( পূর্ব সূত্র বা সামারি )
- কেউ কেউ হয় তো বলবেন সামারির কেন দরকার ? সবাই পড়ছে আগের অংশটা । শুরু করে দেন ২য় পর্ব । এখানে একটা কিন্তু আছে যে
সব কিছুরই একটা সানেনুজুল থাকে । মাত্র ৪-৫ লাইনে সামারি বানিয়েছি । । "পূর্ব সূত্র " না পড়লে ২য় পর্ব পড়ে মজা নেই । তাহলে আসুন সানেনুজুল টা দেখি এক পলকে ..।
তাই ১ম অংশের সামারি - " ২০০৬ ডিসেম্বর থেকে ২০০৭ সালের ১ম দিকে্র কথা । আলী ঢাকা শহরে একটা জব খুজার জন্যে আসে । মামা-চাচা নেই তাই সে জব পায় না । এক টা জায়গায় জব পেয়ে যায় কিন্তু সেই জবটা হয় অফিসের মালিকের বাড়িতে । মালিক টা হচ্ছেন একজন মহিলা । মহিলা খুব একটা সুবিধার না । তাই আলী খুব বিব্রত অবস্থার মাঝে পড়ে গেল । মহিলা তার বাবার দেখাশূনা করার জন্যে আলীকে রাখতে চায় । তাদের একটা সিগনেচার লাগবে ঐ বৃদ্ধ বাবার কাছ থেকে । তাহলেই সে ঢাকাতে পারমানেন্ট একটা জব পাবে । এখন দেখার বিষয় আলি কি সিগনেচার নিতে পারবে ? কি হয় আলীর সাথে ?" )
-২য় পর্ব -
আলী ম্যাডামকে জবের জন্যে "হ্যা" সম্মতি দিয়ে বাড়ি রওনা দিল । এখন সন্ধ্যা ৭ টা বাজে । আলি মতিঝিল শাপলা চত্বরে দাঁড়িয়ে ।
ইচ্ছে করেই সে 'বি আর টিসি' বাসে উঠেছে । এই বাস রাস্তায় রাস্তায় থামবে । কেউ হাত উঠালেই ''স্টপ' ।একদম হাইড্রোলিক ব্রেক যাকে বলে । সকাল সকাল অফিস আওয়ারে এই বাসে উঠা মানে অফিসের বসের ঝাড়ি খাওয়া । এই ঝাড়ি খাওয়ার বিষয়ে 'বি আর টি সি' করতিপক্ষের ১০০% গ্যারান্টি আছে । যতই ঝাড়ি খাও এই বাসের কোন উন্নতি হবে না ।
এখন সন্ধ্যা ৭ টা । মতিঝিল থেকে মিরপুর যেতে ১ ঘণ্টার যায়গায় এখন ৩ ঘণ্টা লাগবে । বাসের কচ্ছপ গতি দেখে মনে হচ্ছে হুইল চেয়ারে বসে কোন রোগী এই বাসের সাথে রেস করতে সক্ষম ।
এতে আলীর কোন সুবিধা নেই । সে বাসের উপরের তলায় বসে চিন্তায় মগ্ন । গালে হাত দিয়ে সামনের সীটের উপর মাথা দিয়ে ভাবছে , কি হইল আমার সাথে । আমি একটা মহিলার আন্ডারে কাজ করব ? মহিলা আবার এক বুড়ুর আন্ডারে কাজ করতে বলছে । আর ঐ কালো নিগ্রো নীল চোখের মানুষটাকে দেখে মনে হয় , আমি কাজে ব্যারথ হলে সে আমাকে অনেক মাইর দিবে ।
আলী ভাবছে , মাইর ছোট বেলায় অনেক খেয়েছি । স্যারের ফেভারিট স্টুডেন্ট ছিলাম । পড়াশুনায় কেউ কখনো আমাকে ২য় করতে পারে নি । সব সময় লাস্ট হয়েছি । স্কুলে স্টুডেন্ট ছিল মাত্র ৩ জন !! গ্রামের ছোট স্কুল ।পড়াশূনা কম আর চাষাবাদ বেশি হত । সেই জন্যে লাস্ট হতাম । স্যার খুব মারতেন । কিছু কিছু দিন কারন ছাড়াই বেতের কোপ বসাতেন । বাসায় বউ স্যার কে জ্বালায় আর স্যার ক্লাসে আমাকে জ্বালায় ।
স্য্যারের মাইর একদম স্বাভাবিক লাগত । যে দিন না মারত , সে দিন বুঝেনিতাম স্যারের বউ স্যারকে মারছে । তাই মন খারাপ বা শরীর খারাপ !!
