( প্রথম আলো ব্লগের ব্লগার শুচনা১৮১ তার নব্ জাতক বাচ্চাকে ইবনে সিনাতে চিকিৎসা করাতে নিয়ে গিয়ে যে অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হন তা শেয়ার করলাম আপনাদের সাথে)
গত ১৪/০৭/২০১০ইং তারিখের ঘটনাঃ ১১/০৭/১০ তারিখে আমার স্ত্রীর একটি ফুটফুটে ছেলে সন্তান হয়েছে। ১৪/০৭/১০ তারিখে ক্লিনিক থেকে রিলিজ হোয়ার আগে ডঃ মিজানুর রহমান (নবজাতক শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ, ইবনে সিনা হাসপাতাল) আমাদের এডভাইস করলেন যে, আমাদের সন্তানের জন্ডিস দেখা দিয়েছে, তারা তারি রক্ত চেক করেন। সে মোতাবেক ইবনে সিনা হতে রক্ত পরীক্ষা করার পর রক্তে ১৭.৩ বিলোরমিন ধরা পরে এবং ডাঃ আমাদেরকে ইবনে সিনা হাসপাতাল, সংকর এ ফটো থেরাপি দেয়ার জন্য পরামশর্ দেন, তিনি উল্লেখ করেন জন্ডিস অনেক বেশি, সময়মত নিয়ন্ত্রন না করলে অবস্থার মারাত্নক অবনতি হতে পারে এমনকি নবজাতকের রক্ত বদলিয়ে ফেলতে হতে পারে। স্বভাবতই ৩ দিনের নবজাতককে নিয়ে আমি এবং আমার স্ত্রী ইবনে সিনা হসপিটালে যাই এবং ৫০০০ টাকা অগ্রীম দিয়ে ফটো থেরাপি ইউনিটে বেড নং ০৩ এ আমার নবজাতককে এডমিট করাই। তখন হতেই আমার সিজারিয়ান স্ত্রী (৩ দিনের) এবং আমি হসপিটালে অবস্থান করি। আমার স্ত্রীর জন্য একটি কেবিনের ব্যবস্থা করা না যাোয়ার কারনে সোফাতেই রাত - দিন কাটাতে হয় (নবজাতককে বুকের দুধ খাোয়ানোর জন্য আমার অসুস্থ স্ত্রীকে হাসপাতালে অবস্থান করাতে বাধ্য হই)। ফটো থেরাপি ইউনিটে আমার বাবুর থেরাপি চলছিল। এভাবে ২৪ ঘন্টা পর সংশ্লিষ্ট ডাক্তার আবার রক্ত পরীক্ষা করার জন্য বলেন এবং যথারীতি পরিক্ষা করার পর বিলোরমিন ১৮.১৫ পাোয়া যায়।
সভাবতই আমরা সন্তানের অবস্থা সম্বন্ধে চিন্তিত হয়ে পরি। সন্তানের ভাল -মন্দ জানার জন্য কোন ডাক্তারকে পাোয়া না গেলে নিচতলায় রিসেপশনে খোজ নিতে যাই এবং সেখানথেকে আমাকে জানানো হয় উক্ত ইউনিটে নিদির্ষ্ট কোন ডাক্তার নেই। এক এক দিন এক এক জন ডাক্তার ভিজিট করেন (বিশ্বয়কর), উক্ত দিন (১৫/০৭/১০) তারিখে কোন ডাক্তার ডিউটি করছেন জেনে তারপর আমাকে খোজ নিতে বলেন। আমি থেরাপি ইউনিটে খোজ নিতে গেলে ডাক্তার আসেননি বলে জানানো হয়, অতঃপর আমি দায়িত্বরত নাসর্দের কাছে ডাক্তারের ফোন নাম্বার চাইলে ফোন নাম্বার দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন এবং রিসেপশনে ফোন করে বলেন "একেকেদিন এক এক ডাক্তার ভিজিট করেন এগুলো অন্যদের জানানোর দরকার টা কি"। এহেন ঘটনায় আমার মাঝে চিকিৎসা ব্যাবস্থা নিয়ে সন্দেহের উদ্দেক হয়। অন্যান্য রোগীর অভিাভাবকের সাথে কথা বলার পর জানতে পারি প্রত্যেকেই কমপক্ষে ৭ থেকে ৩০ দিন ধরে ফটো থেরাপি নিচ্ছেন। খরচ দৈনিক ৩০০০ খেকে ৯০০০ টাকা পযর্ন্ত।
