লুই পাওয়েলস আর জ্যাক বের্জিয়ের একটি কথা মনে পড়ে গেল । তারা তাদের [AUFBRUCH INS DRILITE JAHR - TAUSEND ] বইয়ে লিখেছিলেন “ সংবিধান মারফত যে সমস্ত স্বাধীনতা আমাদের দেওয়া আছে আমাদের উচিত তার উপর আরও একটি দাবি করা - সেটা হল বিজ্ঞান কে সন্দেহ করার স্বাধীনতা । খুব অতীব গুরুত্ব পূর্ণ কথা তারা বলেছেন । আবার এলিক ফন দানিকেন এর একটি কথাও খুব প্রশংসনিয় । তিনি তার বইতে লিখেছেন “আগেকার দিনে লোক যাজক সম্প্রদায়কে বলত গোড়া আর বিজ্ঞানিদের বলত প্রগতিশীল। কিন্তু সেই যুগ হয়েছে বাসী । বহুকাল হল যাজক শ্রেনী হয়েছে প্রগতি শীল আর বিজ্ঞানীরাই আজ গোড়া, নেহাত দায়ে না ঠেকলে তারা নড়ে বসে না” । বিজ্ঞান এবং ধর্মের এই সকল দুরত্ব বোধ কে অবসান ঘটিয়ে একটি ঐক্য মিলন ঘটানোর সাহসি উদ্যেগের একান্ত প্রয়োজন । বিজ্ঞানের জ্ঞান মানুষ কে খোদায় দিয়েছে। পৃথিবীর ইতিহাস ঘেঁটে দেখুন যে নবী রাসুল বা খোদার প্রিয় পাত্ররা ছিলেন বড় বড় বিজ্ঞানী। নূহ (আঃ) যদি নৌকা বা জাহাজ তৈরী না করতেন তাহলে আজ হয়ত টাইটানিক তৈরি হত না ৷ খোদা মানুষ কে কথা বলতে শিখিয়েছে খোদা মানুষকে লিখিতে শিখিয়েছে। খোদা মানুষ কে পিরামিড বানাতে শিখিয়েছে, মমি বানাতে শিখিয়েছে, এই মমি বানানোর মধ্যে দিয়ে চিকিৎসা বিদ্যার অগ্রগতি সাধন করেছে। আমাদের মানব জীবনের জন্য পরিপূর্ণতা খোদায় আমাদের এনে দিয়েছেন। ইতিহাস ঘেঁটে দেখুন সকল ধর্ম গ্রন্থ নিয়ে গবেষনা করে দেখুন, বুঝবেন খোদার পরম দান মানুষকে ধন্য করেছে। অথচ আমরা মানুষ খোদার চাওয়া পাওয়ার হিসাব নিকাশ এর অংকে শুন্যতা এনে দিয়েছি । কিন্তু এটা কত দিন ? যে খোদা মানুষকে সৃষ্টি করেছেন, যে খোদা মানুষকে শিক্ষা দিয়েছেন,তার জয় হতেই হবে, তার পরিকল্পনা ব্যার্থ হতে পারে না । মানব জীবনে খোদার সূর্য আনাগোনা করে । সূর্য যখন উদয় হয় তখন পৃথিবী জ্ঞানে গুনে ভরে যায়, খোদার ইবাদত প্রার্থনায় মানুষ মশগুল থাকে । আবার যখন সূর্য ডুবে যায় তখন আবার পৃথিবী অন্ধকারে ডুবে যায় । খোদার এই সূর্যসম মহামানবের অনাগত প্রতীক্ষায় মানুষকে আর বেশিদিন অপেক্ষা করতে হবে না ।