ইতিহাস কি বলে: বাংলাদেশ ক্রিকেট টিম কেন পাকিস্তান যাবে না...
................................................................................
এবার আসুন একটু ইতিহাস জানি: (কম পড়ুয়ারা শুধু বোল্ড করা ডেট গুলো জানলেই চলবে
এপ্রিল ২১, ১৯৮৭
ক্রিকেট ইতিহাসের প্রথম কলঙ্কজনক ঘটনাটি ঘটে শ্রীলঙ্কার কলম্বোতে। সবেমাত্র শ্রীলঙ্কা-নিউজিল্যান্ডের মধ্যেকার ১ম টেস্ট শেষ হয়েছে। তামিল টাইগারদের গাড়ী বোমা হামলায় মারা যায় একশর বেশী সাধারন মানুষ। নিউজিল্যান্ড বাকি খেলা রেখেই প্লেনের টিকেট ধরে। এরপর থেকেই শ্রীলঙ্কায় ক্রিকেট খেলতে অস্বীকৃতি জানায় অধিকাংশ ক্রিকেট দল।
১৬ নভেম্বর, ১৯৯২
আবারও ভালো মানুষি দেখাতে যায় নিউজিল্যান্ড। ফলস্বরূপ খেলোয়ারদের হোটেলের কাছেই মোটরসাইকেলধারী একদল তামিল টাইগারের হামলায় মারা যায় চারজন বেসামরিক লোক। নিরাপত্তাহীনতার কারনে ঐদিনেই বিমান ধরে পাঁচজন ক্রিকেটার এবং তাদের কোচ। পরবর্তীতে বাকিরা সবাই।
১১ ফেব্রুয়ারী, ১৯৯৬
ইতিহাসে এত ভয়ংকর হত্যাযজ্ঞ আগে আর ঘটেছে কিনা সন্দেহ আছে। তামিলদের এক হামলাতেই মারা যায় ৮০ জন বেসামরিক মানুষ, আহত হয় প্রায় ১২০০'র ও বেশি। তখন প্রথমবারের মত বিশ্বকাপ ক্রিকেটের আয়োজন করছিল এশিয়া মহাদেশ। এরপরও নিজেদের প্লেয়ারদের নিরাপত্তার কারনে শ্রীলঙ্কায় খেলতে যায়নি অষ্ট্রেলিয়া এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অনেকটা একারনেই শ্রীলঙ্কা সেবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল।
জুলাই ২৪, ২০০১
আবারও হামলার স্বীকার নিউজিল্যান্ড। এবার তামিলরা বোমা হামলায় বন্ধ করে দেয় কলম্বো আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর। মারা যায় ১৪ জন মানুষ, আহত হয় ১২ জনের বেশি। ব্যাপক নিরাপত্তার মধ্যে একটা আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেই শেষবারের মত রাস্তা মাপে নিউজিল্যান্ড।
মে ৮, ২০০২
এবার থেকে শুরু ফাকিনামা। স্বীকার সেই নিউজিল্যান্ড। নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেটাররা যে হোটেলে অবস্থান করছিল ঠিক তার একটু পাশেই আত্মঘাতী বোমা হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। মারা যায় ১৪ জন পাকিস্তানি নাগরিক, ১১ জন ফরাসী নেভি সেনা এবং দুইজন আত্মঘাতী সন্ত্রাসী।
মার্চ ১১, ২০০৮
লাহোরে বোমা হামলায় মারা যায় ১৫ জন সাধারন মানুষ। নিরাপত্তাহীনতার কারনে অষ্ট্রেলিয়া তাদের নির্ধারিত পাকিস্তান সফর বাতিল করে। একে একে পাকিস্তান খেলতে অস্বীকৃতি জানাতে থাকে সব ক্রিকেট খেলুড়ে দেশ। পাকিস্তানকে করা হয় একঘরে।
সেপ্টেম্বর ১৩, ২০০৮
ভারতের নয়াদিল্লীতে ঘটে বোমা হামলা। মারা যায় ২০ জন, আহত হয় ৯০ এর বেশী। তারপরও কিভাবে যেন ভারতে খেলতে রাজি হয় অস্ট্রেলিয়া!
