয় যে, যায়েদ আলী ইবনে হুসাইনের নিকট এসে বলে, আমাদেরকে আবু বকর ও ওমর থেকে মুক্ত করুন, যেন আমরা আপনার সাথে থাকতে পারি। তিনি বলেন, তারা দুজন তো আমার দাদার সঙ্গী আমি তাদেরকে অভিভাবক হিসেবে গ্রহণ করি। তখন তারা বলে, ﺇﺫﺍ ﻧﺮﻓﻀﻚ অর্থাৎ তাহলে আমরা আপনাকে বর্জন করব। অতঃপর সেখান থেকেই তাদের নামকরণ হয় রাফেযাহ্ বা রাফেযী। যারা তার হাতে বায়‘আত করে ও যায়দীয়া মত পোষণ করে, সাধারণত তাদেরকেই এ নামে অবিহিত করা হয়।
আরো বলা হয় যে, আবু বকর ও ওমরের ইমামাত অস্বীকার করার জন্য তাদেরকে রাফেযী বলা হয়।
আরো বলা হয় যে, তারা যেহেতু দীন ত্যাগ করেছে, তাই তাদেরকে রাফেযা বলা হয়।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাস বলেন, “আমার সুন্নাত ও আমার হেদায়েতপ্রাপ্ত খোলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নাত পালন করা তোমার অবশ্য কর্তব্য, এই সুন্নাতকে তোমরা দৃঢ়ভাবে ধারণ করবে। আর সাবধান! ইসলামী শরীয়তে তোমরা নতুন কিছু আবিস্কার করবে না, কেননা প্রত্যেক নব আবিস্কৃারই হচ্ছে বিদ‘আত এবং প্রত্যেক বিদ‘আতই হচ্ছে ভ্রান্তি ও পথভ্রষ্টতা। (আহমাদ, আবু দাউদ, তিরমিযি ও ইবনে মাজাহ্)
রাফেযীদের নানা দল উপদলঃ-
“দায়েরাতুল মাআরেফ” কিতাবে বর্ণিত আছে যে, “প্রসিদ্ধ তেহাত্তর দলের চাইতেও শিয়াদের দল উপদলের সংখ্যা আরো বেশী।”{দায়েরাতুল মা‘আরেফ -৪/৬৭}
প্রসিদ্ধ রাফেযী মীর বাকের আল দাম্মামের বরাতে বলা হয়েছে, হাদীসে বর্ণিত তেহাত্তর দলের সবাই শিয়া, তাদের মধ্যে মুক্তি প্রাপ্ত দল শুধু ইমামিয়াহ্ (ইমামিয়াহ্ শিয়াদের একটি উপদল)। মুকরেযী বলেন, তাদের দলের সংখ্যা তিনশোর মত।
শাহরাস্তানী বলেন, “রাফেযীরা পাঁচ দলে বিভক্ত: (১) আল কিসানিয়াহ্ (২) আল যায়দিয়াহ্ (৩) আল ইমামিয়াহ্ (৪) আল গালিয়াহ্ (৫) আল ইসমাঈলিয়াহ্।”
বাগদাদী বলেন, “আলী রা. এর পরবর্তী যুগে রাফেযীরা চার ভাগে বিভক্ত হয়: (১) যায়দিয়াহ্ (২) ইমামিয়াহ্ (৩) কিসানিয়াহ্ (৪) গুলাত।
তিনি আরো বলেন যে, যায়দিয়াহ্ রাফেযী ফিরকাভুক্ত নয়।
আল্লাহর সিফাত সম্পর্কে রাফেযীদের আক্বিদা
পবিত্র কুরআন ও সহীহ্ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত নয়। আল্লাহর সিফাত অস্বীকার করে তাদের পণ্ডিতগণ ভ্রান্ত নীতির অনুসরণ করছে। তারা আল্লাহ্ তা‘আলার নুযুল তথা দুনিয়ার আসমানে অবতরণের কথাও অস্বীকার করে, আল্লাহর কুরআনকে মাখলুক বলে এবং পরকালে আল্লাহর সাক্ষাতকেও অস্বীকার করে। “বেহারুল আনওয়ার” গ্রন্থে আছে, আবু আব্দুল্লাহ্ জা‘ফার সাদেককে কিয়ামত দিবসে আল্লাহ্ তা‘আলার দিদার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়। উত্তরে তিনি বলেন, সুবহানালাহ্! আল্লাহ্ তো এ থেকে অনেক উর্ধ্বে, মানুষের চোখ শুধু তাই দেখে, যার রং, আকার-আকৃতি ও অবস্থান আছে। এসবই আল্লাহর সৃষ্ট মাখলূক, অর্থাৎ আল্লাহ্ এসব থেকে পবিত্র।
