
আচ্ছা না হয় আমি মেনেই নিলাম বিবর্তনই ঘটেছে । ধীরে ধীরে বিবর্তিত হয়ে মানুষ সৃষ্টি হয়েছে! আবার আরেকটু বিষয় ভাবতে পারি না হোমোসেপিয়েন্স ব্যাতিরেকে তাদের সাধারণ পূর্বপুরুষরা হারিয়ে গেল কেনো? পৃথিবী থেকে হোমো অস্ট্রালোপিথ্যাকাস,হোমো ইরেকটাস,হোমো নিয়ানর্ডাথাল হারিয়ে গেলো টিকে গেলো শুধু হোমো সেপিয়েন্স? নিয়ান্ডারথাল ও হোমোসেপিয়েন্স সাধারণ পূর্বপুরুষও ছিল একই পূর্বপুরুষ হোমো ইরেক্টাস হয়ে হোমো অস্ট্রালোপিথ্যাকাস্দের থেকে বিবর্তিত হয়েছি আমরা উভয়েই বিবর্তনবাদতত্ত্ব যা বলে। জেনেটিক গবেষণাও নাকি প্রমাণ করে। আবার লক্ষ্য করুন জার্মানির জাঁ জ্যাক লিপজিগ বিবর্তনমূলক নৃ-বিজ্ঞান ম্যাক্স প্লাংক ইনস্টিটিউটের হাবলিন বলেন, হোমো স্যাপিয়েন্সরা তাদের বাসস্থান দখলে নিয়ে নিলে নিয়ান্ডারথালরা খুব শিগগিরই বাস্তুচ্যুত হয়।ফলে আধুনিক মানুষের কাছে প্রতিযোগিতায় হেরেই পৃথিবী থেকে বিদায় নেয় তারা।আসলে কি ব্যাপারটি এটাই নাকি অন্য কিছু? নিয়ানর্ডাথালদের জেনেটিকগত প্রবলেম,টিকে থাকার সামর্থ্য বা প্রজন্ম বৃদ্ধির ঘাটতিই তাদের দুনিয়া থেকে হারিয়ে দিয়েছে? বছরের পর বছর ধরে চলা গবেষণায় জেনেটিক কোড ম্যাপিং করে বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, হোমো নিয়ান্ডারথ্যালেন্সিস্ হল ডিএনএ এনকোডেড হওয়া প্রথম বিলুপ্ত মানব প্রজাতি। নিয়ান্ডারথাল ডিএনএ’র সঙ্গে আমাদের জিনোমের তুলনা করে তারা এখন বলছেন, আধুনিক মানব প্রজাতি (হোমোস্যাপিয়েন্স) জেনেটিকালি অনন্য। তাই জেনেটিক্যাল দুর্বলতাও নিয়ান্ডারথাল হারিয়ে যাওয়ার জন্য দায়ী। তাদের মতে হোমো সেপিয়েন্স এর জীবনে কিছু পরিবর্তন ঘটে। এই পরিবর্তন হোমো সেপিয়েন্সকে টিকিয়ে রাখে। কিন্তু এখন প্রশ্ন মানবজাতির জীবনে এমন কি পরিবর্তন হয়েছিলো? এই পরিবর্তন কি কোন পরিব্যাক্তি ছিলো? আধুনিক মানুষ যারা হোমো সেপিয়েন্স থেকে এসেছে তারা হঠাৎ করে এত বিশাল জ্ঞানের অধিকারী বা জ্ঞানবিপ্লব ঘটাতে সক্ষম হলো কিভাবে? অভিজ্ঞতালক্ধ জ্ঞান ধরে রাখার ক্ষমতা এবং মানবীয় অভ্যন্তরস্থ্য জ্ঞান আকস্মিকভাবে হোমো সেপিয়েন্স নামের প্রাচীন মানুষের জীবনকে রাতারাতি তারকা বানিয়ে দিলো? যদি এমন কোন পরিব্যাক্তি ঘটে থাকে তাহলে সেই পরিব্যাক্তিটি কেমন ছিলো? সেটাই কি জ্ঞান বৃক্ষ? (ধর্মীয় দৃষ্টিকোনে মানুষকে যে বৃক্ষের কাছে যেতে নিষেধ করা হয়েছিলো।) জ্ঞানবৃক্ষজনিত পরিব্যাক্তিই কি আধুনিক মানবজাতির সৃষ্টি করে?

