somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফেরেস্তারা (দেবতারা) আকাশ থেকে এসে মানুষকে শিক্ষা দিয়েছেন। দীর্ঘমেয়াদী শিক্ষা আল্লারই পরিকল্পনা। ফেরেস্তা দেবতা (কথিত ভী্নগ্রহ বাসী) সব একই । (পর্ব-৪)

২১ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১১:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আশ্চর্য এক বিভ্রান্তিময় সময়ের যাত্রায় আমরা অগ্রসরমান। পাপ বোধ আর নোংরা জীবন ব্যবস্থায় এক অন্ধকার আচ্ছন্ন গভীরতায় কতো সুমহান বোধ আজ ভুলুণ্ঠিত, ক্লান্ত, বিধ্বস্ত। মানবতা হীন অযাচিত লোভ, লালসা, কাম, ক্রোধ এর ক্রমানুক্রমিক স্পর্শে আমরা আজ কতো অনিশ্চয়তা নিয়ে জীবণ যাপন করে যাচ্ছি। অথচ কোথায় সেই মৌলিকতা? সেই সুস্থ জীবন ব্যবস্থার অসীম উজ্জাবন তা কি সম্ভব নয়? সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন এখন তা সুনির্ধারিত করে তোলা। যখন দেখা যায় পৃথিবীর সংখ্যা গুরু মানুষ আজ নিপীড়িত, শোষিত, বঞ্চিত হয়ে ধুকে ধুকে মরছে এবং অবর্ননীয় রিক্ততা নিয়ে পৃথিবী তার জীর্ন দীর্ন কঙ্কালের আবরনে ঘুণায়মান। আর এর কেন্দ্র বিন্দু হতে পেরেছে' যান্ত্রিক সূত্রে আবদ্ধ অমানবিকতার রুপায়ন। আমরা বিচ্যুত হয়েছি মৌলিকতা থেকে, একনিষ্ঠতা, সততা সুন্দরের অসিম অনাবিল গ্রহন যোগ্যতা থেকে। বিচ্যুত করেছি পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতির অপরিসীম সম্ভবনাকে। আত্বকেন্দ্রিকতা, ভোগলিপ্সতা, যান্ত্রিক অনুভুতির প্রাবল্যে আমরা পেয়েছি বস্তুতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার অংশগ্রহনে জটিল এক মোহমায়ায় অবিশ্বাষ্য ঘৃণিত এক প্রাপ্তি!? গভীর উপলব্দির প্রয়োজন নেই বরং ছোট্ট এতোটুকু সত্য সন্ধানি অসীমতাদর্শি উপলদ্ধির পুনর্জাগরনই নিয়ে যেতে পারে আমাদের সর্বোচ্চ সুন্দরের আলোক সজ্জিত প্রান্তরে । ধর্মকে আমরা কেবল মাত্রই প্রার্থনা বা নিত্য নতুন নিয়ম নীতির মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখেছি হয়েছি যেখানে বিজ্ঞানের হাজারও অনুমান ভ্রান্ততাকে একশ ভাগ সত্য বলে বিশ্বাস করে নিয়েছি। মনুষ্যত্ববোধকে জাগাতে আামাদের প্রাচীন ধর্মবোধ নিয়ে গবেষনা করার খুব বেশি প্রয়োজন। তাহলে আমরাই বুঝতে পারবো স্রষ্টা আমাদের জন্য কত অবদান রেখেছেন। ঐতিহাসিক পেক্ষাপট আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিবে মানবজাতির উন্নয়নে যুগে যুগে স্রষ্টা ফেরেস্তা পাঠিয়ে অবতার বা নবী রাসুলের মাধ্যমে মানবজাতির ব্যাপক উন্নয়ন করেছে। আর তাদের এই উন্নয়নই আজ মানুষের উন্নয়ন।



আমি আজকের এই পর্বে মানুষের জ্ঞান বিজ্ঞানের অবদানে স্রস্টার হস্তক্ষেপ বিষয়টি তুলে ধরবো। কারন আমি মনে করি মানুষকে জ্ঞান বিজ্ঞানের প্রাথমিক অংশটাই স্রাষ্টর পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে। স্রষ্টাই মানুষকে শিক্ষা দিয়ে দিয়ে আজ এই অবস্থানে এনেছেন।মানুষকে কথা বলতে শিখিয়েছে। “দয়াময় আল্লাহ, তিনিই শিক্ষা দিয়েছেন কুরআন। তিনিই সৃষ্টি করেছেন মানুষ, তিনিই তাকে ভাব প্রকাশ করতে শিখিয়েছেন।” -সূরা রহমান : ১-৪ " যার অর্থ দাড়ায় স্রস্টাই মানুষকে ভাব প্রকাশ করতে বা কথা বলতে শিখিয়েছেন। আর বাইবেলে বলা হয়েছে “ভাষা ঈশ্বরের পক্ষ থেকে একটি স্বর্গীয় উপহার।” স্রষ্টার পক্ষ থেকে ফেরেস্তারা পৃথিবীতে এসে মানবজাতিকে লিখনপদ্ধতি শিখিয়েছে।