রেডিও তেহরানের বাংলা বিভাগের অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “কোনো কোনো সূত্র বলেছে, সৌদি রাজার ছেলের গাড়ি বহর মিনা শহরের কেন্দ্রস্থলে আসায় তীব্র ভিড় দেখা দেয় এবং মূলত এ কারণেই পদপিষ্ট হয়ে হজযাত্রীদের মৃত্যু ঘটেছে।”
লেবাননের আরবি দৈনিক আদদিয়ার বরাত দিয়ে রেডিও তেহরান লিখেছে, “শাহজাদা মুহাম্মাদ বিন সালমানের গাড়ি বহরই প্রাণঘাতী এই বিপর্যয় সৃষ্টির মূল কারণ। তার বিপুল গাড়ি বহর ও নিরাপত্তা প্রহরা মিনার প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকা দখল করে নেয়। শাহজাদার সঙ্গে ছিল ২০০ সেনা ও ১৫০ পুলিশ কর্মকর্তা।”
সৌদি সরকার বিষয়টিকে ‘ধামাচাপা দেয়ার জন্য’ হজের সময় মিনায় সালমানের সফর বা তার উপস্থিতি সংক্রান্ত খবর প্রচার ‘নিষিদ্ধ করেছে’ বলেও প্রতিবেদনে দাবি করা হয়।
হজের আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে বৃহস্পতিবার সকালে মিনায় ‘শয়তানের স্তম্ভে’ পাথর ছুড়তে যাওয়ার পথে পদদলনের এ ঘটনা ঘটে, যাতে ৭১৭ জন নিহত এবং আরও অন্তত ৮৬৩ জনের আহত হয়েছেন বলে সৌদি সরকারের ভাষ্য।
ইরানের হজ সংস্থার বরাত দিয়ে রেডিও তেহরান বলেছে, সৌদি কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে ৭১৭ জনের মৃত্যুর কথা স্বীকার করলেও নিহতের সংখ্যা ১৩০০ ছাড়িয়ে গেছে এবং আহত হয়েছেন প্রায় দুই হাজার মানুষ। আর নিহতদের মধ্যে ১৩১ জন ইরানি।
ইরান এ ঘটনার তদন্ত দাবির পাশাপাশি তিন দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করেছে। ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি বলেছেন, এই ঘটনার দায় সৌদি সরকারকেই নিতে হবে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরের বরাত দিয়ে রেডিও তেহরানের বাংলা বিভাগ তাদের ওয়েবসাইটে লিখেছে, “হজযাত্রীরা যেসব সড়ক দিয়ে এসে শয়তানের প্রতীকী স্তম্ভে পাথর মেরে ওই এলাকা থেকে চলে যান, হঠাৎ সেইসব সড়কের মধ্যে দুটি সড়ক বন্ধ থাকায় ভিড় এড়াতে বা পালিয়ে যেতে ব্যর্থ হন হজযাত্রীরা। এ ছাড়াও পাথর মারতে আসা হজযাত্রীদের একমুখী চলাচলের একটি সড়ককে হঠাৎ দ্বিমুখী করা হয় বলে অভিযোগ শোনা গেছে।”
এতে বলা হয়, সৌদি আরবের কর্মকর্তারা বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল-আজিজ আল সউদের ছেলের মিনায় উপস্থিতির বিষয়টি 'সঠিক নয়' বলে দাবি করেছেন। তবে কোনো কর্মকর্তার নাম সেখানে উল্লেখ করা হয়নি।
সৌদি হজ কমিটির প্রধান প্রিন্স খালেদ আল-ফয়সাল হুড়োহুড়ির জন্য ‘আফ্রিকান নাগরিকসহ হাজিদের একটি দল’কে দায়ী করেছেন। এ প্রসঙ্গও রেডিও তেহরানের প্রতিবেদনে এসেছে।
তারা লিখেছে, “সৌদি সরকারের হজ ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতার কারণে প্রায়ই হজের সময় নানা দুর্ঘটনা ঘটছে। মাত্র প্রায় দুই সপ্তাহ আগে মসজিদুল হারামে একটি ক্রেইন ভেঙ্গে পড়ার ঘটনায় প্রায় ১২০ জন হজযাত্রী নিহত হয়েছেন। মিনায় পদপিষ্ট হয়ে হজযাত্রী মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে ২০০৬ সালেও। এ অবস্থায় পবিত্র হজের মত একটি আন্তর্জাতিক ও বিশ্ব-সমাবেশ আন্তর্জাতিক তথা বহুজাতিক ব্যবস্থাপনায় হওয়া উচিত বলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের দাবি ক্রমেই জোরদার হচ্ছে।”
আরব নিউজের তথ্য অনুযায়ী, হজ আর ওমরাহ মিলিয়ে ২০১২ সালে সাড়ে ১৬ বিলিয়ন ডলার আয় করে, যা দেশটির জিডিপির ৩ শতাংশ
সুত্র: বিডিনিউজ২৪
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১:৩০