বিবর্তনবাদ মেনে নিলেও কিছু প্রশ্ন বিবর্তনবাদকে প্রশ্নের সম্মুখিন করে তোলে! একটি জীবনকে সম্ভব করার জন্য জীন এবং ডিএনএর যে রহস্যময় কারুকাজ তা কি করে সম্ভব এই প্রশ্ন করেছেন বিশিষ্ট নাস্তিক বিজ্ঞানি ফ্লিও। তিনি বলেন “আমি মনে করি ডিএনএ তে বিদ্যমান এই বহুমাত্রিক মৌলিক উপাদানকে একটি সুবিন্যস্ত পরিসরে সাজানোর পিছনে অবশ্যই একজন বুদ্ধিমান সত্ত্বার অস্তিত্ব রয়েছে। এ বহুমাত্রিক জটিল বিন্যাস আমাকে এ সিদ্ধান্তে উপনীত করেছে যে, অবশ্যই তা এক বুদ্ধিমান সত্ত্বার কাজ”। আবার বিশিষ্ট বিজ্ঞানবাদী স্টিফেন সি মেয়ার ঠিক একই ভাষায় কথা বলছেন। তিনি বলেন “ জীববিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে প্রমাণিত হয়েছে যে মহাবিশ্বটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরে, ডিএনএতে উপস্থিত প্রচুর পরিমাণে জিনগত তথ্য অবশ্যই জীবনকে সম্ভব করার জন্য উত্থিত হয়েছিল” । স্টিফেন সি মায়ারের কথা আমাদের বুঝতে শেখায় যে এত জটিল ডিএনএর প্রোগ্রামিং কিভাবে আপনাআপনি সম্ভব হলো? একটি কোষকে সৃষ্টি করার জন্য প্রাণ স্থাপিত করার জন্য এত জটিল প্রোগ্রামিং কি করে আপনা আপনি ঘটলো? যেখানে মাইক্রোসফ্ট এর প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস বলেছেন ‘ আমাদের বিশ্বের সবচেয়ে সেরা সফটওয়্যারটির প্রোগ্রামিং এর চেয়ে ডিএনএর প্রোগ্রামিং অনেকগুন উন্নত। তাহলে এই উন্নত প্রোগ্রামিং কি আপনা আপনি ঘটতে পারে? আদ্যৗ কি সম্ভব? জীববিজ্ঞানী মাইকেল ডেল্টন আমাদের আরো অবাক করে দেয়। প্রকৃতির এই রহস্যময়তা তাকে বুঝতে দেয় প্রকৃতির এত কিছুর আয়োজন মানুষের আগমনের জন্যই। তিনি বলেন “কোষের অলৌকিক ঘটনা আমাদের গ্রহে প্রাণের আবির্ভাবের অনেক আগে থেকেই, সমস্ত জীবনের এই মৌলিক এককের জন্য প্রকৃতির নিয়মের সূক্ষ্ম ফিটনেসে,প্রকৃতির ক্রমানুসারে, কার্বন-ভিত্তিক কোষের নকশার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল। পৃথিবী কোষের মূল পারমাণবিক উপাদানগুলির বৈশিষ্ট্যগুলির চেয়ে এই ফিটনেসটি আর কোথাও স্পষ্ট নয়। জীবনের প্রতিটি পরমাণু-কার্বন, হাইড্রোজেন, অক্সিজেন এবং নাইট্রোজেন সহ, সেইসাথে বেশ কিছু ধাতব উপাদান-কোষে অত্যন্ত সুনির্দিষ্ট, অপরিহার্য ভূমিকা পালন করার জন্য সূক্ষ্মভাবে সাজানো অনন্য বৈশিষ্ট্যগুলির একটি স্যুট বৈশিষ্ট্যযুক্ত। তদুপরি,এই বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে কিছু বিশেষভাবে আমাদের মতো উন্নত বায়বীয় জীবের কোষে অপরিহার্য ভূমিকার জন্য উপযুক্ত” ।