আমি আমার নবজাতকের জন্য কত খরচ হতে পারে জানার জন্য বিলিং সেকশনে গেলে "নিদির্ষ্ট কোন এমাউন্ট নেই" বলে জানানো হয়। সাবির্ক ঘটনায় আমি একটু ইন-ডিসিশনে ভুগতে থাকি। ঠিক করছি নাকি ভুল করছি ? এ অবস্থায় অন্যান্য পরিচিত ডাক্তারদের সাথে কথা বললে তারা জানান শতকরা ৮০ ভাগ নবজাতকই জন্ডিস এ আক্রান্ত হন এবং ৯৮% শিশিুই এমনিতেই ভাল হয়ে যায়। সেহেতু আমার নবজাতকের জন্য চিন্তিত হবার কোন কারন নেই । এভাবেই সময় পার হয়ে ১৫/০৭/১০ তারিখ রাত প্রায় ১০ টার সময় আমার স্ত্রী আমাকে বলেন আমাদের বাবুর বেডে বিকেল থেকে আরো একজন নবজাতক রাখা হয়েছে (যাহা সম্পূনর্ নিয়ম পরিপন্থি, অস্বাষ্থকর, বিপদজনক)। ঘটনা শুনে আমি কতর্বরত নাসর্/এস্টিেন্ট কে বিশয়টি জিজ্ঞেশ করলে বলেন "সিট না থাকার কারনে ওক্ত রোগী আমার সন্তানের সাথে রাখা হয়েছে এবং ডাক্তারের নিদের্শেই এটা করা হয়েছে" আমি ডাক্তারের ফোন নাম্বার চাইলে "দেয়া যাবেনা বেেল জানান"। আমার দৃষ্টিতে নিন্মলিখিত কারনে বিষয়টি বিপদজনকঃ
১) ফটো থেরাপি ইউনিটের মত ইনসেনটিভ কেয়ার ইউনিটে একটি সংরক্ষীত এলাকা যেখানে কাউকেই ঢুকতে দেয়া হয় না এমন কি বাচ্চার মাকেো না।
২) নবজাতকদের বয়স মাত্র ৩-৫ দিন। যারা রোগ প্রতিরোধে অক্ষম।
৩) দুই নবজাতক এক বেডে কাছাকাছি থাকলে অন্য রোগে আক্রান্ত হোয়ার ঝুকি বেরে যায়।
৪) দুই নবজাতকেই স্যালাইন পুশ করা থাকার কারনে যে কোন সময় দুঘর্টনা ঘটতে পারে।
৫) বেডের ভারা বাবদ প্রতিদিন আমার কাছ থেকে প্রায় ২০০০ টাকা আদায় করা হয় (শুধুমাত্র বেড ভাডা)।
৬) একই বেডে থাকার কারনে বিভিন্ন মেডিসিনের প্রয়োগ ভুল হতে পারে। বিল চাজর্ করতে ো ভুল হোয়ার সম্ভাবনা থাকে।
অতঃপর বিভিন্ন ডাক্তারের সাথে (ইবনে সিনার সাথে সংশ্লিষ্ট নন) কথা বললে জানান "একই বেডে দুই শিশুর চিকিৎসা দেয়ার কোন সুযোগ নেই, বিষয়টি বিপদজনক। অতঃপর বিষয়টি নিয়ে কতর্ব্যরতদের চ্যেলেন্জ করলে তারা প্রথমে ভুল অশ্বিকার করেন কিন্তু পরে বলেন তাদের ভুল হেেয় গেছে। ইচ্ছা করলে আমরা আমাদের সন্তানকে নিয়ে যেতে পারি। কথা শুনে আমার তো মাথায় হাত। ভয়ে অন্তরটা ছোট হয়ে গেছে। অপরাধ বোধ হচ্ছে আমার বাবুর পরিনতির জন্য । জন্মের ৩ দিন পার হোয়ার আগেই ঘৃন্য ডাক্তারদের লালসার সিকার হতে হল আমার সন্তানকে। আমি তাকে ইবনে সিনার লালসার হাত থেকে বাচাতে পারলাম না।
