অনেকদিন পর বন্ধুরা একসাথে হয়েছে। একজন অবসর প্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা। আরেকজন ঢাকা মেডিক্যাল এর প্রফেসর। আরেকজন কোন এক সরকারি কলেজের শিক্ষক। আরেকজন বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী।
একজন বলে উঠলো। “আমরা তো ক্লাস ফাকি দিয়ে গজারিয়া ঘাটে আড্ডা দিতাম। চল। আজ সেখানে যাই।”
গজারিয়া ঘাটে যাওয়ার সময় চোখে পড়লো নিপা স্টুডিও এবং ভিডিও সেন্টার।
তারা একটু সেখানে থামলো। আর মালিকের সাথে দেখা করতে গেলো। কারন, স্কুলে পড়ার সময় এই স্টুডিও মালিক তাদের খুব আদর করতেন। এসএসসি পরীক্ষার রেজিষ্ট্রেশন ও ফরম ফিলাপের সময় উনি সবার ছবি তুলে দিয়েছেন। চাকরির আবেদন ও সিভি তে যত গুলো ছবি প্রিন্ট করা, সব উনার স্টুডিও থেকে। এমন কি বিয়ে করার সময় মডেলিং করে ছবি তোলা, সব এই স্টুডিও থেকে।
পুরাতন মালিক নাই। সেই স্থানে আছে এক ১৮ বছরের এক ছেলে। মালিকের সাথে তার সম্পর্ক দাদা আর নাতি।
নাতি বিয়ে বাড়িতে গিয়ে ভিডিও করে। স্টুডিও তে এসে এডিটিং করে। এতে করে তার খুব লাভ হয়।
মালিকের নাতি সাথে তারা ১০ মিনিট কথা বললো।
কথায় কথায় নাতি বলেন “এখন আর কেউ আগের মত স্টুডিও তে ছবি তুলতে আসে না। সেলফির যুগে এমন স্টুডিও বেমানান। তার মধ্যে পাড়ার গলির ফটোকপির দোকানে ৫ ফুট সাইজের ছবি প্রিন্ট করা হয়। তাই আমি ভিডিও এডিটিং শিখেছি। শীত কালে ভালো মুনাফা হয়। দোকান এখন আমিই চালাই। সরকারি চাকরি করলে হয়তো এত স্বাধীন ও এত ইনকাম করতে পারতাম না।” তারপর কিছু কুশল বিনিময় করে ভদ্রলোকগণ চলে গেলেন।
যেতে যেতে দেখলেন আলম ভাই এর চা এর দোকান। আলম ভাই ২০০ টাকা পেতেন। তাই সবাই গাড়ি থেকে নামলো। এবং আলম ভাই এর চা এর দোকানে গেলেন। এটা চা এর দোকান বললে ভুল হবে। এটা একটি রেস্টুডেন্ট। আলম ভাই উনাদের চিনলেন। আলম ভাই তাদের পাওনা টাকা মাফ করে দিয়েছেন।
আলম ভাই এর দোকানেই অনেক ক্ষন চলিয়ে গিয়াছে। তাই তারা আর গজারিয়া ঘাটে গেলো না।