অচিরেই মানুষেরা আবার খোদার ইবাদত করবে, খোদার চাওয়া পাওয়ার হিসাব নিকাশে পূর্ণতা এনে দেবে। আবার এই পৃথিবীর মানুষেরা খোদার প্রার্থনা সংগীতের ঝংকারে পৃথিবীকে মোহগ্রস্ত করে তুলবে। আলকোরআনের একটি আয়াত ইদানিং আমাকে বেশ চিন্তিত করে তুলেছে “মানুষেরা কি নিশ্চিত যে আমি আর তাদের উপর প্রস্তর খন্ড নিক্ষিপ্ত করিব না” । আল কোরআনের আলোচ্য আয়াতে সরাসরি মানুষকে হুমকি দেওয়া হয়েছে । প্রস্তর খণ্ড নিক্ষিপ্ত হবার সময় বোধ হয় আর বেশি দিন নেই, কারন এই পৃথিবীর আজ যে অবস্থা, অন্ধকারে এত বেশি নিমজ্জিত তাতে অচিরেই ঘটবে এই আসমানি গজব।এ ক বার ভেবে দেখুন আমাদের সৌর জগতে মঙ্গল গ্রহে পাশ্ববর্তি কক্ষপথে লক্ষ কোটি গ্রহানু পুঞ্জ ক্রমাগত ঘুর্নায়মান অবস্থায় রয়েছে । ঐ গ্রহানু পুঞ্জ থেকে (এষটিরয়েড বেল্ট) থেকে যদি কয়েকটি গ্রহানু পৃথিবীর বুকে আঘাত করে তবে তা কয়েক শত পারমানবিক বোমার ক্ষমতা দিয়ে পৃথিবীর বুকে অনায়াসে ধংস লীলা চালাতে সক্ষম । আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি এই ধংশ লীলার মধ্যে দিয়ে কিছু কিছু জাতীর অস্তিত্ব চিরতরে বিলীন হয়ে যেতে পারে । অতএব আমাদের সাবধান হোতে হবে ।
দেবতা বা ফেরেস্তারাই মানব জাতীকে শিক্ষা দিয়ে জ্ঞানে গুনে গুনান্বিত করেছেন । নির্দীষ্ট সময় পর পর প্রতিনিধি (নবী রাসুল) পাঠিয়ে বিভিন্ন জ্ঞান বিজ্ঞান সরবরাহ করেছে। আজ ঐতিহাসিক বিভিন্ন পেক্ষাপট আমাদের এই কথায় বলছে। ফেরেস্তারা বা দেবতারা এসেছিলেন দুর দুরান্ত থেকে। স্বয়ং স্রষ্টার নির্দেশে যুগে যুগে তারা মানব জাতিকে বহু ভাবে শিক্ষা দিয়ে আজ এ অবস্থায় উপনীত করেছেন । এবিষয়ে আমরা নূহ (আঃ) এর দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করতে পারি । নূহ (আঃ) কে যদি ফেরেস্তারা নৌকা বা জাহাজ বানাতে না শেখাতেন তাহলে হয়ত বা আমাদের এই আধুনিক যুগে 'টাইটানিক' বা বিশাল বিশাল ডুবো জাহাজ বানানোর স্বপ্ন বাস্তবায়িত হতো না। নূহ (আঃ) কে ফেরেস্তারাই আল্লাহর নির্দেশে জাহাজ বানানো শিখিয়েছিলেন । তার প্রমান ধর্ম গ্রন্থ গুলোতে বিদ্যমান । এ ব্যপারে আল কোরান ঘোষনা দেয় – “তুমি আমার তত্ত্বাবধানে আমার প্রত্যাদেশ অনুযায়ী নৌকা নির্মান কর এবং যারা সীমালঙ্গন করেছে তাদের সম্পর্কে তুমি আমাকে কিছু বলোনা ”। (১১:৩৬) আলকোরআনের বক্তব্য অনুযায়ি আমরা স্পষ্ট বুঝতে পারছি আল্লাহর তত্ত্বাবধানে আল্লাহর প্রত্যাদেশ অনুযায়ী, নূহ(আঃ) নৌকা নির্মান করেছিলেন । নৌকা বানাতে কোন কাঠ ব্যবহার করেতে হবে, কিভাবে বানাতে হবে, কি সেই কাঠে লেপন করতে হবে তাও স্রাষ্টা তাকে বলে দিয়েছিলেন । এ ব্যপারে বাইবেলে আদি পুস্তকে