somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সায়েন্টিফিক তাফসীর পর্ব-২ মহাজাগতিক পরিকল্পনা।

০৩ রা জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ৮:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

………………………………………………………………………………
هُوَ الَّذِيْ جَعَلَ لَكُمُ الَّيْلَ لِتَسْكُنُوْا فِيْهِ وَ النَّهَارَ مُبْصِرًا اِنَّ فِيْ ذٰلِكَ لَاٰيٰتٍ لِّقَوْمٍ يَّسْمَعُوْنَ.
তিনি সে-ই সত্তা,যিনি তোমাদের জন্য রাত সৃষ্টি করেছেন,যাতে তোমরা তাতে বিশ্রাম গ্রহণ কর এবং দিনকে করেছেন আলোয় উজ্জ্বল। নিশ্চয় এতে বহু নিদর্শন রয়েছে সে লোকদের জন্যে,যারা শোনে। Ñসূরা ইউনুস (৯) : ৬৭
………………………………………………………………………………
আজকের পর্বে আমরা আলোচনা করতে বসবো দিন ও রাতি সৃষ্টি নিয়ে। আমি অনেক নাস্তিক্যবাদী বিজ্ঞানমন্সকদের দেখেছি আল কোরআনের এই আয়াত নিয়ে হাসাহাসি করতে। তাদের সহজসাধ্য উত্তর পৃথিবী ঘোরেই বলেই তো দিন রাত্রি উদয় হয়। রাত্রির আবার সৃষ্টি কিসের? তারা সৃষ্টি শব্দটা মানতে নারাজ। সরাসরি তাদের প্রশ্ন এখানে সৃষ্টি শব্দটা প্রয়োগ কেনো? তাদের সহজসাধ্য বোধগম্যতা হলো সুর্য যখন পৃথিবীর একপাশে আলোকিত করে সেই পাশে দিন হয় অপর পাশে রাত্রি হয়। এই সহজ্য সাধ্য বিষয়টিকে ধর্মগ্রন্থ কেনো জটিল করে তুলেছে? আসলে নাস্তিক্যবাদী লেখক বা এই শ্রেনির মানুষের বোধগম্যতা তাদেরকে ধর্ম বিরোধীতা করতে শেখায় কারন কখনই তারা ধর্মগ্রন্থের গভীরে যাই নাই ধর্মের প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটনে তাদের আগ্রহের স্বল্পতা তাদের ধর্মবিরোধী মানসিকতা বোধকে আবেগ দ্বারা তাড়িত করে। কিন্তু একটি বিষয় সত্য এখন বিজ্ঞান আমাদের অনেক জ্ঞান দিয়েছে আমাদের জানার পরিধিও অনেক বেড়েছে। আর সেই জানার জ্ঞানই আমাদের বুঝতে শেখাচ্ছে যে রাত্রি স্রষ্টার একটি মহান দান মানুষের জন্য। এই রাত্রি যদি আল্লাহর উপহার না হতো তবে এই ধরাধামে মানুষের আর্বিভাবই হতো না। আল কোরআনের এই আয়াতটিতে বলা হচ্ছে যে “তিনিই সেই স্বত্তা যিনি সৃষ্টি করেছেন রাত্রি যাতে মানুষ বিশ্রাম নিতে পারে। আর দিনকে করেছে আলোক উজ্জল। নিশ্চয় এতে নিদর্শন আছে মানুষের জন্য যারা শোনে।” কিন্তু কি নিদর্শন আছে এ আয়াতের মধ্যে যারা শোনে। মানুষের বিশ্রামের জন্য রাত্রি সৃষ্টি করেছে স্রষ্টা কিন্তু কি নিদর্শন আছে সেই বিষয়টি আমি আলোচন করবো। এখন বিজ্ঞানের বদৌলতে আমরা অনেকটি এগিযে গিয়েছি আমরা স্রষ্টার সৃষ্টির জন্য তার অবদানকে স্বীকার করতে বাধ্য হচ্ছি।
