বিশিষ্ট রুশ ইতিহাসবদি ভ্যাসিলি কুচেভস্কির মতে, “ফুলকে অন্ধরা দেখছে না, এজন্য ফুল দায়ী নয়; মানুষের অন্ধত্বই দায়ী’’। লিওপোল্ড ফন রাঙ্কে ইতিহাসকে বিজ্ঞান হিসেবে প্রচার করেছেন। কেননা ইতিহাস বিজ্ঞান এই অর্থে যে, এটি অন্যান্য বিজ্ঞানের ন্যায় সত্যানুসন্ধানে নিয়োজিত। অনুসন্ধানে আজ বড় বেশি প্রয়োজন হয়ে দাড়িয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তি, জাতি এমনকি সভ্যতার শেকড় খুঁজে দেখার। এক্ষেত্রে ইতিহাসের সুখপাঠ্য বলতে প্রাসঙ্গিক বইগুলোর অন্যতম ‘এ পিপলস হিস্ট্রি অব দ্য ইউনাইটেড স্টেটস’। সম্ভবত আমেরিকা তথা বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় ইতিহাসগ্রন্থ। ১৫ বছর আগে ২০০৩ সালে এ বইয়ের এক মিলিয়ন কপি বিক্রি উপলক্ষ্যে যে বিশাল নাগরিক সমাবেশ হয় তা নিউইয়র্কের উদারনৈতিক মহলে এখনো শোনা যায়। এ বই নিয়ে অরুন্ধতী রায়ের মন্তব্য, “হাওয়ার্ড জিন না পড়ার মানে হলো নিজেকে ঠকানো’’। ক্ষ্যাপাটে হিসেবে পরিচিত হাওয়ার্ড জিন আজন্ম এ কথা বিশ্বাস করে গেছেন যে, আমেরিকার মানুষ তাদের দৈনন্দিন সংগ্রামের ভেতর দিয়ে প্রকৃত গণতন্ত্রের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
বিজ্ঞ লেখক জর্জ অরওয়েল লিখেছিলেন- “যারা অতীতকে নিয়ন্ত্রণ করে, তারা ভবিষ্যৎকেও নিয়ন্ত্রণ করে আর যারা বর্তমানকে নিয়ন্ত্রণ করে তারাই নিয়ন্ত্রণ করে অতীতকে”। কথাটা অন্যভাবে বললে দাড়ায় যে, সমাজের উপর বর্তমানে যাদের কর্তৃত্ব রয়েছে বস্তুত তারাই সে সমাজের ইতিহাস রচনা করে আর এভাবেই সে কর্তৃত্বকারী দল নিয়ন্ত্রণ করে সমাজের ভবিষ্যৎ। এ কারণেই কলম্বাসের কাহিনী আমাদের জানা জরুরি।
হাওয়ার্ড জিন তার ‘এ পিপলস হিস্ট্রি অব দ্য ইউনাইটেড স্টেটস’ বইটা লিখতে গিয়ে এমন সব তথ্য তুলে এনেছেন, যা নতুন চোখে পর্যালোচনার সুযোগ দেয় বিশ্ব ইতিহাসকে। এ বইয়ে চেষ্টা হয়েছে ইতিহাসে যারা উপেক্ষিত, তাদের দৃষ্টিকোন থেকে লেখার। আমেরিকার ইতিহাসকে দেখানো হয়েছে আদিবাসী, কৃষ্ণাঙ্গ, ক্রীতদাস আর অভিবাসীদের চোখ দিয়ে। এখানে যুদ্ধ, জেনারেল বা সামরিক নায়কদের চোখে নয়, দেখা হয়েছে বিজেতার দৃষ্টিতে। কলম্বাস যখন ভূখণ্ডে পা রাখলেন তখন ভেবেছিলেন তিনি ইন্ডিয়ায় চলে এসেছেন। কেননা যে আদিবাসীরা সেখানে বসবাস করতো তাদের তিনি ভেবেছিলেন ইন্ডিয়ান। হাওয়ার্ড জিন ঠিক করলেন তাহলে সেই আদিবাসীদের চোখেই দেখা যাক কলম্বাসকে। কিন্তু আদিবাসীদের স্মৃতি বা লিখিত ইতিহাস নেই। বড় বাধা সেখানেই। তাই ইতিহাস বলতে হলে তার প্রোটাগনিস্ট হতে হবে খোদ কলম্বাসকেই। এই বিকল্প ভাবনা থেকেই তিনি যা খুঁজে পেলেন তা এককথায় চমকপ্রদ! কলম্বাসের নোটবুক। ... আরও বিস্তারিত :