somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চিরকুট ০৭‬

৩০ শে জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অদেখা ২২ ঘণ্টা‬

"গত ২২ ঘণ্টা তোমাকে অনলাইনে দেখিনি। অবশ্য আমার কোন আগ্রহ ও নাই যে, কেন তোমাকে অনলাইনে দেখিনি। শুধু আগ্রহটা এ জায়গায় যে, তোমাকে জিজ্ঞাসা করা হয়নি, "সারাদিন তোমার কেমন কেটেছে?"
হা হা, তোমাকে আমি বলেছিলাম, আমি তোমাকে পরিপূর্ণ একটা জীবন দিতে পারব না। সেই ক্ষমতাও আমি আমার নিজের মধ্যে ধারণ করিনি, ইচ্ছে করে করিনি। আমি ইচ্ছে করলে টুপ করে তোমার ফোন নাম্বার ডায়াল করে তোমার খবরটা নিয়ে নিতে পারতাম। কিন্তু এটা আমি করব না। কারণ আমি তোমার পরিপূর্ণতার মধ্যে প্রবেশ করতে চাই না।

আমি এটাও তোমাকে বলেছিলাম, আমি তোমাকে আমার জীবনের অতি ছোট ছোট কিছু অংশ দিতে পারব, কিছু মোমেন্টস্ দিতে পারব, খুব ছোট ছোট মোমেন্টস, সেই মোমেন্টসগুলো গড়তে হয়তো তোমাকেও হাত লাগাতে হবে, তোমারও কনসেন্ট্রেশনের প্রয়োজন আছে।

যেমন, আমি হাত বাড়াব, তুমি আমার হাতটা ধরে নিতে হবে।
যখন আমার এক ফোটা চোখের জল গাল বেয়ে পড়তে থাকবে, তুমি অন্তত তোমার রুমালটা আমার দিকে বাড়িয়ে ধরতে হবে।
তোমার জন্য জোছনা কুড়ানো রাতগুলোতে, তুমি চাঁদের নিচে থাকা মেঘগুলোকে একটা একটা করে সরিয়ে দিতে হবে।

হা হা, তুমি হয়তো জানো আমি অনেক প্রতিশোধ পরায়ণ, আমার হাতটা তোমার উদ্দেশ্যে বাড়ানো থাকবে সুনির্দিষ্ট একটা সময় পর্যন্ত, এ সময়ের মধ্যে তুমি যদি আমার হাতটা না ধরতে পার, আমি কিন্তু আমার হাতটা নামিয়ে নেব, শেষবারের মত নামিয়ে নেব।
তোমার জন্য আমার চোখের জলটি যদি গাল বেয়ে টপ করে মাটিতে পড়ে যায়, নিশ্চিত থেকো আমার আর কোন দিন কান্না আসবে না, আর কোন চোখের অশ্রু গড়িয়ে পড়বে না।
তোমার জন্য জোছনা কুড়াতে কুড়াতে যদি দেখি, আমার মাথার উপরে মেঘ চলে এসেছে, তুমি মেঘ সরাচ্ছ না, যেনে রেখো আমি বিছানায় যেয়ে ঘুমিয়ে পড়ব, শেষবারের মত ঘুমিয়ে পড়ব।

তোমাকে ছোট্ট একটা গল্প বলি, অনেক বছর আগে চট্টগ্রাম কমার্স কলেজ রোডে একটা পাগল টাইপস্ লোকের সাথে আমার পরিচয় হয়েছিল। আমি কলেজের সামনেই একটা টঙ দোকান থেকে সিঙ্গারা আর কলা খাচ্ছিলাম। পাগল লোকটা এসেই আমাকে ইশারায় বলল, কিছু খাবে। আমি তাকে শিঙ্গারা আর কলা খেতে দিলাম। যে কয়েক ঘণ্টা আমি আগ্রাবাদ এলাকায় ছিলাম, আমার প্রশ্রয় পেয়ে পাগল লোকটা সেই কয়েক ঘণ্টা আমার পিছনে পিছনে ছিল। আমার সাথে দুপুরে লাঞ্চ ও করেছে। আমি যে দোকানটায় লাঞ্চ করেছিলাম সে দোকানটার বাহিরে একটা টুলে বসে লাঞ্চ করেছে। প্রথমে দোকানে ঢুকে গিয়েছিল, পরে আবার কি মনে করে তার ভাতের প্লেটটা নিয়ে বের হয়ে বাহিরে চলে এসে একটা টুলে বসে।
আমি যখন বাদামতলী মোড় থেকে রিক্সায় উঠবো, সে পর্যন্ত সেই পাগল লোকটাও হেটে হেটে আমার সাথে এসেছিল। আমি যখন রিক্সায় উঠে চলে আসছিলাম। ও আমার রিক্সার পিছনে দাড়িয়ে ছিল। আমি রিক্সায় অনেক দূর চলে আসার পরেও দেখেছি পাগল লোকটা দাড়িয়ে আছে। রিক্সা মোড় ঘুরার পরে লোকটাকে আর দেখা যায়নি, কোন দিনও যায় নি।
আমার গল্প এখানেই শেষ।