তারা আরো বলেছে, যে কেউ দেখা বা অনুরূপ কোন সিফাত আল্লাহর সাথে সম্পৃক্ত করবে, সে মুরতাদ হয়ে যাবে।
আর আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের আক্বিদা হল- হাশরের ময়দানে আল্লাহর সাথে তার প্রিয় বান্দাদের দিদার হবে চর্মচোখে। অনেক আয়াত ও হাদীস এর প্রমাণবাহী।
যেমন আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন,
ﻭُﺟُﻮﻩٌ ﻳَﻮْﻣَﺌِﺬٍ ﻧَّﺎﺿِﺮَﺓٌ ( 22 ) ﺇِﻟَﻰ ﺭَﺑِّﻬَﺎ ﻧَﺎﻇِﺮَﺓٌ ( 23 )
“সেদিন কতক মুখমণ্ডল হবে হাস্যোজ্জ্বল। তাদের রবের প্রতি দৃষ্টিনিক্ষেপকারী।” (সূরা আল কিয়ামাহ : ২২-২৩)
সহীহ্ বুখারী ও মুসলিমে জারির ইবেন আব্দুল্লাহ্ আল-বাজালী রা. এর হাদীসে এসেছে, তিনি বলেন, আমরা একদা রাসূলুল্লাহ সা. এর নিকট বসে ছিলাম, অতঃপর তিনি সেই সময় চৌদ্দ তারিখের (পূর্ণিমার) উজ্জল চাঁদের দিকে তাকিয়ে বলেন, “নিশ্চয় তোমরা তোমাদের প্রভূকে অচিরেই সরাসরি দেখবে, যেমনভাবে আজকে তোমরা এই উজ্জল চাঁদ দেখছো। যেমন চাঁদকে দেখতে তোমাদের কোন ভিড় হচ্ছে না।”
এ ছাড়াও আল্লাহর দিদার সম্পর্কে আরো আয়াত ও হাদীস রয়েছে।
আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন,
ﻭَﻟِﻠّﻪِ ﺍﻷَﺳْﻤَﺎﺀ ﺍﻟْﺤُﺴْﻨَﻰ ﻓَﺎﺩْﻋُﻮﻩُ ﺑِﻬَﺎ ﻭَﺫَﺭُﻭﺍْ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻳُﻠْﺤِﺪُﻭﻥَ ﻓِﻲ ﺃَﺳْﻤَﺂﺋِﻪِ ﺳَﻴُﺠْﺰَﻭْﻥَ ﻣَﺎ ﻛَﺎﻧُﻮﺍْ ﻳَﻌْﻤَﻠُﻮﻥَ ( 180 )
আল্লাহর জন্য রয়েছে সুন্দর নামসমূহ । কাজেই তাঁকে ডাক ঐ সব নামের মাধ্যমে। যারা তাঁর নামের মধ্যে বিকৃতি ঘটায় তাদেরকে পরিত্যাগ কর। তারা যা করছে তার ফল তারা শীঘ্রই পাবে।” (সুরা আল আ‘রাফ : ১৮০)
বিদ্যমান কুরআন সম্পর্কে রাফেযীদের বিশ্বাস
বিদ্যমান কুরআন, যার হিফাজতের দায়িত্ব স্বয়ং আল্লাহ গ্রহণ করেছেন, সে বিষয়ে রাফেযীরা ভিন্ন মত পোষণ করে। রাফেযীরা বর্তমানে ‘শিয়া’ নামে পরিচিত। তারা বলে, আমাদের নিকট বিদ্যমান কুরআন মুহাম্মাদের উপর অবতীর্ণ অবিকল কুরআন নয়। এতে অনেক পরিবর্তন-পরিবর্ধন ও কম-বেশী করা হয়েছে।
শিয়াদের অধিকাংশ মুহাদ্দিস বিশ্বাস করে যে, কুরআন শরীফে অনেক পরিবর্তন করা হয়েছে। নুরী আত-তাবারাসী ‘ফাসলুল খেতাব ফী তাহরীফে কিতাবি রাব্বিল আরবাব’ কিতাবে তা স্বীকার করেছেন। { আল কুলাইনী: উসূলুল কাফী:১/২৮৪}
