আমিও কনফিউজড!!
আপনি প্রাক্টিসিং মুসলিম, পাচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন, হালাল হারাম মেনে চলেন, তাইলেই ভাইবেন না আপনি ধর্মান্ধদের আঘাত থেকে নিরাপদ।
আপনি সুন্নি হইলে শিয়াদের কাছে আপনি বাতিল। আপনি শিয়া হইলে সুন্নিদের চোখে রীতিমতো অমুসলিম আর কাদিয়ানী হইলে তো কথাই নাই।
আপনি মাজার বিরোধী হইলে তরিকতপন্থিরা বলবে আপনি অলি আউলিয়ার দুশমন তথা কাফের।
আপনি চার মাজহাবের কোন এক মাজহাব মানেন। আহলে হাদিস গ্রুপের চোখে আপনি কাফের।
মাজহাবিদের চোখে আহলে হাদিস গ্রুপ ভন্ড।
আপনি অলি আউলিয়া ভক্ত, মাজারে মাজারে পড়ে থাকেন অলির উছিলায় আল্লার সন্ধানে। মারেফতের দিক্ষা নিছেন। লাল লুংগি পইরা ঘুরেন। বাকিরা বলবে আপনি গাঞ্জাখোর।
এক মুফতি ওয়াজ করতেছে নবীজি (স নূরের তৈরি তো আরেক প্যান্ডেলে আরেক মুফতি বলতেছে নবীজি (স মাটির তৈরি।
এক ছোট গ্রুপ আছে আহলে কোরান। তারা তো কোরানের বাইরে কিছুই মানে না। তাদের দাবী কোরানের ব্যাখ্যা কোরান নিজেই। সেই কোরানের আয়াতের নিজেদের মতো অর্থ আর ব্যাখ্যা করে বুঝাই দিছে আমরা যে হজ্ব কোরবানি করি তা হারাম। আমরা যেই নামাজ পড়ি এইটা নাকি কোরানে বলা নামাজই না।
আরেক গ্রুপ হাদিস মানে না। কারণ, নবীজি (স এর মৃত্যুর ২০০ বছর পর হেথায় সেথায় ঘুরে সংগ্রহ করা হাদিসকে তারা হাদিস বলে মনে করে না। অমুক শুনছে তমুকের থেকে, তমুক সমুকের থেকে, সমুক শুনছে জমুকের থেকে...এই ভাবে যাইতে যাইতে পাওয়া গেল যে আবু হুরায়রা থেকে বর্ণিত- নবী করিম (স বলেছেন......
এই ফর্মূলায় সংগ্রহ করা হাদিস নিয়া সংশয় তাদের।
কী মুসিবত!!! যাইবেন কই???
সব ছাইড়াছুইড়া গেলেন তাবলীগে। গিয়া দেখেন বাশ দিয়া মাথা ফাটাফাটি চলতেছে সাদপন্থী আর জুবায়ের পন্থীদের মধ্যে।
আপ্নে নামাজে হাত বান্ধেন নাভির উপ্রে তো আরেজন কয় আপ্নের সিস্টেম ভুল। হাত বানতে হইবো বুকের উপ্রে।
আইসিস নামের এক ক্রাইসিস গ্রুপের চোখে তারা বাদে বাকি সব কাফের। বোমামুমা মাইরা লাখে লাখে মানুষ হত্যা করতেছে দুনিয়া জুইড়া।
আপ্নে দাড়ি রাখেন না, ক্লিন শেভড। আপনার পাশে আছে হিজবুত তাওহীদ ও তাদের এমাম সেলিম মিয়া। আপনারে কারাতে স্টাইলে নামাজ পড়া শিখাইবে সে।
কিন্তু বাকি সবাই কইবো আপনে ইসলামের দুশমন।
শান্ত সৌম্য সুফিবাদে যাইতে চান!? দেখবেন সেই সূফিদের আওলাদেরা কোটি কোটি টাকা হাদিয়া নিয়া বিশাল ধনী পীর হইয়া পূর্ণ ননীযুক্ত শরীর নিয়া গদিনে আসিন। তাগো চোখে দেওয়ানবাগী আবার ভন্ড।
সারা জীবন শুইনা আসছেন আল্লাহ ছাড়া কাউরে সেজদা করা যাবে না। কিন্তু আপ্নের বাবা সুরেশ্বর তো সেজদা চায়। তমিজি সেজদা!!!
গান বাজনা হারাম বইলা হুংকার দিয়ে বড় এক আলেম ওয়াজ করে চলে গেছেন। সেই ময়িদানেই দুই দিন পর ইসলামি জলশা নাম দিয়া বাবা মাইজভান্ডারি বা কেল্লা বাবা বা ল্যাংটা সোলেমানের আশেকানরা বয়াতি ভাড়া কইরা বিকট শব্দের ঢোল করতাল বাজাইয়া মাইকে সারা রাইত গান গাইতাছে। ভক্ত আশেকানরা অশেষ নেকি হাসিল করতেছে।
আলিয়া মাদ্রাসা থিকা পাশ করা আলেম আর কওমি মাদ্রাসার আলেম আবার এক জিনিস না।
মিজানুর রহমান আজহারি বলতেছে- "বিশ্ব নবী বলেন-......."
এদিকে আল পাকনা শামিম নামে এক পিচকা ফতোয়া দিচ্ছে- "যারা রাসূল (স কে বিশ্বনবী বলবে তারা কাফের!"
আপনি চাঁদপুরে ইদ কইরা ঢাকায় আইসা শুনেন পরেরদিন আবার ইদ!!!
খোলাফায়ে রাশেদিন অর্থাৎ চার খলিফার তিন খলিফাকেই ঘাতকেরা হত্যা করেছিল। হত্যাকারীরা কিন্তু মুসলিম ছিল এবং এইসব হত্যাকান্ডের পক্ষে তাদের যুক্তি ছিল যে অই খলিফাগণ সহিহ মুসলিম ছিলেন না। বরং তারাই (হত্যাকারীরা) আদি ও আসল মুসলিম।
তিন খলিফার হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়নি। বরং বিচার নিয়া ক্যাচাল করে দুই গ্রুপ সাহাবী পরস্পরের সাথে যুদ্ধ করে একে অপরকে হত্যা করেছিল। প্রত্যেকেই তাদের নিজেদেরই সহিহ মুসলিম দাবি করতেন।
আপনি কোন বিষয়ে সঠিক মাস আলা জানার জন্য গেলেন মুফতি গিয়াসউদ্দিন তাহেরির কাছে। সে আপনাকে কোরান হাদিস মোতাবেক মাস আলা দিয়ে দিল। পরে গেলেন শায়খ আহমদুল্লাহ হুজুরের কাছে। তিনিও কোরান হাদিসের আলোকে সমাধান দিলেন। কিন্তু দেখলেন দুইজনের মাস আলা পুরাই বিপরীত।
কই যাইবেন? গেলেন কুয়াকাটার হেলিকপ্টার হুজুরের কাছে। তিনি আপনাকে অদ্ভুত এবং উদ্ভট এবং আজগুবি কিছু কিচ্ছা শুনাই দিলেন।
আপনি বিভ্রান্ত!!! মনে মনে বললেন- "ওরে বাটপার!"
চলে গেলেন আব্বাসী হুজুরের কাছে। হুজুর আবার পিএইচডি করা। তিনি সব শুনে বললেন- "ওরা তো কাফের!"
Copy@ Mohammad sahadat hossai
ফেসবুক থেকে সংগৃহীত