সারা দুনিয়াতেই হয় ডাক্তার আসিবার পূর্বে রোগী মারা যাইতেছে অথবা রোগী দেখিবার আগেই ডাক্তার মরিয়া গিয়াছে অবস্থা।
তো, এই অবস্থার মধ্যে জানে বেঁচে আছি তার জন্য শুকরিয়া।
কথা যা বলতে চাচ্ছিলাম, তা করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে। শুনলাম যে, চীন আমাদেরকে ফ্রীতে ভ্যাকসিন দিতে আগ্রহী। মন্দ কী। কিন্তু চীনের অন্যসব সস্তায় পাওয়া পণ্যের মতো যদি হয় তাদের ভ্যাকসিনের অবস্থা, তাহলে "করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে বা খেয়ে ডাক্তার রোগী দুজনেই মারা গিয়াছে" এরকম খবর আসতে পারে, সে সম্ভাবনা থেকেই যায়। কিন্তু চীনকে আমরা 'না' বলতে পারছিনা।
সবচে ভালো হতো অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন পেলে। আমরা বিশ্বাস করে খেতে পারতাম বা ঢুকাতে পারতাম। অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন পেলে আমাদের ব্যবসাও ভালো হতো। আমাদের ব্যবসায়ীরা তাই অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনের ব্যপারে বেশি আগ্রহী।
কেউ কেউ আবার বলছেন, তারা মর্ডানা ছাড়া খাবেন না। একেবারে গোঁ ধরে আছেন। সারাদিন ধরে তারা ট্রাম্পকে গালাগালি দেবেন, কিন্তু এখন তাদের ট্রাম্প কোম্পানির ভ্যাকসিনই লাগবে। এটি এক ধরনের শিশুতোষ আচরণ হলেও, হিপোক্রেসী নয় একেবারেই। আমার মনে হয় আমাদের মর্ডানার জন্য অপেক্ষা করা উচিৎ, যদিও ফাউসিকে আমলে না নিয়ে বরং ট্রাম্পের কথাকে আমাদের বিশ্বাস করা উচিৎ।
এদিকে, মোদিজী-ও আমাদেরকে ভ্যাকসিন দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। বাংলাদেশে করোনার ভ্যাকসিন পাঠাতে না পারা পর্যন্ত তাঁর শান্তিমতো ঘুম হচ্ছেনা। জাতি হিসেবে আমরা সবসময়ই ভারতের পাশে ছিলাম। এবারও থাকতে পারলে ভালো হতো। কিন্তু শেষপর্যন্ত আমরা মোদিজীর ইচ্ছেপূরণ করতে পারবো কীনা, তা এখনই বলা যাচ্ছেনা।
অন্যদিকে, অনেকেই বলাবলি করছেন, যে হারে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি করোনার ভ্যাকসিন বানানোতে নেমেছে, তাতে, মোড়ের চা-দোকানে এই ভ্যাকসিন বিক্রি হওয়ার সম্ভাবনাও দেখা দিচ্ছে। কিন্তু ততোদিনে বাংলাদেশে করোনা থাকবে কীনা সেটি নিয়েই এখন সন্দেহ। কেননা, প্রতিদিনই আমরা করোনাজয়ের গল্প শুনছি আর ধারনা করছি, করোনা আমাদের দেশ থেকে ৮০ ভাগ চলে গেছে, বাকি ২০ ভাগ যাওয়া শুধু সময়ের ব্যাপার মাত্র।
তো, বাকী ২০ ভাগ করোনা থাকতে থাকতে ভ্যাকসিনগুলি আসতে পারলে একটা কাজের কাজ হতো। না হলে, এতো কষ্ট, ইনভেস্টমেন্ট, জল্পনা কল্পনার কোনো মানেই হয়না।
তবে আশার কথা এই যে, ভ্যাকসিন আসতে আসতে যদি আমরা করোনাকে ১০০ ভাগ বিদায় করে ফেলতে পারি, তাহলে এইসব ঝুটঝামেলা আমাদের পোহাতে হচ্ছেনা। তখন ট্রাম্প, চীন আর মোদিজী- এই তিনের চক্কর থেকে আমরা রেহাই পেয়ে যেতে পারবো বলে আশা করা যায়।
তখন বাকী থাকে অক্সফোর্ড আর আমাদের ব্যবসা। অক্সফোর্ড ভালো ভ্যাকসিন বানাবে, আর আমরাও ভালো ব্যবসা করবো সেরকমই প্রত্যাশা।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:১০