মুহাম্মাদ ইবনে ইয়াকুব আল-কুলাইনী ‘উসূলুল কাফী’ গ্রন্থে ‘ইমামগণ ব্যতীত পূর্ণ কুরআন কেউ একত্র করেনি’ অনুচ্ছেদে জাবের হতে বর্ণনা করেন, আবু জা‘ফার বলেছেন, যে ব্যক্তি দাবী করে যে, আল্লাহ পূর্ণ কুরআন যেভাবে নাযিল করেছেন, অনুরূপ সে তা একত্র করেছে, তাহলে সে মিথ্যাবাদী, প্রকৃত পক্ষে আল্লাহ্ যেভাবে কুরআন নাযিল করেছেন, আলী ইবনে আবী তালেব ও তার পরবর্তী ইমামগণ ছাড়া কেউ তা হুবহু একত্র ও সংরক্ষণ করতে সক্ষম হয়নি।”{ আল কুলাইনী: উসূলুল কাফী: ১/২৮৫}
জাবের আবু জা‘ফার থেকে বর্ণনা করেন, ‘আউসিয়া তথা ওসীয়তকৃত ব্যক্তি বর্গ ব্যতীত কেউ দাবী করতে পারবে না যে, প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য সম্পূর্ণ কুরআন তার নিকট রয়েছে।’{ আল কুলাইনী: উসূলুল কাফী:২/৬৩৪}
হিশাম ইবনে সালেম হতে প্রমাণিত হয়েছে যে, আবু আব্দুল্লাহ বলেন, ‘যেই কুরআন জিবরীল মুহাম্মাদের নিকট নিয়ে আসেন, তা সতের হাজার আয়াত বিশিষ্ট।’{ তাদের শায়খ আল মাজলেসী স্বীয় “মিরআতুল উকুল ” নামক গ্রন্থে এই বর্ণনাটিকে নির্ভরযোগ্য বলে মন্তব্য করেছে}
এর দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয় যে, রাফেযী তথা শিয়ারা যে কুরআনের দাবী করে, তা বিদ্যমান
কুরআন থেকে অনেক বেশী, যার সংরক্ষণের দায়িত্ব স্বয়ং আল্লাহ্ নিজে গ্রহণ করেছেন। (নাউযুবিলাহ্ মিনহুম)
অথচ আল্লাহ তায়ালা সুষ্পষ্ট ঘোষণা করেছেন-
আল্লাহ্ বলেন,
ﺇِﻧَّﺎ ﻧَﺤْﻦُ ﻧَﺰَّﻟْﻨَﺎ ﺍﻟﺬِّﻛْﺮَ ﻭَﺇِﻧَّﺎ ﻟَﻪُ ﻟَﺤَﺎﻓِﻈُﻮﻥَ ( 9 )
“নিশ্চয় আমিই কুরআন নাযিল করেছি আর আমিই তার সংরক্ষক।” (সুরা আল হিজর : ৯)

সাহাবাদের ব্যাপারে রাফেযী শিয়াদের বিশ্বাসঃ-
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাহাবাদের গাল-মন্দ করা ও তাদের কাফের বলাই তাদের ধর্মীয় মূলনীতি। যেমন আল-কুলাইনী ফুরু‘ আল-কাফী’ কিতাবে জা‘ফারের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন : “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মৃত্যুর পর তিন ব্যক্তি ব্যতীত সমস্ত মানুষ মুরতাদ ছিল, আমি বললাম, ঐ তিনজন কারা? জবাবে বলেন, মিকদাদ ইবনুল আসওয়াদ, আবু যর গিফারী ও সালমান ফারেসী।”
আল-মাজলেসী বেহারুল আনওয়ার’ গ্রন্থে উল্লেখ করেন যে, আলী ইবনে হুসাইনের গোলাম বলেন, আমি একদা একাকি অবস্থায় তার সাথে ছিলাম, অতঃপর আমি তাকে বললাম, নিশ্চয় আপনার প্রতি আমার অধিকার রয়েছে, আপনি কি আমাকে দুই ব্যক্তি তথা আবু বকর ও ওমর সম্পর্কে বলবেন ? তিনি বলেন, তারা দুজনই কাফের এবং যারা তাদেরকে ভালবাসবে তারাও কাফের।”{ আল মাজলেসী: বেহারুল আনওয়ার-২৯/১৩৭-১৩৮}
আবু হামযাহ্ আল-সেমালী হতে বর্ণিত যে, আলী ইবনে হুসাইনকে দু’জন অর্থাৎ আবু বকর ও ওমার রা. সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে বলেন, তারা দু’জনই কাফের এবং যারা তাদেরকে ওলী হিসেবে গ্রহণ করবে তারাও কাফের।”