প্রিয় পাঠক, ধর্মগ্রন্থের এই প্রকৃত সত্য তুলে ধরে আপনাদের সামনে স্রষ্টার একটি মহৎ পরিকল্পনার কথা প্রকাশ করার জন্য আজকের আমার এই লেখা। আসলে আমাদের কাছে দিন ও রাত্রি সৃষ্টি খুব সহজসাধ্য বিষয় বলেই পরিগনিত হয়। কারন সুয পৃথিবীর কাছে এলেই দিন হয় আর দুরে থাকলে রাত্রি হয়। কিন্তু এর গভীরে আরো অনেক বিষয় আছে যেগুলো আমাদের কাছে অজানা। আর অজানা বিষয় গুলো আমরা জ্ঞাত হলে সত্যিই আমরা অবাক হবো সৃষ্টির কি অভূতপূব পরিকল্পনা আর এই কারনেই আল কোরআন আমাদের বলে-“তোমরা তোমাদের পালনকর্তার কোন কোন অবদানকে অস্বীকার করবে?” সত্যিই কি স্রষ্টার কোন অবদানকেই অস্বীকার করা যাই? ঠিক তেমন দিন রাত্রি সৃষ্টির ক্ষেত্রেও রয়েছে স্রষ্টার পিছনের কারিগরি নিদশর্ণ। যে মহান পরিকল্পনায় স্রষ্টা এই দিন রাত্রি সৃষ্টি করেছেন সেই পরিকল্পনাটি বুঝতে পারলে আপনি অবশ্যই অবাক হবেন এবং স্রষ্টার প্রশংসায় পঞ্চমুখ নাহয়ে আপনি থাকতে পারবেন না। এই দিন রাত্রি সৃষ্টির পিছনে রয়েছে ব্যপক চিন্তাভা্বনা। শুধুমাত্র পৃথিবীর স্থান পরিবর্তনের কারনে বা ঘোরাঘুরির কারনেই যে দিন রাত্রি হয় ঠিক তা নয় এর পিছনে রয়েছে ব্যপক পরিকল্পনা। একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়েই পৃথিবীতে দিন রাত্রি সৃষ্টির ব্যবস্থা করা হয়েছে। সুয পৃথিবীর কাছে এলেই দিন হয় আর দুরে থাকলে রাত্রি হয় বস্তুত সামনে থেকে এটা মনে হলেও এর পিছনে আমাদের গ্যালাক্সির অবস্থান, আমাদের সৌরজগতের অবস্থান এমনকি আমাদের এই পৃথিবীর অবস্থানও অনেক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ন ভূমীকা পালন করছে। এখন আপনি যদি বলেন তাদের অবস্থানের সাথে আমাদের পৃথিবীর দিন রাত্রি ঘটার কি এমন কারন হতে পারে? হ্যা সেই কারনটি জানানোর জন্য আমার এই লেখা।

সমগ্র মহাবিশ্ব জুড়ে অস্ংখ্য নক্ষত্র গ্যাস, ধুলীকনা, নীহারিকা, তারকা রাজ্য, গ্রহ, গ্রহানু গ্যালাক্সি খুবই ঘন ঘন স্থানে সন্নিবেশিত ও সজ্জিত।এ সকলকিছুই যেনো একটি জাল দ্বারা আবদ্ধ।মহাকাশ গবেষণা ইদানিং দেখছে একটি মাকড়সার জালের মতো একটি জাল যা মাহাজাগতিক সমস্ত কিছুকে আবদ্ধ করে রেখেছে।কসমিক স্ট্রিং জাতীয় কোন কিছু।সমস্ত গ্যালাক্সি একটির পর একটি খুব ঘনঘন স্থানে সজ্জিত।কোন কোন স্থানে একটি গ্যালাক্সির সাথে আরেকটি গ্যালাক্সির গায়ে গায়ে লেগে থাকে।এত ক্ষুদ্র পরিসরে এত গ্যালাক্সি যার উঞ্চতা কল্পনাই করা যায় না।কোটি কোটি গ্যালাক্সি চারিদিকে।একটার পর একটা। চারিদিকে ব্যপক উঞ্চতা এবং উত্তাপ। এই উঞ্চতার কারন চারিদিকে গ্যালাক্সি ও নক্ষত্রজগৎ এর প্রাবল্য।এই সকল স্থানে কোন রাত নেই।এই সকল স্থানে যে কোন গ্রহে এত বেশি আলোকময় থাকে যে সেখানে রাত বলে কোন সময় থাকে না।উজ্জলতা আর উজ্জলতা,আলো আর আলো,দিন আর দিন।আর এই বিশাল স্পেসের মাঝে কিছু কিছু স্থান আছে যা শুন্যস্থান।সেখানে প্রায় কিছুই নেই আর থাকলেও সামান্য কিছু গ্যালাক্সি রয়েছে।বিশাল শুন্যতা।চারিদিকে অন্ধকার আর অন্ধকার।এই শুন্যস্থান এলাকাটির নাম কসমিক ভয়েড। মহাবিশ্বে এরকম অনেক ভযেড রয়েছে যে গুলো প্রায় শুন্য।ব্যাপক শুন্যতার মাঝে বিশাল দুরত্ব নিয়ে দু একটি পাচটি গ্যালাক্সি অবস্থান করছে মাত্র। চিত্রের দিকে লক্ষ্য করুন।



