somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিবিসির এক অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে ক্ষুদ্রঋণের কিস্তি শোধ করতে বাংলাদেশের গরিব মানুষ নিজের অঙ্গ বিক্রি করছে

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৮:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গত ২৮ অক্টোবর সোমবার বিবিসির অনলাইনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঋণের টাকা পরিশোধ করতে বাংলাদেশের অনেক গরিব মানুষ নিজেদের অঙ্গ বিক্রি করছে।
নিচের লিংকে মূল প্রতিবেদনটি পাবেন।
The Bangladesh poor selling organs to pay debts
ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো মাত্রাতিরিক্ত সুদ নেয় বলেও ওই প্রতিবেদনে বলা হয়।
“দারিদ্র্য দূর করার একটি পদক্ষেপের অংশ হিসেবে অগণিত মানুষ ক্ষুদ্রঋণ দাতাদের ঋণের জালে জড়িয়ে পড়ছে। এরপর তারা এমন একটি অবস্থায় পড়ছে যেখানে তারা ঋণের অর্থ শোধ করতে অপারগ,” বলা হয়েছে সোফি কাজিনের প্রতিবেদনে।
“ঋণ শোধের সর্বশেষ অবলম্বন হিসেবে অনেকে নিজের অঙ্গ বিক্রি করেছেন এবং বেরিয়ে এসেছেন দারিদ্র্যের কষাঘাত থেকে।”
প্রতিবেদনে এ বিষয়টির ওপর গুরুত্ব দেয়া হয় যে, “এই ঋণ দাতা প্রতিষ্ঠানগুলো প্রকৃত অর্থে গড়ে উঠেছে ক্ষুদ্রঋণ প্রদানের মাধ্যমে সেই সব মানুষকে দারিদ্র্য থেকে বের করে আনতে, যাদের বিদ্যমান ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ঋণ নেয়ার সামর্থ্য নেই। এগুলো গড়ে উঠেছে নারী উদ্যোক্তা তৈরি ও নারীর ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে।”
ঋণের অর্থ সংগ্রহের পদ্ধতি এবং ঋণগ্রহীতারা একাধিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়েছেন কি না, সে বিষয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোর যথাযথ যাচাই-বাছাই না করার বিষয়টিও উঠে এসেছে বিবিসির প্রতিবেদনে।
“ফলে, এটা একটি দুষ্ট চক্র তৈরি করে যেখানে একটি ঋণের কিস্তি শোধ করতে ঋণ গ্রহীতারা অন্য এনজিও থেকে ঋণ করে। পরে অনেকে আর ঋণ শোধ দিতে পারে না। তখন কিস্তি দেয়ার জন্য অঙ্গ বিক্রির মতো চূড়ান্ত পদক্ষেপ নেয় অনেকে,” বলা হয় কাজিনের প্রতিবেদনে।
এ ধরনের বেশ কয়েকটি ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে প্রতিবেদনে, যার বেশিরভাগই জয়পুরহাটের কালাই গ্রামের।
বাংলাদেশিদের অঙ্গ বিক্রির ওপর গবেষণাকারী মনির মনিরুজ্জামানের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, অঙ্গ বিক্রি করা অনেকে তাকে বলেছেন- ক্ষুদ্র ঋণের কিস্তি শোধের চাপে পড়ে তারা এটা করেছেন।
একজন মনিরকে বলেছেন, এনজিও কর্মকর্তাদের মুখোমুখি হওয়ার ভয়ে তিনি গ্রাম ছেড়েছেন।
“এনজিওর সামাজিক ও অর্থনৈতিক চাপ এতো অসহনীয় ছিল যে, তিনি কিডনি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন,” বলেন মিসিগান স্টেট ইউনিভার্সিটির নৃবিজ্ঞানের অধ্যাপক মনিরুজ্জামান।
বাংলাদেশের দুই প্রধান ক্ষুদ্র ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান ব্র্যাক ও গ্রামীণ ব্যাংক অবশ্য ঋণ গ্রহীতাদের চাপ দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
ব্র্যাকের মোহাম্মাদ আরিফুল হক বিবিসিকে বলেন, “ঋণ গ্রহীতাদের ঋণের অর্থ ফেরত দেয়া বড় কোনো ব্যাপার নয়।”
দীর্ঘদিন ধরে নোবেলজয়ী ইউনূসের ‘কর্তৃত্বে’ থাকা গ্রামীণ ব্যাংকের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, “বেশিরভাগ গ্রহীতারই তাদের অ্যাকাউন্টে ঋণের অর্থের অন্তত ৭৫ ভাগ সঞ্চয় আছে।”
তবে তাদের সুদের হার মাত্রাতিরিক্ত, তা ব্যাংকের সুদের হারের চেয়ে অনেক বেশি।
বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক ঋণের ওপর ২৭ শতাংশ, আর গ্রামীণ ব্যাংক ২০ শতাংশ সুদ নিয়ে থাকে।
সাম্প্রতিক গবেষণার বরাত দিয়ে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, এ খাতে ঋণ শোধের পদ্ধতি এবং বাংলাদেশের গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর আয় করার তেমন সুযোগ না থাকাটাই মূলত সমস্যার সৃষ্টি করছে।
ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে সামষ্টিক ঋণ কমে আসে বলে বিশ্ব ব্যাংক দাবি করলেও এবং এর মাধ্যমে ১০ লাখ বাংলাদেশি দারিদ্র্য থেকে বেরিয়ে এসেছে বলে একটি গবেষণায় দেখানো হলেও আরেকটি গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০৬-০৭ সালে মাত্র ৭ শতাংশ ঋণ গ্রহীতা দারিদ্র্য সীমা থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছেন।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৯:০৭
৫টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×