আল্লাহর বাণী :
ﻭَﻳَﻨْﻬَﻰ ﻋَﻦِ ﺍﻟْﻔَﺤْﺸَﺎﺀ ﻭَﺍﻟْﻤُﻨﻜَﺮِ ﻭَﺍﻟْﺒَﻐْﻲِ ﻳَﻌِﻈُﻜُﻢْ ﻟَﻌَﻠَّﻜُﻢْ ﺗَﺬَﻛَّﺮُﻭﻥَ ( 90 )
“আর তিনি অশ্লীলতা, মন্দ কাজ ও সীমালঙ্ঘন থেকে নিষেধ করেন।” (সূরা আন-নাহাল : ৯০)
এ আয়াতের ব্যাখ্যায় আল-কুম্মী বলেন, “ফাহশা অর্থ আবু বকর, মুনাকার অর্থ ওমর এবং বাগী অর্থ উসমান।”
আল-মাজলেসী ‘বেহারুল আনওয়ার’ গ্রন্থে বলেন, আবু বকর ও ওমরের কুফরী, তাদেরকে লা‘নত করা ও তাদের থেকে সম্পর্কছিন্ন করার ঘোষণা দেয়া সম্পর্কিত অসংখ্য দলীল রয়েছে, যা উল্লেখ করার জন্য একাধিক ভলিউমের প্রয়োজন। তবে এখানে যা উল্লেখ করলাম সরল পথ অন্বেষণকারীর জন্য তাই যথেষ্ট।
আল-কুম্মী উক্ত গ্রন্থের অপর স্থানে বলেন, আবু বকর, ওমর, উসমান ও মু‘আবিয়াহ্ সকলেই জাহান্নামের জ্বালানী কাষ্ঠ। নাউযুবিল্লাহ মিন যালেক।
‘এহ্কাকুল হক’ কিতাবে বর্ণিত, “হে আল্লাহ্! মুহাম্মাদ ও মুহাম্মাদের বংশধরের উপর শান্তি ও রহমত বর্ষণ করো আর কুরাইশের দুই তাগুত ও মূর্তি এবং তাদের দুই কন্যার উপর লা‘নত বর্ষণ করো… ।
তাগুত ও মূর্তি দ্বারা তারা আবু বকর ও ওমর রা. এবং তাদের দুই কন্যা দ্বারা আয়েশা ও হাফছাকে বুঝায়।
আল-মাজলেসী তার ‘আল-আকায়েদ’ পুস্তিকায় উল্লেখ করেন, ইমামিয়াহ্ দীনের জন্য যে সব বিষয় জরুরী তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে মেয়াদী বিবাহ ও তামাত্তু হজ হালাল জানা এবং তিনজন তথা আবু বকর, ওমর, উসমান ও মু‘আবিয়াহ্, ইয়াযিদ ইবনে মু‘আবিয়াহ্ এবং যারা আমীরুল মু‘মিনীন আলী রা.-র সাথে লড়াই করে, তাদের থেকে মুক্ত থাকা।
আশুরার দিন তারা একটি কুকুর নিয়ে আসে এবং কুকুরের নামকরণ করে ওমর অতঃপর তারা কুকুরটির উপর লাঠির আঘাত ও কংকর নিক্ষেপ করতে থাকে যতক্ষণ না মরে। কুকুরটি মারা যাওয়ার পর একটি বকরি ছানা নিয়ে আসে এবং তার নাম রাখে আয়েশা অতঃপর ঐ বকরি ছানার লোম উপড়াতে ও জুতা দ্বারা আঘাত করতে থাকে, বকরি ছানাটি না মরা পর্যন্ত এরূপ আঘাত করতেই থাকে।
অনুরূপভাবে ওমর রা.-র শাহাদাত দিবসে তারা আনন্দ অনুষ্ঠান পালন করে এবং তাঁর হত্যাকারীকে ‘বাবা শুজাউদ্দীন’ বা ‘বাবা ধর্মীয় বীর’ নামে খেতাব দেয়। আল্লাহ্ তা‘আলা সকল সাহাবা ও উম্মাহাতুল মু‘মিনীনদের প্রতি সন্তুষ্ট হোন।
একবার চিন্তা করে দেখুন কত হিংসা ও কত জঘন্য নীতির ধারক দীন ত্যাগকারী এ দলটি! আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল যাদের প্রশংসা করেছেন, যারা নবীদের পর শ্রেষ্ঠ উম্মত, যাদের ইনসাফ ও ফযিলত সম্পর্কে সমগ্র উম্মাহ একমত এবং যাদের সৎ কাজ ও জিহাদের সাক্ষ্য দেয় ইতিহাস, তাদের ব্যাপারে এ পথভ্রষ্ঠ দলটির অবস্থান একটু ভেবে দেখুন!
রাসূহুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “তোমরা ভালবাসার ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি ও সীমা লংঘন করা হতে সাবধান থাকবে। কেননা এ সীমা লংঘনই তোমাদের পূর্ববর্তীদের ধ্বংস করেছে।” (মুসনাদ আহমাদ ও ইবনু মাজাহ্)
ইহুদী ও রাফেযী শিয়াদের মধ্যে মিল
শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়াহ্ রহ. বলেন, “ইহুদীদের সাথে রাফেযীদের সামঞ্জস্যতার কিছু উদাহরণ, ইহুদীদের দাবি, দাউদের বংশধর ব্যতীত রাজত্ব করা কারো জন্য শোভনীয় নয়। আর রাফেযী শিয়াদের দাবি, আলী রা.-র সন্তানগণ ব্যতীত কারো জন্য ইমামত বৈধ নয়।
ইহুদীরা বলে, মাসীহ দাজ্জালের আবির্ভাব ও তরবারী অবতীর্ণ ছাড়া জিহাদ ফী সাবিলিল্লাহ্ নেই। আর রাফেযীরা বলে, মাহদীর আগমন ও আসমানী আহব্বান ছাড়া জিহাদ ফী সাবিলিল্লাহ নেই।
ইহুদীরা আসমানে তারকারাজী উজ্জল না হওয়া পর্যন্ত সালাত বিলম্ব করে। অনুরূপভাবে রাফেযীরা মাগরিবের সালাত আসমানে তারকারাজী স্পষ্ট ও উজ্জল না হওয়া পর্যন্ত বিলম্ব করে। অথচ হাদীসের ভাষ্য এর বিপরীত :
ﻻ ﺗﺰﺍﻝ ﺃﻣﺘﻲ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻔﻄﺮﺓ ﻣﺎ ﻟﻢ ﻳﺨﺮﻭﺍ ﺍﻟﻤﻐﺮﺏ ﺇﻟﻰ ﺃﻥ ﺗﺸﺘﺒﻚ ﺍﻟﻨﺠﻮﻡ .
“আমার উম্মত ইসলামী ফিৎরাতের উপরই বিদ্যমান থাকবে, যে পর্যন্ত না তারা মাগরিব সালাত আসমানে তারকারাজী স্পষ্ট হওয়া পর্যন্ত বিলম্ব করবে।”
ইহুদীরা তাওরাতে পরিবর্তন এনেছে আর রাফেযীরা কুরআন শরীফে পরিবর্তন করেছে।
ইহুদীরা মোজার উপরে মাসাহ্ করা বৈধ মনে করে না। অনুরূপভাবে রাফেযীরাও মোজার উপর মাসাহ্ করা বৈধ মনে করে না।
ইহুদীরা ফেরেশতাদের সাথে বিদ্বেষ পোষণ করে বলে, ফেরেশ্তাদের মধ্যে আমাদের শত্র“ হচ্ছে জিবরীল, অনুরূপভাবে রাফেযীরা বলে, জিবরীল ভুল করে ওহী নাযিল করেছে মুহাম্মাদের উপর।
রাফেযীরা খৃষ্টানদের সাথেও বেশ কিছু বিষয়ে মিল রাখে। যেমন খৃষ্টানদের মেয়েদের বিবাহের ক্ষেত্রে মোহর নেই বরং যা দেয় তা ব্যবহারের বিনিময় হিসেবে দেয়। অর্থাৎ স্ত্রীর নিকট হতে যে ফায়েদা গ্রহণ করে তারই বিনিময় হিসেবে গণ্য। অনুরূপ রাফেযীরা মুত‘আহ্ বিবাহ (ঈড়হঃৎধপঃ সধৎৎরধমব) বৈধ মনে করে এবং প্রদত্ত অর্থ বিনিময় মূল্য হিসেবে গণ্য করে, মোহর হিসেবে নয়।
ইহুদী ও খৃষ্টান জাতি রাফেযীদের থেকে দুটি বিষয়ে উৎকৃষ্ট। ইহুদীদের জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে, তোমাদের ধর্মে কে উত্তম? তারা বলেছিল : মুসার সঙ্গী-সাথীরা। অনুরূপভাবে নাসারাদেরকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল তোমাদের ধর্মে কে উত্তম? তারা বলেছিল : ঈসার শিষ্যরা। আর রাফেযীদের জিজ্ঞেস করা হয়েছিল তোমাদের ধর্মে কারা সবচেয়ে নিকৃষ্ট? তারা বলেছিল : মুহাম্মাদের সাহাবীগণ।”
