দুনিয়া কাঁপানো মিডিয়া
সংবাদপত্রকে বলা হয় জাতির দর্পণ। আর বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট এবং প্রাযুক্তিক উৎকর্ষতার হিসাব করলে মিডিয়া এখন অনেক বেশি সম্প্রসারিত এবং শক্তিশালী। প্রিন্ট-ইলেক্ট্রনিক এবং অনলাইন মিডিয়ার দাপুটে আবহ মানুষের জানার চিরন্তন চেষ্টাকে করেছে ত্বরান্বিত, দেখিয়েছে আশার আলো। বিশ্বজুড়ে বেশকিছু মিডিয়া হাউস বা প্রতিষ্ঠান রয়েছে যেগুলো বছরের পর বছর আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। এ রকমই কিছু প্রতিষ্ঠানের পেছনের গল্প নিয়ে এ আয়োজন।
বিবিসি:
বিবিসি হচ্ছে পৃথিবীর প্রথম জাতীয় সম্প্রচার প্রতিষ্ঠান। এর মূল নাম হচ্ছে ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং করপোরেশন। যাকে বিশ্বব্যাপী বিবিসি নামে ডাকা হয়। ১৯২২ সালের ১৮ অক্টোবর ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং কোম্পানি লিমিটেড নামে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রাথমিকভাবে ছয়টি ব্রিটিশ কোম্পানি মিলিত হয়ে এই লিমিটেড কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করে। এই ছয়টি টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠান হলো_ মার্কোনি, রেডিও কমিউনিকেশন কোম্পানি, মেট্রোপলিটন-ভিকার্স (মেট্রোভিক), জেনারেল ইলেকট্রিক, ওয়েস্টার্ন ইলেকট্রিক ও ব্রিটিশ থমসন-হউস্টন (বিটিএইচ)। ১৯২২ সালের ১৪ নভেম্বর লন্ডনের মার্কোনি হাউসের ২এলও স্টেশন থেকে প্রথম অনুষ্ঠান সম্প্রচারিত হয়।
এটির বর্তমান সদর দফতর ব্রিটেনের লন্ডনে। এর আগে সুদীর্ঘকাল ধরে বুশ হাউসে এর সদর দফতর ছিল। ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং করপোরেশন, সংক্ষেপে বিবিসি যুক্তরাজ্যভিত্তিক গণমাধ্যম সংস্থা হলেও এর আবেদন ও কাভারেজ এরিয়া বিশ্বজুড়েই। টেলিভিশন, বেতার এবং ইন্টারনেটে সম্প্রচারের জন্য বিভিন্ন ইংরেজি অনুষ্ঠান তৈরি এবং তথ্য সেবা সরবরাহ করা বিবিসির প্রধান কাজ। এর বাইরে বিশ্বের অনেক দেশে স্থানীয় ভাষায় খবর সম্প্রচার করে বিবিসি। এমনকি বাংলাদেশেও বিবিসি বাংলা সার্ভিস মানুষের কাছে তুলনামূলকভাবে দারুণ জনপ্রিয়। অপেক্ষাকৃত নিরপেক্ষ খবর ও বিশ্ব রাজনীতির আসল প্রেক্ষাপট তুলে ধরার ক্ষেত্রে বিবিসিকে পথিকৃৎ মানেন অনেকেই।
সিএনএন:
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা বিবিসির পাশাপাশি আরেকটি গণমাধ্যম বিশ্ববাসীর কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। সেটি হচ্ছে সিএনএন। এর মূল নাম কেবল নিউজ নেটওয়ার্ক। যা এর আদ্যাক্ষর সিএনএন নামে বেশি পরিচিত। এটি মূলত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল। এটি সংবাদ ও সংবাদের বিশ্লেষণ সম্প্রচার করে থাকে। ২৪ ঘণ্টার সংবাদে স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক বিষয় সমান গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করা হয়। ১৯৮০ সালে টেড টার্নার এটি প্রতিষ্ঠা করেন। যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের আটলান্টা শহরে এর প্রধান কার্যালয় অবস্থিত। ১৯৯০ সালের প্রথম উপসাগীয় যুদ্ধের সময় বাগদাদ থেকে সরাসরি সংবাদ সম্প্রচারের জন্য সিএনএন বিশ্বজুড়ে খ্যাতি অর্জন করে।
