দেশের প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা নীরবে হারিয়ে যাচ্ছেন আর রাজত্ব করে বেড়াচ্ছে ১৬ই ডিসেম্বরের ধান্দাবাজ মুক্তিযোদ্ধারা। ফলে যে পবিত্র আদর্শ ও চেতনাকে পুঁজি করে কিছু মানুষ দেশের জন্য যুদ্ধ করেছে সেই চেতনা এবং আদর্শ এখন হারিয়ে গেছে। আর ১৬ই ডিসেম্বরের মুক্তিযোদ্ধারা সদর্পে, মাথা উঁচু করে কৌতুকের হাসি লুকিয়ে বিক্রি করছে মুক্তিযুদ্ধের কথিত চেতনা আর আদর্শ এবং আবিষ্কার করে চলেছে নানা ধরনের ফিল্টার।
আমার আব্বা যখন বেঁচে ছিলেন, তখন এই কথাগুলো তিনি মাঝে মাঝে বলতেন। ইদানীং কথাগুলো বড় সত্য আর তিতা মনে হয়। হয়ত এই কারণে নিজের পরিচয় আর শেষের দিকে দিতে চাইতেন না। আমাকে অনুরোধ করেছিলেন, তাঁর মৃত্যুর পর তাঁকে যেন দ্রুত দাফন করি, কোন আনুষ্ঠিকতার প্রয়োজন নেই। যদিও আমাদের গ্রামের মানুষ চেয়েছিলও রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাঁর দাফন হোক। আমি আমার বাবার কথা রেখেছি। তাঁর মৃত্যুর পর ধর্মীয় বিধিবিধান অনুসারে দ্রুত তাঁকে দাফন করেছি।
আগামী মাসের ২২ তারিখে আব্বা মারা যাওয়ার ঠিক দুই বছর পূর্ণ হবে। যখন তাঁর কবরে যাই, তখন আশেপাশে পড়ে থাকা কিছু ফুল তাঁর কবরে দিয়ে পাশে কিছুক্ষণ দাঁড়াই। মাঝে মাঝে যখন মনে হয় এই লোকটা দেশের জন্য যুদ্ধ করেছেন, বিনিময়ে কিছু চান নি, তখন একজন নাগরিক হিসাবে তাঁকে একটা স্যালুট দেয়ার চেষ্টা করি, সন্তান হিসাবে না।
কিন্তু আমি ভীষণ লাজুক, নিজের বাবার কবরে দাঁড়িয়ে স্যালুট দিচ্ছি - লোকে দেখলে কি হবে এই চিন্তায় মাঝে মাঝে হাতটা কোন মতে কপাল ছুঁয়ে নামিয়ে ফেলি। মাঝে মাঝে খুব রাগ হয়, কাউকে জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে হয় - আচ্ছা এত লাজুক কেন আমি! এত দ্বিধা কেন?
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৩:৫৯