// এর আগে অনেকবারই ভেবেছিলাম ফিরে আসি ব্লগে। কিন্তু ব্যস্ততা আর যান্ত্রিকতা সেই সম্ভবনাকে সুযোগ হয়ে উঠতে দেয়নি। অনিয়মিত ব্লগিং এরও দীর্ঘবিরতি। মাঝে ২০১৮ গেলো, তারপর ২০১৯। জীবন ছুটছে তো ছুটছেই। তারপর একদিন আমাদের শহরে করোনা এলো। আমরা গৃহবন্দী হয়ে ভাবতে থাকলাম অতীতের কথা। অনেক সুন্দর স্মৃতির মাঝে মনে পড়ে গেলো একটা সামহয়্যার ইন ব্লগ- সেই সোনালী সময়। প্রায় একযুগ পর আবার যেন বুক ভরে নতুন নিঃশ্বাস নেয়ার স্বাধীনতার মতো বোধ ছড়িয়ে পড়লো শরীরে।
কোভিড-১৯ এর প্রো-কোপ পড়বে আগামী দুই সপ্তাহে। জানি না কি আছে সামনে? মৃত্যু? জীবন? তবে যাই হোক না কেন- কিছুই আর থাকবে না আগের মতো- বলছেন বিজ্ঞজনেরা। কিন্তু ব্লগিংটা ততদিন ভালোমত করার ইচ্ছা। ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়- এই অতীত ধারণার একটা হেস্তনেস্ত কতটুকু করা যাবে সেটা সময়ই বলবে, আর বলবে আমাদের ইন্টার্যাকশন।
আগেকার দিনের ব্লগার কে কয়জন আছেন এখন, জানি না। আস্তে আস্তে দেখা হবে হয়ত। যাদের মিস করি, তারাও এই সুযোগে একত্র হবেন- এটা এখন আর শুধু আশা না, এটা হতেই হতো, বা হতেই হবে। এই যে ব্লগের রাইটিং প্যানেলে মন খুলে লিখতে পারছি। এই আনন্দ তো অতুলনীয়। সময় ফেসবুকে নিয়েছিলো, আবার সময়ই আমাদের বুঝিয়ে দিয়েছে- সেখানে তুমি মন ভরে বলতে পারবে না, লিখতে পারবে না কথা। কিন্তু ব্লগে মানুষ পড়তেই আসে, ওয়ান লাইনার বা একটা ছবি দিতে নয়। ম্যাসেঞ্জারের প্রেমে যতই ভিডিও কলের সুবিধা থাকুক তাতে ওরকম মজবে না যে কৃষ্ণের মন সেতো জানা কথাই।
সামুর বুকে আবারো উনিশ আসুক নেমে। //
.
তুমি ইদানিং আয়নায় চেয়ে রাস্তার দিকে বেশি তাকাচ্ছো
সুনিতা
আর ঐ যে শুনছো কুকুরেরা ডাকছে
শীঘ্রই না খেতে পেয়ে পেয়ে পথের পাশে মরে থাকবে ওরা
কিছুদিন দুর্গন্ধ করবে। তারপর সেই গন্ধও মিলিয়ে যাবে একসময়
তারপর প্রথম খবর পাবে তুমি ইউরোপের-
প্রাণঘাতী ভাইরাসটা নাকি এখন আপগ্রেড করেছে নিজেদের- ছড়িয়ে পড়ছে তারা বাতাসে, ফুলের রেণুর মতো
আর ছড়িয়ে পড়ছে বুকের ভেতরে
ছোটবেলায় শ্বাসকষ্ট হবে বলে বাবা ঠিক যে কারণে তোমাকে ফুলের গন্ধ শুঁকতে মানা করতো
সত্য কি মিথ্যা যাচাই করার আগেই ইন্টারনেটের লাইন কেটে গেছে
ফোন দিলেও কেউ ধরছে না, টিভিতে খবরে কিছু বলছে না
আর যখন শুনলে দেশের অর্ধেক মানুষ মারা গেছে
এর দুইদিন আগে পাওয়ার কেটে গেছে তোমাদের,
এখন তোমরা অন্ধকারে থাকো
কিছুই করার নেই, যেই বেরুচ্ছে ঘর থেকে
ঘরে ফিরছে না আর, পৌঁছাতেও পারছে না যেখানে যেতে চায়
এখন আর অত রোগ ছড়ানো ধরণের প্রক্রিয়া মেনে চলার সময় নেই যেন, অদ্ভুত রোগটির বড়ই তাড়াহুড়ো
জানালা আটকে আর কতদিন থাকা যায়
তবু এখন তোমরা অন্ধকারে থাকো
শেষ মোমবাতিটিও নিভে গেছে কয়েকদিন হলো
ফোনের ফ্ল্যাশলাইট না জ্বালানোর কিপ্টেমিতেও লাভ হয়নি কোনো
আস্তে আস্তে যে কয়েক ঘর প্রতিবেশীরা ছিলো তারাও মরে গেলো
কেউ না খেতে পেয়ে
কেউ দমবন্ধ হয়ে
কেউ জানালা খোলার সিদ্ধান্ত নিয়ে
তুমি তার মধ্যেও আমার কথা ভাবছো- সবচেয়ে নিকটবর্তী জীবিত মানুষটির চেয়েও মৃত্যুকে কাছে নিয়ে
না, মৌলিক জৈবিকতা কেড়ে নিয়েছে তোমার প্রবল ভালোবাসার ক্ষমতা
মিলনের তৃপ্তি কিংবা বিচ্ছেদের দীর্ঘশ্বাস এখন বিলাসিতা
তোমার চাওয়া এখন সীমিত ভীষণ- আমি বেঁচে আছি কীনা
এটুকুই
আর কিছু না।
আমি বেঁচে আছি, মেয়েটা। আর যা বলেছি সব ভুলে যাও।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৩:১৭