তখনই সিদ্ধান্ত নিলাম যত দ্রুত সম্ভব এই রাজাকারদের কাছ থেকে আমাকে চলে যেতে হবে। না হলে আমি আমার সব হারাব। সে মোতাবেক রাত প্রায় ১২ টার সময় যখন বিল পরিশোধ করতে যাই তখন আরেকবার তাদের লালসার চিহ্ণ দেখতে পাই "তারা আমার কাছ থেকে এবং অন্য রোগীর কাছ থেকে পূরন দিনের জন্য ভাড়া কেটে রাখছেন। কারন জানতে চাইলে তারা বলেন এটাই নিয়ম। অত্বপর পুরো ৮৩৮০ টাকা বিল (১৪/০৭/১০ বিকাল ৩.৩০ হতে ১৫/০৭/১০ রাত ১০.৩০ পযর্ন্ত) পরিশোধ করেই োখান থেকে মুক্তি পাই। (দুই রুগীর কাছ থেকেই ১ দিনের বেড ভাড়া আদায় করা হয়েছে)
পরদিন ১৬/০৭/১০ তারিখে ইবনে সিনার আসল চেহারা আমার কাছে প্রকাশ পায়- বাসায় আনার পর বাবুর পেম্পার খুলে দেখি সারাদিনে সম্ভবত একবারো পেম্পার পরিবতর্ন করা হয় নি, বাবুর পায়খানা শুকিয়ে আছে। বাসায় নিয়ে আসার পর ১৩-১৪ ঘন্টা পার হয়ে যেলেো বাবু প্রস্রাব না করলে আবার চিন্তিত হয়ে পরি। অতপর খুজা খুজি করে দেখি বাবুর (ছেলে) প্রস্রাবের রাস্তার মুখ তুলা এবং সাদা কষ্টেপ দিয়ে সুক্ষ ভাবে আটকানো (এভাবে সুস্থ মাসুষো অসুস্থ হয়ে যায়)।
এর একটাই অথর্ ইচ্ছাকৃত ভাবে টাকার লোভে তারা আমার বাবুকে নিয়ে খেলা করেছে।
ইবনে সিনা হতে মুক্তির পর ১৬/০৭/১০ তারিখে শিশু ো নবজাতক হাসপাতাল , ধানমন্ডিতে শিশু বিশেষজ্ঞ ডাঃ মোশের্দকে দেখানোর পর "ডাক্তারদের এহেন মনমানসিকতার জন্য অনুশুচনা করেন" এবং বলেন আমার বাবুর অবস্থা সম্পুনর্ ভাল, আমরা অপ্রয়োজনীয় ফটো থেরাপী দিয়েছে। ১৭.৩ লেভেলের জন্ডিস এমনিতেই (৪-৫ দিনের মধ্যে) ভাল হয়ে যায়। আল্লাহর রহমতে আমার বাবু এখন সুস্থ।
১৫/০৭/১০ তারিখেই আমি একটি লিখিত অভিযোগ ইবনে সিনা হাসপাতাল এর পরিচালক বরাবর এডমিন বিভাগে জমা দিয়ে এসেছি। জানিনা কি ব্যবস্থা তারা গ্রহন করলেন। জানিনা টাকার লোভে মাত্র ৩ দিনের শিশুর সাথে কেন এমন অমানবিকতা।
এর প্রতিকার কি হবে না ?
এর বিচার কি আমি পাব না ?
ইবনে সিনার এহেন প্রতারনা থেকে কি মানুষের জীবন রক্ষা সম্ভব নয় ?
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জুলাই, ২০১০ সকাল ৯:০৯