জেনেটিক্যালি অনন্য বিষয়টি প্রকৃতি বুঝতে পারে কি করে তাহলে কি প্রকৃতির এই চেতনা বা কনসাসনেস আছে? আবার বিবর্তনবাদ আজকের Developmental Gene Regulatory Network এবং Epigenetic Information এর ব্যাক্ষা করতে পারে নাই? বিষয়বস্তু এমন প্রাণিদেহ সৃষ্টি বা ডিএনএর তথ্য তার অপারেটিং সিষ্টেম এবং জেনেটিক কার্যক্রম যা কিছু আছে সমস্তটাই যেনো এই মহাবিশ্বে এইরুপই প্রয়োজন ছিল! কি সুন্দর তথ্যসমৃদ্ধ ডিজাইনে নির্মিত মানুষের বডি স্টাকচার। মানুষের কোষ আর ডিএনএতে অবস্থিত জিনগত তথ্য। কে এই প্রানিদেহ নির্মানের জন্য কমান্ডিং সিষ্টেম এর তথ্যগুলো সুশৃংখলা সাজালো? আপনা আপনি কি সম্ভব? আইডি’র এই বক্তব্যগুলো একেবারে ফাঁকাবুলি নয়। যুক্তিসংগত বটেই। কেননা ম্যাক্রো ইভ্যুলেশন ঘটতে হলে নতুন বডি স্টাকচার বা অপারেটিং সিষ্টেম বির্নিমানে প্রকৃতির অভ্যন্তরে অবশ্যই অতিপ্রাকৃতিক এজেন্সির (some supernatural agencies) বা একটি মাত্র এজেন্সির হাত আছে। নইলে প্রাণির বডিস্টাকচার এবং নতুন নতুন ডিজাইন এবং কমান্ড সিষ্টেমের নান্দনিকতা কখনই সম্ভব হতো না। ঠিক সেই হিসেবেই প্রকৃতির যতটুকু দরকার ছিলো ঠিক ততটুকুই রেখেছে বাকীটা ডিলেট করে দিয়েছে। আর এই কারনেই আধুনিক মানুষ সেই হোমো সেপিয়েন্স এর জিন বহন করে চলেছে। শিপ্পাঞ্জি থেকে শুরু করে হোমো ইরেক্টাস হয়ে হোমো অস্ট্রালোপিথ্যাকাস্দের মধ্য থেকে বিবর্তিত হয়ে হোমো নিয়ানর্ডার্থাল এবং হোমো সেপিয়েন্স হয়ে আমরা আধুনিক মানুষ। কিন্তু প্রকৃতির বুকে আমরা হোমো সেপিয়েন্স এর জিন বহন করে চলেছি। কিন্তু অন্য কোন জীন নিয়ে কোন প্রাণি পৃথিবীতে অবশিষ্ট নেই। এ যেনো মানুষ সৃষ্টি করতে ঠিক যতটুকু প্রয়োজন ছিলো প্রকৃতি ঠিক ততটুকুই রেখেছে। বাকি প্রজাতি প্রকৃতি ইচ্ছে করে বিনাশ করে দিয়েছে। এতেই প্রমান হয় প্রকৃতির ছদ্মবেশে প্রকৃতির মাঝে কোন সত্ত্বার উপস্থিতি বিদ্যমান ছিলো? যা মানুষের জ্ঞানবৃক্ষ পরিব্যাপ্তি ঘটার পর মানুষ সৃষ্টি সম্পন্ন বিধায় হারিয়ে দিলো অন্য সকল প্রজাতি! নইলে কি এমন কারন হতে পারে যে আধুনিক মানুষ শুধুমাত্র সেপিয়েন্স এর জীন বহন করছে? বিখ্যাত নাস্তিক জীববিজ্ঞানী রিচার্ড ডকিন্স ইদানিং ভীনগ্রহের প্রানীদের দ্বারা মানবদেহ ডিজাইনকৃত বলে মন্তব্য করছেন। অথচ মানুষ সৃষ্টির পর থেকে ফেরেস্তা বা দেবতাদের পৃথিবীতে আগমনের বিষয়টি ধর্মগ্রন্থগুলোতে উল্লেখ থাকা সত্ত্বেও আমরা ভীন গ্রহের প্রাণি নিয়ে নাচানাচি করছি অথচ ফেরেস্তা নামক প্রানিটির কথা আমাদের মাথায় আসেছে না।
নৃতাত্ত্বিক জটিলতা এই বিবৃতি প্রকাশ করে যে, আমাদের বসবাস করার জন্য এই জগৎ ও মহাবিশ্ব “অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে সাজানো-গোছান”অবস্থায় বিরাজমান। পৃথিবীর উপর প্রবাহমান বাতাসের উপাদানগুলোর অনুপাত যদি সামান্যতম পরিবর্তীত হতো তাহলে পৃথিবীর উপর থেকে অনেক প্রজাতি খুব দ্রুতই তাদের অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলতো। আবার যদি