লক্ষ্য করুন চারিদিকে নীল আস্তরন গ্যালাক্সি আর গ্যালাক্সি আর মাঝখানে কালো শুন্য একটি স্থান।চারিদিকে গ্যালাক্সির ফিলামেন্টের ব্যাপক উজ্জল্যময়তার মাঝে ব্যপক স্থান জুড়ে রয়েছে একটি বিশাল শুণ্যস্থান।কালো মতো সেই ফাকা স্থানকে বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় কসমিক ভয়েড । এই শূন্যতাগুলি মহাবিশ্বের বৃহৎ আকারের কাঠামোর অংশ, যা দেখতে অনেকটা সুইস পনিরের একটি ব্লকের মতো মনে হয়। চিত্রের দিকে হয়তো লক্ষ্য করলে আপনারা বুঝবেন অপেক্ষাকৃত ফাঁকা অঞ্চলগুলির চারপাশে গ্যালাক্সিগুলি খুবই ঘন ফিলামেন্ট দ্বারা গঠিত। এই শুন্যস্থানটি চাপ দিয়ে ধরে রেখেছে পাশ্ববর্তী ধুলিমেঘ এবং গ্যালাক্সির সমাহারকে।

প্রিয় পাঠক, হয়তো জেনে অবাক হবেন ২০১৩ সালে নেওয়া পর্যবেক্ষণের উপর ভিত্তি করে একটি গবেষণায় নিশ্চিত করা হয় যে আমাদের এই গ্যালাক্সি মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি একটি মহাজাগতিক শূন্যতা বা কসমিক ভয়েড এর অভ্যন্তরে অবস্থিত ৷ অর্থাৎ আমরা একটি বিশাল শুন্যতার মাঝে অবস্থান করছি।আমাদের এই গ্যালাক্সি তার সৌরজগৎ এবং পৃথিবীকে নিয়ে কেবিসি নামক একটি কসমিক ভয়েড এর অভ্যন্তরে অবস্থিত।এই স্থানীয় শূন্যস্থানটি "উইসপি ফিলামেন্টস" নামক ব্রিজ দ্বারা পৃথকীকৃত তিনটি সেক্টরের সমন্বয়ে গঠিত যা ১৯৮৭ সালে ব্রেন্ট টুলি এবং রিক ফিশার আবিষ্কার করেছিলেন। শূন্যতার নির্দিষ্ট পরিমাণটি অজানা হলেও এর ব্যাপ্তি কমপক্ষে ৪৫ এমপিসি বা ১৫০ মিলিয়ন আলোক-বছর জুড়ে এবং সম্ভবত ১৫০ থেকে ৩০০ এমপিসি। কসমিক ভয়েড এর মাঝে যে সকল গ্যালাক্সি থাকে তাদের পরিমান বা ঘনত্ব অত্যন্ত কম হয়ে থাকে। মহাবিশ্বের সবচেয়ে বড় ভয়েড বুটিস ভয়েড যা পৃথিবী থেকে হতে ৭০ কোটি আলোকবর্স দুরে অবস্থিত এতে মোট ৬০ টি গ্যালাক্সি খুজে পাওয়া যায়। এখানে গড়ে ১ কোটি আলোকবর্ষের ভিতরে মাত্র একটি গ্যালাক্সি পাওয়া যায যা স্বাভাবিক হতে অনেক কম। যেমন আমাদের পাশ্ববর্তী এন্ড্রোমিডা গ্যালাক্সি আমাদের মিল্কিওয়ে থেকে প্রায় ২৫ লক্ষ আলোকবর্স দুরে অবস্থিত।

