'ভর্তুকি' কখনই দীর্ঘ মেয়াদী অথনৈতিক পরিকল্পনার অংশ হতে পারে না। মোটা দাগে ভর্তুকি অর্থনীতির জন্য খারাপ - এটা খুবই বেসিক অর্থনৈতিক জ্ঞান। কোন নির্দিষ্ট জিনিসে ভর্তুক্তি তখনই দেয়া হয়, যখন সরকার মনে করে উক্ত জিনিস ব্যবহার করে যেন বেশি বেশি প্রোডাক্ট উৎপাদিত হয় যা সার্বিক অর্থনীতিকে গতিশীল রাখতে বা ভর্তুকির ক্ষতি কিছুটা কমিয়ে আনতে সাহায্য করে। অর্থাৎ চেইন অব সাপ্লাই ঠিক রাখা।
সরকারী অর্থনীতিবিদের উচিত ছিলো আরো কয়েক বছর আগে থেকেই ভর্তুকি দুর করার জন্য অর্থনীতিকে তৈরী করার। এই দেশে ভর্তুকি দুর করার সঠিক অর্থনীতি কোন সরকারের ছিলো না, এখনও নেই। কিন্তু সেটা না করে জনগনকে ভুলানো হয়েছে অর্থনৈতিক সক্ষমতার মরিচিকায় যার ফাঁদে সরকার নিজেই পড়ছে। আমাদের দেশ এখনও ভর্তুকি ছাড়া এই চেইন অব সাপ্লাই বজায় রাখতে পারবে না। যতই দেশ সিংগাপুর মালেয়শিয়া হয়েছে বলে গালগল্প বলেন, জনগনের মাথাপিছু আয় কিন্তু বৃদ্ধি পায় নি। এই অবস্থায় আইএমএফ এর শর্ত মেনে জ্বালানি তেল বৃদ্ধির এই ফলাফল দেশে অর্থনীতি আদৌ নেয়ার মত সক্ষমতা আছে বলে মনে হয় না। ফলে যে দামে বিশ্বের প্রতিষ্ঠিত অর্থনীতির দেশগুলোর জনগন কিনবে, সেই একই দাম এই দেশের মানুষের উপর চাপিয়ে দিলে তা হবে এক প্রকার নিরব জুলুম।
তাছাড়া, ইতিমধ্যে উপমহাদেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ একটি ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি করেছে। ফলে বিশ্ববাসীর সামনে একটি খাদ্য দুর্যোগের হাতছানি দেখা দিচ্ছে। আমাদের দেশে মরিচের দাম কেজিতে প্রায় ৩০০ টাকা হবার পথে। আগামীকাল থেকে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কোথায় যাবে কোন ধারনা কারো নেই, বাংলাদেশের এমন কোন সেক্টর নেই যে বা যারা তেলের দাম বৃদ্ধির উযুহাতে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি করবে না।
এই সমস্যাটা এমন যে, শুধু আপনি একা সারভাইব করলে চলবে না, সবাইকে নিয়ে বাঁচার চেষ্টা করতে হবে। যত আপনি অন্যকে ছাড়া বাঁচার চেষ্টা করবেন, তত আপনার বাঁচা কঠিন হয়ে যাবে।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ১:১০