এ মর্মে আল কোরানে উল্লেখ ‘‘পড় তোমার প্রভুর নামে যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন। যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন আলাক থেকে। পড়,আর তোমার প্রতিপালক মহামহিমান্বিত, যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন। শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে যা সে জানত না।’’ সুরা আলাক ১-৫। আল কোরআন প্রকাশ্যে ঘোষনা করে যে মানুষকে আল্লা লিখতে শিখিযেছে। যা মানুষ জানে না।লিখন পদ্ধতি আল্লার দান। লক্ষ্য করুন ধর্মগ্রন্ত প্রকাশ্যে কথা বল,ও লিখন পদ্ধতি শেখার ঘোষনা দেয়। আমরা ধর্মিয় দৃষ্টিকোনে গল্প মারফত ঠিকই শুনেছি আদমের সন্তান হাবিল ও কাবিলের গল্প । কাবিল হাবিলকে পাথর দিয়ে মেরে হত্যা করে। তখন কাবিল দেখতে পেল, একটি কাক ঠোঁট দিয়ে মাটি খুঁড়ে অন্য একটি কাককে দাফন করছে। একজনের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ফেরেস্তা কাকের রুপ ধরে এসে কবর দেওয়ার পদ্ধতি মানবজাতিকে শেখায়।এটা দেখে কাবিলও তার ভাই হাবিলের লাশ মাটির নিচে দাফন করল।এটিও তো মানবজাতির সূচনাতে ছিলো গুরুত্বপূর্ন শিক্ষা। নগর গঠন সভ্যাতা বিকাশ ফেরেস্তারাই মানুষকে শিখিয়েছে।ইদ্রীস আঃ বা এনখকে সুমেরিয় সভ্যাতা থেকে হিজরত করতে নিয়ে গিয়েছিল স্রষ্টা মিশরের নীল নদের তীরবর্তী এলাকায় বসবাস করতে। শুরু হইলো মিশরীয় সভ্যতার বিকাশ। এভাবে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থানে লক্ষ লক্ষ নবী রাসুল পৃথিবীতে এসেছিলো। অনেকেই হিজরত করেছে নিজেদের বসবাসের জন্য নতুন ভূখন্ড খোজে বেরিয়েছে! গড়ে তুলেছে নতুন নতুন সভ্যতা! পাহাড় কেটে ভবন দৃশ্যপট তৈরী থেকে মাটির ভবন নির্মান ও নগরায়ন মানুষের চিন্তা হলেও এর মাঝে আছে দেবতাদের দান। যেগুলো প্রাচীন পুথি পড়লেই যার ঐতিহাসিক প্রমান পাওয়া যায়।লক্ষ্য করুন ব্যাবিলন সভ্যতা বা ব্যাবিলনকে বলা দেবতার নগরী।এই নাম তারা পেলো কোথায়? কথিত আছে সুর্য দেবতা শামস এই নগর গড়তে নিদের্শ দিয়েছিলেন আর সেই কারনেই নগরীটির নাম "দেবতার নগরী"।

আজ আমি দেবতার নগরীর মহান বাদশা হাম্মুরাবির প্রসঙ্গে কিছু কথা বলতে চাই। হাম্মুরাবি বিশ্বে প্রথম আইন শাস্ত্র প্রবর্তন করেন এবং একটি বিচার ব্যবস্তার প্রবর্তন করেন। কোড অব হাম্মুরাবি প্রনয়ণের মাধ্যমে রাজ্যে কার কি ভূমিকা, কোন অপরাধের জন্য কেমন শাস্তি হতে পারে, ব্যবসায়িক দিকনির্দেশনা,জরিমানা ইত্যাদি বিধি নিষেধ জারি করা।কোড অব হাম্মুরাবি ধর্মের ভিত্তিতে ব্যাবিলনে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার করার জন্য স্মরণীয় হয়ে রয়েছে। ২৮২টি আইন নিয়ে গঠিত কোড অব হাম্মুরাবি রচিত হয়েছিল একটি সুবিশাল আঙ্গুল আকৃতির পাথরের উপর।যা প্রাচীন এই পাথর ইরানে প্রত্নতাত্তিকেরা খুজে পাই। এই পাথরের ওজন প্রায় ৪ টন। ডায়োরাইট নামক এই পাথরটি টেকসই কিন্তু এতে খোদাই করা ছিল বেশ কঠিন। এই পাথরের উপরের দিকে প্রায় আড়াই ফুট লম্বা একটি পৃথক অংশে রয়েছে রাজা হাম্মুরাবি এবং ব্যাবিলনীয় সাম্যের দেবতা শামাশ এর প্রতিকৃতি। এতে দেখা যায় হাম্মুরাবি দেবতা শামাশের কাছ থেকে আইনের নির্দেশনা গ্রহন করছেন। এখানে আইন বোঝাতে ন্যায়ের মানদন্ডের প্রতিকৃতি ব্যবহার করা হয়েছে। পাথরের বাকি সাত ফুটে কিউনিফর্ম লিপিতে আইনগুলো খোদাই করা আছে। আনুমানিক ১৭৮৬ খ্রী: পূ: তিনি আইনের ধারা প্রনয়ন মতান্তরে সংকলন করেছিলেন,এগুলো বেশির ভাগই ছিল পারিবারিক, দোষীদের শাস্তি, সামরিক আইন, নৈতিকতা, ব্যবসা বানিজ্য, দ্রব্যমূল্য ইত্যাদি সম্পর্কিত। হাম্বুরাবির প্রণীত এই