প্রিয় পাঠক, একটি মুহুত্বের জন্য নিজেকে প্রশ্ন করুনতো-কেনো আমাদের গ্যালাক্সিটা ভয়েড বা শুন্যস্থানের মধ্যে সৃষ্টি হলো? এর মাঝে রয়েছে গুরুত্বপূর্ন উত্তর। কারন এই ভয়েডের মাঝে আমাদের পৃথিবীর অবস্থানের সাথে নির্ভর করছে প্রানি প্রজাতির সৃষ্টির কারন এবং দিবা রাত্রি সৃষ্টির রহস্য।যদি আমাদের এই গ্যালাক্সিটা কসমিক ভয়েড বা শুন্যস্তানে সৃষ্টি না হয়ে যদি ফিলামেন্ট দ্বারা গঠিত ব্যাপক উষ্চতাময় বা অত্যাধিক তাপমাত্রাময় অবস্থানে সৃষ্টি হতো তবে কি আমরা চারিদিককার ব্যপক উষ্ণতার ও আলোকিত পরিবেশের কারনে এই পৃথিবীতে কোথাও রাত্রি নামের কোসময়কাল পেতাম? না পাওয়া সম্ভব হতো না। কারন ফিলামেন্ট এরিয়ায় চারিদিকে কোটি কোটি সুর্যসম নক্ষত্রের আলোতে চারিদিকে সবসময় আলোকিত থাকতো তাই আমাদের এই সুর্যের অনুপস্থিতি সত্ত্বেও আমাদের এই পৃথিবীতে রাত্রি সৃষ্টি হতো না।লক্ষ কোটি নক্ষত্রের আলোর কারনে। সবসময় থাকতো চকচকে আলোকিত। আপনি যদি এই পৃথিবীতে রাত্রির প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন তাহলে নিসন্দেহে আপনি স্বিকার করবেন অবশ্যাই এই গ্যালাক্সিকে কসমিক ভয়েডের মাঝে অবস্থিত হওয়ার দরকার ছিলো!! নইলে আশে পাশের অসংখ্য নক্ষত্র থাকার কারনে এবং তাদের ব্যাপক উজ্জলতার কারনে এই পৃথিবি সবসময় সবদিক দিয়ে আলোকিত থাকতো ফলে রাত্রি বলে কিছুই থাকতো না।মানুষ না পেতো রাত্রির প্রশান্তি বা বিশ্রাম নেওয়ার সময়। সুতরাং নিসন্দেহে এটা প্রমানিত পরিকল্পনাহেতু পৃথিবীর অবস্থান নির্ধারন করা হয়েছে।সুতরাং উপরোক্ত আয়াতে রাত্রীকে সৃষ্টি করার যে প্রসঙ্গ তুলে ধরা হয়েছে তা যুক্তিসঙ্গত। শুধু রাত্রি সৃষ্টি হতো না তা নয় বরং আমাদের এই প্রাণীজগৎ এই পৃথিবীতে আর্বিভূত হতো না। লক্ষ্য করুন কসমিক ভয়েডে এই বিশাল পরিমান স্পেস জুড়ে শুন্যাস্থান থাকার কারনে একটি গ্যালাক্সি থেকে আরেকটি গ্যালাক্সির যে বিশাল দুরত্ব তাতে একটি গ্যালাক্সি তার পাশ্ববর্তী কোন গ্যালাক্সির উষ্চতা বা তাপ শক্তি গ্রহন করতে পারে না ফলে পৃথিবীটা একটি মাত্র নক্ষত্র সুর্যের উপর ডিপেন্ড করে ছিলো। তাই গ্যালাক্সিটি নিজস্ব তাপমাত্রা নিয়েই টিকে থাকে। কসমিক ভয়েড এলাকায় যথাযথ পরিমানযোগ্য রেডিয়েশন থাকায় এবং একেকটি গ্যালাক্সির মাঝে এত বিশাল দুরত্ব বলেই আমাদের গ্যালাক্সি তার নির্ধারিত সৌরজগতে এমন ফুলে ফলে সুন্দর বাসযোগ্য পৃথিবীকে উপহার দিতে পেরেছিলো। নইলে অত্যাধিক তাপ বাসযোগ্য পৃথিবী গড়ার ক্ষেত্রে অন্তরায় হয়ে উঠতো। আপনারা হয়তো জানেন অত্যাধিক রেডিয়েশন প্রাণ টিকে থাকার পক্ষে যথেষ্ট নয়। আমাদের পৃথিবীতে যদি ওজন স্তর পর্যাপ্ত না থাকতো তবে সুর্য নামের একটি গ্রহের আল্ট্রাভয়োলেট রে, গামা রে এর সাথে পাশাপাশি গ্যালাক্সির অসংখ্য নক্ষত্রের অত্যাধিক তাপীয় অবস্থা ওজন স্তুরকে ক্ষতিগ্রস্থ করতো ফলে প্রাণ উৎপাদন ব্যহত হতো। তার মানে কসমিক ভয়েড এলাকার গ্যালাক্সির ভিতরের দুরত্বই যথাযথ ও সুক্ষপরিকল্পিত তাপমাত্রা সৃষ্টি করেছে ফলে প্রাণি জগৎ আত্মপ্রকাশ করেছে।যদি আমাদের গ্যালাক্সিটা ভয়েড এর মধ্যে অবস্থিত না হয়ে গ্যালাক্টিক ফিলামন্টের মাঝে অবস্থিত হতো তাহলে কখনই পৃথিবীতে প্রাণ আত্মপ্রকাশ করতে পারতো না।কখনই এই পৃথিবীতে রাতের আকাশ দেখা দিতো না এইং রাতের আকাশ দেখার জন্য দর্শক মানুষও কখনও এই পৃথিবীতে অস্তিত্বশীল হতো না।



