somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্বপ্নের অপভ্রংশ

২৭ শে মে, ২০১০ রাত ৮:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সকালে ফেসবুক খুলেই থমকে গেলাম । বুয়েটের প্রথম্ বর্ষের ছাত্র বাস চাপায় নিহত ।

স্বপ্নগুলো কিভাবে ভেঙ্গে যেতে পারে ! জীবন কিভাবে হঠাৎ থমকে যেতে পারে ! ক্লাস শুরু হয়েছে ২২ তারিখে ; যে বুয়েটে একজনের সারা জীবনের আরাধ্য – সেখানে মাত্র ৫টা দিন ক্লাস করেই এই ভাবে বিদায় ! সবটুকু বাধা পাড়ি দিয়ে যখন একটা ছেলের জীবন সবচেয়ে নিশ্চিত , তখন এইভাবে চলে যাওয়াটা কিভাবে মেনে নিতে পারি !


ঐ একই পথে আজকে আড়াই বছর ধরে যাওয়া আসা করছি । ভেবে পাচ্ছি না , ঠিক কতটুকু অসাবধানতা প্রয়োজন সেখানে এইধরনের একটা দুর্ঘটনা ঘটাবার জন্যে ! নিরাপদ সড়কের জন্যে এত প্রচারণা – এত বিজ্ঞাপন ; আসলে কিছুই কি কোন কাজে আসছে ? কোন আইন কি আটকে রাখতে পারে এক মুহূর্তের অসাবধানতাকে ?


আসলে যে কারো জীবনে যেকোন সময়েই দুর্ঘটনা ঘটতে পারে । প্রশ্ন হল, আমি নিজে কতটুকু সচেতন । এই যে 1-1 এর ছেলেটা চলে গেল এভাবে ; আমরা হয়ত কয়দিন কালো ব্যাজ পরে আসব ; হয়ত অনেক লেখা লেখি হবে ; বুয়েটের প্রায় চার হাজার পরিবার কয়দিন মন খারাপ করে থাকবে – হয়ত ধরা পড়বে ড্রাইভার – শাস্তি হবে – কিন্তু সম্রাটরা , হামিমরা আর ফিরে আসবে না ।


পথে আমাদের চলতেই হবে । দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্যে উপায় একটাই । নিজেকে সচেতন হতে হবে । এক মুহূর্তের অসাবধানতা এক এক টি পরিবার কে ধ্বংস করে দিচ্ছে ; আর কত পরিবারকে স্বজন হারাতে হবে কে জানে !


দেড় বছর আগের কথা । আসাদ গেটে বাস থেকে রাস্তায় পা দিয়েই বুঝলাম ; বিশাল ভুল হয়ে গেছে ; পেছন থেকে ধেয়ে আসছে আরেকটা বাস । আমি যে আমার বাসে আবার উঠে পড়ব , সে উপায় নেই- বাস আমাকে নামিয়ে দিয়ে আবার চলতে শুরু করেছে । ছুটে রাস্তাটুকু পার হলাম আর তখুনি আমার পেছন দিয়ে বাসটা চলে গেল ।


বাস গুলো আপনাকে তোলার জন্যে ১০ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকতে পারে ; কিন্তু আপনাকে নামানোর জন্যে ১০ সেকেন্ড সময় দিতে রাজি না । রাস্তার মাঝে কখনোই নামবেন না । সবাই আমার মত ভাগ্যবান নাও হতে পারে ।


মানব বন্ধন হবে শনিবার । জানি এভাবে আমরা ফিরে পাব না সম্রাটকে । তবু , চাই , দোষীদের শাস্তি হোক । তবু যদি একটু টনক নড়ে সেসব চালকদের !

এই লেখাটা যখন লিখছি , তখন জানতে পারলাম , আমাদের ডিপার্টমেন্টের বর্তমান ফার্স্ট , মারুফের ভাই মারা গেছে টাঙ্গাইলে বাস দুর্ঘটনায় ।

সব কেমন যেন এলোমেলো ঠেকছে ! এভাবে কাছের মানুষেরা চলে যাবে কেন ! এত নিষ্টুর কেন পৃথিবীটা ! আমাদের কি কিছুই করার থাকবে না !




--------------------------------------------------------------------

রাস্তায় চলার জন্যে খুব সাধারন কিছু নিয়ম মেনে চললেই হয় । এখানে ‘ব্যাসিক’ কয়টার কথা বলি ।

১) বাস থেকে নামার জন্যে অবশ্যই বাম পা দিয়ে নামতে হবে ।

২) নামার আগে দেখে নিন পেছনে কোন গাড়ি আছে নাকি ।

৩) কখনোই মাথা বা হাত জানালার বাহিরে রাখবেন না ।

আমার এই অভিজ্ঞতা অবশ্য ট্রেনের । তখন নতুন ট্রেন চালু হয়েছে বংগবন্ধু [বা যমুনা বহুমুখী] সেতুর উপর দিয়ে । আমি জানালা দিয়ে মাথা বের করতে যাব ; তখন ই ট্রেনের স্পীকারে শোনা গেল , ‘কেউ মাথা বা হাত জানালা দিয়ে বাহির করবেন না ’ । কথাটা কেন জানি মেনে নিলাম । সাথে সাথেই দেখি ব্রীজের পিলার গুলো জানালার ভয়াবহ রকমের কাছে ; অন্তত অতি কৌতুহলী কারো মাথা গুড়িয়ে দেবার মত কাছে !

৪) রাস্তা পার হবার সময় ব্যস্ত হয়ে উঠবেন না । রাস্তার মাঝে নেমে দাঁড়িয়ে যাবেন না । সম্ভব হলে ওভারব্রীজ ব্যবহার করুন ।

এই শেষ্ জিনিসটার প্রতি আমাদের এত অনীহা !

ঘটনাটা জানার সাথে সাথে ফোন করলাম সাকিবকে । ‘তুই যেভাবে রাস্তা পার হস !’ আসলে আমরা চিন্তাও করি না ; সামান্য একটা মিনিট বাঁচাতে গিয়ে কত বড় ঝুঁকি নিই ।

জানি না আর কত পরিবার কে কাঁদতে হবে । তবে আমাদের একটু সচেতনতা এই দুর্ঘটনা থেকে আমাদের রক্ষা করতে পারে ; জীবনকে সচল রাখতে পারে ।

আসুন , নিজে সচেতন হই , অন্যদের সচেতন করি ।

--------------------------------------------------------------------



সম্রাটের ফেসবুক প্রোফাইলে লেখা ঃ i wnt to njoy life with fun

আর ফেভারিট কোটেশান ঃ life is short so enjoy it ...

Bro , hope you enjoyed your short life ........



প্রথম আলো নিউজ
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে মে, ২০১০ রাত ১:১২
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×