আইনের ধারা গুলোকে বলা হয় " দ্যা কোড অফ হাম্বুরারি"। এবং এই ধারা গুলোকে রাস্ট্র পরিচালনার কাজে ব্যবহৃত আবশ্যিক আইনের সর্ব প্রাচীন নিদর্শন হিসাবে গন্য করা হয়! ১৯০১ সালে এলামিদের প্রাচীন রাজধানী সুসা থেকে আবিস্কৃত হয়েছে অমূল্য এই সংকলন। মোট ১২টি পাথরের টুকরোয় খোদাই করে লেখা ২৮২টি আইনের এই সংকলন পৃথিবীর অন্যতম প্রাচীন লিখিত আইন সংকলন হিসেবে পরিচিত। ব্যাবিলনের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত আক্কাদীয়ান ভাষায় লেখা হয়েছিল এই আইনগুলো, তাই অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন যে কেউ এগুলো পড়তে ও বুঝতে পারতেন। বর্তমানে প্যারিসের লুভ্র্ জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে এই অমূল্য প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলো।হাম্মুরাবি কোড বিস্ময়করভাবে তালাকপ্রথা, ব্যক্তি মালিকানা সংক্রান্ত আইন, অবৈধ সম্পর্ক নিষিদ্ধকরণ আইনসহ বিবিধ বিষয় সম্পর্কিত বিভিন্ন আইন প্রণয়ন করে। কারণ অন্যান্য সভ্যতার নীতিমালায় এসব বিষয় সম্পর্কিত আইনের প্রচলন হয় হাম্মুরাবি কোডেরও কয়েক শতাব্দী পরে। তবে হাম্মুরাবি কোডের সবচেয়ে বড় অবদান ছিল দাসদের জন্য ন্যূনতম পারিশ্রমিকের বিধান চালু করা। ক্ষেতে কাজ করা শ্রমিকদের জন্য বার্ষিক ৮ গুর (প্রাচীন ব্যাবিলনীয় একক) পরিমাণ শস্য বরাদ্দ ছিল। আর চিকিৎসকদের জন্য রোগীর হিসেবে জনপ্রতি ৫ শেকেল মুদ্রা বরাদ্দ করা হয়। তৎকালীন সমাজ ব্যবস্থায় এ ধরনের আইন বাস্তবায়ন করা অত্যন্ত দুরূহ ছিল। এখানেই সর্ব প্রথম বিবাদীর নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের সুযোগ আর বাদি এবং বিবাদীর উভয়েরই আদালতে সাক্ষ্য প্রমান দেবার আধিকার নিশ্চিত করা হয়েছিল।



পিয় প্রাঠক হাম্মুরিাবির এই পাথর বলে হাম্মুরাবিকে সুর্য দেবতা আইন শ্বাস্ত্র উপহার দেয় রাস্ট্র চালাতে।দেবতার নগরী খ্যাত ব্যাবিলনে হাম্মুরাবি প্রথম মানব যার নিয়ম নির্দেশন সমস্তটাই যেনো বর্তমান ইহুদী নিয়মের সাথে মিলে যায়।এমনকি বাইবেলের অনেক ধারার সাথে হাম্বুরাবির আইনের সাদৃশ্য খুজে পাওয়া যায়।এ কারণে অনেকেই মনে করে, হয় তারা হাম্বুরাবি আইন দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন অথবা তিনটা আইন একই বেইজের উপর ভিত্তি করে রচিত। ইহুদীদের চোখের বদলে চোখ দাঁতের বদলে দাঁত। তিনি সুর্য দেবতা প্রেরিত অবতার বলে তৎকালীন সকলেই মানতো। তিনি নিজে দাবী করেন যে এই আইন তিনি সূর্য় দেব শামাশের কাছ থেকে পেয়েছিলেন। আধুনিক আইনের তুলনায় হাম্বুরাবির প্রবর্তিত আইন বেমানান মনে হলেও তৎকালিন সমাজ ব্যবস্থার বিবেচনায় এবং মানব সমাজে প্রথম লিখিত আইন হিসাবে এর গুরুত্ব অনেক। কথিত আছে হাম্মুরাবির পূর্বে প্রাচীন সুমেরিয় সময়ে অথাৎ ইদ্রীস আঃ সময়ে এরুপ আইন শাস্ত্র এসেছিলো। তারপর হাম্মুরাবির মাধ্যমে আইন শাস্ত্র এর ব্যাপক উন্নয়ন ঘটে।পরবর্তীতে এই আইন এসেছে ইহুদী তত্বে। তৌরাতে বর্ণিত মূসা (আঃ) এর প্রবর্তিত আইনের সাথে এর অনেক মিল রয়েছে।তাছাড়া এমনকি বাইবেলের অনেক ধারার সাথে হাম্বুরাবির আইনের সাদৃশ্য খুজে পাওয়া যায় ।এ কারণে অনেকেই মনে করে, হয় তারা হাম্বুরাবি আইন দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন অথবা তিনটা আইন একই বেইজের উপর ভিত্তি করে রচিত। তাহলে প্রিয় পাঠক আপনারাই বলেন হাম্মুরাবির লিখিত আইন আর ইহুদীদের তৌরাতের লিখিত আইন একই রকম হয় কি করে? আর হাম্মুরাবি বা কেনো ঘোষনা দেন যে এই আইন তাকে সুর্যদেব দিয়েছে। সুর্যদেব এই আইন দিয়ে তাকে দেশ শাসন করতে বলেছে। বিশ্বের ঐতিহাসিক পেক্ষাপটে এই বিষয় প্রমান করে হাম্মুরাবি আইনশাস্ত্র ধর্ম কেন্দ্রীক সভ্যতা্রই সৃষ্টি।

