somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

উমাইয়া সম্রাজ্ঞী (পর্বঃতিন)

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দ্বিতীয় পর্ব পড়ুন!!! Click This Link


নতুন খলিফার পক্ষ থেকে মহলে একের পর এক আশ্চার্যজনক সংবাদ পৌঁছতে লাগল।
এক খাদেম দ্রুত গিয়ে সংবাদ দিল যে,
খলিফা উমর ইবনে আব্দুল আযীয খেলাফতের পক্ষ থেকে দেয়া রাজকীয় বাহন গ্রহণ করেন নাই।নতুন খলিফা হিসেবে শোভাযাত্রাও করেন নাই।ব্যক্তগত বাহনে-ই চড়েছেন।
অন্য একজন সংবাদ দিল যে,
খলিফা বাই'আত অনুষ্ঠান মুলতবী করে দিলেন।যা অন্যান্য খলিফাদের বেলায় জাঁকজমক আবং আড়ম্বরের সাথে অনুষ্ঠিত হত।
অন্য একজন সংবাদ দিল যে,
খলিফা বায়তুল মাল থেকে কোন কিছু না নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

এসব সংবাদ ফাতেমা কোন রকমেই বিশ্বাস করতে পারছে না।
ফাতেমা জানে,তার স্বামীর অন্তর দুনিয়ার নে'মত-সম্পদের ব্যপারে অনেক প্রস্ফুটিত।সাচ্ছন্দ এবং সৌখিনতায় ডুবন্ত।
তিনি কীভাবে দুনিয়া থেকে বিরত থাকবেন?
যে দুনিয়া সমস্ত্য চাকচিক্য নিয়ে তাঁর সামনে উপস্থিত!
খলিফা আপন প্রসাদে ফিরে এলেন।
কিন্তু তিনি এখন অন্যরকম মানুষ হয়ে ফিরে এলেন।উমর ইবনে আব্দুল আযীয গতকাল যেমন ছিলেন,আজকে আর তেমন নেই।তাঁর মধ্যে সবকিছুরই পরিবর্তন হয়েছে।
উমরের বায়'আতের পর মানুষের মাঝে শান্তি এবং সুভোগ ফিরে এল।কিন্তু তার পরিবারে নেমে এক দূর্ভোগ।
ফাতেমা উমর ইবনে আব্দুল আযীযকে ভিন্নরকম আবিষ্কার করল।
জনগনের কল্যাণ-শান্তি চিন্তায় তাঁর চেহেরা ফেকাশে হয়ে গেল।জনগনের আমানত এবং আল্লাহর ভয়ে তিনি অস্থির!
স্বামীর এই অবস্থা দেখে ফাতিমার অন্তর ফেটে যাচ্ছিল।তাঁর এমন কষ্ট,ফাতিমার সহ্যের বাইরে।
উমর ইবনে আব্দুল আযীয ফাতিমাকে বললেন,
ফাতিমা! অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি দায়িত্ব আমার কাছে অর্পিত হয়েছে।পৃথিবীর সবচেয়ে বড় এবং ভারী বোঝা আমার কাধে চড়েছে।এই আমানত আদায় করতে আমাকে সবকিছুই ছেড়ে দিতে হবে।
আমি তোমার বিচ্ছেদ আশা করছিন না। আবার তোমার উপর পৃথিবীতে আমি কাউকে প্রধান্য দিই না।
কিন্তু আমি তোমার দূঃখ-কষ্ট আশা করি না।
আমি চাই না তোমার উপর কষ্ট এবং সংকীর্তার পাহাড় ভেঙ্গে পড়ুক।
ভয় হচ্ছে,আমি এখন যে জীবন গ্রহণ করছি, সে জীবনে তুমি ভেঙ্গে পড়বে,ধৈর্য্যহারা হয়ে যাবে।
তোমার ইচ্ছা তুমি যদি চাও,তোমার বাপের বাড়ি তে চলে যেতে পার।
ফাতিমা বলল,আপনি এখন কী করতে চান!?