প্রিয় পাঠক, এই পৃথিবীকে সুযের্র চারদিকে ঘুরিয়ে দি্লেই তো রাত্রি হতো না এই রাত্রি সৃষ্টি করার জন্য স্রষ্টাকে অনেক পদ্ধতি প্রয়োগ করতে হয়েছে।যার মাঝে কসমিক ভয়েডে গ্যালাক্সির অবস্থান ছিলো একটি অন্যতম সিদ্ধান্ত। তাছাড়া আরো একটি সিদ্ধান্ত ছিলো যেটি রাত্রি সৃষ্টির অন্যতম কারন। সেটি হলো আমাদের সৌরজগতের অবস্থান।আমাদের সৌরজগৎও একটি রহস্যময় অবস্থানে অবস্থান করছে। আমাদের এই গ্যালাক্সির ঠিক মধ্যবর্তী কেন্দ্র থেকে দুই বাহুর মাঝে সমান্তরাল স্থান থেকে যথেষ্ট উচু ও যথেষ্ট দুরবর্তী স্থানে আমাদের সৌরজগৎ অবস্থিত। গ্যালাক্সির প্রায় বাইরের এলাকাতে স্বল্প তাপমাত্রায় এলাকায় সৌরজগৎ অবস্থিত । গ্যালাক্সি জুড়ে চালিদিকে নক্ষত্র আর নক্ষত্র একটির গায়ে আরেকটি নক্ষত্র সজ্জিত। উজ্জলতা ও তাপমাত্রা এতটাই ব্যাপক যা ভাবাই যাই না। আমাদের সৌরজগৎটি যদি তীব্র রেডিয়েশনময় এলাকায় অবস্তিত হতো তাহলে প্রচন্ড উজ্জলতার কারনে দিবা রাত্রি সৃষ্টি তো হতো না কোনভাবেই আমাদের এই পৃথিবীতে প্রান উৎপাদন করা সম্ভব হতো না। লাখ লাখ কোটি কোটি নক্ষত্র আলোকিত থাকায় চারিদিকে অত্যাধিক আলোর প্রজ্জল্য থাকায় একটি সুর্যের কার্যকারিতা হারিয়ে গিয়ে লক্ষ কোটি সুর্যের উপস্থিতিতে পৃথিবীতে রাত্রীর উপস্থিতি হারিয়ে যেতো। রাত্রি বলে কিছুই থাকতো না । এবং ঠিক এই স্থানে সৌরজগৎ আছে বলেই লক্ষ কোটি সুর্যের পরিবর্তে একটি সুর্যের আলো দ্বারা আমাদের পৃথিবীতে দিবা রাত্রির পরিক্রমা চলছে। সুর্য থেকে অন্যান্য নক্ষত্রসমূহ যথেষ্ট দুরে অবস্থিত। সুর্য থেকে যে নক্ষত্রটি সবচেয়ে কাছে সেই নক্ষত্রটির নাম প্রক্সিমা সেন্টরাই। স্কটিশ জোতিবিদ রবার্ট আইনেস কম ভরের এই লাল বামন তারা আবিস্কার করেন যার সুর্য থেকে দুরত্ব প্রায় 4.23 আলোকবর্ষ । আধুনিক বিজ্ঞানের ধারনা আমাদের সৌরজগতের পার্শ্ববতী কোথাও যদি কোন নক্ষত্র অবস্থান করতো তাহলে পৃথিবী প্রতি মূহুত্ব সুর্য থেকে যে পরিমান আলোক কনা বা ফোটন কনা গ্রহন করতো পার্শ্ববতী স্থানে আরেকটি নক্ষত্র অবস্থান করার কারনে ফোটন কনার পরিমান দ্বিগুন হতো ফলে পৃথিবী অত্যাধিক তাপ ও চাপের কারনে রাতের শীতলতা দিনের উঞ্চতাকে সমতার ভিত্তিতে শোষন করতে পারতো না, তাই দিন দিন পৃথিবীর উঞ্চতা বৃদ্ধি পেতো ফলে কখনই পৃথিবীতে প্রাণ উৎপাদনের পরিবেশ সৃষ্টি হতো না। যথেষ্ট দুরবর্তী স্থানে অন্য নক্ষত্র অবস্থান করায় পৃথিবী অন্য কোন নক্ষত্রের রেডিয়েশন বা পর্যাপ্ত আলোক কনা শোষিত করতে পারে না। ফলে শিতলতা উঞ্চতার এক সুক্ষ সন্মময় পৃথিবীকে প্রাণ উৎপাদনের চারনভূমীতে পরিনত করতে পেরেছে।

