somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছে ‘জামায়াতি দুর্বৃত্তরাই’

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মিজানুর রহমান খান, ওয়াশিংটন ডিসি থেকে |
তারিখ: ১৪-১২-২০১২ ( প্রথম আলো ) -----




মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের অবমুক্ত করা গোপন দলিলপত্রে একাত্তরের ডিসেম্বরের বুদ্ধিজীবী হত্যা সম্পর্কে তিনটি নতুন বিষয় উদ্ঘাটিত হয়েছে। প্রথমত, ভারতীয়দের কাছে পাকিস্তানি সেনাদের আত্মসমর্পণের শর্ত যাতে ‘ন্যায্য’ হয়, সেটা নিশ্চিত করতে প্রায় ৩০০ বুদ্ধিজীবীকে জিম্মি করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। দ্বিতীয়ত, কিছুসংখ্যক বুদ্ধিজীবীকে বিহারি ক্যাম্পে অন্তরীণ রাখা হয়েছিল এবং তাঁদের জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে হত্যা করা হয়। তৃতীয়ত, পাকিস্তানিরা ওয়াশিংটনের কাছে অভিযোগ করেছিল যে, মুক্তিযোদ্ধারাই প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছে।
এ সব অভিযোগ খতিয়ে দেখার নির্দেশ পাওয়ার পর ঢাকার তৎকালীন মার্কিন কনসাল হার্বাট ডি স্পিভাক এক তারবার্তায় নির্দিষ্টভাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরকে জানান, ‘জামায়াতি দুর্বৃত্তরাই’ বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছে। এ-সংক্রান্ত বাক্যে স্পিভাক ‘জামায়াত থাগস’ বা জামায়াতি দুর্বৃত্ত শব্দটি ব্যবহার করেন। আর একই সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে বুদ্ধিজীবী হত্যার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে স্পিভাক বলেন, বুদ্ধিজীবীদের গ্রেপ্তার ও হত্যার সময় ঢাকা সম্পূর্ণভাবে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে ছিল।
স্পিভাক বাংলাদেশে মার্কিন দূতাবাসের প্রথম ভারপ্রাপ্ত চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স। মুক্তিযুদ্ধের বেশির ভাগ সময় তিনি মার্কিন কনসাল জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। জেনারেল নিয়াজি ও জেনারেল ফরমান আলী স্পিভাকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেই প্রথম আত্মসমর্পণের আগ্রহ ব্যক্ত করেছিলেন।
পাকিস্তানি সেনাদের নিয়ন্ত্রণে: স্পিভাক মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পর্কে তারবার্তা পাঠিয়েছিলেন যে, ‘নিচের কারণগুলোই বলে দেয় যে, মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর দোষ চাপানোটা সন্দেহজনক। প্রথমত, ১৪-১৫ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী হত্যা ঘটে। এ সময়টায় পুরো ঢাকা শহরে কারফিউ বলবৎ ছিল এবং শহর ছিল পাকিস্তানি সেনাদের নিয়ন্ত্রণে। দ্বিতীয়ত, এই সময়ে শহরে যে মুক্তিবাহিনী ছিলেন, তেমন কোনো প্রমাণ নেই। তৃতীয়ত, যাঁরা নিহত হয়েছেন, তাঁদের কয়েকজনের নাম আমরা শনাক্ত করেত পেরেছি। তাঁরা কেউ রাজাকার ছিলেন না। তাঁদের বেশির ভাগই সুপরিচিত বাঙালি জাতীয়তাবাদী। যদিও তাঁরা মুক্তিযুদ্ধকালে শহরে ছিলেন, কিন্তু তাঁরা তাঁদের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির বহিঃপ্রকাশ ঘটাননি।’ স্পিভাক এই বার্তায় তাঁর বক্তব্যের সপক্ষে প্রমাণ হিসেবে মুনীর চৌধুরী, ফজলে রাব্বি, শহীদুল্লা কায়সার, সিরাজুদ্দীন হোসেন, এ এস মান্নান (অবজারভার-এর সহসম্পাদক), নিজামুদ্দীন আহমেদ, অধ্যাপক এ খায়ের ও ড. আলীম চৌধুরীর নাম উল্লেখ করেন।