আমার ধারণা, লোকটাকে সেদিন যদি আমি প্রশ্রয়ও দিতাম, সে আর আমার রিক্সার পিছনে পিছনে আসত না। কারণ সেও ভালভাবে জানে, আমি তাকে কিছু মোমেন্টস্ দিতে পারব এবং দিয়েছি। কিন্তু পরিপূর্ণ একটা জীবন দিতে পারব না।
তুমি কি জান, সেদিন পাগল লোকটাও তাকে দেয়া মোমেন্টসগুলো তৈরী করতে আমাকে সহযোগিতা করেছিল। নতুবা কোন মতেই আমি তাকে দেয়া সে মোমেন্টসগুলো তৈরী করতে পারতাম না।

আলাদাভাবে মনে হয় জীবনের প্রকৃত সংজ্ঞা এখানেই।...

আমার প্রিয় মানুষটি, যখনি অনলাইনে আস, এসেই একটা Hi দিও"।....
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১:৫৬
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শোকের উচ্চারণ।

লিখেছেন মনিরা সুলতানা, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ সকাল ১০:১৬

নিত্যদিনের জেগে উঠা ঢাকা - সমস্তরাত ভারী যানবাহন টানা কিছুটা ক্লান্ত রাজপথ, ফজরের আজান, বসবাস অযোগ্য শহরের তকমা পাওয়া প্রতিদিনের ভোর। এই শ্রাবণেও ময়লা ভেপে উঠা দুর্গন্ধ নিয়ে জেগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

যা হচ্ছে বা হলো তা কি উপকারে লাগলো?

লিখেছেন রানার ব্লগ, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১:২৮

৫ হাজার মৃত্যু গুজব ছড়াচ্ছে কারা?

মানুষ মারা গিয়েছে বলা ভুল হবে হত্যা করা হয়েছে। করলো কারা? দেশে এখন দুই পক্ষ! একে অপর কে দোষ দিচ্ছে! কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

আন্দোলনের নামে উগ্রতা কাম্য নয় | সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যবাদকে না বলুন

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৫:২৭



প্রথমেই বলে নেয়া প্রয়োজন "বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার সমস্ত অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে" ধীরে ধীরে দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসছে। ছাত্রদের কোটা আন্দোলনের উপর ভর করে বা ছাত্রদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোন প্রশ্নের কি উত্তর? আপনাদের মতামত।

লিখেছেন নয়া পাঠক, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৬

এখানে মাত্র ৫টি প্রশ্ন রয়েছে আপনাদের নিকট। আপনারা মানে যত মুক্তিযোদ্ধা বা অতিজ্ঞানী, অতিবুদ্ধিমান ব্লগার রয়েছেন এই ব্লগে প্রশ্নটা তাদের নিকট-ই, যদি তারা এর উত্তর না দিতে পারেন, তবে সাধারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাকুরী সৃষ্টির ব্যাপারে আমাদের সরকার-প্রধানরা শুরু থেকেই অজ্ঞ ছিলেন

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:০৭



আমার বাবা চাষী ছিলেন; তখন(১৯৫৭-১৯৬৪ সাল ) চাষ করা খুবই কষ্টকর পেশা ছিলো; আমাদের এলাকাটি চট্টগ্রাম অন্চলের মাঝে মোটামুটি একটু নীচু এলাকা, বর্ষায় পানি জমে থাকতো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×