somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

জাদিদ
তুমি আমার রাতবন্দিনী। ধূসর স্বপ্নের অমসৃণ সুউচ্চ দেয়াল তুলে তোমাকে আমি বন্দী করেছি আমার প্রিয় কালোর রাজত্বে। ঘুটঘুটে কালোর এই রাজত্বে কোন আলো নেই। তোমার চোখ থেকে বের হওয়া তীব্র আলো, আমার হৃদয়ে প্রতিফলিত হয়ে সৃষ্টি করে এক অপার্থিব জ্যোৎস্না।

যাপিত জীবনঃ এক দরের ছাগল।

৩১ শে জুলাই, ২০২২ রাত ২:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এই বার কোরবানী ঈদের আগের দিন হঠাৎ আমার প্রবাসী ছোট মামা বললেন, তিনি ছাগল কোরবানী দিতে চান। আমি যেন ব্যবস্থা করি। তখন বাজে রাত প্রায় আটটা। হাতে অন্য কিছু কাজ ছিলো, কিন্তু হঠাৎ এই ছাগল কেনা নিয়ে বেশ জটিল ঝামেলায় পড়া গেলো। বাসার কেয়ার টেকারকে বললাম, ছাগল খুঁজতে।

যাইহোক, আমি নিজেও ছাগল খুঁজতে বের হলাম। একটু উন্নত মানের ছাগল চাচ্ছিলাম। কিন্তু দেখলাম বাজারের অবস্থা ভালো না। ছাগলের চাহিদা বেশি থাকায় সুযোগসন্ধানী কিছু অচল ছাগলও হাটে উঠেছে। মহা মুসিবত। এর মধ্যে মামা বললেন, তুই ছাগল কেনার সময় আমাকে পারলে আমাকে ছবি দেখাইছ!

ধানমন্ডি ৮ নাম্বার মাঠ পার হয়ে স্টাফ কোয়াটারের মুখে এসে দেখি একজন মোটাসোটা লোক এক পাল ছাগল নিয়ে বসে আছেন। মুখে বেশ সুখী হাসি। কিছুটা অবাক হয়ে বললাম, জিজ্ঞেস করলাম, কি হে! কালকে ঈদ! এখনও এত ছাগল বিক্রি বাকি! তাও মুখে হাসি?

মোটা লোকটি বলল, স্যার! এইগুলো এক দরের ছাগল। মানে এই সব নিয়া দামাদামি আপনেও করবেন না, আমিও করব না। যে দাম বলব, সেই দামেই আপনি খুশি হইয়া কিনা নিবেন।

লোকটার আত্ম বিশ্বাস ভালো লাগল। একটা ছাগল পছন্দ হলো, মামাকে ছবি তুলে পাঠালাম।
ছবি দেখে মামা বললেন, কি রে! এটা তো ছাগী! ধুর! খাসি দেখ!

মামার ছাগী চেনার দক্ষতায় মুগ্ধ হলাম। আমি বেশ কয়েকটা খাসি দেখালাম। কিন্তু মামার কোনটাই পছন্দ হয় না। শেষমেষ চলে আসার সময় লোকটি বলল, দাঁড়ান! আমি একটা দেখাই।

মামাকে দেখালাম। মামা দেখে ভিডিও কলে শিষ দিয়ে বললেন - জটিল!! ছাগলটা পছন্দ হইছে, নিয়া নে।

দাম জিজ্ঞেস করলাম। লোকটা কথা রাখছে। যে দাম বলছে, সেই দামের পর আর দামাদামি করার কিছু নাই।
লোকটা বলল, মামা চিনে রাখেন এই গুলো একদরের ছাগল। আগের দিন হইলে আরো দামাদামি করা লাগত।

যাইহোক, ঈদের দিন বাসার দারোয়ানকে কিছুটা ভৎসনা করলাম। পই পই করে বলে দিয়েছিলাম, একটা কালো কাপড় আনতে, যা দিয়ে একটা আড়াল তৈরী করে সেখানে পশু কোরবানী করব। কিন্তু সে ভুলে যাওয়ায় পরে তেরপল দিয়ে কাজ সারতে হয়েছিলো। এক ।পশুর সামনে আরেক পশু জবাই করা অমানবিক।

হুজুর আসলেন কোরবানী দিতে, জিজ্ঞেস করলেন - কার নামে কোরবানী হবে?
আমি বিরক্ত হয়ে বললাম, মা কালীর নামে কোরবানী হবে।
হুজুর জিভ কেটে বললেন, নাউজুবিল্লাহ!