শায়খ আব্দুল্লাহ্ আল-জুমাইলী “বাযলুল মাজহুদ ফী মুশাবিহাতির রাফেযাতে লিল ইহুদ” গ্রন্থে রাফেযী
ও ইহুদীদের মধ্যে কতিপয় সাদৃশ্য উল্লেখ করেন, যেমন ইহুদ ও রাফেযীরা নিজেদের ছাড়া অন্যদের
কাফের বলে এবং তাদের রক্ত ও সম্পদ তথা জান ও মাল হালাল মনে করে। অতঃপর তিনি বলেন, ইহুদীরা মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করে, যথা: ইয়াহুদ ও উমামি। উমামিরা হচ্ছে, ঐ সমস্ত লোক যারা ইহুদী নয়। ইহুদীরা আরো বিশ্বাস করে যে, শুধুমাত্র তারাই মু‘মিন। আর তাদের নিকট উমামিরা হচ্ছে, কাফের মূর্তিপূজক আল্লাহ সম্পর্কে অজ্ঞ।
তালমুদ গ্রন্থে এসেছে যে, ইহুদীরা ব্যতীত সকল জাতি-ই মূর্তিপূজক। এমনকি ঈসা আ. ও তাদের এ
কুফরী সংজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত। তালমুদে তারা বলেছে, ‘ঈসা আ. কাফের, সে আল্লাহকে চেনে না।’
রাফেযীরা বলে মু‘মিন তথা ইহুদী ও তারা ব্যতীত অবশিষ্ট সকলে কাফের ও মুরতাদ। ইসলামে তাদের কোন অংশ নেই।
মুসলমানদেরকে কাফের বলার কারণ হচ্ছে এই যে, মুসলমানরা ‘বেলায়াত’ মানে না, অথচ রাফেযীরা এটাকে ইসলামের রোকন বলে বিশ্বাস করে। অতএব ‘বেলায়াত’ অস্বীকারকারী রাফেযীদের নিকট কাফের। তার কুফরী কালিমা শাহাদাত অথবা ইসলামের পাঁচ রুকনের কোন এক রুকন অস্বীকারকারীর ন্যায়। আর তাদের নিকট বেলায়াত ইসলামের সকল রুকনের উর্ধ্বে।
আল-বারকী আবু আব্দুল্লাহ্ থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, “আমরা ও আমাদের শিয়ারা ব্যতীত আর কেউ মিল্লাতে ইবরাহীমের উপর প্রতিষ্ঠিত নেই অর্থাৎ শুধুমাত্র আমরাই মিল্লাতে ইবরাহীমের উপর প্রতিষ্ঠিত, আর সব মানুষ তা থেকে মুক্ত।”
আবু আব্দুল্লাহ সূত্রে তাফসীরে কুম্মীতে রয়েছে, তিনি বলেন, “আমরা ও ইহুদীরা ব্যতীত কিয়ামত পর্যন্ত ইসলামের উপর আর কেউ নেই।”
নাউজুবিল্লাহি মিন জালিক।
ইমামদের ব্যাপারে রাফেযীদের বিশ্বাস
রাফেযীদের দাবী : ইমামগণ নিষ্পাপ, তারা গায়েব জানেন। আল-কুলাইনী “উসুলুল কাফী” গ্রন্থে উল্লেখ করেন, “ইমাম জাফার সাদেক বলেন, আমরা হলাম আল্লাহর ইলমের ভাণ্ডার। আমরা আল্লাহর নির্দেশাবলীর অনুবাদক। আমরা নিষ্পাপ কওম। আমাদের আনুগত্য করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে এবং আমাদের ফরমানী থেকে নিষেধ করা হয়েছে। আসমানের নীচে ও যমীনের উপরে বিদ্যমান সকলের জন্য আমরা আল্লাহর পরিপূর্ণ হুজ্জাত তথা দলীল।”