উমরঃযেসব সম্পদ আমাদের এবং তোমার ভাই,আত্নীয়দের হাতে আছে,এগুলো মুসলমানদের সম্পদ থেকে নিয়ে নেওয়া হয়েছিল।
আমি ঢৃড় সংকল্প করেছি,এসব সম্পদ উদ্ধার করে আমি মুসলমানদের হাতে পৌঁছে দিবো!
সর্ব প্রথম আমি আমার নিজের অবস্থানকে স্পষ্ট করবো।
আমার নিজ অর্জনে ক্রয়কৃত দুই টুকরো জমীন ছাড়া বাকি সব সম্পদ দিয়ে দিব।
আমি একাকীই জীবন যাপন করবো।
তুমি যদি এই অভাব এবং সংকীর্ণতার উপর ধৈর্য্য ধরতে না পার,তাহলে তুমি তোমার পিত্রালয়ে চলে যেতে পার।
ফাতিমাঃ কোন জিনিস আপনাকে এই কাজে উৎসাহিত করল?
উমরঃফাতিমা!আমার কাছে একটা কামনাময় অন্তর আছে।যা ভাল কোন কিছু পাওয়ার পর এর চেয়ে উত্তম কিছু পাওয়ার জন্য উদগ্রীব হয়।
আমি গভর্নর হওয়ার আশা করে ছিলাম।এবং তা পেয়েও গিয়েছিলাম।এরপর এর চেয়ে উত্তম,খলিফা হওয়ার আশা করেছিলাম।তাও পেয়ে গেলাম।এখন আমি খলিফার চেয়ে উত্তম জিনিস পাওয়ার আশা রাখি,তা হল 'জান্নাত'!!!
আর জান্নাতের জন্য আমি......
১০
কোন সম্পদশালী ব্যবসায়ী কিংবা বড় সৌখিন মানুষ, বড় রাস্তার পাশে বিলাশবহুল মহলে বসবাস করে,তার ঘরে আছে সম্পদ এবং শিল্পকর্মের পাহাড়। দামী দামী জাজিম,গালিছা।
এমন এক ব্যক্তি যদি চাই যে,সে তার সব সম্পদ আল্লাহর ওয়াস্তে দিয়ে দিবে,কোন স্ত্রী কি আছে?তাকে এই কাজে সমর্থন দিবে?কিংবা এই কাজে রাজি থাকবে?
আরাম আর বিলাসিতার পির কেউ কি চাইবে সংকীর্ণ দুটি ঘরে তারা বসবাস করুক?
দামী খাবার খাওয়া বাদ দিয়ে কেউ কি চাইবে যে,সে সিম আর ছোলা ভর্তা খাবে?
প্রাইভেট মার্সিডিজ গাড়িতে চড়ার যার অভ্যাস আছে,সে কি চাইবে পায়ে হেঁটে চলাচল করতে???

আমার মনে হয় বর্তমান সময়ের কোন স্ত্রী স্বামীর এমন সিদ্ধান্তে রাজি হবে না।

কিন্তু ফাতিমা! ইতিহাসে যিনি অন্যান্য মহিলাদের থেকে একক বৈশিষ্ঠের অধিকারীনী।
কেন না তিনি ছিলেন খলিফার কন্যা,চারজন খলিফার ভাই,খলিফার স্ত্রী। যারা তৎকালীন বিশ্বের বিশটি রাষ্ট শাসন করে ছিলেন।
তাঁর স্বভাব এমন হওয়ার কথা নয়।
কিন্তু,
ফাতেমা তাঁর স্বামীর উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে বলল,
"আপনার যা মন চাই করুন,আমি আপনার সাথেই আছি।সচ্ছলতার সময় আপনার সাথে ছিলাম,সংকীর্ণতার সময় আপনাকে ছেড়ে কীভাবে চলে যাবো???
আপনার খুশিই আমার খুশি!!!
...........
.....................
চ ল বে....

সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:৪১
৮টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×