somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যুদ্ধাপরাধীর বিচার,নিজামীর ফাঁসি এবং কিছু কথা

১৩ ই মে, ২০১৬ রাত ১:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নিজামীর ফাঁসি নিয়ে অনেক কথাই হচ্ছে ৷ কেউ পক্ষে বলছে এবং কেউ বিপক্ষে বলছে ৷ এরকম হওয়াটাই স্বাভাবীক ৷ কারও কাছে নিজামী হিরো আবার কারও কাছে ভিলেন ৷ কিন্তু কিছু কিছু অতি উৎসাহী কর্মকান্ড আমাকে সত্যিই চিন্তিত করেছে ৷ পাকিস্তান বরাবরই যুদ্ধাপরাধীর বিচারের নিন্দা জানিয়ে আসছে ৷ এটা আমার কাছে স্বাভাবিক মনে হলেও নিজামীর ফাঁসির পর পাকিস্তানের প্রতিবাদটা স্বাভাবীক নয় ৷ এই প্রতিবাদের দ্বারা তারা পরিস্কার প্রমাণ করেছে তৎকালীন জামায়াত যুদ্ধাপরাধী ছিল ৷ তাদের মতে,পাকিস্তানের শাসনতন্ত্র সমুন্নত রাখাই ছিল নিজামীর অপরাধ ৷ আমারা বাংলাদেশীরাও তাই মনে করি এবং একারণেই নিজামীকে শাস্তি পেতে হয়েছে ৷ মূলত এই কথার দ্বারাই নিজামীর অপরাধ উঠে এসেছে ৷ যখন পাকিস্তান এই দেশকে শাসনের নামে শোষণ করছিল তখন পাকিস্তানের শাসন ব্যবস্থা সমুন্নত রাখার চেষ্টা করা অবশ্যই অপরাধ ৷ গনহত্যার কথা নাইবা বললাম ৷ পাকিস্তান কূটনৈতীক দিক থেকে এতোটা জ্ঞান-বুদ্ধিহীন সেটা এইবার জানলাম ৷ পাকিস্তানের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ আসবে জানতাম,কিন্তু এরকম মূর্খ প্রতিবাদ আসবে সেটা বুঝতে পারি নাই ৷ এবার আসি তুরষ্কের ব্যাপারে ৷ এরদোগান প্রতিবাদ জানাবে এটা আমার কল্পণার অতীত ছিল ৷ শুধু তুরষ্ক নয়,পাকিস্তান বাদে অন্য কোথাও থেকে প্রতিবাদ জানানো হবে সেটা আমি কখনই কল্পনা করিনি ৷ তুরষ্ক যদি সত্য না জেনে প্রতিবাদ করে থাকে তাহলে প্রতিবাদের সম্ভাব্য দুটি কারণ থাকতে পারে ৷ প্রথম কারণ,পাকিস্তান তাদের বুঝিয়েছে যে বাংলাদেশ একজন ইসলামী নেতাকে অন্যায়ভাবে ফাঁসি দিয়েছে ৷ দ্বিতীয় কারণ,তাদের নিজেদেরই মনে হয়েছে এই বিচার অন্যায় হয়েছে ৷ অবশ্য এইরকম মনে হওয়ারও কারণ আছে ৷ কেননা আন্তর্জাতিক মহলও দেশে চলমান এই বিচারের নিন্দা জানিয়েছে ৷ হিউম্যান রাইটস বলেন বা জাতিসংঘ বলেন,এরা কিন্তু কখনই বলে নাই যে যাদের ফাঁসি দেওয়া হয়েছে তারা নিরাপরাধ ৷ তারা চায় সারা বিশ্বে মৃত্যুদন্ড বন্ধ হোক ৷ একারণে ফাঁসির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে ৷ আরেক বিষয় তারা উল্লেখ করেছে ৷ সেটা হলো বিচারের স্বচ্ছতা এবং আন্তর্জাতিক মানের বিচার না হওয়া ৷ এখানে আন্তর্জাতিক মানের বিচার করতে হবে এমন কোনও কথা নেই ৷ আমার দেশের অপরাধী,আমার দেশে অপরাধ করেছে এবং বিচারও হবে আমার দেশের আইনের দ্বারাই ৷ তবে স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন আমারও আছে ৷ একজন সাধারণ মানুষও জানে বিচারে স্বচ্ছতা নেই এবং বিচার হচ্ছে প্রতিহিংসা থেকে ৷ নিজের পাছার ময়লা পরিস্কার না করে অন্যজনের পাছার ময়লা পরিস্কার করাটা ভন্ডামী ৷ এই কথাটা বলার কারণেই বঙ্গবীর কাদের সিদ্দীকী নব্য রাজাকার খেতাবে ভূষিত ৷ অবশ্য আমাদের দেশের রাজনৈতীক পদ্ধতিটাই এরকম ৷ প্রতিহিংসা ছাড়া রাজনীতি পূর্ণতা পায় না ৷ জামাত যদি আ'লীগের সঙ্গ না ছাড়তো তাহলে বোধহয় জাতি কোনওদিন এসকল ধর্মীয় নেতা নামের কলংকদের বিচার দেখতে পেতনা ৷ যদিও যাদের সবার বিচার করা হচ্ছে এরা সবাই রাজাকার ছিল কিনা সেটা আমি নিশ্চিত নই ৷ তবে সাঈদী বাদে সবাই রাজাকার এটা নিশ্চিত ৷ সাঈদীর ব্যাপারে এখনও আমি নিশ্চিত হতে পারিনি ৷ ড.