এবার আসেন ইউছুফ আঃ মিশরের তৎকালীন উজির ইমহোটেপ কে নিয়ে আলোচনায়। ইমহোটেপ বিশ্বে প্রথম চিকিৎসা বিজ্ঞানের ব্যাপক অগ্রগতি করেন বলে জানা যায়। তিনি ফারাও জোসের আমলে উজিল ছিলেন। তিনিই বিশ্বে মমি বিষয়টি আবির্ভাব করেন।তার সময় বিশ্বে পূণজন্মের বিষয়টি ধারনা করা হয়।ইমহোটেপ বড় মাপের চিকিৎসক ছিলেন এবং শল্য চিকিৎসার মাধ্যম চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রবর্তন করেন। ইমহোটেপ মানব ইতিহাসের প্রথম বিজ্ঞানী, স্থপতি ও চিকিৎসক হিসেবে পরিচিত । শতাব্দী থেকে শতাব্দী পার হয়ে যায় তাকে নিয়ে তৈরি হতে থাকে কল্পকথা। তিনি পরিচিতি লাভ করেন একজন মহান চিকিৎসকরূপে, যার আরোগ্য লাভ করার ছিল বিশেষ ক্ষমতা। প্রাচীন মিসরীয় চিকিৎসাবিদ্যা সম্পর্কে অনেক কিছু জানা যায় প্যাপিরাস কাগজের উপর ইমহোটেপের বর্ণনা থেকে। হোগলাজাতীয় গুল্ম বা ঘাস জাতীয় প্যাপিরাস থেকে তৈরি প্যাপিরাসরীড বা কাগজ। রীডের অন্তঃসার নিষ্কাশন করে নিয়ে একজাতীয় গাছের কস বা আঠা দিয়ে জোড়া দিয়ে শুকিয়ে নেওয়া হত। যার ফলে একটি মসৃন, দৃঢ় এবং স্থায়ী অবতল পাওয়া যেত। এর মধ্যেই লেখা হত প্রাচীন হায়ারোগ্লাফিক।প্যাপিরাসরীড নীল নদের উপত্যকায় প্রচুর পরিমাণে জন্মায়। প্রাচীন মিসরে লেখার উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হত প্যাপিরাসরীড।বিশ্বের প্রথম কাগজ আবিস্কারটি নবী ইউসুফ (আঃ) করেছিলেন।ঐন্দ্রজালিক বা জাদুকরী চিকিৎসার চেয়ে সাধারণ জখম, ক্ষত, পচন আর অস্ত্রোপচার সব সম্পর্কেই তথ্য দেয়া ছিল ইমহোটেপের লেখা প্যাপিরাসে। প্যাপিরাসে লিখে যাওয়া শত শত মিসরীয় ওষুধ যুগ যুগ ধরে ব্যবহার করে যায় স্থানীয়রা। প্যাপিরাসে বর্ণিত ৪৮টি চিকিৎসা ধরনের মধ্যে ৩০ টি এখনো চিকিৎসার ক্ষেত্রে উপযুক্ত। তবে তার সব কাজের কৃতিত্ব ছাপিয়ে উঠে ইতিহাসের মানব নির্মিত বিশাল প্রস্তরখণ্ডের সমাধিক্ষেত্র "পিরামিড" নির্মানের মাধ্যমে। মেম্ফিসের নিকটে সাক্কারায় অবস্থিত এই পিরামিড। সাক্কারা হচ্ছে প্রাচীন মিসরের বিখ্যাত রাজধানী মেম্ফিসের একটা সমাধিপুরী। পৃথিবীতে ইমহোটেপ প্রথম কলামের সাহায্যে দালান মজবুত করার প্রথা প্রবর্তন করেন, এর আগে কখনো বিশ্বে কলাম ব্যবহার হত না। প্রথম পিরামিডের ডিজাইনও তিনিই করেন, মিসরের সাক্কারাতে। "ফারাও জোসের এর পিরামিড" নামে পরিচিত সেটা। জোসের ভাগ্যবান ছিলেন ইমহোটেপের মত একজন জ্ঞানী ব্যক্তিকে উজির পেয়ে। মিশরীয় প্রজারা তাকে চিকিৎসা শাস্ত্রের দেবতা বলে গন্য করতেন। মনে করা হয় তিনি ক্ষরা জনিত দুর্বিক্ষের হাত থেকে মিশরবাসিদের রক্ষা করেছিলেন। দেবতারা তাকে সমস্ত বিষয় জানাতেন এবং তিনি দেবতাদের শক্তিতে বলীয়ান ছিলেন।



প্রাচীন রাজ বংশের যুগেই মিশরে পিরামিড তৈরি শুরু হয়েছিল । শুরু থেকেই ফারাওদের মৃত দেহের উপর পিরামিড তৈরি হয়নি। প্রয়োজনের তাগিদেই সভ্যতার ইতিহাসে বিভিন্ন উদ্ভাবন সংঘটিত হয়েছে। তাই আবশ্যকীয় প্রয়োজন অনুভূত হওয়ার পর থেকেই ফারাওরা পিরামিড তৈরিতে হাত দেন । প্রাচীন রাজত্ব ‘পিরামিড তৈরির যুগ ' বলে পরিচিত । এই সময় নির্মাতাদের পাথর কাটবার মতো কোন লোহার হাতিয়ার, স্থানান্তরে নিবার জন্য কোন রকম চাকা বা বিশাল আকারের পাথর খণ্ড গুলিকে খুব উঁচুতে তোলবার জন্য কোন কপিকল ছিল