নভেম্বর ২৬, ২০০৮
অস্ট্রেলিয়ার কাছ থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে ভারত সফরে আসে ইংল্যান্ড। এবার আর সন্ত্রাসীরা নিরাশ করেনি। মুম্বাইয়ে একের পর এক সিরিজ বোমা হামলায় নিহত হয় ১৭০ জন বেসামরিক লোক। সাথে সাথেই ইংল্যান্ড বাধ্য হয় দেশে ফিরতে।
মার্চ ৩, ২০০৯
পাকিস্তানে খেলার সাহসী সিদ্ধান্ত নেয় শ্রীলঙ্কা। ফলশ্রুতি ঘটে ক্রিকেট ইতিহাসের সবচাইতে কলঙ্কজনক ঘটনাটি। লাহোরে প্রায় ২০ জন বন্দুকধারী উদ্দাম গুলি খেলায় মেতে উঠে শ্রীলঙ্কান খেলোয়ারদের বহনকারী বাসের উপর। মারা যায় ৫ জন পুলিশ সদস্য, আহত হয় ৬জন শ্রীলঙ্কান নামি ক্রিকেটার এবং তাদের সহকারী কোচ।
এবার আসা যাক মূল আলোচনায়:
উপরের ধারাবাহিকতা ঠিক থাকলে এতটুকু নি:সন্দেহে বলা যায় পাকি-সন্ত্রাসীরা বন্দুক হাতে বসে আছে আমাদের ক্রিকেটারদের সাদর সম্ভাষণ(!) জানানোর জন্য। কারন একটাই.... টেররিং। টেররদের প্রথম এবং প্রধান টার্গেটই থাকে আন্তর্জাতিক কোন ঝামেলা বাঁধানো। এতে তাদের শক্তি সামর্থ্যের জানান দেওয়া খুব সহজ। যেমনটা করে এক সময় জানান দিয়েছিল তামিল টাইগাররা। আর ফাকিদের সাথে বর্তমানে বাংলাদেশের সম্পর্কও খুব নাজুক। বিশেষ করে যুদ্ধাপরাধী ইস্যুতে। সূতরাং আমাদের বাগে ফেলে ওরা কোনাবস্থাতেই ছাড়বে না।
এক কথায় বলা যায়, পাকিস্তান যাওয়া মানে শেয়ালের কাছে মুরগী বাগা দেওয়া।
উপরের ইতিহাসের প্রত্যেকটা ঘটনাই আশা করি আমাদের ক্রিকেট বোর্ডের হর্তা-কর্তারা কম বেশি জানেন। তারপরও তেনারা আমাদের ক্রিকেটারদের পাকিস্তান পাঠাবেন বলে গোঁ ধরে বসে আছেন। কারন তেনারা যে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকে কথা দিয়ে ফেলেছেন!!!
পেছনের কাহিনীটাও দিনের আলোর মত পরিষ্কার।
আমাদের জনৈক এক ভদ্রলোকের আইসিসি'র সভাপতি হওয়ার খুব খায়েশ। বলা যায় যেকোন মূল্যে। অথচ খোদ আইসিসি'ই বলছে যে পাকিস্তানের চেয়ে আফগানিস্তানই নিরাপদ ভেন্যু।
যেখানে আইসিসি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে তারা পাকিস্তানের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সন্তুষ্ট না হলে সেখানে কোন ম্যাচ অফিশিয়াল পাঠাবে না। আর এ মুহুর্তে কোন দেশেই পাকিস্তানে খেলতে রাজি নয়।
তাহলে কেন এত উদার নীতি। আমাদের ক্রিকেটাররাই বা এর প্রতিবাদ করছে না কেন?
আসুন, এই ভক্তদের কথা মাথায় রেখে আমরা যারা কলম-কিবোর্ড যুদ্ধ চালাচ্ছি তারা যেন আরেকটিবার লড়াই করে অশুভ শক্তিদের পরাস্ত করে দিই। আমরা সবাই যার যার অবস্থান থেকে লড়ে যাবই।
ফেসবুক থেকে সংগৃহীত।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