আল-জাজিরা:
আল জাজিরা বর্তমান সময়ের আলোচিত চ্যানেলগুলোর একটি। আল জাজিরা বা জাজিরা স্যাটেলাইট চ্যানেল-জেএসসি মূলত আলোচনায় উঠে এসেছে বিবিসি ও সিএনএন বলয়ের বাইরে এসে সংবাদ উপস্থাপনের জন্য।
আরব বিশ্বের বাইরে কাতার থেকে প্রচারিত আল-জাজিরা টিভি চ্যানেল সম্পর্কে ধারণা দুই রকম। বিশ্বের মুসলিম জনগোষ্ঠীর কাছে এটি মুসলমানদের মুখপত্র হিসেবে পরিচিত। আবার পশ্চিমা বিশ্বে ওসামা বিন লাদেন ও জঙ্গিবাদ বা ইসলামী
সন্ত্রাসবাদ প্রচারের মুখপত্র হিসেবে পরিচিত। বহির্বিশ্বে আল-জাজিরার প্রচার বেড়েছে মূলত বিন লাদেনের টেপ প্রচার করে এবং আমেরিকার আফগানিস্তান ও ইরাক আক্রমণের ঘটনাবলী সরাসরি সম্প্রচার করে। আল-জাজিরা একটি আরবি চ্যানেল। ফলে সারা বিশ্ব আল-জাজিরাকে জানতে পেরেছে পশ্চিমা গণমাধ্যমের কল্যাণে। ১ নভেম্বর ১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠিত আল জাজিরাকে বিশ্বের অন্যতম স্বাধীন টেলিভিশন চ্যানেল মনে করা হয়। কাতারের রাজধানী দোহায় আল-জাজিরার সদর দফতর অবস্থিত। চ্যানেলটি সাম্প্রতিক ঘটনাবলী প্রচারের ক্ষেত্রে অন্য সবাইকে পেছনে ফেলে দিয়েছে। এর মালিকানা কাতার মিডিয়া করপোরেশনের শেখ হামাদ বিন থামের আল থানি। বিশ্বের মুসলমানদের কাছে সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর নিরপেক্ষ খবর ও বিশ্লেষণের জন্য সবেচেয়ে নির্ভরযোগ্য গণমাধ্যম হচ্ছে আল-জাজিরা।
এবিসি নিউজ:
বিশ্বের আরেকটি প্রভাবশালী মিডিয়া মানা হয় এবিসি নিউজকে। এটিও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠান। আমেরিকান ব্রডকাস্টিং কোম্পানির সংবাদ সংগ্রহ ও পরিবেশনা সংস্থা হিসেবে পরিচিত এবিসি নিউজ নিজস্ব স্বাতন্ত্র্যতায় বিশ্বজুড়ে পরিচিতি পেয়েছে। এটি মূলত আমেরিকার বিখ্যাত ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ওয়াল্ট ডিজনি কোম্পানির একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। ১৯৪৩ সালে একটি স্বাধীন রেডিও নেটওয়ার্ক হিসেবে যাত্রা শুরু করা এবিসি নিউজ খবরের বৈচিত্র্যময় পরিবেশনার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের গণ্ডি পেরিয়ে সারা বিশ্বে পরিচিতি লাভ করে। নিউইয়র্ক, ওয়াশিংটন ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে একাধিক
স্টুডিও থেকে এবিসি নিউজের সম্প্রচার করা হয়। রেডিওর বাইরে এবিসি নিউজের ওয়েবসাইটও বিশ্বজুড়ে সর্বাধিক পঠিত অনলাইন সংবাদ সংস্থাগুলোর একটি হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে।
স্কাই নিউজ:
যুক্তরাজ্যভিত্তিক আরেকটি জনপ্রিয় ও আলোচিত চ্যানেলের নাম স্কাই নিউজ। এটি মূলত যুক্তরাজ্য ও আন্তর্জাতিক খবর ও খবরের পেছনের গল্প নিয়ে বেশি উৎসাহী একটি চ্যানেল। ৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৯ সালে যাত্রা শুরু করা চ্যানেলটি সাম্প্রতিক খবর ও বিশ্লেষণের পাশাপাশি ব্রেকিং নিউজ তৈরি ও পরিবেশনার জন্য বেশি বিখ্যাত। ইউরোপ ও এশিয়ায়
