চাকরির বিজ্ঞপ্তিতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় প্রার্থীর সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে ২, ৩, ৫/১০ বছরের অভিজ্ঞতা প্রয়োজন৷ চাকরি প্রার্থীদের প্রায় সবাই বেকার এবং সবেমাত্র লেখাপড়া শেষ করে চাকরির সন্ধানে হন্যে হয়ে ঘুরছে৷ এসব প্রার্থীদের প্রায় সবাই অনভিজ্ঞ৷ চাকরির বিজ্ঞাপন দেখেই এদের চোখ চকচক করে ওঠে এবং অতি আগ্রহ নিয়ে বিজ্ঞাপনে প্রার্থীর যোগ্যতার স্থানে অভিজ্ঞতা অংশটি জুড়ে দেওয়ায় মনটা খারাপ হয়ে যায়৷
আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা অনুযায়ী একজন শিক্ষার্থীর নিশ্চিতভাবেই শিক্ষা জীবন শেষে বাস্তব কাজের কোন অভিজ্ঞতা থাকে না৷ ফলে চাকরির প্রয়োজনীয় যোগ্যতা পূরণের আশায় অভিজ্ঞতা সনদ অনেক ক্ষেত্রে অসদুপায়ে সংগ্রহ করতে বাধ্য হয়৷ ফলে সে কর্মজীবনে প্রবেশের আগে অসদুপায় অবলম্বনের শিক্ষা গ্রহণ করে ফেলে৷
কিছু উচ্চ পদের ক্ষেত্রে বাস্তব অভিজ্ঞতা আবশ্যকীয়৷ তবে বাকী পদগুলোর ক্ষেত্রে বিশেষ করে নিম্ন পদগুলোতে চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর জনবলকে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত কাজের মাধ্যমে অভিজ্ঞ তৈরি করে নেওয়ার নিজস্ব পলিসি থাকা উচিত এবং কিছু নির্দিষ্ট পদ ছাড়া বাকি পদগুলোতে অভিজ্ঞতার বাধ্যবাধকতা তুলে দেওয়া আবশ্যক৷
চাকরির আবেদন করার পূর্বে চারিত্রিক সনদপত্রের প্রয়োজন হয়ে থাকে৷ উক্ত চারিত্রিক সনদপত্র দিয়ে থাকে সংশ্লিষ্ট এলাকার নির্বাচিত প্রতিনিধি অথবা প্রথম শ্রেণীর গেজেটেড অফিসার৷
আমাদের দেশের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সবাই না হলেও ৯০% বা তারও বেশি দুর্নীতি পরায়ণ এই ধারণা প্রায় সবার মাঝেই প্রতিষ্ঠিত৷ আবার অনেক গেজেটেড অফিসারের অবস্থাও একই৷ আবার অনেকেই চাকরীপ্রার্থীকে চেনেওনা৷ সুতরাং যাদের নিজেদের চরিত্রই ঠিক নেই তিনি আরেকজনের চরিত্রের সার্টিফাই করলে তা কতটা গ্রহণযোগ্য হবে সেটা নিশ্চিতভাবেই অনুমিত৷
অনেক প্রার্থী নিজেই সিল স্ট্যাম্প তৈরি করে এবং ফটো কপি দোকান থেকে চারিত্রিক ফরম কিনে নিজেই নিজের চরিত্রের মূল্যায়ন করে থাকে৷ কর্মজীবনে প্রবেশের আগেই বিভিন্ন বাধার কারণে বাধ্য হয়ে অসদুপায় অবলম্বন করে চাকরি পেতে বাধ্য হওয়া প্রার্থীরা পরিবর্তী কর্মজীবনে অসৎ হওয়ার শিক্ষা চাকরি পাওয়ার পূর্বেই পাওয়া শুরু করে৷
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:০৪