পৃথিবী সূযের খুব কাছে অথবা অনেক দূরে থাকতো তাহলেও পৃথিবীর উপর থেকে অনেক প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে যেত কিংবা সম্পূর্ণভাবে তাদের অস্তিত্ব হারাতো কিংবা কোন প্রাণ উৎপাদনই সম্ভব হতো না। পৃথিবীতে বসবাসরত প্রাণ ও প্রাণীর অস্তিত্ব এবং উন্নয়নের জন্য সঠিকভাবে সুশৃঙ্খলিত না থাকলে পৃথিবীতে প্রান উৎপাদন এবং টিকে থাকা অসম্ভবপর হয়ে উঠতো! অতএব এই সুন্দর পৃথিবী এবং মানুষ সৃষ্টির জন্য একজন কনসাসনেস অবশ্যই রয়েছে এবং তার সাহায্যকারী হায়ার ডাইমেনশনাল কোন প্রাণি ফেরেস্তা রয়েছে। নইলে এই মানুষ আমরা এই পৃথিবীতে আসতাম না এবং এত উন্নত আচরনসমৃদ্ধ জ্ঞান বিজ্ঞানও জানতে পারতাম না।
এই মানবজাতিকে শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। কথা বলা শেখা, লিখন পদ্ধতি শেখা, রাষ্ট্রিয় পদ্ধতি সহ নগর নির্মান, প্রাচীন ব্যাবিলনের হাম্বুলি আইন নির্মান। এখানে দেবতাদের অস্তিত্ব লক্ষ্য করা যায়। আবার ব্যাবিলনের হারুত মারুত দুজন ফেরেস্তার মানব জাতিকে হিপটোনাইজ শেখানোর বিষয়টি উল্লেখ্য। যুগে যুগে পৃথিবীতে অশরীরি প্রানির আনাগোনা ঘটেছে মানুষের উন্নয়নের প্রয়োজনে বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থ সহ বিভিন্ন পূরনে উল্লেখ থাকার পরও কেনো আমরা বিষয়টি মেনে নিতে পারছি না অথচ ভীনগ্রহের প্রাণি নামক একটি কল্পনাকে আশ্রয় প্রশ্রয় করে রুপকথার গল্প ফাদছে। আমি পূবেই বলেছি মানবজাতি আপনা আপনি এত জ্ঞান পাই নাই। এত জ্ঞান আহরনের পিছনে তার মজ্জাগত উন্নয়ন ব্যতিরেকেও জ্ঞান অজর্নের জন্য তার শিক্ষক মনোনীত করার প্রয়োজন হয়েছিলো। যুগে যুগে যারা পৃথিবীতে এসেছে শুধু মানবজাতির উন্নয়নের প্রয়োজনে। ইতিহাসের বিভিন্ন পেক্ষাপটে এ সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রমান ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। মানবজাতি তো পশুদের মতোই একশ্রেণির প্রাণী মাত্র। কিন্তু তার এই অগাধ জ্ঞান এলো কোথা থেকে? কিভাবে সে মুহুত্বের মধ্যে পৃথিবীর মধ্যে জ্ঞানবিপ্লব ঘটাতে পারলো? কথা বলা শেখা,বিশেষ শব্দ তৈরীর কৌশল বা বিভিন্ন বস্তুর নামকরণ করা,আবার একই সময়ে পোষাক পরার চিন্তা মাথায় এলো কিভাবে? আর এই যে পোষাক পরার চিন্তা কথা বলার জন্য শব্দ চয়ন বা নামকরন করা শিক্ষা যা ধর্মগ্রন্থগুলোর সাথে সামহ্জস্যপূর্ন। ধর্মগ্রন্থগুলোর বক্তব্যর সাথে পৃথিবীতে আর্বিভূত হওয়া হোমো সেপিয়েন্স মানুষের দৃষ্টান্ত একই। তবে কি এদের মধ্যে কি কেউ ছিলো আদম? আমিতো মানুষের এই উন্নয়নের পিছনে স্রষ্টার হস্তক্ষেপ স্পষ্ট লক্ষ্য করছি?
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ১০:৫৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