জানা যায় -“তখন ঈশ্বর নোয়াকে বলিলেন' আমার গোচরে সকল প্রাণীর অস্তিম কাল উপস্থিত, কেননা তাহাদের দ্বারা পৃথিবী দৌরাত্বে পরিপূর্ন হয়েছে । আর দেখ আমি পৃথিবীর সহিত তাহাদিগকে বিনষ্ট করিব। তুমি গোফর কাষ্ঠ দ্বারা এক জাহাজ নির্মান কর, সেই জাহাজের মধ্যে কুঠুরী নির্মান করিবে ও তাহাদের ভিতরে ও বাহিরে ধুনা দিয়া লেপন করিবে । এ প্রকারে তাহা নির্মান করিবে । জাহাজ দীর্ঘে ৩০০হাত এবং প্রস্থে ৫০ হাত এবং উচ্চতায় ৩০ হাত হইবে । আর তাহার ছাঁদের এক হাত নিচে বাতায়ন প্রস্তুত করিয়া রাখিবে ।আর জাহাজের পার্শ্বে দাড় রাখিবে ।ও তাহা প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলা হইবে।( বাইবেল আদি পুস্তক ৫:১৩- ১৬)। বাইবেলের আদি পুস্তুক থেকে আমরা জানতে পারি জাহাজ নির্মানের যাবতীয় খুটি নাটি হিসাব নিকাশ খোদা তায়ালা নূহ (আঃ) অর্থ্যাৎ খ্রীষ্টান ভাইদের নোয়া কে শিখিয়ে দিয়েছিলেন । যার ফলশ্রুতিতে নোয়া এমন জাহাজ নির্মান করতে সক্ষম হয়েছিলেন যা বিশাল প্লাবনের হাত থেকে মানব জাতীকে রক্ষা করেছিলেন । যার মধ্যে নূহ (আঃ) বা নোয়া কে এবং তার পরিবার বর্গ কে রক্ষা করেছিলেন । বিশ্বের বিভিন্ন জাতির বিভিন্ন ধর্ম গন্থ, পুরান, পুথিতে নূহ (আঃ)এর যুগের মহা প্লাবনের কথা বলা আছে । ব্যাবীলনের সৃষ্টি সংক্রান্ত নীতি মালা মুলক “ এনুমা ইলিস” কাব্যে পাওয়া যায় । মহাপ্লাবনের বর্ণনা । সেখানে নোয়া বা নূহ (আঃ) কে আত্তাহিসিম' নামে পরিচিত করানো হয়েছে । তাতে বলা আছে দেবতা এংকি স্বর্গ থেকে নেমে এসে আত্তাহিসিম কে জাহাজ তৈরি করবার নির্দেশ দিয়েছিলেন । আত্তাহিসিম জাহাজ তৈরির ব্যপারে কিছু বুঝতে পারেন নাই, বিধায় দেবতা এংকি তাকে মাটিতে জাঁহাজের নকশা একে তা তৈরির নিয়ম কানুন শিক্ষা দিয়েছিলেন । প্রাচ্য ভাষাবিৎ মার্কিন পণ্ডিত জাকারিয়া সিচিন যিনি সর্ব প্রথম সাহস করে সুমেরীয়, আসিরিয়, ব্যাবীলনিয় ও বাইবেলের পুথি গুলোকে আধুনিক পন্থায় অনুবাদ করেছেন। তিনি লিখেছেন যে ' এংকি চেয়েছিলেন সুপরিকল্পিত ভাবে তৈরি একটি জাহাজ হাওয়া ঢুকতে পারেনা, এমন ভাবে বন্ধ করা । আর শক্ত পিচ ঢেলে সব গুলো কাটা বন্ধ করা । কোথাও কোন ডেক ছিল না, কোন খোলা জায়গাও ছিল না,যাতে সূর্যের আলো ঢুকতে পারে ।এমন করে জাহাজ তৈরি করিয়েছিলেন দেবতা এংকি । অধ্যাপক প্রয়েস ১৯১৩ হতে ১৯১৪ সালের ভিতর সান আগুস্তিনির খানিকটা খোড়া সভ্যতার মধ্যে আবিস্কার করেছিলেন কাগাবা কোগীদের ঐতিহ্য। তিনি ৫০ বছরেরও আগে কাগাবা কোগি দের প্রাচীন পূরান কাহিনী লিখে গেছেন। ওই কাহিনীতে নোয়াকে সিজানকুয়ান নামে অভিহিত করা হয়েছে। ওই পুরানের কিছু অংশ তুলে ধরলাম