উক্ত গ্রন্থের অনুচ্ছেদ “নিশ্চয় ইমামগণ যখন জানার ইচ্ছা করেন তখনই তারা তা জেনে যান”-এ জা‘ফার সূত্রে কুলাইনী উল্লেখ করেন, “নিশ্চয় একজন ইমাম যখন জানার ইচ্ছা করেন তখনই তিনি তা জেনে যান, আর ইমামগণ কখন মৃত্যু বরণ করবেন, তাও তারা জানেন, তারা নিজেদের ইচ্ছা ব্যতীত মৃত্যু বরণ করেন না।”
খুমাইনী “তাহরীরুল ওয়াসীলাহ্” গ্রন্থে বলেন, “নিশ্চয় ইমামের প্রশংসিত স্থান ও উচ্চ মর্যাদা রয়েছে। জগত পরিচালনার খেলাফতও তার উপর ন্যাস্ত। তার নেতৃত্ব ও কর্তৃত্বের প্রতি জগতের সব কিছুই অনুগত।”
তিনি আরো বলেন, “নিশ্চয় আমাদের বারো ইমামের সাথে আল্লাহর কিছু বিশেষ মুহূর্ত রয়েছে। যা তার নৈকট্য লাভে ধন্য কোন ফেরেশ্তারও নেই। এমনকি কোন নবী রাসূলেরও নেই।”
রাফেযীরা তাদের ইমামদের ব্যাপারে সীমালঙ্ঘন করে বলেছে যে, নবী মুহাম্মাদ ব্যতীত সকল নবীর চাইতে তাদের ইমামদের ফযিলত ও মর্যাদা বেশী। আল-মাজলেসী “মিরআতুল উকুল” গ্রন্থে উল্লেখ করেন, “ইমামগণ আমাদের নবী মুহাম্মাদ ব্যতীত সকল নবীর চেয়ে উত্তম ও অধিক সম্মানের অধিকারী।”
ইমামদের ব্যাপারে রাফেযীদের সীমালঙ্ঘন এখানেই শেষ নয়, বরং তারা বলে, জগত পরিচালনার দায়িত্ব ইমামদের। আল খু-ই “মিসবাহুল ফুকাহা” গ্রন্থে বলেন, সমস্ত জগতের পরিচালার দায়িত্ব তাদের রয়েছে, এতে কোন সন্দেহ নেই। বিভিন্ন সূত্র থেকে এরূপই প্রতীয়মান হয়। কারণ, তারাই হচ্ছেন সব কিছুর মিডিয়া অর্থাৎ তাদের দ্বারাই সব কিছুর অস্তিত্ব। তারাই সকল সৃষ্টির মূল কারণ। অতএব, যদি তারা না হতেন তাহলে কোন মানুষই সৃষ্টি হতো না। তাদের জন্যই সকল মানুষের সৃষ্টি। তাদের দ্বারাই সকলের অস্তিত্ব। এদের কারণেই সৃষ্টির শ্রীবৃদ্ধি। শুধু তা-ই নয় বরং সৃষ্টিকর্তা ব্যতীত তাদের হাতেই রয়েছে সৃষ্টিজগত পরিচালনার কর্তৃত্ব। আর এ সব পরিচালনার কর্তৃত্ব¡ আল্লাহর কর্তৃত্বের ন্যায়।” আল্লাহ তাদের সীমালঙ্ঘন ও পদস্খলন থেকে আমাদের রক্ষা করুন। ইমামগণ কিভাবে এ সৃষ্টি জগতের অস্তিত্বের মিডিয়া বা মাধ্যম হতে পারেন? ইমামগণ কিভাবে এই সৃষ্টি জগতের অস্তিত্বের কারণ হতে পারেন? ইমামগণ কিভাবে মানুষ সৃষ্টির কারণ হতে পারেন? কিভাবে ইমামদের জন্য মানুষ সৃষ্টি হতে পারে? অথচ আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন,
ﻭَﻣَﺎ ﺧَﻠَﻘْﺖُ ﺍﻟْﺠِﻦَّ ﻭَﺍﻹِﻧﺲَ ﺇِﻻَّ ﻟِﻴَﻌْﺒُﺪُﻭﻥِ ( 56 )