১৯৭২ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি স্পিভাক অপর এক বার্তায় লেখেন, ‘গত নয় মাসে বুদ্ধিজীবীদের ভাগ্যে কী ঘটেছে, তা জানতে ওয়াশিংটন এবং অন্যত্র অব্যাহতভাবে আগ্রহ লক্ষ করার প্রেক্ষাপটে সংবাদপত্রে প্রকাশিত এ-সংক্রান্ত একটি নিবন্ধের ক্লিপিং পাঠানো হলো।’ এটি ছিল মর্নিং নিউজ পত্রিকায় ২১ ফেব্রুয়ারি ১৯৭২ প্রকাশিত একটি নিবন্ধ। তবে সংশ্লিষ্ট ফাইলে ওই ক্লিপিংটি পাওয়া যায়নি। স্পিভাক লিখেছেন, ‘বিশেষ সংবাদদাতা পরিবেশিত ওই খবরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক বুদ্ধিজীবী নিধনের ওপর আলোকপাত করা হয়।’
স্পিভাক ১৯৭২ সালের ১৭ জানুয়ারির এক তারবার্তায় উল্লেখ করেছিলেন যে, শেখ মুজিব গণপরিষদে দেওয়া বক্তৃতায় আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে মুক্তিযুদ্ধকালে সংঘটিত নিষ্ঠুরতা বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নৃশংসতা ও রাজাকার: ১৯৭২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি স্পিভাকের একটি তারবার্তার শিরোনাম ছিল: ‘নৃশংসতা ও রাজাকার’। এটা পাঠানো হয়েছিল মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে ঢাকায় পৌঁছানো একটি তারবার্তার বরাতে। স্টেট নামের বার্তাটিতে কী আছে, জানা যায়নি। স্পিভাক লিখেছেন, ‘যুদ্ধ শেষ হওয়ার দিকে ২০০ থেকে ৩০০ বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করা হয়। অন্যান্য শহর থেকেও এ রকম খবর পাওয়া যাচ্ছে, তবে নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। এ তালিকার সবাই বাঙালি। কিন্তু সাধারণভাবে তাঁরা রাজনৈতিকভাবে নিষ্ক্রিয় ছিলেন। তাঁদের মৃত্যুর প্রেক্ষাপট সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত জানাতে অপরাগ। তবে তাঁদের অধিকাংশকে ১১ থেকে ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যবর্তী সময়ে তাঁদের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।’
কারা গ্রেপ্তার করেছিল, সে সম্পর্কে স্পিভাক ওই তারবার্তায় বলেন, ‘সশস্ত্র ব্যক্তিরা। এদের সঙ্গে উর্দিধারী সশস্ত্র সৈনিকেরা ছিলেন।’ স্পিভাকের বিবরণ অনুযায়ী, সংবাদপত্র, মার্কিন কনসাল জেনারেল অফিসের কর্মী ও মার্কিন সংবাদদাতারা ঢাকায় প্রায় ২০টি মরদেহ দেখেছেন এবং তাঁরা নিশ্চিত করেছেন যে, হত্যা করার আগে তাঁদের প্রতি নির্যাতন চালানো হয়েছিল।
মার্কিন কনসাল স্পিভাক তাঁর ওই তারবার্তায় উল্লেখ করেন যে, মার্কিন তথ্যকেন্দ্র ইউসিস-এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা রিপোর্ট করেছেন যে, বেশ কিছু নিখোঁজ বুদ্ধিজীবীকে মোহাম্মদপুর-বিহারিশিবিরে আটকে রাখা হয়েছিল। ২৮ জানুয়ারির (১৯৭২) সাম্প্রতিক সংঘর্ষকালে তাঁদের হত্যা করা হয়।
নৃশংসতা ও রাজাকার শীর্ষক ওই তারবার্তায় স্পিভাক ১৯ শহীদ বুদ্ধিজীবীর নাম দেন। মুনীর চৌধুরী, মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, আনোয়ার পাশা, আবুল খায়ের, সন্তোষ ভট্টাচার্য, গিয়াসউদ্দিন আহমেদ, রাশিদুল হাসান, সিরাজুল হক খান, মোহাম্মদ মর্তুজা, সিরাজুদ্দীন হোসেন, শহীদুল্লা কায়সার, নিজামুদ্দিন আহমেদ, নাজমুল হক, এ এস মান্নান, গোলাম মোস্তফা, ফজলে রাব্বি, আলীম চৌধুরী, আবুল কালাম আজাদ ও আমিনুদ্দিন।
