somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পিশাচ সংসার ২ (পর্বঃ ৫)

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আগের পর্বের লিংকঃ Click This Link

গত দশদিন খুব ঝামেলা গিয়েছে ৷ ফয়সালের মৃত্যু নিয়ে শিরিনকে অনেক ধকল পোহাতে হয়েছে ৷ কারন নতুন বিয়ে আবার সেদিন ও ওই বাড়িতে ছিলো না ৷ পুলিশরা তো একটা কিছু পেলেই হয়েছে একবারে চৌদ্দগুষ্টি টেনে নিয়ে এসে প্যাচ খুলতে চায় তারা ৷ কিন্তু আমিও অনেক চিন্তায় ছিলাম কারণ শিরিনকে নিয়ে ভয় হচ্ছে খুব ৷ শাকিল যদি ফেরত আসতো তাহলে কি আমার সাথে দেখা করতোনা একবারো? ও জানে ওকে আমি কতোটা ভালোবাসি ও আড়ালে থাকতে পারতো কি? কিছুই বুঝতে পারছিনা তাহলে তো একটা পথ ই বাকী শিরিনকে চোখে চোখে রেখে সিওর হওয়া ৷

ওহ নো!
সারা ডিসুজার কথা বেমালুম ভুলে গিয়েছি ৷ আমার আশার আলো এখন উনিই আছেন ৷ যদিও জানিনা সে কি জানে বা কতটুকু জানে কিন্তু এ ছাড়া আর কোন উপায় ও নেই ৷ কিন্তু এখনই কি বলেই বা যাবো? যদিও ছেলে মেয়ে কখনোই প্রশ্নও করবেনা কোথায় বা কেনো যাচ্ছি কিন্তু তবুও এ অবস্থায় নিজেরি খারাপ লাগছে ৷ কিন্তু এতো কিছু ভাবার সময় নেই ৷ আমার পরিবারই বিপদগ্রস্থ সমাধান তো আমাকেই করতে হবে ৷

বাসায় বললাম বান্ধবী অসুস্থ ৷ মিথ্যা বলা ছাড়া কিছু বলার ছিলোনা ৷ সারা ডিসুজার কার্ডে কোন ফোন নম্বর ও নেই যে যোগাযোগ করে যাবো এতবছর পার হয়েছে সেই ঠিকানায় পাবো কি না কে জানে ৷ কার্ডে নম্বর থাকেনা এটা এই প্রথম দেখলাম ৷ কিন্তু যখন কার্ড দিয়েছিলেন উনি তখন এতোটা গুরুত্ব দেইনি, এখন তো আর উপায়ও নেই ৷ অনিশ্চিতভাবেই যাচ্ছি গন্তব্যে ৷ আড়াই ঘন্টা লাগলো টোটাল ঠিকানা পর্যন্ত যেতে ৷

অনেক সুন্দর একটা বাড়ী ৷ সামনে বাগান, এর পর বাড়ীটা ৷ বাড়ীর নেমপ্লেটে নাম দেখে স্বস্তি পেলাম ৷ কারণ সারা ডিসুজা ই লেখা ছিলো ৷ নাম যেহেতু আছে সেহেতু বাড়ী স্থানান্তর হয়নি ৷ দারোয়ান জানালো এপয়েন্টমেন্ট ছাড়া দেখা করা যাবে না ৷ তাকে আমি বোঝাতেই পারছিলাম না ৷ আমি এপয়েন্টমেন্টটা কিভাবে নেবো? কার্ডে ওনার নম্বর ছিলো না ৷ কিন্তু এই গবেট দারোয়ানকে বোঝাতে ব্যার্থ হলাম আমি ৷ সে মানবেই না ৷ বললাম আপনি একটা কাজ তাহলে করুন ডিসুজা ম্যামকে ফোন করুন আমি কথা বলছে ওনার সাথে ৷ এটাতে সে রাজী হলো ৷

-- হ্যালো ম্যাম! আমার নাম নাদিয়া ৷ হয়তো চিনবেন কিনা জানিনা ৷ অনেক বছর আগে দিনাজপুর যাওয়ার পথে ট্রেনে আমি আপনার সহযাত্রী ছিলাম আপনি আমাকে একটা কার্ড দিয়ে ছিলেন ৷ আর আপনি সবুজ রংয়ের শাড়ী পরেছিলেন ৷