না । তামার বাটালী ও করাতের সাহায্যে তারা চনাপাথরের মত নরম শিলা কাটতো। অধিকতর শক্ত ডায়োরাইট গোলকের (বল) উপর সজোরে আঘাত করে তারা শক্ত গ্রানাইট শিলা ভেঙ্গে কাজে লাগাতো । কোন রকম ভারবাহী পশু না থাকায় তারা মানুষের পেশী শক্তি ব্যবহার করে বড় আকারের পাথরের চাঁই গুলোকে স্লেজ, লম্বা অথচ সুগোল কাঠের টুকরো ও দড়ির সাহায্যে টেনে অন্য জায়গায় নিয়ে যাবার ব্যবস্থা করতো। তৃতীয় রাজা জোসের জন্য ইহা নির্মানের সময় প্রথম পাথর ব্যবহার করা হয় । তার মন্ত্রী ইম হোটেপ মিশর স্থাপত্যের প্রতিষ্ঠাতা । ব- দ্বীপ অন্‌চল থেকে দক্ষিন দিকে নীল নদের পার্শ্ব বরাবর ৫০ মাইল পর্যন্ত জায়গায় প্রাচীন রাজত্বের পিরামিড গুলি অবস্থান করছে। গিজার খুফুর বিশাল পিরামিড টি ১০ একর জমি আবৃত করে রেখেছে । সেটি তৈরি করতে প্রায় আড়াই লক্ষ পাথরের চাঁই লেগেছিল । তার কোন কোন চাঁই এর ওজন প্রায় হাজার মন । তবে অধিকাংশ পাথরের গড় পড়তা ওজন সত্তর মনের মতো। ভূমি পিরামিডটির এক একটি বাহুর দৈর্ঘ্য ৭৫৫ ফুট আর চূড়ার উচ্চতা ৪৮১ ফুট । নীল নদের পূর্ব তীরের চূড়া থেকে পাথর সংগ্রহ করে স্রোতে ভাসিয়ে সেগুলোকে গিজায় আনা হয়েছিল । তারপর সেগুলো ১০০ ফুট উঁচু জায়গায় টেনে তোলা হয়। মোট প্রয়োজনীয় পাথর সংগ্রহ করতে একশত লোকের ১০ বছর সময় লেগেছিলো । আর পিরামিড তৈরির কাজ শেষ করতে লেগেছিল আরো দশ বছর ’।

তৃতীয় রাজ বংশের প্রতিষ্ঠাতা যোসার এর উজির ইমহোটেপ ছিলেন প্রাচীন চিকিৎসক । তিনি একা ধারে ছিলেন জ্যোর্তির বিদ চিকিৎসক ও স্থপতি। চিকিৎসা বিদ্যায় তার দক্ষতা এতই বৃদ্ধিপায় যে, পরবর্তি কালে ইমহোটেপ কে দেবতা জ্ঞান করে পূজা করা হতো । মৃত্যুর পর দেহ অবিকৃত রাখার প্রশ্নটি ধর্মীয় ধারনা থেকে জন্ম লাভ করে । মিশরের শুষ্ক মরুময় অঞ্চলে শুকনো বালির মধ্যে রাখা মৃত দেহে পচন ধরতো না । এই ধারনা থেকে মিশরীয় চিকিৎসক মমি তৈরীর পদ্ধতি বের করতে সক্ষম হলেন । মমী তৈরির মধ্যে দিয়ে মিশরীয়রা শল্য চিকিৎসার দিক থেকে তাদের বিস্ময়কর প্রতিভার পরিচয় রাখতে পেরেছিল। মমী তৈরির পদ্ধতি ছিল নিখুত ।পচনের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য মাথা থেকে মগজ এবং পেট থেকে সাবধানে নাড়ি ভুড়ি বের করে ফেলা হতো মৃতের পেটে কাঠের গুড়া বা পাতলা কাপড় ভরে দেয়া হত ।গাছ গাছড়া দিয়ে তৈরি ওষধে প্রথম মৃত দেহ ভিজিয়ে রাখা হত । পরে সমস্ত শরীরে মাখা হতো মলম । অত:পর পাতলা নরম কাপড় দিয়ে পুরো শরীর ব্যান্ডেজ করা হতো। এক প্রকার তরল ঔষধে দেহ ভিজিয়ে রাখার পর ধীরে ধীরে পুরা দেহ জমাট বেধে যেত কাপুড়ের সাথে । এভাবেই তৈরি হত মমী । ইমহোটেপ ɪmˈhoʊtɛp নামের অর্থ হল, ”যে শান্তি নিয়ে এসেছে বা শান্তিতে এসেছেন।” তিনি একইসাথে ছিলেন একজন বিজ্ঞানী, স্থপতি, প্রকৌশলী, চিকিৎসক, জ্যোতির্বিদ, কবি ও দার্শনিক। ইমহোটেপ মানব ইতিহাসের প্রথম বিজ্ঞানী, স্থপতি ও চিকিৎসক হিসেবে পরিচিত । শতাব্দী থেকে শতাব্দী পার হয়ে যায় তাকে নিয়ে তৈরি হতে থাকে কল্পকথা। তিনি পরিচিতি লাভ করেন একজন মহান চিকিৎসকরূপে, যার আরোগ্য লাভ করার ছিল বিশেষ ক্ষমতা। প্রাচীন মিসরীয় চিকিৎসাবিদ্যা সম্পর্কে অনেক কিছু জানা যায় প্যাপিরাস কাগজের উপর ইমহোটেপের বর্ণনা থেকে। মমী সংক্রান্ত একটি স্রোত আমরা বাইবেলে লক্ষ্য করি – “যাকোব আপন পুত্রদের প্রতি আদেশ সমাপ্ত করিলে পর শয্যাতে দুই চরন একত্রে করিলেন ও প্রাণ ত্যাগ করিয়া আপন লোকদের নিকটে সংগৃহিত হইলেন। তখন যোসেফ আপন পিতার মুখে মুখ দিয়া রোদন করিলেন ।আর যোসেফ আপন পিতার দেহে ক্ষয় নিবারক দ্রব্য দিতে আপন দাশ চিকিৎসক গন কে আজ্ঞা করিলেন ।তাহাতে চিকিৎসকেরা ইস্রায়েলের দেহে ক্ষয় নিবারক দ্রব্য দিলো । তাহারা সেই কার্যে চল্লিশ দিন যাপন করিল কেননা সেই ক্ষয় নিবারক দ্রব্য দিতে চল্লিশ দিবস লাগে ”। ( বাইবেল' আদিপুস্তক - ৪৯: ৩৩,৫০ :১-৩)আমরা জানি ইউসুফ (আঃ) ফেরাউনের উজির ছিলেন । এবং ফেরাউন তার প্রতিভা তার জ্ঞান গুনেমুগ্ধ হয়ে রাষ্ট্রের সকল ক্ষমতা তার হাতে অর্পন করেছিলেন ।এবং আমরা আরো জানি আল্লাহ রব্বিল আলামিন ইউসূফ (আঃ) কে ব্যপক জ্ঞান প্রদান করেছিলেন । মুলত রাজা যোসের আমলের উজির ইমহোটেপ 'তিনিই ছিলেন ইউসূফ(আঃ)”।তার পিরামিড আজো রহস্যাবৃত। আজো রহস্যময় বলেই সমাদৃত।



মার্কিন সাহায্য নিয়ে কায়রো বিশ্ববিদ্যালয় একটি বিকিরন সন্ধানি অতি সুক্ষ যন্ত্র তৈরি করে। তাকে একটি কম্পিউটারের সঙ্গে যুক্ত করে বসিয়ে দিয়েছিলেন শেফরেন পিরামিডের অভ্যন্তরে। সন্ধানি যন্ত্রের কাজ ছিল মহাজাগতীক কনার হিসাব রাখা আর কম্পিউটারের কাজ ছিল সেই হিসাব কে নথি ভুক্ত করা । যে কনা গুলো কে পাথরের গাথুনি ভেদ করতে হয়, তাদের চেয়ে দ্রুততর বেগে ছোটে, ফাকা জায়গায় যে কনা গুলো দোড়াচ্ছে । কম্পিউটারে যে তথ্য প্রকাশ করল তা ভুল । ১৯৭২ সালে আবার পরীক্ষা চালানো হয়, কিন্তু সে পরীক্ষা ব্যর্থ হলো । যার উপর সে পরীক্ষার দায়িত্ব ছিল, সেই ডঃ অমর গোহেদ টাইম্‌স পত্রিকার প্রতিনিধি কে বললেন বিজ্ঞানের সাহায্যে এ কাজ অসম্ভব, পিরামিডের ভিতরে যা ঘটে, তা আমাদের জানা পদার্থ বিদ্যা এবং ইলেকট্রনিক বিদ্যার সমস্ত নিয়ম বর্হিভুত । মার্শাল ম্যাকলুয়ানের পুত্র ইলেকট্রনিক শাস্ত্রে পণ্ডিত এরিক ম্যাকলুয়ান টরেন্টোয় বলেছিলেন —— নানা অজ্ঞাত শক্তি, সম্ভবত মহাকর্ষীয় শক্তি সমুহ পিরামিড গুলোর অভ্যন্তরে আজও কাজ করে চলেছে '। কানাডার আন্টারিয়া প্রদেশের লন্ডনে তার বাড়ি । সেখানে তিনি প্লেকসিগ্লাসের একটি ১৮ ইঞ্চি উচু পিরামিড তৈরি করেছিলেন। সে প্রাচীর পিরামিড এর আদর্শ পিরামিডের একটা ‘সমানুপাতিক মডেল’। তার ভেতর একটা ছোট্ট আধারে এক টুকরো কাচা মাংস আর দাড়ি কামাবার একখানা ব্লেড রেখেছিলেন। কুড়ি দিন পরেও দেখা গেল মাংসটা যেমন তেমনি আছে, পচেওনি, গন্ধ ও বেরোয়নি । আর ব্লেড খানা যখন রাখা হয় তখন সেটা দাড়ি কামাতে কামাতে ভোতা হয়ে গিয়েছিল । আশ্চর্যের ব্যাপার পিরামিডের ভিতরে সেটা দুই সপ্তা রাখার পর আবার ধারালো হয়ে উঠলো। ম্যকলুয়ানের সহকর্মীরা এই ভাবে একটা ডিম আর তিরিশ সের মাংস ‘মমি’ করেছেন । গবেষকরা বলেছেন, এ রকম পিরামিড যে কেউ তৈরি করতে পারে । গীজার বড় পিরামিডের ধাপ এবং কোন গুলোর সঙ্গে সমতা রেখে । তারপর, পিরামিড উচ্চতাকে তিন দিয়ে ভাগ করে নীচের তৃতীয়াংশের শীর্ষে নিভুল উচ্চতায় । সঠিক আয়তনের প্লেকসিগ্লস পিরামিড এখন বাজারে বিক্রি হচ্ছে। তাহলে এখন আমরা নিশ্চিত অনুধাবন করতে পারছি ; যে তৎকালীন মিশরের পিরামিড নির্মানের পিছনে অলৌকীক সহযোগীতা ছিলো ।