এই তারবার্তায় স্পিভাক তথ্য দেন যে, ‘আমরা মৌলভি ফরিদ আহমেদ ও অন্যান্য দক্ষিণপন্থী রাজনীতিককে গ্রেপ্তারের খবর পেয়েছি। মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে সম্পর্কিত কনসাল জেনারেলের অফিসের স্থানীয় কর্মীদের দ্বারা এ বিষয়ে নিশ্চিতও হয়েছি। তবে আমরা জানতে পেরেছি যে, রাজাকারির দায়ে ইতিমধ্যেই অনেককে অন্তরীণ করা হয়েছে। তাঁদের শিগগিরই বিচারের মুখোমুখি করা হবে।’ এই তারবার্তার উপসংহারে স্পিভাক বলেন, ‘ঢাকার প্রেস অব্যাহতভাবে নতুন নৃশংসতার খবর ছাপছে। ১৯৭২ সালের ৩১ জানুয়ারি কুমিল্লা সেনানিবাসে গণকবর পাওয়া গেছে। তবে এটা খুবই বিরক্তিকর যে, কিছু সংবাদপত্র হত্যাকাণ্ডের নায়কদের প্রতি মার্কিন সমর্থনের অভিযোগ করেই চলেছে।’
উল্লেখ্য, স্পিভাক এ বিষয়ে ঢাকা ৩২৮ ক্রমিকে একটি তারবার্তা পাঠিয়েছিলেন। এটিও পাওয়া যায়নি।
জিম্মি: শহীদ বুদ্ধিজীবীদের ব্যাপকভিত্তিক গ্রেপ্তারের সঙ্গে যে আত্মসমর্পণের শর্তসম্পর্কিত দর-কষাকষির যেকোনো সম্পর্ক থাকতে পারে, তা সম্ভবত স্পিভাকের তারবার্তা থেকেই প্রথম জানা যাচ্ছে। জেনারেল নিয়াজি ও জেনারেল ফরমান আলী তাঁদের যৌথ স্বাক্ষরে আত্মসমর্পণের বার্তা স্পিভাকের কাছে প্রথম একাত্তরের ১৪ ডিসেম্বরেই প্রথম দিয়েছিলেন।
স্পিভাক ১৯৭১ সালের ১৮ ডিসেম্বর ঢাকা ৫৬৯৬ ক্রমিকের অপর এক তারবার্তায় লিখেছেন, আত্মসমর্পণের দুই দিন আগে ঢাকার পশ্চিমে একটি মাঠের মধ্যে ৩০টির মতো গলিত মরদেহ পাওয়া গেছে। সেখানে ইট পোড়ানো হয়। মনে করা হয় যে, এসব মরদেহের মধ্যে বুদ্ধিজীবীদের অনেকে থেকে থাকবেন। আত্মসমর্পণের শর্ত যাতে ন্যায্য হয়, সেটা নিশ্চিত করতে পশ্চিম পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর স্থানীয় সমর্থক ও রাজাকাররা প্রায় ৩০০ বুদ্ধিজীবীকে ‘জিম্মি’ করেছিল। আত্মসমর্পণের দুই দিন আগে অনেককে হত্যা করা হয়। স্থানীয় লোকজন বলছেন, ইটখোলা এলাকায় অনেককে ধরে এনে হত্যা করা হয়। কথিতমতে, রাজাকাররা এখনো ইটখোলা দখলে রেখেছেন।
প্রতিশোধ: ১৮ ডিসেম্বর ঢাকা ৫৬৯৩ তারবার্তায় স্পিভাক লেখেন, ঢাকায় সহিংসতার প্রকোপ কমে এসেছে, কিন্তু “বিহারি” এবং “কোলাবরেটরদের” বিরুদ্ধে কিছু প্রতিশোধপরায়ণতা চলছে। একই সঙ্গে রাজাকারদের বাঙালি হত্যাও অব্যাহত আছে। বেশ কিছুদিনের বিরতিতে আজ ঢাকায় পত্রিকা বেরিয়েছে।
পল্টন ময়দানে কিছুক্ষণ আগে পাঁচ-ছয় হাজার লোকের সমাবেশ শেষ হয়েছে। নুরুল আলম সিদ্দিকীসহ ঢাকা, ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইলের মুক্তিযোদ্ধা অধিনায়কেরা বক্তব্য দিয়েছেন। বার্তা হলো, মুক্তযোদ্ধা ও রাজাকারেরা অস্ত্র জমা দেবেন। দেশ কে যে চালাচ্ছেন, তা বোঝা যায় না। কোনো জ্যেষ্ঠ নেতাকেই দেখা যায় না।
১৯ ডিসেম্বরে স্পিভাক ‘বাংলাদেশের মুজিবকে প্রয়োজন’ শীর্ষক একটি তারবার্তা (সিক্রেট ঢাকা ৫৭০২) পাঠান। এই বার্তায় স্পিভাক উল্লেখ করেন যে, পরিস্থিতি এখনো বিস্ফোরণোন্মুখ। চরম ডানপন্থী গোষ্ঠীর দ্বারা বুদ্ধিজীবীদের হত্যার খবর প্রকাশিত হওয়ার পর নতুন এক তিক্ততার স্রোত বয়ে যায়। এ ঘটনা পুনরায় গোষ্ঠীগত গণহত্যার হুমকি বৃদ্ধি করেছে।’
মুজিবই আশা: ১৭ ডিসেম্বর কলকাতার মার্কিন কনসাল গর্ডন লেখেন, ১৪ ডিসেম্বর ঢাকা কলেরা রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ড. জন রোড কলকাতায় মার্কিন-সমর্থিত সাহায্য সংস্থার ভোলাগ প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি বৈঠক ডেকেছিলেন। সেখানে প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র এবং ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা শাখার প্রধান উপস্থিত ছিলেন। কেয়ার অনুপস্থিত ছিল। এর অংশত কারণ, পূর্ব পাকিস্তানে ধারণা আছে যে, তারা সামরিক সরকারকে সহায়তা দিয়েছিল।