স্কাই নিউজ ব্রিটিশ বিজ্ঞাপন ছাড়াই স্বকীয় অনুষ্ঠানমালা প্রচার করে থাকে। ব্রিটিশ স্কাই ব্রডকাস্টিং এর ১০-১৫টি চ্যানেলের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত চ্যানেল হচ্ছে স্কাই নিউজ। এর বাইরে একই গ্রুপের বেশ কিছু স্পোর্টস এবং এন্টারটেইনিং চ্যানেল রয়েছে।
ফক্স নিউজ:
ফক্স নিউজ চ্যানেল বা এফএনসি মূলত একটি স্যাটেলাইট ও ক্যাবল চ্যানেল। সাম্প্রতিক খবরের পাশাপাশি ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম এবং পেছনের খবর তুলে আনার জন্য এটি খ্যাতি অর্জন করেছে। এই চ্যানেলটির নির্মাতা অস্ট্রেলিয়া-আমেরিকার মিডিয়া মোগল রুপার্ট মারডক। মিডিয়ায় পাকা ব্যবসায়ী ও ব্যক্তিত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়া রুপার্ট মারডক এই চ্যানেলটির ক্ষেত্রেও ব্যাপক পারদর্শিতা ও সাফল্য দেখাতে সক্ষম হয়েছেন। ফলাফল_ চ্যানেলটির গত কয়েক বছরের টিআরপি। প্রায় ১৭ মিলিয়ন ক্যাবল সাবস্ক্রাইবারের কাছে। ১৯৯৬ সালের ৭ অক্টোবর যাত্রা শুরু করে ফক্স নিউজ। মাত্র চার-পাঁচ বছরের মধ্যেই আমেরিকার ডমিনেটিং ক্যাবল চ্যানেল হিসেবে নিজেদের তুলে আনে এই চ্যানেলটি। সমালোচকরা ফক্স নিউজের অনেক বিশ্লেষণ ও খবরের ব্যাপক সমালোচনা করলেও সেটি দর্শকদের আগ্রহে ভাটা তুলতে পারেনি কোনোমতেই।
টাইম ম্যাগাজিন:
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত টাইম-কে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ম্যাগাজিন মনে করা হয়। যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত হলেও ম্যাগাজিনটি ইউরোপ-এশিয়াসহ বিশ্বের একাধিক রিজিওনে আলাদা এডিশন প্রকাশ করে থাকে। প্রায় ২৫ মিলিয়নেরও বেশি পাঠকের প্রিয় সাপ্তাহিক টাইম হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি প্রচারিত সাপ্তাহিক। শুধু তাই নয়, গোটা বিশ্বের সংবাদপত্র ইতিহাসের সবচেয়ে জনপ্রিয় ম্যাগাজিন হিসেবেও টাইমের নাম উচ্চারিত হয়ে থাকে। ১৯২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন হিসেবে যাত্রা শুরু করে টাইম। এর স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন ব্রাইটন হেইডেন এবং হেনরি লুইস। এ দুজনই এর আগে ইয়ালে ডেইলি নিউজ-এ কর্মরত ছিলেন। সেখান থেকেই সাপ্তাহিকের ধারণাটি মাথায় আসে। প্রথম দিকে বেশকিছু প্রতিকূলতার সম্মুখীন হলেও শেষ পর্যন্ত সাফল্যের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে ম্যাগাজিনটি।
সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন
রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো
রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন
যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে
ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন
আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন
মসজিদ না কী মার্কেট!
চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷
আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন