১৪ ফেব্রুয়ারি—বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। সত্যিই কি এটি ভালোবাসার দিন, নাকি শুধুই জৈবিক চাহিদা পূরণের উৎসব? আজকের সমাজে এই দিবসকে যেভাবে উদযাপন করা হয়, তা কি সত্যিকারের ভালোবাসার প্রতিচ্ছবি, নাকি নৈতিক অবক্ষয়ের প্রতিফলন?
একটি উদাহরণ ধরা যাক। সাদিয়া নামের ১৫ বছরের এক কিশোরী, ভালোবাসার নামে প্রতারিত হয়েছে। একটি ছেলের টার্গেট হয়ে আজ সে হাসপাতালে, গর্ভপাত করাতে এসেছে। আমাদের সমাজের তরুণ-তরুণীরা ভালোবাসাকে শুধুমাত্র শারীরিক সম্পর্কের মধ্যে সীমাবদ্ধ করে ফেলেছে। ছেলেরা খোঁজে শারীরিক সুখ, আর মেয়েরা খোঁজে আর্থিক সুবিধা। এই সম্পর্কের মধ্যে নিঃস্বার্থ ভালোবাসার কোনো স্থান নেই, আছে কেবল পারস্পরিক স্বার্থসিদ্ধি।
সুশীল সমাজের লোকেরা ১৮ বছরের আগে বিয়ে করতে না করেছে। কারন কী? এই বয়সে মিলন করলে নাকি মেয়েদের শারিরীক সমস্যা হয়। স্বামীর সাথে মিশতে পারে না। ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু পার্কে গিয়ে কিন্তু তারা ঠিকই গর্ভোরন করে ফেলে এবং অপারেশন করে একটি শিশু কে মেরে ফেলে।
এই দম্পত্তি ভালো করেছেন। তারা বিয়ে করে নিজেদের যৌবন চাহিদা পবিত্র রেখেছেন। তারা ভালোবাসা কে অপবিত্র করে নাই।
অন্যদিকে, তথাকথিত সভ্য সমাজ বলছে, ১৮ বছরের আগে বিয়ে করা উচিত নয়, কারণ এতে শারীরিক ও মানসিক জটিলতা তৈরি হতে পারে। কিন্তু এই বয়সেই অনেক তরুণ-তরুণী পার্কে গিয়ে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তোলে, অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণ করে এবং শেষমেশ নিষ্পাপ শিশুটিকে হত্যা করে। তাহলে কি সত্যিকারের ভালোবাসা এই অবক্ষয়ের নাম?
বিয়ে একটি পবিত্র বন্ধন, যেখানে স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে পথচলার অঙ্গীকার করে। প্রকৃত ভালোবাসা মানে হলো একে অপরের প্রতি দায়িত্বশীল হওয়া, একসঙ্গে জীবন গড়া। যারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে নিজেদের সম্পর্ককে শুদ্ধ রেখেছে, তারা ভালোবাসাকে অপবিত্র করেনি।
আজকের দিনে আমাদের সমাজের উচিত ভালোবাসাকে শুধুমাত্র একটি দিনের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে, এটিকে সম্মান এবং মূল্যবোধের জায়গায় স্থাপন করা। ভালোবাসা মানে শুধু শারীরিক আকর্ষণ নয়, বরং পারস্পরিক শ্রদ্ধা, দায়িত্ববোধ, ও নিঃস্বার্থ স্নেহ।
বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে আমাদের ভাবা উচিত—আমরা সত্যিকারের ভালোবাসাকে আঁকড়ে ধরছি, নাকি শুধু সাময়িক আকর্ষণের মোহে নিজেদের এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছি?
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ৮:৩৭