স্যারের বউ মারে এই টা শুনলে সবারই অবাক হওয়ার কথা । আমি নিজে চোখে না দেখলেও বিশ্বাস করতাম না । পড়ে শূনলাম স্যারের বউ এই গ্রামের মোড়লের বোন । তাই স্যার তার উপরে কথা বলতে পারেন না । বউএর মাইর হজম করে চলছে । সবই ভাগ্য !!!
মেসে এসে পড়ল আলী । মেসের চারিদিকে নিরবতা । চায়ের দোকানের কালো কুকুর "আইলসা " আজকে চেচা মেচি করছে না । তা হলে কোন দুর্ঘটনা ঘটছে মনে হয় । কুকুরের কাজ হচ্ছে দুর্ঘটনা ঘটলে চেচা মিচি করে । আর এই "আইলসা" এমনিতে চেচা মেচি করে আর দুর্ঘটনায় চুপ মেরে বসে থাকে । মানুষের সাথে থেকে থেকে মানুষের মত আচরন করছে । সামান্য প্রবলেম এ চেচামেচি । এই জন্যেই ওর নাম আইলসা বা অলস । সারা দিন দোকার সামনে মরার মত ঘুমায় । মাঝে মাঝে মনে হয় সে মরেই গেছে । লাত্থি মারলেও উঠে না ।
মেসের ভিতরে ঢুকতেই একটা কটু গন্ধ । সেভলনের গন্ধ যাকে বললে । আমি বুঝলাম কারো এক্সিডেন্ট ঘটেছে । মেসের দারোয়ানকে দেখলাম ৩ তলার মেসের মালিকের বাসার সামনে পায়চারী করছে । একবার দক্ষিনের জানালার দিকে হেটে যায় আবার উত্তরের জানালার দিকে হেটে যায় । হাটায় একটা ছন্দ আছে । অনেক টা ব্রেক ডান্সের মত ।
সে ছুটে এসে বলল । আলি ভাই সর্বনাশ হইছে । মালিক সিড়ি থেকে পড়ে পা ভেঙ্গে ফেলছে । কোন হারাম জাদা জানি কলা খেয়ে সিড়িতে চোচা ফেলছিল । এখন অবস্থা খারাপ । ডক্তার দেখাইইছি । জ্বর খুব বেশী । আপনি রুমে যান । আমি এই খানে দেখতাসি ।
আলী রুমে ঢুকতে ঢুকতে চিন্তায় ব্যাস্ত । সকালে তাড়াহুড়া করে কলার ২ টা চোচা সেই সিড়িতে ফেলছে । বরাবরের মতই তার সই খুবই কম । চোচা ঢিল দিয়েছিল জানালায় আর দেয়ালে লেগে সিড়িতেই পড়েছে । একটা ভুল সারা জীবনের কান্না । সবই ভাগ্য !!
রাতে চিন্তার কারনে আলীর ঘুম হল না । তবে শেষ রাতে দিকে একটা সিন্ধান্ত নিতে পেরেছে যে , সে ঐ জব করবে না । সকালে আরেকটা জব খুজে নিবে ।
আজকে থারটি ফাস্ট নাইট । সারা রাত চিল্লা চিল্লি । আর আইলসা কুকুর টাও চিল্লাচিল্লি শুরু করছে । সেও হয় তো কোন গার্ল ফ্রেন্ড কুকুররাণি নিয়ে আজকে পার্টি করবে আর রাতের বাশি হাড্ডি গুলো শেয়ার করবে ।
যারা রাত জাগে তারা সকালের সুন্দর দৃশ্য দেখার অপেক্ষায় থাকে । আলীও চেস্টা করল কিন্তু পারল না । সে ফজরের নামজের সেজদায় একটা ঘুম দিল । ঘুম ভেঙ্গে দেখে সে জায়নামাজেই আছে । মাথায় টুপি । দেয়াল ঘড়ির দিকে তাকিয়ে মাথা নষ্ট । ১২ টা বাজে !!
