
দিন দিন যত বড় হচ্ছি, পড়ালেখা গোল্লায় যাচ্ছে।
যেকোনো স্কুল, কলেজ কিংবা ভার্সিটি এর যেকোনো স্তরের ছাত্র ছাত্রীদের দুইটি প্রধান গ্রুপে ভাগ করা যায়। ভালো ছাত্র-ছাত্রী এবং খারাপ ছাত্র-ছাত্রী।এখন ভালো কিংবা খারাপ, দুটো ক্যাটাগরিই অনেক বড়। আসলে এরকম বড় ক্যাটাগরি করে ছাত্র কিংবা ছাত্রী এর ধরন নিরূপণ করা কষ্টকর। তার চেয়ে এরকম করে ছোট ছোট গ্রুপ করলে বোধহয় সব ধরনের ছাত্রদের বৈশিষ্ট্য ব্যাখা করা যায়।
আতেল গ্রুপঃ
এরা কোন এক কারনে নিজেদের "আতেল" সিল টা নিয়ে বেশ সন্তুষ্ট বলে আমার ধারনা কারন এরা এই নামটা পরিবর্তনের জন্য কোনো চেষ্টাই করে না!
মহাজ্ঞানী গ্রুপঃ
এই গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত ছাত্র ছাত্রী এর সংখ্যা বেশি নয়। সাধারনত প্রতি ক্লাসে গড়ে ৩- ৪ জন মহাজ্ঞানী থেকে থাকে। এদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল, এরা অন্যান্য ১০ টা সাধারন ছাত্রদের তুলনায় বেশি জানে, এবং সেটা জাহির করতে দ্বিধা করে না।
বিচক্ষণ গ্রুপঃ
এরা অবশ্যই ভালো ছাত্র কিংবা ছাত্রী তবে আতলামি কিংবা নিজের জ্ঞান বুদ্ধি অন্যের কাছে জাহির করার মানসিকতা তাদের মধ্যে অনুপস্থিত। এরা বেশ শান্তিপ্রিয়, এবং বন্ধু হিসেবে বেশ ভালো। এরা নিয়মিত ক্লাস করে, এবং একটা রুটিন এর মাঝে পড়াশুনা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। প্রতিযোগিতা মুলক মনোভাব এদের মাঝে খুব একটা দেখা যায় না যদিও পরীক্ষার ফলাফলে তারা বেশ এগিয়ে থাকে। এরা কিছুটা মুখচোরা স্বভাবের হয়। সহপাঠীরা এই ধরনের ছাত্র ছাত্রীদের বেশ পছন্দ করে।
ফাঁকিবাজ গ্রুপঃ
এরা যে কোন একটা ক্লাসের প্রান শক্তি।
জেট প্লেন গ্রুপঃ
এই গ্রুপের ছাত্র ছাত্রীদের প্রধান বৈশিষ্ট্য এরা পুরো বছর কোন পড়ালেখা করে না, কিন্তু পরীক্ষা আসলে তাদের পড়ালেখা এর গতি হয় অনেকটা জেট প্লেন এর মতো।
স্টাইলিশ গ্রুপঃ
বই খাতা, কাগজ কলম কিংবা পড়াশুনা সংক্রান্ত জিনিসে এদের আগ্রহ না থাকলেও নিজেদের সৌন্দর্যের প্রতি এদের খেয়াল ও মনোযোগ সর্বাধিক।
পুংটা গ্রুপ/ বান্দর গ্রুপঃ
ক্লাসের যে কোন রকম অনাচার কিংবা বিশৃঙ্খলা তৈরিতে এরা সর্বদা তৎপর। এদের হাত থেকে এমন কি শিক্ষকরাও রেহাই পান না। ক্লাসের পেছনের সিট গুলো এদের জন্য সর্বদা নির্ধারিত। এরা প্রায় সবাই শিক্ষকদের নজর কাড়তে বেশ ভালো রকম ভাবে সমর্থ এবং এদের সাথে কথা বলতে শিক্ষকদের বেশ বেগ পেতে হয়।
গবেট গ্রুপঃ
এই গ্রুপের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে বাবা মা দের বেশ বিপদে পড়তে হয়। এরা প্রচুর চেষ্টা করে, কিন্তু পাশ নামক বস্তুটি এদের কাছে সহজে ধরা দেয় না। স্কুল, কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিটা স্তরের যেকোনো ক্লাসে এদের সংখ্যা সাধারণত ৪-৫ জনের মতো। এরা সহজে সবার সাথে খুব একটা মিশে টিশে না। তবে এরা নিয়মিত ক্লাস করে। এরা পড়ালেখাও করে সাধারন ছাত্র ছাত্রীদের থেকে বেশি, কিন্তু পরীক্ষার খাতার অবস্থা সর্বদাই অপরিবর্তিত থাকে।