চিকিৎসা বিজ্ঞান নিয়ে গবেষনা করলে দেখা যায় বহু ধর্মে চিকিৎসা বিদ্যা সম্পর্কে জ্ঞান বিজ্ঞান প্রদান করা হয়েছে। বাইবেলের লেবিটিকাসে জানা যায় চিকিৎসা শাস্ত্রের ব্যপক তত্ত্ব কথা।ধর্ম শাস্ত্রবোধ সকল সময় মহিমাময় কোন একজন উপর থেকে এসেছিলো এটাই বোঝায়।কখনই কোন অবতার বার নবী নিজের জ্ঞানের কথা বলে নাই। সবাই বলে ছিলো ইশ্বর তাকে দিয়েছে, বা দেবতা তাকে দিয়েছে।এক কথায় দেবতারা যুগে যুগে পৃথিবীতে এসেছিলো।তারাই অবতারকে শিখিয়েছে, জ্ঞানে গুনে গুনিত করেছে।বাইবেলের লেবিটিকাসের দুটি স্ত্রোত আমি তুলে ধরলোম। “যদি কোন মানুষের শোথ কিম্বা পামা, চিক্কন চিহ্ন হয় আর তাহা শরীরের চর্মে কুষ্ঠরোগের ঘায়ের ন্যায় হয়, তবে সে আরন যাজকের নিকটে কিম্বা তাহার পুত্র যাজক গনের মধ্যে কাহারও নিকট হইবে।পরে যাজক তাহার শরীরের চর্মন্ত্রিত ঘা দেখিবে, যদি ঘায়ের লোম শুক্লবর্ণ হইয়া থাকে, এবং ঘা যদি দেখিতে শরীরের চর্যাপেক্ষা নিন্ম বোধ হয, তবে কুষ্ঠ রোগের ঘা..........আর চিক্কন চিহ্ন যদি তাহার শরীরের চর্মে শুক্লবর্ন হয়, কিন্তু দেখিতে চর্যাপেক্ষা নিন্ম না হয় এবং লোম শুক্ল বর্ণ না হইয়া থাকে তবে তাহার ঘা হইয়াছে, যাজক তাহাকে সাত দিন রুদ্ধ করিয়া রাখিবে” । (লেবিটিকাস ১২,২-৪)” দেখুন এই স্ত্রোতটিতে ছোয়াচে রোগ বার্যুবাহিত রোগ সম্পর্কে ধারনা দেওয়া হচ্ছে ধর্মগ্রন্থে। হাজার হাজার বৎসর পূর্বে এত গভীর জ্ঞান ধর্মগ্রান্থ থেকেই এসেছে। লেবিটিকাসের আরেকটি স্ত্রোত তুলে ধরলাম। “প্রমেহী লোক যে শয্যায় শয়ন করে তাহা অশুচি,ও যাহা কিছুর উপরে বসে, তাহা অশুচি হইবে....আর যে কেহ তাহার শয্যা স্পর্শ করে সে আপন বস্ত্র ধৌত করিবে,জলে স্নান করিবে...আর প্রমেহী যদি শুচি ব্যক্তির গাত্রে থু থু ফেলে, তবে সে আপন বস্ত্র ধৌত করিবে, জলে স্নান করিবে.... আর প্রমেহী যে কোন যানের উপরে আরোহন করে, তাহা অশুচি হইবে। আর যে কেহ তাহার নীচস্থ কোন বস্তু স্পর্শ করে,সে অশুচি হইবে আর প্রমেহী যে কোন মাটির পাত্র স্পর্শ করে, তাহা ভাঙিয়া ফেলিতে হইবে” । (লেবিটিকাস ১৫,৪-১২) প্রমেহি রোগ যে ছোয়াছে বা বায়ু বাহিত সে সম্পর্কে লেবিটিকাসের উপরোক্ত স্রোতে ধারনা পাওযা যায়। লক্ষ্য করুন এই স্ত্রোতে অসুচি শব্দ প্রয়োগ করা হয়েছে। আসলে ছোয়োচে কোন বিষয়বস্তু থেকে দুরে থাকবার জন্য অসুচী শব্দ প্রয়োগ করে ধমীর্য় ভয় সৃষ্টি প্রচেস্টা চালনো হয়েছে। আসলে এটা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমানিত। সম্পূর্ণ সংক্রমন নিরোধক উপদেশগুলোও যথাযথ এবং আধুনিক বক্তব্যটি ধর্মগ্রন্ত্রের মাধ্যমে তৎকালীন মানুষেরা পেয়েছে। প্রাচীন পারস্যের জরাথুষ্ট ধর্মের ধর্মগ্রন্থ জেন্দাবেস্তায় চিকিৎসাবিদ্যা সংক্রান্ত ব্যাপক জ্ঞান লিপিবদ্ধ রয়েছে। একটি স্ত্রোত দিয়ে আপনাদের আমি বোঝানোর চেষ্টা করি। “একটি লোক উপত্যাকার গভীরে মরিয়া গেল । পর্বত শীর্ষ হইতে পক্ষীকুল উপত্যকার গভীরে নামিয়া সেই মৃতের মাংস ভক্ষন করিল। অতঃপর একটি বৃক্ষের শাখায় তাহারা বসিল । সে বৃক্ষের শাখায় তাহারা বমন করিল, মলত্যাগ করিল, মুত্র ত্যাগ করিল । একটি লোক নিস্তব্ধ গ্রাম হতে পর্বত শিখরে গমন করিল । যে বৃক্ষে পক্ষিগন বসিয়াছিল, কাষ্ঠের প্রয়োজনে সে সেই বৃক্ষের নিকট গমন করিল। বৃক্ষটি কে কাটিয়া টুকরো টুকরো করিল। ……….. কুকুর, পক্ষি, বৃক্ষ, বায়ু, এবং মক্ষিকা মানুষকে অপবিত্র করে।..... (জেন্দাবেস্তা)। জেন্দাবেস্তার এই গল্পটির মাধ্যমে একজন ছোয়াচে মানুষের মৃত্যুর দ্বারা ছোয়াচে রোগ ছড়ানোর বিষয়টি তুলে ধরা হয়েূছে। এসকল স্থানে অশুচি বলতে ছোয়াচে বোঝানো হয়েছে। জেন্দাবেস্তার উপরোক্ত স্রোত দ্বারা জানা গেল কুকুর ,পক্ষি, বৃক্ষ, বায়ু, এবং পতিতা এরা জীবানু বাহিত রোগ ছড়াই। ভারতীয় উপমহাদেশে চার টি বেদের মত চার টি উপবেদ ও আছে । আয়ুর্বেদ, গান্ধব বেদ, ধনূ বেদ ও স্থাপত্য বেদ। আয়ুর্বেদে শল্য চিকিৎসার যে পরিচয় আজ পাওয়া যাচ্ছে তাতে বোঝা যায় তৎকালিন সময়ে আয়ূর্বেদ চিকিৎসা বিদ্যার ক্ষেত্রে ব্যাপক অগ্রগতী সাধন করেছিলেন। চিকিৎসা বিদ্যাই জ্ঞান অর্জনের জন্য আল্লাহ তায়ালা লোকমান হাকিম কে যে জ্ঞান দিয়েছিলেন বিষয়টি কোরানেও উল্লেখিত। তো যাই হোক এমন অসংখ্য উদাহরন দেওয়া যায়। স্রষ্টা ফেরেস্তারদের মাধ্যমে প্রতিনিধির মাধ্যমে মাধ্যমে মানবজাতির উন্নয়ন করেছেন একটি নিদীষ্ট লক্ষ্য মাথায় রেখে।