আমি রেগে মেগে বললাম, নাউজুবিল্লাহ এক্কেবারে ভইরা দিবো! কোরবানী কার নামে হয় জানেন না আপনে? আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে কি কোরবানী হয় নাকি? আপনি জিজ্ঞেস করবেন, ভাইজান, কার পক্ষ থেকে কোরবানী হবে। তখন আমি আপনাকে কোরবানী দাতার নাম বলব।

যাইহোক, হুজুরকে নাম ধাম সব বললাম, মনে মনে দোয়া করলাম, আল্লাহ তুমি আমাদের কোরবানী কবুল কইরো! তুমি তো জানো আমরা কারা কারা কোরবানী দিসি। যাদের পক্ষ থেকে কোরবানী করেছি, তুমি তাদের কোরবানী কবুল কইরো!

হুজুর জবাই শুরু করতে যাচ্ছিলো, আমি বললাম, হুজুর! বিসমিল্লাহ বলে জবাই কইরেন কেমন?

জবাই করার পর হুজুরকে নগদ টাকা প্রদান করে চামড়াও দান করব মর্মে মৌখিক মুচেলেকা দিয়া বলিলাম, সন্ধ্যায় বাসায় দাওয়াত, না আসিলে কপালে খারাপি আছে, আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমুতুল্লাহি ওবারাকাতু!

হুজুর মুচকি হাসিয়া বিদায় নিলেন। যাইতে যাইতে বলিলেন, তুই আর শুধরাইলি না। সেই ছোট বেলা থেকেই এমন আসোস!



সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জুন, ২০২৩ রাত ১:১৮
৭টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সৈয়দ কুতুবের পোষ্ট: ভারতের করণীয় কি কি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৩৩



বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক ভালো রাখার জন্য ভারতের করণীয় কি কি?

০) শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো।
১) বর্ডার থেকে কাঁটাতারের ফেন্চ তুলে নেয়া।
২) রাতে যারা বর্ডার ক্রস করে, তাদেরকে গুলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বদেশ প্রত্যার্বতন : আমি আশাবাদী হতে চাই

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৩৪

স্বদেশ প্রত্যার্বতন : আমি আশাবাদী হতে চাই
আজ ২৫ তারিখ, ২৫শে ডিসেম্বর ২০২৫ সাল (প্রকৃতির এক অদ্ভূদ খেয়াল) ।



৬ হাজার ৩১৪ দিন পর তারেক জিয়া বীরের বেশে অসংখ্য মানুষের... ...বাকিটুকু পড়ুন

খাম্বার পরবর্তী অধ‍্যায় ,নাকি ১০% বদল হবে‼️অমি খোয়াব ভবনে ঘুমিয়ে , হাওয়া ভবনের আতঙ্কে আতঙ্কিত॥

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৮



খালেদা জিয়ার অসুস্থতার নাটক ছিল তারেক জিয়ার দেশে ফেরার রাজনৈতিক ট্রাম্পকার্ড। কথায় আছে,' দুষ্টু লোকের মিষ্টি ভাষা '। বাংলাদেশের রাজনীতিতে দূর্নীতিবাজ ও মাফিয়া গডফাদার তারেক রহমানের দেশে ফেরা... ...বাকিটুকু পড়ুন

খালেদার ১টি প্ল্যান ছিলো, মহা-ডাকাতের ১টি প্ল্যান আছে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:২৩



২০১৪ সালের ভোটের আগে খালাদা বলেছিলো যে, তার কাছে ১টা প্ল্যান আছে, যা ১ বছরের মাঝে বেকার সমস্যা ও বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান করে দিবে। তিনি প্ল্যানটি প্রকাশ করেননি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে গুমের ঘটনা: শেখ হাসিনার শাসনকালের একটি কালো অধ্যায়

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৪৯

বাংলাদেশে গুমের ঘটনা: শেখ হাসিনার শাসনকালের একটি কালো অধ্যায়

গুমের শিকার ব্যক্তিদের অতি ক্ষুদ্র কক্ষের ছবিটি বিবিসি ডটকম থেকে নেওয়া।

পরিচিতি

বাংলাদেশে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×