একটা পুরুনো বাড়ির অন্ধকার রাস্তায় অস্পষ্ট একজন আমাদের পথ দেখিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল। আমরা বলতে আমি আর আমার এক বন্ধু বাকিদের আমি চিনি না, কখনও দেখেছি বলেও মনে পরেনা (চিনব কি করে তারাও আমার মত টিকিট কেটে এসেছে)। বাড়িতে ঢোকেই তাদের প্রতি নজর পরল। সবাইকে কেমন ভীত ভীত লাগছিল। মনে হয় আগেও এই রাস্তায় তাদের চলাফেরা ছিল। মুভি দেখাবার কথা বলে আমার বন্ধু আমাকে এখানে এনেছে (মনে করেছিলাম থ্রীডি হরর মুভি দেখাবে)। আমার বন্ধুকে জিগ্যাসা করতেই সে বলল সেও প্রথম এসেছে। অজানা একটা ভয় চারদিক থেকে ঘিরে ধরল আমাকে। বাড়িটাতে আসার আগেও ঝলমলে আলো ছিল চারিদিকে, এখন আবছা অন্ধকার গ্রাস করছে আমাদের। ফিরে যাবার চিন্তা করে পিছনে ফিরেদেখি দরজা গুলু এক এক করে বন্ধ হয়ে গেল। ভয় বেরে গেল আমার। আমি এমনিতে ভয়ের কোন মুভি দেখতে পারিনা। লোভ সামলাতে না পেরে ভুলে একটা দেখে ফেললে ৬/৭ দিন আমার ঘুম হারাম। কিন্তু এখন যা দেখছি তা কোন মুভি না। হঠাৎ একটা চিৎকার শুনতে পেলাম। কি হয়েছে দেখতে এগিয়ে গেলাম। দেখলাম আমাদের সাথের একটা মেয়ে চিৎকার করে কাঁদছে,কে নাকি তার জামা টেনে ধরেছিল। মনে মনে বললাম বদমাইশ পোলাপাইন হবে হয়ত। কিন্তু মেয়েটির কথা শুনে আমার অবস্তা কাহিল। যে টেনে ধরেছিল তার নাকি মাথা নেই (সেভাবেই মেকাপ করা হয়েছে)।
অজানা ভয়ে আমরা এগোতে লাগলাম। কিছুদূর এগোতেই একটা ভাংগা বাড়িতে এসে পরলাম (ইভেল ডেড ২ ষ্টাইলের)। বাড়িতে কেউ থাকে বলে মনে হলনা। হঠাৎ বাতাস বইতে লাগল। দরজা জানালা ঠাস ঠাস করে খুলছে আর লাগছে। আমি ভয়ে সবার পিছনে হাটছি। আমার কানের কাছে কিসের একটা ফিসফিস শব্দ শুনে ফিরে তাকাতেই চিৎকার করে উঠলাম। একটা মানূষ সাদা কাপর পরনে মাথার একটা পাস রক্তে ভেজা। একটা চোখ জ্বলছিল অন্যটা অন্ধকার। আমার খুব কাছে এসে হাসছিল।
আরও কয়েকটা চিৎকার শুনতে পেলাম।আমার নিজের চোখে কয়েকটি বিভৎস চেহারার আত্মাকে মিলিয়ে যেতে দেখেছি আন্ধকারের আরালে (কিভাবে করেছে জানি না)। এভাবে আরও কিছুটা পথ হেটেছিলাম। আমার বন্ধুটিকে সাহসি বলে জানতাম। এই রাস্তায় আসার পর আমার হাত যে ভাবে ধরে আছে তাতে তাকে সাহসি বলা যায় না। তার ফেকাসে মুখ দেখে বড় মায়া হচ্ছিল। সাহসও দিতে পারছিনা কারন আমরা সবাই একই জালে আটকে আছি।
সামনে একটা ঘরে সামান্য আলো দেখে বুকে একটু সাহস হল।
দরজার সামনে কাল রংএর আলখাল্লা পরা একজন দাড়িয়ে হাত ইসারায় আমাদের কাছে ডাকল। তারপর সবার হাতে কি যেন দিচ্ছিল আমাকে দেয়ার পর বুঝতে পারলাম একটা কাগজের চশমা (থ্রীডি চশমা)। এই পরিস্থিতিতে চশমাদিয়ে কি করব বুঝলাম না। লোকটা থমথমে গলায় বলল "তোমরা ভুল পথে হাটছ চশমাটা পরে এই পথে বেরিয়ে যাও"। আমরা তার দেখানো পথেই হাটছি চশমাটাও পরেনিয়েছি সবাই রক্ষা কবজ মনে করে। অল্প কিছুদুর যেতেই একটা বনে ঢোকে গেলাম। বনটা বেশ বড় ইয়া উচু উচু গাছ লতাপাতা তবে আলো এখানেও বেশীনা। এই নরক থেকে বাঁচার জন্য আমাদের আলোর খুব প্রয়োজন।
কিন্তু একি গাছগুলু জিবন্ত প্রানির মত নরা চরা করছে। ডাল গুলু নেমে এসে আমাদের ছপাৎ ছপাৎ করে পেটাচ্ছে কিন্তু আমাদের শরিরের অনুভুতি মৃত মনে হচ্ছে (সবই থ্রীডি পেইন্টিং আর লাইটিং)।
কোন রকম দৌরে বনথেকে বেরিয়ে আসলাম। একটু দমনিয়ে আশেপাশে তকিয়ে দেখে সবাই একসাথে চিৎকার। লাশের ঘরে দাড়িয়ে আছি আমরা। মেঝেতে কাফন জরিয়ে ছরিয়ে ছিটিয়ে দাড়িয়ে আছে কয়েক ডজন লাশ (লাশ শোয়ে না থেকে দাড়িয়ে আছে কেন বুঝলাম না) । আমাদের বের হতে হলে লাশ গুলুকে পাশ কাটিয়ে যেতে হবে। আর কোন রাস্তা না থাকায় ভয়ে ভয়ে লাশের পাস দিয়ে হাটছিলাম শেষ প্রান্তে এসে একটা লাশ হঠাৎ নরে উঠল আবার সবার চিৎকার, আমি ততক্ষনে বাইরে বেরিয়ে পরেছি।
আসুন কিছু ছবি দেখি......
পদটিকা:- ভূত বলতে কিছু নাই সেটা আমিও জানি (রাতে একা বেরহলে মনে হয় সবই আছে), আমি যে বর্ননা দিয়েছি তা সত্য। কিন্তু ভূত গুলু মানুষকে মেকাপ করে বানানো হয়েছে। ঐটা একটা মানুষের বানানো ভূতের পার্ক। সেখানে ভয় পেয়ে মজা পাবার জন্য টিকিট কেটে ঢোকতে হয়। ধন্যবাদ সবাইকে।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জুন, ২০১১ বিকাল ৫:২০