গুন্ডা গ্রুপঃ
ছেলেরা গুন্ডা হয় বেশি, মেয়েরা গুণ্ডি হয় কম।
পলিটিশিয়ান গ্রুপঃ
স্কুল কিংবা কলেজ পর্যায়ে এই গ্রুপের অস্তিত্ব নেই। এই গ্রুপ এর ছাত্র ছাত্রী শুধুমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পাওয়া যায়। রাজনীতি কিন্তু শুধু ছাত্ররাই করে না বরং মেয়েরাও এক্ষেত্রে সমভাবে এগিয়ে আছে। এদের বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার মুল উদ্দেশ্য ক্লাস করা নয়, বরং রাজনৈতিক ভাবে সক্রিয় হওয়া। ক্লাস চলাকালীন সময়ে এদের পাওয়া যায় ক্যাম্পাসে, বা ক্যান্টিনে কিংবা ছাত্র সংসদে। ক্লাসে অতটা নিয়মিত না হলেও মিছিল, মিটিং, রাজনৈতিক মারধর অথবা গুপ্তচর বৃত্তি তে এদের অবদান উল্লেখ করার মতো। এরাই দেশের ভবিষ্যৎ কারন দেশ পরিচালনার দায়িত্ব এদের উপরেই ন্যস্ত হবে কোন একটা সময়ে। পরীক্ষা পাশ নিয়ে এরা চিন্তা করে না। কারন পরীক্ষা পাশের জন্য এদের সুপারিশের অভাব হয়না।
চালাক গ্রুপঃ
এরা শর্ট কাট নীতিতে বিশ্বাসী। পড়ালেখা কে এরা খুব সুন্দর করে সাইজের মধ্যে নিয়ে আসতে পারে। সাজেশান ,সাজেশান বলে ক্লাসের যে দল সবসময় গলা ফাটায়, তাদের নেতৃত্ব এই গ্রুপের ছাত্র ছাত্রীদের হাতে থাকে। এরা যাই পড়ুক, এদের পরীক্ষা সব সময়ই ভালো হয়। এরা এদের প্রধান কেরামতি দেখায় পরীক্ষার সময়, পাশের ছাত্রদের কাছ থেকে উত্তর যোগাড় করার মাধ্যমে।
ঘাড় ত্যারা গ্রুপঃ
এদের নিয়ে শিক্ষকরা প্রায়ই বিপদে পড়েন। এদের কোন জিনিস একবারে বুঝানো কষ্টকর। এদের গায়ের চামড়া গণ্ডারের মতোই পুরু হয়।
অনিয়মিত গ্রুপঃ
এরা সাধারনত ফেল করা, কিংবা এক দুই বছর পড়ালেখা ড্রপ দেওয়া ছাত্রছাত্রী। পড়াশুনা নিয়ে এদের খুব একটা আগ্রহ নেই, কোনোভাবে টেনেটুনে শেষ করতে পারলেই হয়। এরা সাধারন দের সাথে খুব একটা মিশে না, এবং এরা নিজেদের সাথে দলবদ্ধ ভাবে থাকতে পছন্দ করে।
খেলোয়াড় গ্রুপঃ
এরা স্কুল, কলেজে আসে শুধু খেলতে। ক্রিকেট এবং ফুটবল তাদের মধ্যে অন্যতম। সিনিয়র বা জুনিয়র দের সাথে, কিনবা আন্তঃ স্কুল, কলেজ,ভার্সিটিতে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজনে এদের উৎসাহ থাকে সর্বাধিক।
তোতাপাখি গ্রুপঃ
এটা মেয়েদের গ্রুপ, মাঝে মধ্যে কিছু ছেলে ঢুকে পড়ে প্রকৃতির ব্যাতিক্রম সুত্রানুসারে আরকি।
এটা শুধু আমার দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা, এটার ব্যাতিক্রম থাকতেই পারে। আমি নিজে এক বছর আগেও জেট প্লেন গ্রুপে ঘুরাঘুরি করতাম, তবে আমার অবস্থান বর্তমানে গবেট পর্যায়ে নেমে এসেছে।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জুন, ২০১১ রাত ১০:৫৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