“৩৮শ স্রোতঃ এক্ষণে বহু শতাব্দি অতিক্রান্ত হইল এবং পৃথিবীতে মানুষ্যগণ অস্বাভাবিক ব্যাভিচারে গামি হইল, মাতা পুত্রকে সম্ভোগ করিল, পিতা কন্যার সহিত, ভ্রাতা ভগিনির সহিত কাম চরিতার্থে প্রবৃত্ত হইল ।
৩৯শ স্রোত : দেবরাজ পুত্র জানতানা এ সকলই প্রত্যক্ষ করিলেন এবং স্বর্গের উন্মুক্ত করে দিলেন। ইহার ফলে চারি বৎসর ধরিয়া প্রবল বর্ষন হইতে লাগিল ।
৪০শ স্রোতঃ যখন পুরোহিত গণ অবগত হইলেন যে তিনি (দেবরাজ পুত্র) এরুপ প্রমাদ ঘটাবেন, তখন আদি পুরোহিত সিজানকুয়ান একটি জাদু পোত নির্মান করিলেন এবং ইহাতে প্রাণীজগতের সকল প্রাণী ও অন্যান্য দ্রব্য ইহাতে সন্নিবেশিত করিলেন। তাহার মধ্যে চতুস্পদ জন্তু পক্ষী ও বৃক্ষথলতা দি রক্ষিত হইল । সর্বোপরি জ্যেষ্টভ্রাতা মুলকুয়েইকাই এই জাদু পোতের অভ্যন্তরে প্রবেশ করিলেন ও ইহার দ্বার রুদ্ধ করিয়া দিলেন।
৪১শ স্রোতঃ তখন লোহিত ও নীল বর্ণের বারিধারা বর্ষিত হইতে লাগিল। চারি বৎসর ধরিয়া প্রবল বর্ষণের ফলস্বরুপ সমগ্র বিশ্ব জলমগ্ন হইয়া সমুদ্রে পরিনত হইল ।
৪২শ স্রোতঃ ইতো মধ্যে জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা মুলকুয়েইকাই তাহার জাদু পোতটি সিয়েরা নেগ্রার শীর্ষ দেশে নোঙ্গর করিলেন ।অত্যন্ত ঝুকি লইয়া জাদু পোতটি খুব নিকটবর্তী স্থানে,অল্প সময়ের জন্য পোত হইতে অবরোহন করিলেন, তিনি সিয়েরা নেগ্রায় নবম দিবস অতিবাহিত করিলেন ।
৪৩শ স্ত্রোতঃ পুরোহিত গণ আমাদের কিম্বদন্তীসমুহে যেরুপ কহিয়া গিয়াছেন,নবম দিবস পর,নবম শতাব্দিও অতিক্রম হইয়া গেল, সমুদ্রের জলরাশি শুষ্ক হইয়া গেল ।
৪৪শ স্রোতঃ এক্ষণে দুষ্ট লোকের বিনাশ হইল, পুরোহিত গণ বয়োজেষ্ঠগণ সকলেই স্বর্গ হইতে অবতরন করিলেন । ইতিমধ্যে মুলকেইকাই জাদুপোতের দ্বার উন্মুক্ত করিয়া দিলেন, পক্ষিও চতুষ্পদ প্রাণী সকল, বৃক্ষ-লতাদি পৃথিবী পুনরায় স্বস্থানে রক্ষিত হইল । দেবোপম পিতা কালগুসিজা এবং বিধ সকল কর্ম ই সম্পাদন করিলেন ।
৪৬শ স্রোতঃ এবং সকল দেবস্থানেই স্মৃতি চিহ্ন হিসাবে একটি করিয়া স্মারক বস্তু রাখিয়া গেলেন।”
