আস্সালামুআলাইকুম, পুরো পোষ্টটা পড়তে আপনার কাছে বিশেষ আবেদন রইল যদিও আপনার কিছু সময় নষ্ট হবে । আজ পৃথিবীতে ইসলামের যে বিষয় নিয়ে সবচেয়ে বেশী অপব্যাখ্যা করা হচ্ছে তা হল “ জিহাদ ” । অথচ এই বিষয়ে কুরআনে ৫০০টি এরও বেশী আয়াত রয়েছে । রাসূল (সাঃ) নিজে ১৭ কিংবা ১৯টি যুদ্ধের সেনাপতি ছিলেন । হাদীসের এমন কোন কিতাব নেই যেখানে জিহাদ সম্বন্ধে বলেনি । অথচ এরপরেও আজ আমরা এমন এক পরিস্থিতে এসে পড়েছি যেখানে দাড়ি,টুপি পরে কোন ব্যক্তি যদি তথাকথিত নাশকতা করে তাহলে কাফের মুষরেক ও তাগুতের আগে নামধারী মূর্খ মুসলীম ও জ্ঞানপাপী আলেমরা বলে উঠে এই হচ্ছে সন্ত্রাসী । কেন যেন মনে হচ্ছে বর্তমানে যদি রাসূল (সাঃ) নিজে এসেও যুদ্ধের আহ্ববান করত তাহলে স্বয়ং রাসূলকেও (সাঃ) এরা সন্ত্রাসী বলতে দ্বিধাবোধ করবে না । তাইতো বলা হয়েছে ঈমাম মাহদীর সঙ্গে মদীনায় রক্তপাত হবে । (২৪/০২/২০০১৫) আরব টাইমসে হেডলাইন হল “ যারা কুরআনকে ভুল বুঝেছে তারাই চরম পন্থি হয়েছে ” বিবৃতিটা দিয়েছে মিশরের সবচেয়ে বড় আলেম আযহার ।( উনার মত আলেমদের মতে চরমপন্থি হল মুসলীমদের মধ্যে যারা আমেরিকা ও তাগুতের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে ) । উনার মতে আবদুল ফাতাহ (সিসি), শেখ হাছিনা, খালেদা জিয়া, আরবের সকল শাসক কুরআনকে সঠিক বুঝেছে তাইতো তারা আমেরিকার গোলামে পরিনত হয়েছে । এই আলেম নাকি সুন্নিদের সবচেয়ে সম্মানী যা কুফফার নিয়ন্ত্রিত মিডিয়াতে বলেছে । একবার চিন্তা করুন এই সম্মানী আলেম যদি কুরআনের সূরা বাকারাহ ২১৬ আয়াতের কথা বলত তাহলে আমি নিশ্চিত তার এই খবর আরব টাইমসের হেডলাইনতো দূরের কথা শেষের পাতার এক কুনেও লেখা হত না । এমন মিডিয়া দেখে আমাদের মুসলীম ভাইয়েরাও গোমরাহীর শিকার হচ্ছে যা অত্যান্ত দুঃখ জনক । এবার আসি মুল কথায় ,........................
আমার কিছু পোষ্ট পড়ে এক ভাই কয়েকটা কমেনট করেছে উনি আমার সাথে কথা বলতে চায় । আমি বললাম কোন সমস্যা নেই তখন তাকে আমার মোবাইল নাম্বার ও স্কাইপ আইডি দিলাম । এরপর কিছুদিনের মাথায় উনি কল করল স্কাইপে ,
লোকটি: শুরুতেই বলল আপনি কি জানেন জিহাদ করতে কি কি লাগে ?
আমি : বললাম ভাই উত্তরটা দেওয়ার আগে আমি কিছু প্রশ্ন করতে চাই আপনাকে ?
লোকটি : বলুন ?
আমি : আপনি কি জানেন কুরআনে আল্লাহ বলেছেন তোমরা আমার ( আল্লাহ ) প্রতি ঈমান আনার আগে একটা শর্ত পালন কর , সেই শর্তটা কি ? এরপর বলুন কালেমার প্রথম শব্দ “ লা ” দিয়ে কি বুঝানো হয়েছে ?
