মানুষ প্রধানত যে দুটো ভাগে ভাগ হয়েছে তা নারী এবং পুরুষে। কিন্তু তাদের একভাগ করছে শাসন অন্যরা হচ্ছে শাসিত। যারা শাসিত হচ্ছে তাদের মধ্যে সে বোধটুকু এখনো জন্ম নেয়নি যে তারা নিপিড়িত হচ্ছে। তারা মনে করছে এটাই তাদের নিয়তি, বিধাতার খেলা। কিন্তু এটাতো করছে শাসক পুরুষরা নিজেদের আদলে বিধাতা তৈরী করে নারীকে অবদমিত করে রেখেছে, নিয়ন্ত্রন করছে।
যে কজন নারী এ অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গেছে, রুখে দাঁড়িয়েছে পুরুষতন্ত্রের বিরুদ্ধে, পুরুষের পাশাপাশি বেশিরভাগ নারীই তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, মুখ চেপে ধরেছে প্রতিবাদ কারিনির, শত্রু হিসেবে চিহ্ণিত করেছে তাকে।
পুরুষ যে নিয়ম শিখিয়েছে তারা সেটাই আওড়ায়। কেউ একটু এগিয়ে যেতে চাইলে লাঞ্চিত করেছে, কলঙ্কিত করেছে, পতিতা বলেছে, নিজেকে সাধু মনে করে তৃপ্তির ঢেকুর তুলেছে।
তাদের মধ্যে বিশেষ কোন পার্থক্য পাওয়া যায়না হোক গ্রামের অশিক্ষিত কিংবা দেশের সর্বোচ্চ ডিগ্রীধারী। চিন্তার জায়গায় সবাই এক, দাসত্ব। সংসার, বিউটি পার্লার, মার্কেট, বাবার বাড়ী, পাশের বাসার ভাবী, সন্তান উত্পাদন। তারা প্রেম বোঝেনা দাসত্ব বোঝে, দাসী হতেই পরম তৃপ্তি। প্রেম করার আগেই নিশ্চিত হতে চায় বিয়ে পর্যন্ত যাওয়া যাবে কিনা?
অনেকে চার দেয়াল থেকে বেরিয়েছে, চাকুরী করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে, কেউ কেউ তা ও করবেনা এতো এতো সনদ গুনপোকার আধার ছাড়া কিছুই না। অবশ্য কেনইবা করবে অভাবতো তার নাই, স্বামীর অনেক আছে?
বাঙলার নারীর আরেক অভাব হচ্ছে আত্বমর্যাদাবোধ। তারা করুণাকে নিজের অধিকার ভাবে। বাসে সিট ছেড়ে দিলে কিংবা লেডিস ফাস্ট বলে নারীকে আগে যেতে দিলে তারা খুশি হয় ভাবে এটাই তাদের অধিকার, নারীত্বের অধিকার! তারা নিজেরাই ভুলে গেছে যে তারাও পুরুষের মতো মানুষ। মানুষ হিসেবে একটা পুরুষ যে সকল সুবিধা অসুবিধা ভোগ করবে তাদেরকেও সে সুবিধা অসুবিধার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। তাদের দাবী থাকে তাদের শরীর কিংবা শক্তিতে তারা পেরে উঠবেনা পুরুষের সাথে। আসলেই কি তাই? পুরুষ যেটাকে কামনার বস্তু মনে করে লুকিয়ে রাখতে বলেছে তোমরাও সে কথায় গলে গিয়ে ঢেকে রাখলে, কিন্তু লম্পটরা হাতিয়ে গেল। লম্পটরা এমনিতেই হাতাবে ঢেকে রাখলে কিংবা লজ্জায় কুকড়ে গেলেতো তারা আরো সাহসী হয়ে উঠে। লম্পটের বিরুদ্ধে কথা বলো, প্রতিবাদ করো। দু'চার দিনে তারা সায়েস্তা হয়ে যাবে। আন্দোলন ছাড়া কিছুই আগায় না। অনেক নারী মনে করে আন্দোলন ছাড়াই নারী মুক্তি হবে। কচু হবে। আন্দোলন না করলে স্বাধীনতার মুখ দেখতে হতোনা।
নারীর শরীর সে কতটুকু ঢেকে রাখবে, কতটুকু খোলা রাখবে এটা নারীর। কিন্তু কেউ জিন্স পরলে কিংবা ওড়না বুকে না রাখলে সে নারীরাই রৈ রৈ করে উঠে।
আজকাল অনেক পুরুষই নিজেদেরকে মানুষ ভাবতে শিখেছে সাথে নারীকেও। কিন্তু নারীরা কই, তারা বোরকা হিজাবে মুখ লুকিয়ে সরে যাচ্ছে বিপরীত দিকে। দাসী থেকে দাসীতর হয়ে যেতে চাইছে। আর যে দু'একজন এগিয়ে এসেছে তারা মানবতা বোঝেনা, পুরুষ যে অন্যায় গুলো তাদের সাথে এতোদিন ধরে করে এসেছে তারা পুরুষের সাথে তাই করতে চায়। নিজেদের স্বার্থে তারা ক্ষতি করে চলছে নারীদেরই।
নারীবাদ চাইনা পুরুষবাদ চাইনা, চাই মানবতাবাদ।
নারীত্ব পুরুষত্ব গোল্লায় যাক, সবার মাঝে জেগে উঠুক মানুষত্ব।
জয় হোক মানবতার।