মহাপ্লাবনের গল্প সুমেরীয়, ব্যাবীলনীয়, ইস্রায়েলীয়, কাহিনিতে আছে । তেমনি আছে কলম্বিয়া কাগাবা ইন্ডিয় আর যোসেফের আজবেক দের পূরান পুথিতে । আজবেক পুথিতে নোয়ার নাম ছিল “টাপি’। এমন কি হিন্দু তত্ত্বের মাঝে, অথ্যৎ যীশু খ্রীষ্ঠের জন্মের ২৫০০ বৎসর পূর্বের পুরানে মহা প্লাবনের উল্লেখ পাওয়া যায় । এত সকল প্রমান দ্বারা অন্তত আমাদের ভিতর এ বিশ্বাস জাগরুক হয় যে দেবতা বা ফেরেস্তাদের মাধ্যমে নুহ (আঃ) জাহাজ বানানোর প্রযুক্তি পেয়েছিলেন, এবং তিনিই ছিলেন এথম ব্যক্তি যিনি মানব জাতিকে পানির উপর দিয়ে চলা চলের ‘জাহাজ প্রযুক্তি' শিক্ষা দিয়েছিলেন । আর আজ এ বিশ্বে কত বড় বড় জাহাজ, সাবমেরিন, তৈরি হচ্ছে । এ সকল কিছুই ছিলো নুহ (আঃ) এর অবদান । ধর্ম গ্রন্থ গুলো পড়ে জানা যায় খোদা মানুষকে শুধু ধর্ম তত্ত্বই শিক্ষা দেন নাই তাছাড়াও জ্ঞান বিজ্ঞান, চিকিৎসা বিজ্ঞান, অস্ত্র বিজ্ঞান সম্পর্কেও মানুষকে ধারনা দিয়েছেন। আমি আগামী পর্বে ইমহোটেপ বা ইউছুফ (আঃ)এর দ্বারা মানবজাতির উপর চিকিৎসাশাস্ত্রের ব্যাপক উন্নয়নমূলক জ্ঞান বিজ্ঞান নিয়ে আলোচনা করবো। মমি সংক্রান্ত তথ্য বা চিকিৎসাশাস্ত্রের যে ব্যপক উন্নয়ন মিশরে ত’ৎকালীন সময়ে হয়েছিলো তা ঐতিহাসিক পেক্ষাপটেই আমি আপনাদের সামনে তুলে ধরবো।
প্রিয় পাঠক,দেবতাদের নিদের্শে মানুষেরা জ্ঞান বিজ্ঞান অর্জন করেছিলো এবং তা দীর্ঘদিন ধরে স্মৃতিমান করে বংশ পরম্পরায় জ্ঞান বিজ্ঞানের উন্নয়নই ঘটিয়েছিলো। ইহুদী প্রাচীন ধর্মগ্রন্থসমূহে অদ্ভুদ কিছু বৈজ্ঞানিক বর্ননা পাওয়া যায়। যেমন একটি বিষয় উল্লেখ করি জোশুয়াতে উল্লেখ আছে দেবতারা ইহুদীদের তথ্য দেয় ভেড়ী বাজাইতে।ভেড়ী বাজােইলে প্রাচির ফেলে দিতে পারবে। প্রথমে তাদের মধ্যে সন্দেহ উদ্দ্যেক হইলেও পরে তাহারা সেই প্রচেষ্টা করে বাস্তবায়িত ঘটে। ইহুদী গ্রন্থ জোশুয়া (৬ থেকে ২০) স্রোতে উল্লোখ আছে-“পরে লোকেরা সিংহ নাদ করিল ও যাজকেরা তুড়ি বাজাইল, আর লোকেরা তুড়ি ধ্বনি শুণিয়া সিংহ নাদ করিয়া উঠিল, প্রাচীর স্বস্থানে পড়িয়া গেল, পরে লোকেরা প্রত্যেক জন সম্মুখ পথে নগরে উঠিয়া নগর হস্ত গত করিল”। দেব অনুগ্রিহিত মানুষের দল যখন জর্ডানের নদী পার হয়ে জেরিকো নগরের ১০০ ফুট পুরু দেয়ালে ঘা দিতে শুরু করলো তখন পুরোহিত কুলকে নির্দেশ দেয়া হলো তাদের ভেড়ি বাজাতে আর তখনই প্রাচির স্বস্থানে ধ্বশে পড়ে গেল ।এখন প্রশ্ন হলো ভেড়ী বাজানোর সাথে সাথে ১০০ ফুট পুরু দেয়াল কেমন করে পড়ে গেল?