দিবা রাত্রির এই সিস্টেম আমাদের পৃথিবীকে প্রানের চারনভূমী হিসেবে পরিগনিত করেছে।আজ এই রাত্রি সৃষ্টির কারনে আমরা এই দুনিয়ার রঙ্গমঞ্চে এসেছি। আধুনিক বিজ্ঞানের মতে আমাদের সৌরজগতের অবস্থান এতটাই পারফেক্ট যে ঠিক এই অবস্থানে আছে বলেই পর্যাপ্ত তাপমাত্রা ও পর্যাপ্ত উজ্জলতা পৃথিবীকে হেবিটেবল জোন সৃষ্টিতে সহায়ক ভূমীকা পালন করেছে।
প্রিয় পাঠক, আমি আপনাদের বোঝানোর চেষ্টা করেছি কেনো সৃষ্টি এমন হলো? নাও তো হতে পারত? সৌরজগতের অবস্থান কি করে গানিতিক রুল মেনে স্বল্প তাপীয় অবস্থানে অবস্থিত হয়? একটিমাত্র সুর্য দ্বারা রাত্রি দিন সৃষ্টি করে সৌন্দর্যময় আকাশ দেখার জন্য আমাদের মতো মানুষদের কেনো মহাজাগতিক দর্শক বানানো হয়েছে? আর আমাদের গ্যালাক্সিটাই বা কেনো তাপহীন একটি বিশাল ভয়েডের মাঝে অবস্থিত হলো? আমাদের গ্যালাক্সির সৌরজগতকে কেনো দুরবর্তী স্থানে সংস্থাপন করা হলো? এগুলো কি কোন মিরাকল নয়? এসকল রহস্যময় অবস্থানের মাঝে সুগভীর পরিকল্পনার ছাপ স্পষ্ট! কে যেনো গানিতিক নিয়ম সহ একটি রুল দিয়ে একটি মহাজাগতিক পান্ডুলিপিতে পূনাঙ্গ ভাবে পরিস্ফুটিত করে রেখেছে! একজন পরিকল্পনাকারীর অস্তিত্বকে আমরা এড়িয়ে গেলেই কি এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব? এই সুজলা সুফলা পৃথিবীকে গড়ার জন্য এতটা হিসেব করে সৃষ্টির নান্দনিকতা শুরু করতে হয়েছে। সমগ্র মহাবিশ্বটাকে সৃষ্টি করা হয়েছে সুপরিকল্পিত, নিয়মতান্ত্রিক ও নিয়ন্ত্রিত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। এই জন্য বিশিষ্ট বিজ্ঞানী পল ডেভিস বলছেন: “এমন ধারণা মনে স্থান দেয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখা খুবই কঠিন যে, বিশ্বজগতের বিদ্যমান কাঠামো যা কিনা ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতম পরিবর্তনের ব্যাপারের স্পর্শকাতর যত্নের সঙ্গে চিন্তা-ভাবনা করেই অস্তিত্বে আনা হয়েছে।”-(Paul Davies, God and the New Physics, New York: Simon & Schuster, 1983, p.189)
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ৮:৩৮
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৩:০৬

অবশেষে মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেফতার করেছে ডিবি। এবং প্রেস ব্রিফিংয়ে ডিবি জানিয়েছে সে ছোটবেলা থেকেই বদমাইশ ছিল। নিজের বাপকে পিটিয়েছে, এবং যে ওষুধের দোকানে কাজ করতো, সেখানেই ওষুধ চুরি করে ধরা... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×