
বড়লোক ঋণ খেলাপিদের কথা
ধরা যাক, একজন বড়লোক বা শিল্পপতি কোটি কোটি টাকা ঋণ নিলেন। ঋণ পরিশোধ করতে না পারলে তিনি ঋণ খেলাপি হয়ে যান। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, বড়লোকরা ঋণ পরিশোধ করেন না। এমনকি যারা ঋণ পরিশোধ করার সামর্থ্য রাখেন, তারাও ইচ্ছাকৃতভাবে ঋণ ফেরত দিতে চান না।
ব্যাংকের কমিটি অনেক সময় এই বড়লোকের ঋণ মাফ করে দেয়। আবার কখনো কখনো ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাদের কাছে আইনি নোটিশ পাঠায়। কিন্তু বড়লোকের অর্থের জোর এতটাই বেশি যে, তারা সহজেই উচ্চমানের আইনজীবী ভাড়া করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে আইনজীবী নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে তাদের রক্ষা করেন।
কৃষকের ঋণ নেওয়ার প্রেক্ষাপট
অন্যদিকে, একজন কৃষক যখন ঋণ নেন, সেটা নিজের ভোগের জন্য নয়। কৃষক ঋণ নেন জমি কেনার জন্য নয়, গাড়ি কেনার জন্য নয়, বরং আমাদের জন্য খাদ্য উৎপাদনের জন্য। ফসল ফলানোর জন্য সার লাগে, বীজ লাগে, শ্রমিক লাগে। এসব সংগ্রহ করার জন্য কৃষক ঋণ নিতে বাধ্য হন।
তবে অনেক সময় বাজার ব্যবস্থাপনায় ত্রুটির কারণে কৃষক তার উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য পান না। আবার প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ফসল নষ্ট হয়ে যায়। ফলে কৃষক লোকসানের শিকার হন এবং মূল ঋণও পরিশোধ করতে অক্ষম হয়ে পড়েন।
বৈষম্যের চিত্র
যখন কৃষক ঋণ পরিশোধ করতে পারেন না, তখন ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাকে আইনি নোটিশ পাঠায়। কিন্তু বড়লোকদের মতো কৃষকের অর্থের জোর বা প্রভাবশালী আইনজীবীর সাহায্য নেই। ফলে কৃষকের জন্য কেউ এগিয়ে আসে না। শেষমেশ, ব্যাংক কৃষকের ঋণের টাকা উদ্ধার করার জন্য তার সম্পত্তি নিলামে তুলে দেয়। এখানে আমরা স্পষ্টভাবেই দেখতে পাই, বড়লোকের ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নমনীয় হলেও, গরিবের ক্ষেত্রে তা কঠোর।
কৃষকদের আর্থিক সহায়তা
আমাদের কৃষকদের জন্য আর্থিক সহায়তা দরকার। তবে সেটি ঋণের মাধ্যমে নয়। আমরা দান বা যাকাতের টাকার মাধ্যমে কৃষকদের সাহায্য করতে পারি। কেউ যদি ধর্ম বিশ্বাস না-ও করেন, তাহলে মানবিক দিক থেকেই কৃষকদের সাহায্য করতে পারেন। এই সাহায্যের টাকা কৃষকদের কাছ থেকে ফেরত চাইতে হবে না।
উপসংহার
কৃষকরা আমাদের দেশের খাদ্য নিরাপত্তার মূল স্তম্ভ। তাদের আর্থিক দিক থেকে সুরক্ষা দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। আইন ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় যদি সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা যায়, তাহলে আমাদের সমাজ আরও ন্যায়সঙ্গত ও শক্তিশালী হবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



