somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুক্তিযোদ্ধা কাহা হ্যায়?

০৮ ই মার্চ, ২০২৩ বিকাল ৪:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমার নানীর দাদা ছিলেন সিকেন্দার পন্ডিত। পেশায় শিক্ষক ছিলেন। আর নানীর বাপ ছিলেন দলিল লেখক। বলতে পারেন বনেদি পরিবার। আমার নানীর এক আপন চাচা; ১৯৬৬ সালে কোন এক হরতালে কোন এক সরকারি অফিসারের গাড়ি পুড়িয়েছিলেন। পরে নানীর দাদা সেই চাচা কে লন্ডন পাটিয়ে দেন। পরে সেই চাচা লন্ডনে চান্টার্ড একাউন্টিং এ পড়াশোনা শেষ করেন। এবং সেখানে চাকরি করে বসবাস শুরু করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় এমন হাই প্রফাইল পরিবারদের রাজাকার এবং পাক হানাদার বাহিনী চোখে চোখে রাখতেন।

আমার নানীর চাচার নাম ছিলেন রহিম মিয়া। তিনি হয়তো দেশে থাকলে মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহন করতেন। তিনি আমার নানাকে খুব আদর করতেন। এবং পছন্দ করতেন।

আসল কথায় আসি। আমার নানীর বাপের বাড়ি ছিলো মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার পুরান বাউশিয়া গ্রামে। এই গ্রামটি ছিলো ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়ক এর পাশে। কুমিল্লা সেনা নিবাস থেকে আর্মিরা খুব সহজে আসা যাওয়া করতে পারতো।

দেশে গন্ডোগল লাগার পর নানী তার নানার বাড়ি চলে যায়। নানীর নানা বাড়ি ছিলো অত্র উপজেলার কালীপুরা গ্রামে। এখানে গজারিয়া শেষ আর চাদঁপুর এর মতলব উপজেলা শুরু। এই কালীপুরা তে পাকা রাস্তা আর ব্রীজ বেশী দিন হয় নি। ২০০৯ সালে আওয়ামীলীগ সরকার আসার পর সেখানে যোগাযোগ ব্যাবস্থা উন্নত হয়।

একবার নানীর নানার গ্রাম কালীপুরা তে পাকিস্তানী ম্যালিটারি হামলা করে। নানীর নানার একটা রেডিও ছিলো। সে সময় রেডিও থাকা মানে একটি ইজ্জত ওয়ালা ব্যাপার ছিলো। পাকিস্তানীরা সেই রেডিও ধ্বংস করে দিয়ে যায়।

আর নানীর নানাকে জ্ঞিগাসা করেন “মুক্তিযোদ্ধা কাহা হ্যায়?” নানীর নানা ভয়ে ভয়ে উত্তর দেয় “লা ইলাহা ইল্লাল লাহু মোহাম্মাদুর রাসূলউল্লা।” পরে তারা চলে যায়। সেদিনের সেনা অভিজানে কালিপুরাতে শুধু একটি ঘর পুড়িয়ে ফেলা হয়। দোষ কিছু ছিলো না। সেই বাড়িতে ক্লাশ নাইনে বই পাওয়া গেছিলো। পাকিস্তানী সেনারা সন্দেহ করেছিলো এই বাড়িতে মুক্তিযোদ্ধার বসবাস। সন্দেহের বশে সেই বাড়ি পুরিয়ে ফেলা হয়।

সেই গন্ডগোলের সময় কে বা কারা নানীর নানার বাড়িতে ডাকাতি করতে আসে। কারা ডাকাতি করেছিলো সেটাও ফাস হয়ে যায়।

মুক্তিযোদ্ধের সময় কালের এই গল্পটি আমি যখন শুনি তখন আমি ক্লাশ ফোরেএ পড়ি। ২০০৪ সাল। গল্প উপস্থাপন করছিলেন আমার নানী হালিমা আক্তার। গল্পের শেষে আমার নানা বলেন “পাক সেনাদের গুলি করার সাথে সাথে আমরা কিছু রাজাকারদেরও মেরেছি। আরো রাজাকার শেষ করার দরকার ছিলো। এরা খু্ব জ্বালাইছে।”
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই মার্চ, ২০২৩ বিকাল ৪:১২
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিপ্রতীপ

লিখেছেন ৪৫, ২৮ শে মার্চ, ২০২৩ দুপুর ১:১২

একটু গড়িয়ে নাও; বিছানায় মধ্য দুপুর।
জড়িয়ে নাও নকশী কাঁথা; তোমার আনন্দপুর।

শুনি, প্রয়াত ধ্বনি; - কাচের চুড়ির এবং
বিগত ইচ্ছেকালের একটি নিহত স্লোগান।
গোলাপের সুগন্ধিকাল চেপে রাখা বইটি জানে
কতটা বিখ্যাত এই স্মৃতির... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন মানবিক বাড়িওয়ালা আলম সাহেব

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ২৮ শে মার্চ, ২০২৩ বিকাল ৩:২৫




আলম সাহেব একজন বাড়িওয়ালা হিসেবে বেশ মানবিক মানুষ। অনেক বাড়িওয়ালার ধন আছে মন নেই। অনেকের আবার মন আছে ধন নেই কিন্তু আমাদের বাড়িওয়ালা আলম সাহেব ধনে,মনে, জনে পরিপূর্ণ।

রমজানের... ...বাকিটুকু পড়ুন

পশ্চিমের পথে এক গুনাহগারের পবিত্র ওমরাহ যাত্রা

লিখেছেন জুন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৩ বিকাল ৪:৪৩

বলা হয়ে থাকে মসজিদে নববীর মাঝে এই স্থানটি হলো এক টুকরো বেহেশত নাম তার রিয়াজুল জান্নাত, সেই রিয়াজুল জান্নাতের গম্বুজের মাঝে অসাধারন কারুকাজ করা ঝাড় লন্ঠন
বেশ কয়েক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। একজন হিরো আলমের আত্মহত্যার হুমকি

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৩ বিকাল ৫:৫১




‘আমরা একটা রুচির দুর্ভিক্ষের মধ্যে পড়ে গেছি। সেখান থেকে হিরো আলমের মতো একটা লোকের উত্থান হয়েছে।’ সম্প্রতি অভিনয়শিল্পী সংঘের একটি অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন নাট্যজন মামুনুর... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমূদ্র-সৈকতে - ১৩

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ২৮ শে মার্চ, ২০২৩ রাত ১০:৫৬


ছবি তোলার স্থান : টেকনাফ, কক্সবাজার, বাংলাদেশ।
ছবি তোলার তারিখ : পহেলা অক্টোবর ২০২০ খ্রিষ্টাব্দ।

বেড়াবার সবচেয়ে আকর্ষণীয় যায়গাগুলির মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সমূদ্র সৈকত। কখনো কখনো আমারও সুযোগ হয় বেড়াতে যাবার।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×