লোকটি : আমি জানি না ।
আমি : তাহলে ভাই আপনিতো এখনো ঈমানদারও হলেন না । আচ্ছা পরের প্রশ্ন , আপনি কি জানেন কোন কোন দিন রোজা রাখা হারাম ? কোন কোন রোজা রাখা ফরজ, কোন কোন রোজা রাখা ওয়াজীব ?
লোকটি : দুই ঈদের দিন রোজা রাখা হারাম ,আর কিছু জানি না ?
আমি : ভাই আপনার উত্তর সঠিক হয়নি এবং আপনি রোজা সম্বন্ধেও ভাল করে জানেন না ।
লোকটি : তারপর ?
আমি : দেখুন যে সূরাতে রোজাকে ফরজ করেছেন সেই একই সূরাতে (কতল) জিহাদকে ফরজ বলেছে । আরো মজার বিষয় হচ্ছে রোজাকে আগে মানে ১৮৩ নং আয়াতে আর (কতল) জিহাদকে ২১৬ নং আয়াতে মানে পরে ফরজ করেছেন । আপনি তো রোজা সম্বন্ধেও ভাল করে জানেন না তাহলে রোজা সম্বন্ধে কেন প্রশ্ন করলেন না ? যাই হোক এটা আপনার দোষ নয়, পুরো মুসলীম জাতীরই একই সমস্যা । আমাদের মধ্যে বেশীর ভাগই জানে না নামাজে ফরজ কয়টি, ওযুতে ফরজ কয়টি, তায়ামুমে ফরজ কি কি , এরপরেও তারা আলেমদের কাছে গিয়ে এইগুলো নিয়ে প্রশ্ন করে না এমনকি এইগুলো কে আলোচনার বিষয় বলেও গুরত্ব দেয় না যদিও এইগুলো জানা সকলের জন্য আবশ্যক । অথচ এই মূর্খ লোকগুলোর সামনে যখন কোন ব্যক্তি যদি জিহাদ নিয়ে কোন কথা বলে তখন ঐ লোকের কথা শেষ না হতেই করে বসে হাজারো প্রশ্ন ? এমনটা কেন হচ্ছে, সমাজের মানুষের এমন প্রশ্ন দেখে মনে হয় আল্লাহ শুধু জিহাদ ফরজ করেছেন অন্য কিছু নয় । একটু চিন্তুা করুন ভাই এইভাবেই শয়তান আপনাকে মুনাফিকের কাতারে দাড় করাচ্ছে ।
লোকটি : তাহলে আপনি কি বলতে চাচ্ছেন ?
আমি : ভাই আমি বলতে চাচ্ছি নামাজের জন্য যেমন করে দলমত নির্বিশেষে সকলেই মসজিদে এক কাতারে হাজির হতে চেষ্টা করি তেমনি জিহাদের ( কতলের ) জন্যও দলমত নির্বিশেষে সকলে এক কাতারে হাজির হওয়ার চেষ্টা করার মাধ্যমে এক হওয়া দরকার । তারপর নামাজে যেমন উপস্থিতির মধ্যে সবচেয়ে জ্ঞানী ব্যক্তি ঈমামতী করে ঠিক তেমনি আমরা যখন জিহাদের উদ্দেশ্যে একত্র হব তখন সকলের মাঝে যে সবচেয়ে বেশী ইসলামে আনুগত্যশীল ও জ্ঞানী তাকে ঈমাম মেনে মিশনে বেরিয়ে পড়ব । তাই বলছি আগে জিহাদ বিষয়ে সংশয় দূর করে আনুগত্যের মন মানসিকতা গড়ে তুলুন । যদি এমন হয় তাহলে রাসূল (সাঃ) বলেছেন এই রকম আন্তরিকতার কারনে আপনি যদি জ্বরেও মারা যান তাহলে শহীদি মর্যাদা পাবেন ইনশাআল্লাহ ।
লোকটি : আপনার মত মানুষকে সঠিক বুঝাতে পারব না ।
আমি : ভাই আপনি মনে করবেন না আমি তালেবান, আল কায়েদা বা আইএসর লোক তবে মনে রাখবেন যারাই কুরআনের মাধ্যমে যে কোন ব্যাপারে যে কোন ব্যক্তি আমাকে ডাকবে আমি প্রস্তুত তার সঙ্গি হবার জন্য যদি সেই তালেবান বা আল কায়েদাও হয় বা আওয়ামী লীগ, বি.এন.পি, তাবলীগ জামাত, আহলে হাদীস, ইসলামী শাসনতন্ত্র কিংবা জামাত ইসলামও হয় তবে শর্ত হচ্ছে তারা যদি শিরক না করে, তাগুতকে সমর্থন না করে । কারন আমি তালেবান বা আল কায়দা বা আওয়ামী লীগ, বি.এন.পি, তাবলীগ জামাত, আহলে হাদীস, ইসলামী শাসনতন্ত্র কিংবা জামাত ইসলাম দেখে নয় কুরআনের আহ্ববানে সাড়া দিচ্ছি ।
এর কিছুহ্মন পরে দেখি লোকটি আমাকে ব্লক করেছে । এই নিয়ে কি মন্তব্য আপনার ?