এই ভেড়ী বাজানোর সাথে দেয়াল পড়ে যাওয়ার একটা সম্পর্ক খুজে পাওয়া যায় । “১৯৬৪ সালের বসন্ত কারে মার্সেলেস্ এর ইলেকট্রো এ্যাকাউস্টিক্স সংক্রান্ত গবেষণা সংস্থাটি নতুন বাড়িতে উঠে গেল । যাবার দরুন কতক পর থেকেই অধ্যাপক ব্লাদিমির গাবরোর সহকর্মীদের মাথা ধরতে শুরু করলো,কারুর গা হাত পা চুলকোতে লাগল,কারুর বা দেখা দিল বিবমিষা। ইলেকট্রো এ্যাকাউস্টিকসের গবেষণা যেখানে চলে, সেখান কার অসংযত কোন বিকিরন এ ধরনের ঝঞ্ঝাট বাধাতেই পারে । বাড়িটার আগা পাগুলা অতি সুক্ষ্ণ সব পরিমাপ যন্ত্র দিয়ে সন্ধান চালানো শুরু হলো, যদি মেলে কর্মী দের দৈহিক অস্বস্তীর কারন । সন্ধান মিললো,তবে অসংযত কোন বৈদ্যুতিক কম্পাঙ্কের বিকিরণ তার কারন নয় ।তার কারন, একটা গবাক্ষপথে ধীর-কম্পন শব্দ- তরঙ্গের বহিঃসরণ। আর তারই ফলে সারা বাড়িটাকে ছেয়ে ফেলেছিল একটা ধীর গতি ধ্বনি ত্রঙ্গ স্পন্দন । হঠাৎ যোগাযোগে অনেক কিছু ঘটেছে, অনেক গবেষকের জীবনে।ফলে গবেষণার কাজ এগিয়ে গেছে হু হু করে । অমনিতরই একটা হঠাৎ শুভ যোগই ধ্বনিতরঙ্গের গবেষণায় অধ্যাপক গাবরোর বিশবছরের পরিশ্রমে এনে দিল চরমসার্থকতা । এ ব্যাপারের পর গাবরো ভাবলেন, যে ঘটনা আকস্মিকভাবে গবাক্ষ পথে ঘটে গেল, তাকে তো চেষ্টা করে গবেষণার মারফতে ও বের করা যেতে পারে । তার পর ইলেকট্রো এ্যাকাউস্টিকসের গবেষণাগারে গাবরো এবং তাঁর সহ কর্মীরা মিলে তৈরি করলেন পৃথিবীর সর্ব প্রথম ধ্বণিপ্রাস । দাবার ছকের ধাঁচে তৈরি একটা গ্রিলে একষট্টিটা নল জুড়ে,তাদের ভেতর দিয়ে সংনমিত বায়ু ছাড়তে লাগলেন অনবরত যতক্ষন না ১৯৬ হার্টসের একটা ধ্বনি ওঠে । ফল যা পাওয়া গেল তা বিকট রকম বিধ্বংশি । নতুন বাড়ির দেয়ালে ফাটল দেখা দিল,গবেষণাগারের কর্মী দের পেটের ভেতর অসহ্য একটা যন্ত্রনা দায়ক কম্পন অনুভূত হতে লাগলো। যন্ত্রটি কে গাবো বন্ধ করতে পথ পায়না। অধ্যাপক গাববোর ইচ্ছে, সে গবেষণা আরো চালান । কিন্তু তার আগে কর্মী দের জন্য তৈরি করলেন একটা রক্ষে কবচ । তার পর তৈরি করলেন সত্যিকার একটা ‘মরনভেরী' যা থেকে উৎপন্ন হল ২০০০ ওয়াট শক্তি আর তা থেকে বেরুতে লাগল ৩৭ হার্টসের একটি ধ্বনিতরঙ্গ । সে যন্ত্র মার্সেলেসের মত জায়গায় পূরো পুরি পরীক্ষা করা সম্ভব নয় কেননা, তাতে কেলেঙ্কারীর এক শেষ হবার সম্ভবনা । কয়েক মাইল জুড়ে সমস্ত বাড়ি গুড়িয়ে ধুলো হয়ে যাবে। সম্প্রতি আরো একটা মারন ভেরী ' তৈরি হচ্ছে পঁচাত্তর ফুট লম্বা । সে ভেরি থেকে ৩.৫ হার্টস সের যে ধ্বনি বের হবে তা আসলে মারণতরঙ্গ। তাহলে আমরা জোশুয়ার ইতিহাস থেকে জানতে পারলাম যে ভেরি বাজাতে দেবতারা নির্দেশ দিতেন সে ভেরি প্রযুক্তির পিছনে বর্তমানে বৈজ্ঞানিক ভাবে পাওয়া যায় যার লৌকিক ব্যাখা।এই সকল লৌকিক ব্যাক্ষা দেবতারা তাদের দিতেন কি করে? দেবতাদের জ্ঞানে গুনেই যুগে যুগে ধামীর্কেরা উন্নয়নের চরম সোপানে উঠেছে এবং সেই সকল জ্ঞান বিজ্ঞান স্মৃতিশক্তিতে সংরক্ষন করে বংশ পরম্পরাই মানুষরা নিজেদের উন্নয়ন ঘটিয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জানুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৫