মৃত্যু কী? স্ত্রীলোকের গর্ভে জন্মগ্রহণকারী মানুষের জীবন অল্পদিনের, আর মৃত্যু (?)। মানুষ মরার পরে কি আবার জীবিত হবে (?)।তাহলে, আমরা মারা গেলে পর ঠিক কি হবে? এখানেই কি আমাদের অস্তিত্ব শেষ হয়ে যাবে? মৃত্যু কি আমাদের জীবনের সমাপ্তি, না-কি শুধু আমাদের এক জগত থেকে আরেক জগতে স্থানান্তর?
আমাদের ধর্ম গ্রন্থে বলা হয়েছে , মৃত্যুর পরের জীবন অমরত্বের যার কোন শেষ নেই। সেখানে আরো বলা হয়েছে স্বর্গ- নরকের কথা। কোরআন শরীফে বেশ অনেক বার বলা হয়েছে, প্রত্যেককে বিচার করে আল্লাহ তা’লা স্বর্গ অথবা নরকে পাঠাবেন। যারা স্বর্গে যাবেন, তাদের জন্যে থাকবে খুবই আরামদায়ক সুখকর জীবন। আর যারা পৃথিবীতে আল্লাহ’র নির্দেশ অমান্য করেছিল, তাদেরকে যেতে হবে ভীষণ কষ্টকর নরকে। শেষ বিচারের দিনে, আল্লাহ বলেছেন, কারোর বিরুদ্ধে বিন্দু মাত্র অবিচার করা হবে না। কিছু মানুষ তাদের ভাল কাজের জন্যে পুরস্কৃত হয়ে স্বর্গে যাবেন, আর পাপীরা তাদের শাস্থি পাবে নরকের কষ্ট-বেদনায়।মৃত্যুর পরের জীবনই আসল আর সত্যিকার জীবন। এই পৃথিবীর জীবনকে বলা হয়েছে মরীচিকার কৃত্রিম জীবন। এই জীবনের খুব অল্প সময়ের। কিন্তু এই অল্প সময়ের মহাত্ম অনেক। এই সময় সঠিক ব্যাবহার করতে পারলেই আমাদের বাকি পথ চলাটুকু নির্বিঘ্ন হতে পারে।
বাইবেল আমাদের বলে যে, মৃত্যুর পরে শুধু যে জীবন আছে তা-ই নয়, আছে এক চমৎকার অনন্ত জীবন, যা “কেউ চোখেও দেখে নি, কানেও শোনে নি এবং মনেও ভাবে নি”
ধর্ম কথা কিছুক্ষনের জন্য বন্ধ থাকুক। এই ফাঁকে আমরা বিজ্ঞানের কাছে যাই।
মৃত্যু কী ?
শরীর ও আত্মার বিচ্ছেদ ই মরণ। বিজ্ঞানিরে কি আত্নার অস্তিত্ব বিশ্বাস করেন ? তাঁরা আত্নার অস্তিত্ব বিশ্বাস করলেও মুখ বুজে থাকেন সরাসরি প্রশ্ন করলে কৌশলে এড়িয়ে যান। হৃদস্পন্দন বন্ধ হওয়া মানেই যে মৃত্যু নয় তা আজ বিজ্ঞান প্রমাণ করেছেন। সার্জন ডানকান ম্যাকডুগাল আত্নার অস্তিত্ব বিজ্ঞানিক ভাবে প্রমান করেছিলাম আর তার মনে “ মৃত্যুর পর মানুষের ওজন একুশ গ্রাম কমে যায়। “আত্নার ওজন একুশ গ্রাম” এই তথ্যটি প্রকাশিত হয়েছিল (১৯০৭) সালে বিখ্যাত জার্নাল American Medicine- এ ।
মৃত্যুকে সামনে রেখে বিজ্ঞানিনের সাধনা শুরু হলো অমরত্ব লাভের
মৃত্যুকে জয় করার সাধন আজ থেকে নয়। Elixir of Life এর সন্ধানে বিজ্ঞানিরে অনেক আগেই এগিয়ে এসেছিলেন। তাদের এই এগিয়ে আশা সম্ভব হয়ে ওঠলা। তারা শুরু করলেন পরকালে অমরত্বের সন্ধান। আর পৃথিবীর সকল ধর্ম গ্রন্থেই বলা হয়েছে অমরত্বের কথা (মহাযান,হীনযান বাদে)।
অমরত্ব লাভের জন্য কত কিছুই না করেছিলেন বিশ্বজয়ি চেঙ্গিস খাঁ, চীনের মিং সম্রাট, পারস্য সম্রাট দারায়ুস আরো অনেকে!
চীনের এক ভদ্র মহিলা প্রায় অমরত্ব লাভের কাছা কাছি চলে গিয়েছিলেন। শরীরের সকল মাংস প্রায় পচে গেছে মাংস পচা গন্ধ আসে শরীর থেকে। তার আসে পাশে তেমন কেউ জেত না। এমন কি তিনি নড়তে-চড়তে পারতেন না। বেঁচে ছিল তার শ্বাসপ্রশ্বাস। বিছানায় শুয়ে শুয়ে তিনি শুধু আহাজারি করতেন একে একে তার কাছে সবাই মৃত্য পথ যাত্রী হয়েছে তিনি কেন এখনো বেঁচে আছেন ? প্রতিদিন তিনি আজরাইলকে ডাকেন । আজরাইল তার ডাকে সায় দেন না। একদিন সায় দিলেন। ডাকস কেন আমাকে ?
তখন ভদ্র মহিলা কমল কন্ঠে বললেন আপনি কে ?
প্রতিদিন যাকে ডেকে বেরান আমি সে। ( মাননীয় আজরাইল )
আসসালামু আলাইকুম আপনি কেন কষ্ট করে এখানে আসলেন ?
আমি তো নিজ হতে আসিনি তুমি তো ডাক আমাকে প্রতিদিন !
এমনি ডাকি। আমি ভালো আছি। সুখে আছি আপনি চলে যান। কষ্ট করে এসেছেন এর জন্য আসসালামু আলায়কুম।
মরতে চাও না ?
কী বলছেন আপনি এই সব ? কেন মরব ? অনেক গুরুত্বপূরন কাজ কাম বাকী আছে এখনো।
আমরা কেউ মৃত্যু পথের যাত্রি হতে চাই না যদিও আমরা সবাই জানি একদিন সবাই আমরা এই পথের যাত্রী।
অমরত্ব
অনেকেই আবার এই মৃত্যুকে অমরত্ব করেছেন তাদের কর্মের ফলে। মানুষের কর্মের মধ্য দিয়েই মানুষ বেঁচে থেকে অনন্ত কাল আমাদের মাঝে। আমরত্ব লাভের আশায় শত কিছু করেও কেউ তার শরীর চিরদিন ধারন করতে পারেনি। শুধুই তার কর্ম ধারন করতে পেরেছে এই দুনিয়াতে। রবিন্দ্রনাথ কাছে যাই-
শ্রাবন গগন ঘিরে
ঘন মেঘ ঘুরে ফিরে
শূন্য নরীদ তিরে
রহিনু পড়ি
যাহা ছিল নিয়ে গেল সোনার তরী !