তাড়াহুড়া করে উঠে কলা ও পাউরুটি খেয়ে নিল । কলার চোচা টা ঢিল দিল । আবার ও সিড়িতে পড়ল । তাড়াহুড়া করে সিড়িতে গিয়ে চোচাটা পকেটে ভড়ে রুমে চলে আসল আলি । একবার রুমের দরজা দিয়ে বাইরে উকি মেরে দেখল , কেউ দেখেনি তো ?
সবুজ পাঞ্জাবীটা পড়ে নিল । জামা কাপড় পড়ে রেডী । সাড়ে ১২ টায় একটা ইন্টারভিউ আছে । । হাত ঘড়ীটা এখন খুজে পাচ্ছে না । বিছানার বালিশের নিচে খুজে পেল । ঘড়ি দেখে আলীর মুড অফ । ঘড়িতে ১০ টা বাজে । কিন্তু দেয়াল ঘড়িতে ১২ টা বাজে !!!
আসল টাইম টা জানা দরকার । যদি ১২ টা বাজে তাহলে সর্বনাশ ?
চায়ের দোকানে টাইম জিজ্ঞেস করল আলি । দোকানদার বলল, ভাই ৯ টা বাজে !!
সব দোকানেই ৯ টা বাজে । তাহলে ২ ঘড়িতেই প্রবলেম । অনেক সময় বাকি আছে । হাতে টাইম ই টাইম । এই টাইমে আরেকটা জব খুজা যেতে পারে । একটু হাটাহাটি করতে হবে । সবুজ পাঞ্জাবী ও কালো মোটা চশমা পড়ে রাস্তায় ঘুড়ছে আলী ।
একটা গাড়ি এসে থামল আলীর সামনে । গাড়ি থেকে একটা লোক নামল । সেই কাল কোর্ট পড়া টাক্কু লোকটা । আলীকে অনেক টা জোড় করেই গাড়িতে ঢুকালো ।
গাড়িতে একটা ল্যাপটপ বের করে আলীকে একটা ভিডিও দেখাল । ভিডিও দেখে আলী শক!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!
ভিডিওতে আলী সিড়ি থেক একটা কলার চোচা উঠাচ্ছে । তার মানে নিগ্রো শালারা আমার দরজায় একটা গোপন ক্যামেরা রেখেছিল । উপ্স ।
ভিডিওতে স্পস্ট যে আলী দরজা দিয়ে উকি দিয়ে দেখছে আশেপাশে কেউ আছে কি না ।
কলার চোচাও পকেটে ঢুকানোর দৃশ্য একদম ক্লিয়ার ।
কালো লোকটা আলীর দিকে রাগি দৃষ্টিতে তাকাল । আলী শিশু বাচ্চার মত চুপ । এখন ওকে জাহান্নামে নিলেও সে রাজী । ড্রাইভার টা লুকিং গ্লাস্টা আলীর দিকে ফিট করল । ড্রাইভারেরো রাগি চোখ দেখাযাচ্ছে । মানে ড্রাইভারো আমার দিকে তাকিয়ে আছে ।
এমন পরিবেশে শুধু হাজতের খুনীরাই থাকে । এসি গাড়িতেই ঘামতে লাগল আলি ।
আলীর মনে পড়ছে একটা গান । গান টা গাড়িতে বাজলে ভাল হতো ।
........................।। পড়ে গেলাম মাইঙ্কার চিপায়
লেখকের কথা -- "আলী আমার ফেভারিট একটা চরিত্র এইটা সবাই কম বেশী জানে । আলীর গল্প গুলো কপি পেস্ট ও হয় অনেক । এতে আমার কোন আফসুস নেই । তবে আমার নাম টা নিচে শেয়ার করলে খুশী হব
--- বাকি অংশ পড়ের পোষ্ট এ থাকবে ----