ভাই/বোন আপনাকে বলছি !
কোন ব্যক্তির অন্ধ আনুগত্য করবেন না , হোক না সেই দেলোয়ার হোসেন সাইদী বা মুফতী শফী বা চরমোনাইয়ের পীর সহ অন্য যে কোন পীর বা ডঃ জাকির নায়েক বা মতিউর রহমান মাদানী বা মুফতী ও শাইখুল হাদীস জসীমুদ্দিন রাহমানীর মত অন্য কোন আলেমের ? কারন কুরআন বলতেছে, নিশ্চয় আমি আপনার প্রতি সত্য কিতাব অবতীর্ণ করেছি, যাতে আপনি মানুষের মধ্যে ফয়সালা করেন, যা আল্লাহ আপনাকে হৃদয়ঙ্গম করান। আপনি বিশ্বাসঘাতকদের পক্ষ থেকে বিতর্ককারী হবেন না। সূরা নিসা ১০৫ । আরো স্পষ্ট করে বলা হয়েছে ,হে ঈমানদারগণ! আল্লাহর নির্দেশ মান্য কর, নির্দেশ মান্য কর রসূলের এবং তোমাদের মধ্যে যারা বিচারক তাদের ।তারপর যদি তোমরা কোন বিষয়ে ঝগড়া,তর্কে বা বিবাদে প্রবৃত্ত হয়ে পড়, তাহলে তা আল্লাহ (কুরআন ) ও তাঁর রসূলের (হাদীস ) প্রতি প্রত্যর্পণ কর- ( দিয়ে মিমাংসা কর )যদি তোমরা আল্লাহ ও কেয়ামত দিবসের উপর বিশ্বাসী হয়ে থাক। আর এটাই কল্যাণকর এবং পরিণতির দিক দিয়ে উত্তম । সূরা নিসা ৬০ । আমাদেরকে কুরআনের মাধ্যমে যাচাই করে আলেমদের সম্মান করতে হবে বা বর্জন করতে হবে , অবশ্যই দলীল বিহীন কোন অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হওয়া যাবে না । খেয়াল করতে হবে যে আলেম সম্পর্কে যা শুনছেন তা আজো সত্য কিনা বা যেটা শুনতেছেন তা কাট ছাট করা কোন কিছু কিনা ? এর পরেও কেন আমরা বিভাজনে একে অপরকে ভুল বুঝে বিচ্ছিন্ন হব ? সচেতন হবেন তা থেকে অন্যের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য আপনি ব্যবহার হচ্ছেন কিনা কারন পীরেরা ও নামধারী ইসলামীক দলগুলো তাদের স্বার্থের জন্য মূর্খ মুসলীমদের ব্যবহার করতেছে । তাই আসুন কুরআন সুন্নাহর আলোকে জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে নিজেকে আনুগত্যশীল করি যদি জান্নাতের আকাংখা থাকে । আল্লাহ যেন আমাদের সবাইকে সত্য বুঝার তওফিক দান করেন । আমীন
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:৩৮