শুধু তাই নয়।স্বপ্ন দেখে অনেক বিজ্ঞানী অনেক অপ্রকাশিক তথ্য পেয়েছিন যেমন বিজ্ঞানী ফেডরিক ভন কাকুল বেনজিনের কেমিক্যাল ষ্টাকচার নিয়ে যখন কিছুতেই সীদ্ধান্তে পৌছাতে পারছিলেন না । তখন স্বপ্ন দেখেন একটি সাপ তার লেজ মুখে দিযে অর্ধবৃত্তাকার হোয়ে পড়ে আছে। এই স্বপ্ন থেকে তিনি বেনজিনের কেমিক্যাল ষ্টাকচার বের করে ফেলেন। সেলাই মেশিন আবিস্কারক ইলিয়াস হাওয়েও তার সমস্যার সমাধান পান স্বপ্নে । তিনি স্বপ্নে দেখেন যে আমাজানের জঙ্গলে আদিবাসীরা তাকে ঘিরে ফেলেছে। বর্শা দিয়ে তাকে মারতে উদ্যত হচ্ছে । আবার বর্শা শরীরের কাছা কাছি থেকে পিছনে নিয়ে যাচ্ছে । বর্শার অগ্র ভাগে রয়েছে ছিদ্র। ব্যাস সমস্যার সমাধান হয়ে গেল সেলাই মেশীনের সুচ তৈরি করে ফেললেন বিজ্ঞানী সাহেব। বল বিয়ারিং এর আবিষ্কর্তা জেমস ওয়াট স্বপ্নে দেখেন যে আকাশ থেকে বৃষ্টি হচ্ছে ছোট্ট ছোট্ট সীসার বল ।বহু দিন তিনি এই সীসার বল বৃষ্টি হওয়ার স্বপ্ন দেখেন । বল বিয়ারিং তৈরি সম্পন্ন হলো । ব্যস স্বপ্ন দেখাও বন্ধ হলো । পরমানু বিজ্ঞানী নিলস বোর প্রথম স্বপ্নে দেখলেন জলন্ত গ্যাসের সূর্যের ওপর তিনি বসে রয়েছেন । গ্রহ গুলো সব তার পাশ দিয়ে গেল । নিশ্চল হয়ে গেল শো শো শব্দ করতে করতে ছুটে চলেছে। ছুটতে ছুটতে ভেঙে যাচ্ছে ক্রমাগত আর যে সূর্য কে তারা প্রদক্ষিন করে চলেছে । তার সংঙ্গে তারা যেন এক একটি সুক্ষ সুতা দিয়ে বাধা । হঠাৎ গ্যাস জমে কঠিন হয়ে গেল। সূর্য এবং গ্রহগুলো সংকুচিত হোয়ে থেমে । ১৯২২সালে তার স্বপ্নের জন্য পেলেন নোবেল পুরস্কার । ঠিক সেই মুহুত্ত্বে তার ঘুম ভেঙে গেল । তিনি বুঝলেন স্বপ্নে যা দেখলেন তা পরমানুর মডেল। ১৯৪০ সালে বেল টেলিফোন কোম্পানির এক ইঞ্জিয়ার খবরে পড়লেন লণ্ডনে বোমা পড়েছে। মন টা তার খুব খারাপ হয়ে গেল । এক রাতে তিনি স্বপ্নে দেখলেন তিনি যেন একটি যন্ত্রের নকশা আকছেন যা দিয়ে বিমান বিধ্বংশি কামান কে কোন বিমানের পূর্ব হলো সর্ব প্রথম । নির্দীষ্ট পথে চালনা করা যাবে । ফলে বিমানের গতি যা হোক না কেন কামানের গোলা তাতে লাগবেই । ঘুম থেকে উঠেই ইঞ্জিয়ার সাহেব স্বপ্নে আঁকা সেই নকশা বাস্তবে একে ফেললেন । অবশেষে একটি সেট তৈরি করে ফেললেন যাতে ‘রেডার ’ ব্যবহার করা এমন অসংখ্য প্রমান বিদ্যামান যাতে প্রমান হয় মানবজাতির উন্নয়নে স্রষ্টা বিভিন্ন পদ্ধতি প্রয়োগ করে মানবজাতিকে শিক্ষা দিয়েছে। এমন অসংখ্য প্রমান পৃথিবীর বুকে বিদ্যামন । মানুষের উত্থানে স্রষ্টার হাতকে অস্বীকার করা যাবে না। এই কারনে আল কোরানে সুরা আল রহমানে স্রষ্টা প্রশ্ন করেছে হে মানুষ তুমি আমার আর কোন নিয়ামতকে অস্বীকার করিবে?

সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১১:৪৯
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৩:০৬

অবশেষে মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেফতার করেছে ডিবি। এবং প্রেস ব্রিফিংয়ে ডিবি জানিয়েছে সে ছোটবেলা থেকেই বদমাইশ ছিল। নিজের বাপকে পিটিয়েছে, এবং যে ওষুধের দোকানে কাজ করতো, সেখানেই ওষুধ চুরি করে ধরা... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×