অনলাইন এ অনেক হাউকাই দেখলাম সিম রিভেরিফাই নিয়ে। মনে হলো এ ব্যাপারে ক্ষুদ্র কিছু কথা বলি।
প্রথমেই এক মিনিট নিরবতা তাদের জন্য যারা সরকার এবং মোবাইল অপারেটর কোম্পানি গুলোর উপর বিনা মেঘে ব্রর্জপাতের মত বিনা কারণে গালি বর্ষণ করে যাচ্ছেন।
অনেকেই দেখি বলছেন বিদেশি কোম্পানির হাতে কেনো আমার তথ্য যাচ্ছে। তারা এই তথ্য নিয়ে বৃহত্তর স্বার্থে আমার ক্ষুদ্র জীবনের বৃহত্তর ক্ষতি করবেনা এই গ্যারান্টি কে দিবে? একটা এন আই ডি দিয়ে কেনো এত সিম নিবন্ধন করা যাবে? নিরাপত্তার নামে অশিক্ষিত অর্ধশিক্ষিত কর্মী দ্বারা সিম রি ভেরিফাই করছে যা পরবর্তিতে হয়রানি বাড়াবে। এসব নিয়ে ইভেন্ট দেখলাম পাবলিকের ব্যাক্তিগত প্রোফাইল দেখলাম ইভেন একটা ব্লগে এই নিয়ে পোষ্ট দেখলাম। তাতে অধিকাংশ ব্লগারের মন্তব্য হাসির খোড়াক। সেইখানে অনেকের কথাবার্তা এমন যে ভোটার আইডি কার্ডের সিরিয়াল নাম্বার প্রবেশ করালেই আমার তথ্য পায় সেহেতু ছবি নিবে কেনো? ছবি নিলো কথা না আমার আঙুলের ছাপ নিবে কেনো? ফেসবুকের একটা পোষ্টে দেখলাম শেমুর ডিজিটাল বাংলাদেশ। শেমুর বলাও ত খারাপ। যেইখানে এই স্বাধীন দেশের স্থপতি তিনি। এক মিনিট নীরবতা সেই পাকিদের জন্যও।
সিম রি ভেরিফাই কি করে করা হয়?
আপনি সিম রে ভেরিফাই করতে গেলে তারা আপনার ভোটার আইডি কার্ড বা এন আই ডির সিরিয়াল নাম্বার তাদের ডিভাইসে প্রবেশ করায়। তার নিচে ডেট অফ বার্থ। এরপর আপনার ফোন নাম্বার। আর আপনার ফোনে আসা টি পিন প্রবেশ করায় তার নিচে। তারপর এটাকে সাবমিট করা হয়। সাবমিট করার পর সার্ভারে কানেক্ট থাকা অবস্থায় আপনার আঙুলের ছাপ নেয়। আপনার আঙুলের ছাপ টি আপনার ই কিনা অর্থাৎ যে এন আই ডি দিয়ে সাবমিট করা হয়েছে সে এন আই ডি আপনার কিনা তা দেখতেই এই প্রক্রিয়া। আপনার আঙুলের ছাপ নেয়ার সাথে সাথে দেখবেন ৭০-৯৫% ম্যাচ দেখায়। অর্থাৎ আপনি এন আই ডি করার সময় যে আঙুলের ছাপ দিয়েছিলেন তা আপনার। মানে আপনি উপস্থিত আরেকটা ব্যাপার হলো আপনার এন আইডি সিরিয়ালের নিচে যে ফোন নাম্বার দেয়া হয় সে নাম্বারে কোড আসে। আর তারপর আঙুলের ছাপ দিয়ে আপনি নিজে আপনার নাম্বার ভেরিফাই করেন। অনেকে বলছেন তাদের তথ্য চুরি হচ্ছ এটাতে। আমার ক্ষুদ্র মস্তিষ্ক তা ধরতে পারেনা। আপনার আইডির তথ নিয়ে তারা কি করতে পারে আপনার? কেউ কেউ বলছেন এক আইডি দিয়ে অনেক সিম ভেরিফাই করা যায় তাহলে নিরাপত্তার কথা আসে কেনো? আরে ভাই এক লাখ করলেই সমস্যা কি? ফোন নাম্বার তো আপনার। আপনি অঘটন না ঘটালেই হয়। বরং এই দিকে দিয়ে নিরাপদ যে আপনার সিম অন্য কেউ আপনার ভোটার আইডি ছবি চুরি করেও রিপ্লেস করতে পারবেনা আঙুলের ছাপের জন্য। আজ এক স্কুলের ইংরেজির শিক্ষকের সাথে কথা হচ্ছিল উনি বলল ছবি নিচ্ছে কেনো? বললাম স্যার স্কুলে বাচ্চাদের ছবি নেন কেনো? উনি আর কথা বাড়ালেন না। আজ একটু আগে এক ভায়ের পোষ্টে মন্তব্য করলাম ভাই আপনি একটু কম জানেন বোধহয়। উনি মন্তব্য দিলেন একজন কে দিয়ে বিশজনের সিম রিভেরিফাই করছে। আমার কথা উনি দিলেন কেনো? তিনি পাল্টা বলেছেন ইনি জানতেন ই না। ঠিকাছে মেনে নিলাম। সবাই একরকম তো হবেনা। এখন ধরেন একজন খুন হলো তার পাশে সিম পাওয়া গেলো সেই সিম তার নামে নিবন্ধন করে। এখন পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে যাবে হয়্রানির শিকার হবে সে এর বাইরে কিছুনা। তদন্তেতো বের হয়ে আসবে সে ঐদিন ঐসময় কই ছিলো তাইনা? তারপরে সিম টা কোন লোকেশন থেকে শেষ ব্যাবহার করা হয়েছে এর বাইরেও আরো কিছু আছে। যেমন ঐ সিম টা কোথায় থেকে নিবন্ধন করা হয়েছে? কোম্পানির কোন লোক সেদিন নিবন্ধন করেছিলো? আর তার্পর যদি সিম হারিয়ে যায় বা নষ্ট হয় তখন তো আর ঐ লোক ছাড়া রিপ্লেস করা যাবেনা। আরে ভাই আমাদের অভ্যাস ফাল পাড়া। এর বাইরে কিছুনা।
এই প্রক্রিয়ায় বরং আমরা উপকৃত হবো ক্ষতিগ্রস্ত নয়।
সবখানে সাধুব্যক্তি কিংবা নিয়ম মানা ব্যক্তি থাকবে তা আশা করা ভুল। অনেক ক্ষেত্রেই হয় যে কোনো এক ফ্লেক্সিলোডের দোকানে একজন লোক সিম রি ভেরিফাই করতে আসছেন দোকানদার তাকে বুঝতে না দিয়ে অন্য একটি সিম ভেরিফাই করে নিলো যার ভোটার আইডি কার্ড নাই তার। এটা হওয়া অস্বাভাবিক না। তাহলে কি করা?
ব্যাপার না। আজ থেকে ছয় মাস পরে আবার শুনবেন সিম রিভেরিফাই করতে হবে। বেশি কিছুনা সচল সিম আর আপনি উপস্থিত হলেই হবে। যাবার পর দোকানদার কে নাম্বার দিবেন। তিনি নাম্বার সাবমিট করার পর আপনার আঙুলের ছাপ দিবেন। অতীতের আঙুলের ছাপ আর এখনকার ছাপ দুটা মিললেই হলো। যারা অনিয়ম করে সিম রিভেরিফাই করবে তাদের সিম আর কাজ করবেনা। আমার ধারনা কেউ হয়তো বলতেই পারেন শুনলাম না তো।
যেহেতু দুই ধাপের কাজ না শোনাই স্বাভাবিক পাবলিক এখনই ভালো চোখে নেয়না। তাই হয়তো গোপন রাখছে।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৬ রাত ১০:৫৮