জাফর ইকবাল স্যার আমার অত্যন্ত প্রিয় একজন ব্যক্তিত্ব ৷ তাঁর ছাত্র হতে পেরে আমি গর্বিত ৷ তারপরেও তার প্রতি আমার সম্মান কিছুটা হলেও কমে গেছে যখন তিনি রাজাকার হিসেবে শুধুমাত্র জামাতকেই দোষী করেছেন ৷ অন্য রাজাকারদের বিরুদ্ধে কিছু বলেননি ৷ অন্তত তাঁর থেকে এরকম আশা করিনি ৷ এবার আসি শাহবাগীদের কথায় ৷ মাত্র দুইদিন গিয়েছিলাম শাহবাগে ৷ এরকম একটা আন্দোলনের সাথ না দিলে দেশপ্রেম প্রশ্নবিদ্ধ হওয়া স্বাভাবীক ৷ কিন্তু তারাও আমার মনের মত হতে পারলোনা ৷ ঐ দুই দিনেই তাদের আন্দোলন আমার কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হয় ৷ এজন্য আর যাইনি ৷ আমার বড় ভাই এজন্য রাগ করে আমাকে বলেছিল,সবকিছুতেই নেগেটিভ বেড় করা তোর স্বভাব হয়ে গেছে ৷ কয়েকদিন পর দেখি ভাইয়াও আর যায় না ৷ কারণ জিজ্ঞেস করায় সে আস্তে করে বলল,সব শালাই চোর ৷ আমি অবশ্য সবাইকে চোর বলছি না ৷ অনেকেই সেখানে গিয়েছিলেন দেশপ্রেমের টানে ৷ জামাতের বর্তমান সাপোর্টাররা জানেই না যুদ্ধের সময় তাদের নেতাদের কী ভূমিকা ছিল ৷ জানাতে গেলেও বিশ্বাস করে না ৷ বিশ্বাস না করার কারণটা হচ্ছে ধর্ম ৷ তারা মনে করে,এরকম ধার্মিক ব্যক্তিরা ঐরকম জঘন্য কাজ করতে পারে না ৷ এক্ষেত্রে আমার স্ত্রীর একটা মতামত তুলে ধরছি,যখন কেউ কোনও দলের অন্তর্গত হয় তখন তারা দুনিয়াকে নিজের চোখ দিয়ে না দেখে দলের চোখ দিয়ে দেখে ৷ আর একারণেই ধর্ম ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসায় সফল হতে পারে ৷ শুধু ধর্ম ব্যবসায়ীরা নয়,রাজনৈতীক দলগুলোও এইভাবেই ক্ষমতায় আসে ৷ যুদ্ধাপরাধীর বিচারকে সম্পূর্ণ সাধুবাদ না জানাতে পারলেও এই বিচারের কারণে মনের মাঝে কিছুটা হলেও শান্তি পাচ্ছি ৷ হোক আ'লীগ দাবার গুটি চেলেছে,তারপরওতো কিছু রাজাকারদের বিচার হচ্ছে ৷
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই মে, ২০১৬ রাত ১:৪১
৮টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা সকলের দায়িত্ব।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩৮



এগুলো আমার একান্ত মতামত। এই ব্লগ কাউকে ছোট করার জন্য লেখি নাই। শুধু আমার মনে জমে থাকা দুঃখ প্রকাশ করলাম। এতে আপনারা কষ্ট পেয়ে থাকলে আমি দায়ী না। এখনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

এখনো নদীপারে ঝড় বয়ে যায় || নতুন গান

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:২০

এ গানের লিরিক আমাকে অনেক যন্ত্রণা দিয়েছে। ২৪ বা ২৫ এপ্রিল ২০২৪-এ সুর ও গানের প্রথম কয়েক লাইন তৈরি হয়ে যায়। এরপর ব্যস্ত হয়ে পড়ি অন্য একটা গান নিয়ে। সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেতনার সময় জামায়াত বদ্ধ ইসলামী আন্দোলন ফরজ নয়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৮



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৩। তোমরা একত্রে আল্লাহর রজ্জু দৃঢ়ভাবে ধর! আর বিচ্ছিন্ন হবে না। তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর।যখন তোমরা শত্রু ছিলে তখন তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×