“আর জিন ও মানুষকে কেবল এজন্যই সৃষ্টি করেছি যে তারা আমার ইবাদাত করবে।” (সূরা আজ-জারিয়াত : ৫৬)
পবিত্র কুরআন ও সহীহ্ সুন্নাহ্ থেকে বিচ্যুত এরূপ ভ্রান্ত ও পথভ্রষ্ঠ আক্বীদা থেকে মহান আল্লাহর
নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করি।
শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়াহ্ রহ্. বলেন, “রাফেযী শিয়ারা ধারণা করে যে, দীন তাদের পীর-পুরোহিতদের ইচ্ছার উপর ন্যাস্ত। তারা যা হালাল বলবে তাই হালাল। এবং তারা যা হারাম বলবে তাই হারাম। তারা যে বিধান রচনা করবে তাই শরীআত বলে গণ্য।”
রাজা‘আত বা পুর্নজন্ম সম্পর্কে রাফেযীদের বিশ্বাস
রাফেযীরাই সর্ব প্রথম রাজা‘আতের বিষয়টি আবিস্কার করে। আল-মুফীদ বলেন, “বহু মৃত ব্যক্তির রাজা‘আত তথা পুর্নজন্ম নিয়ে ফিরে আসার ব্যাপারে ইমামীগণ ঐক্যমত হয়েছেন।”
আর এটি হচ্ছে এই যে, তাদের সর্বশেষ ইমাম শেষ যামানায় পুর্নজন্ম নিয়ে ফিরে আসবে। সিরদাব নামক স্থান হতে বের হবে এবং রাজনৈতিকদের মধ্যে যারা তাদের বিরোধী থাকবে তাদের সকলকে হত্যা করবে। যুগ যুগ ধরে তাদের যে অধিকার বিভিন্ন দল হরণ করে আসছিল, শিয়াদের নিকট তিনি তা ফিরিয়ে দিবেন।
সৈয়দ মুরতাযা “আল-মাসায়েলুন নাসেরিয়াহ্” গ্রন্থে বলেন, নিশ্চয় আবু বকর রা. ও ওমর রা.-কে তাদের বারোতম ইমাম, ইমাম মাহদীর যামানায় একটি গাছে ফাঁসি দেবে। ফাঁসিতে ঝুলানোর পূর্বে গাছটি থাকবে কাঁচা। ফাঁসিতে ঝুলানোর পর গাছটি শুকিয়ে যাবে।
আল-মাজলেসী “হাক্কুল ইয়াক্বীন” গ্রন্থে মুহাম্মাদ আল-বাকের এর উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, “যখন ইমাম মাহদী আত্ম প্রকাশ করবেন তখন তিনি উম্মুল মু‘মিনীন আয়েশা রা.-কে পূনরায় জীবিত করবেন এবং তার উপর হদ্দ (ব্যভিচারের শাস্তি) কায়েম করবেন।”
এভাবেই তাদের মধ্যে পুর্নজন্ম রহস্য বিস্তার লাভ করলে, তারা বলতে শুরু করে যে, সমস্ত শিয়া ও তাদের ইমাম ও ইমাম বিরোধিরা রাজা‘আত তথা পুর্নজন্ম নিবে। মূলত এরূপ ভ্রান্ত বিশ্বাসীরা মানুষের অন্তরে হিংসার বিষ ছড়াচ্ছে। এটা সাবায়ী গ্র“পের পরকাল অস্বীকার করার একটি অপকৌশল মাত্র। প্রকৃতপক্ষে শী’আরা তাদের বিরোধিদের থেকে প্রতিশোধ গ্রহণের জন্যই রাজা‘আতের ন্যায় ভ্রান্ত বিশ্বাসের চালু করেছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে যে, কারা শিয়াদের বিরোধী?
উত্তর আসছে ; সাথে থাকুন!
copyright by https://facebook.com/hedayet1293
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×