জন রোড বিশ্বাস করেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি খুব তিক্ততা থাকলেও এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে এবং তার মূল্যবোধ ও নীতির ওপর একটা মৌলিক বিশ্বাস আছে। এই মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে একটি ভালো কথা বলা বা মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের মতো ঝুঁকি বাংলাদেশ সরকারের উচ্চপর্যায়ে কেউ নেবেন না। ‘এ অবস্থা থেকে কেবল মুজিবই পরিত্রাণ দিতে পারেন।’ কলহবিবাদ এমন পর্যায়ে আছে যে, প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের অনেকেই দেশে ফিরে পদত্যাগ করতে চাইছেন।
মি. রোড তখন যুক্তি দেন যে, মুজিবই শুধু স্থিতিশীলতা আনতে পারেন; অন্তত একটি বছরের জন্য হলেও। তাঁকে যদি মুক্তি দিয়ে দেশে ফিরতে দেওয়া হয়, তাহলে উপদলীয় লড়াই অন্তত সাময়িকভাবে হলেও বন্ধ হবে। বাংলাদেশ নিয়ন্ত্রিত এলাকায় বাংলাদেশ সরকার ‘ভিসা’ দিতে প্রস্তুতি নিয়েছিল। এখন সব ভিসা অবশ্যই দিল্লিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দ্বারা ছাড় হওয়া উচিত হবে। তাঁর সন্দেহ, বিদেশি সংবাদদাতাদের বাংলাদেশ সরকার যে দেশে ঢুকতে দিতে অনীহা দেখাচ্ছে, তার মূলে আছে ভীতি। বিহারিবিরোধী তৎপরতার খবর যদি তাঁরা লিখতে শুরু করেন, তাহলে বিশ্বজনমত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চলে যাবে। বাংলাদেশের প্রতি গভীর অনুরাগী জন রোড ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করেন, ‘বিহারিরা নিপীড়নের শিকার’। স্পিভাক ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি লেখেন, ‘গেরিলা নেতা আবদুল কাদের সিদ্দিকীকে গ্রেপ্তার করা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও সেনাবাহিনীর মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়ে গেছে। আত্মসমর্পণের পরদিন ঢাকা স্টেডিয়ামে তিনি দুজন কথিত রাজাকারকে হত্যা করেন। ভারতীয় সেনারা তাঁকে দুবার গ্রেপ্তার করে। দুবারই তাজউদ্দীনের হস্তক্ষেপে তিনি ছাড়া পান।’
কলকাতার মার্কিন কনসাল গর্ডন একাত্তরের ১৪ ডিসেম্বর বার্তা পাঠান যে, ‘১২ ডিসেম্বরের স্টেটসম্যান খবর দিয়েছে যে, ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম “গণবিরোধী ও সাম্প্রদায়িক তৎপরতার” দায়ে চারটি রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। এগুলো হলো: পাকিস্তান ডেমোক্র্যাট পার্টি (পিডিপি), মুসলিম লীগ, জামায়াত-ই-ইসলামী ও নিজাম-ই-ইসলাম। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার পর পূর্ব পাকিস্তানের নির্বাচনে এসব দল অংশ নিয়েছিল। সন্দেহ করা হচ্ছে, বিশেষ করে হিন্দুদের প্রতি রাজাকারি তৎপরতার কারণেই মূলত তাদের নিষিদ্ধ করা হয়। ঢাকার পলিটিক্যাল অফিসারের সঙ্গে কথা বলে এই বার্তা পাঠানো হলো।’
স্পিভাক একাত্তরের ২৯ ডিসেম্বরের এক বার্তায় (ঢাকা ৫৮৩৭) লিখেছেন, ‘বঙ্গভবনে ঘণ্টাব্যাপী এক সংবাদ সম্মেলনে সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, রাজাকারদের বিচার করা হবে এবং কঠোরভাবে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে।’

০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৯


হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×