-- ঠিক আছে ভেতরে আসুন আমি দারোয়ানকে বলে দিচ্ছে ৷

উফফ হাফ ছেড়ে বাঁচলাম ৷ ভেতরে গিয়ে বসলাম ৷ পাচ মিনিটের মধ্যেই উনি এলেন ৷ অবাক হলাম কতগুলো বছর কেটেছে ওনাকে যেমন দেখেছিলাম ঠিক তেমনটাই আছেন ৷ কিন্তু বাড়ীর ভেতরেও সানগ্লাস পরে আছেন অবশ্য সুন্দরই লাগছে ৷

-- মিসেস নাদিয়া ৷ আপনাকে আমি চিনেছি ৷ আমি জানি আপনি আমার কাছে কিছু জানতে চান ৷ কিন্তু আগেই বলছে আপনি ভেবেচিন্তে যে কোন একটা প্রশ্ন আমাকে করতে পারবেন ৷ কারণ আমি শুধু একটা প্রশ্নের উত্তর দিতেই সক্ষম ৷ হয়তো ভাবছেন কেনো ?? কারণ আমি যে সাধনা করে এসব শিখেছি তার নিয়ম এটাই ৷ আপনি আবার আমাকে প্রশ্ন করতে পারবেন তবে তা সূর্যগ্রহনের পরদিন ৷ মানে আজকের পর যেদিন প্রথম সূর্যগ্রহন হবে তার পর দিন আপনি আবার আমাকে প্রশ্ন করতে পারবেন ৷ তাই ভেবে চিন্তে প্রশ্ন করুন ৷

আমি হা হয়ে মহিলার কথাই শুনছিলাম ৷ কি আজব আমার তো অনেক কিছু জানার আছে আর ইনি বলছেন একটা প্রশ্ন করতে??? ভেবেই পাচ্ছিলামনা কোনটা করবো কোনটা বাদ দেবো ৷ মনের সাথে যুদ্ধ করে একসময় বলেই ফেললাম -

-- আমার হাজবেন্ডের কি ফেরত আসার কোন সম্ভাবনা আছে??

-- না নাদিয়া তিনি আর কখনো ফিরবেননা ৷

অজান্তেই চোখ দিয়ে পানি পড়তে লাগলো ৷

বাসায় যাচ্ছি !! কি আর বাকী রইলো? আমার সন্তানকেও অভিশপ্ত জীবন ভোগ করতে হবে এখন? কি ভাবে বাঁচাবো আমি আমার মেয়েকে? ছোট্ট মেয়েটা মাত্র আঠারো বছর বয়স আর এর মাঝেই-----

বাসায় এসে শিরি কে বললাম এখন থেকে যেনো আমার সাথে থাকে ৷ দেখি চেস্টা করে কিছু করতে পারি কি না ৷ না পারার সম্ভবনাই বেশী কারণ পারতে হলে তো উপায় জানতে হবে যা আমার অজানা ৷

আমি সবসময় মেয়েটার খেয়াল রাখি ৷ কারণ সবটা বুঝে তারপর সেভাবেই ওকে হ্যান্ডেল করতে হবে আমার ৷

এর কিছুদিন পর চাচী মারা গেলো ৷ একমাত্র আমিই জানতাম এটা মার্ডার ৷ কারণটা কালো গোলাপ আর তার আগের দিন শিরিনকে অপয়া বলেছিলো চাচী ৷ সংসার করতে পারলোনা তাই ৷ কিন্তু কি ঘটবে বুঝে আমি শিরিকে নজরেই রেখেছিলাম কিন্তু কখন ঘুমিয়ে গেছি বুঝতেও পারিনি ৷ এই ফাকে সর্বনাশটা হয়ে গেলো ৷ কি করবো আমি কি ভাবে আটকাবো????

এভাবে একের পর এক আত্মীয়রা শেষ হচ্ছে আমি কিছুই করতে পারছিনা ৷ কিন্তু এবার সময় হয়েছে গতকাল সূর্যগ্রহন হয়েছে আজ সারা ডিসুজার কাছে আবার এসেছি উপায় জানতে ৷

-- জানতাম আজ আসবেন ৷ কেমন আছেন নাদিয়া?

-- জ্বী ভালো ৷ আপনি ৷

-- হুম ভালো ৷ বলুন ৷ তবে ভেবে চিন্তে ৷

-- আমি বুঝেছি আমার মেয়ে একজন পিশাচিনি ৷ তাকে আটকানোর উপায় কি??

-- তাকে আটকানোর কোন প্রয়োজন নেই কারন সে পিশাচিনি নয় ৷ তবে এ সত্তা যার আছে তাকে আটকানোর পথ আত্মবলীদান ৷

আমার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পরলো তার মানে এতোদিন সম্পূর্ণ ভুল পথে হেটেছি আমি?? তবে কে কে কে???????

চলবে.....

শেষ পর্বের লিংকঃ Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ১২:২০
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×